‘শীর্ষ অপরাধীদের' বিরুদ্ধে ২০১৭ সালে জার্মানির হামবুর্গে জি-২০ সম্মেলনে দাঙ্গার অভিযোগ রয়েছে৷ চার সন্দেহভাজনকে খুঁজতে এবার ইউরোপ জুড়ে অভিযানে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামবুর্গ পুলিশ৷
বিজ্ঞাপন
সন্দেহভাজনদের ছবিও প্রকাশ করেছে পুলিশ, যাদের মধ্যে এক নারীও রয়েছেন৷ ইউরোপের নাগরিকদের এদের বিষয়ে তথ্য দেয়ার অনুরোধও জানিয়েছে পুলিশ৷
গত বছরের ৬ জুলাই হামবুর্গের এলব্খাউসে স্ট্রিটে ‘নরকে স্বাগতম' স্লোগান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়৷ কিন্তু দ্রুতই সহিংস রূপ নেয় সেই বিক্ষোভ৷ ঘটানো হয় একের পর এক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা৷
কয়েকশ উগ্র বামপন্থি অ্যাক্টিভিস্ট তথাকথিত ‘ব্ল্যাক ব্লক' তৈরি করে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে৷ পরপর দুদিন ধরে বিভিন্ন স্থানে চলে তাণ্ডব৷ যে চার জনের ছবি জার্মান পুলিশ প্রকাশ করেছে, তারা সে সব ঘটনায় জড়িত বলে ধারণা তাঁদের৷
জি-টোয়েন্টিতে প্রতিবাদের যত কারণ, ধরন
কখনো শিক্ষার্থীরা, কখনো রাজনৈতিক অ্যাক্টিভিস্ট, কখনও বা পরিবেশবাদীরা৷ হামবুর্গের জি-টোয়েন্টি সম্মেলন ঘিরে প্রতিবাদে মুখর অসংখ্য প্রতিবাদকারী৷ তাদের কয়েকজনকে নিয়েই এই ছবিঘর৷
ছবি: picture-alliance/dpa/B. Roessler
ট্রাম্পের রাস্তায় বাধা দেয়ার পরিনাম
ট্রাম্প যাবেন শোয়ানেনভিক রাস্তা দিয়ে৷ তাই সে রাস্তাটি ব্লক করেছিলেন প্রতিবাদকারীরা৷ কিন্তু পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে জলকামান দিয়ে পানি ছুড়ে৷ পানিতে অনেক প্রতিবাদকারী ভিজে একাকার হয়েছেন৷ পরবর্তীতে তাদের এভাবে রোদে দাঁড়িয়ে কাপড় শুকাতে দেখা গেছে৷
ছবি: DW/A. Islam
পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই
পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া প্রতিবাদকারীদের ব্যানার এটি৷ পুলিশের কড়া অবস্থান সত্ত্বেওকয়েকশতহামবুর্গের কেন্দ্রীয় রেলস্টেশন থেকে একটি প্রতিবাদ ব়্যালি নিয়ে সেন্ট পাউলির দিকে যেতে সক্ষম হয়৷
ছবি: DW/A. Islam
নো জি-টোয়েন্টি
জি-টোয়েন্টি চান না এই প্রতিবাদকারী৷ তাই ছাতাতে লিখে দিয়েছেন সেই কথা৷ পাশে আরেকজন দেখাচ্ছেন শান্তির প্রতীক৷
ছবি: DW/A. Islam
তোমাদের সমাধান আমাদের সমস্যা
শুক্রবার এক প্রতিবাদ ব়্যালিতে অংশ নেন অনেক শিক্ষার্থী৷ তাদেরই একজনের হাতে ছিল এই ব্যানার৷ আপনি কি তাঁর সঙ্গে একমত?
ছবি: DW/A. Islam
বন্ধুদের সঙ্গে ব়্যালিতে
তাঁর বন্ধুরা নাকি সবাই ‘ব্যাড কিডস’! এমনই দাবি প্রতিবাদে অংশ নেয়া এই শিক্ষার্থীর৷ এর মাধ্যমে তিনি কি কোনো প্রেসিডেন্টকে ইঙ্গিত করছেন তিনি?
ছবি: DW/A. Islam
চেহারা দেখাতে মানা
হামবুর্গে জি-টোয়েন্টি প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নেয়া কেউ কেউ নিজেদের চেহারা বা পরিচয় প্রকাশে আগ্রহী হননি৷ ছবি তুলতে গেলে তেমন একজন ছাতা মেলে ধরেন৷
ছবি: DW/A. Islam
ওয়ান্টেড তালিকায় বিশ্ব নেতারা
জি-টোয়েন্টি সম্মেলনে অংশ নেয়াদের কয়েকজনকে ওয়ানটেড তালিকায় ফেলেছেন প্রতিবাদকারীরা৷ এর কারণও অবশ্য লেখা আছে ব্যানারে৷
ছবি: DW/A. Islam
ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান
মানবতার খাতিরে ‘‘ফ্যাসিস্ট অ্যামেরিকার’’ বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন এই প্রতিবাদকারীরা৷ তাদের মতো আরো অনেককে দেখা গেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে৷ বিশেষ করে প্যারিস জলবায়ু এগ্রিমেন্ট থেকে সরে আসায় তাঁর অনেক সমালোচনা হচ্ছে৷
ছবি: DW/A. Islam
পোশাকে প্রতিবাদ
প্রতিবাদকারীরা তাদের পোশাকেও জি-টোয়েন্টি বিরোধী স্টিকার এঁটে দিয়েছেন৷ শুক্রবার একটি প্রতিবাদ কর্মসূচিতে সহস্রাধিক শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রতিবাদকারী৷
ছবি: DW/A. Islam
পুলিশের সতর্ক অবস্থান
তবে হামবুর্গে পুলিশের সতর্ক অবস্থানের কারণে প্রতিবাদকারীরা বড় ধরনের সহিংস কোনো ঘটনা এখন পর্যন্ত ঘটাতে পারেনি৷ গতকাল একটি বিক্ষোভ সহিংস হয়ে উঠলে পুলিশ জলকামান ও মরিচের গুড়া ব্যবহার করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়৷ হামবুর্গে বর্তমানে ২০ হাজারের মতো পুলিশ অবস্থান করছে৷ শহরের মধ্যে রাস্তাঘাট কার্যত ফাঁকা রাখা হয়েছে৷
ছবি: DW/A. Islam
10 ছবি1 | 10
এই ঘটনার তদন্তে গঠিত বিশেষ কমিশনের প্রধান ইয়ান হিবার জানান, ‘‘এরা জি-২০ দাঙ্গার শীর্ষ অপরাধী৷'' তিনি আরো বলেন, এদের কর্মকাণ্ডের সাথে সমাবেশের অধিকারের কোনো সম্পর্ক নেই৷ ‘‘এটি ভয় ও ত্রাস ছড়ানোর উদ্দেশ্যে পরিকল্পিত একটি কমান্ডো অপারেশন ছিল৷''
হামবুর্গে ৩৫ বছরের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের পর এই অভিযানের ঘোষণা এলো৷ ‘ব্ল্যাক ব্লক' তদন্তকারীরা গত বছর থেকেই বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালাচ্ছেন৷ অবশ্য হামবুর্গে আটক ব্যক্তির বিরুদ্ধে কী অভিযোগ, তা জানায়নি পুলিশ৷
চার সন্দেহভাজনের বিরুদ্ধে শান্তি বিনষ্ট, পুলিশের কাজে বাধা দেয়া ও হামলা চালানো, সুপারমার্কেটে লুটতরাজ চালানো এবং সড়কে ব্যারিকেড তৈরি করে অগ্নিকাণ্ডের অভিযোগ আনা হয়েছে৷
ইউরোপ জুড়ে যে অভিযান চালানো হবে, তাতে মূল লক্ষ্য হিসেবে ছিল ইটালি, স্পেন, ফ্রান্স ও সুইজারল্যান্ড৷ তবে এবার অস্ট্রিয়া, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, ডেনমার্ক, সুইডেন, ফিনল্যান্ড ও গ্রিসেও চালানো হবে অভিযান৷ দাঙ্গায় জড়িতদের বেশিরভাগই জার্মানির বাইরে থেকে আসা বলে ধারণা পুলিশের৷