জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে প্রবীর সিকদারের ঠাঁই কারাগারে
হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা১৭ আগস্ট ২০১৫
সাংবাদিক প্রবীর সিকদার ১০ই আগস্ট ফেসবুক স্ট্যাটাসে প্রাণহানির আশঙ্কা প্রকাশ করেন৷ কিন্তু পুলিশ নিরাপত্তা না দিয়ে তথ্য-প্রযুক্তি আইনের মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে ফরিদপুর নিয়ে যায়৷ সেখানকার আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠিয়েছে৷
বিজ্ঞাপন
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘প্রবীর সিকদারকে আটকের পর মামলা দায়ের আইনের লঙ্ঘন৷ এটা আমরা মেনে নিতে পারি না৷ তাঁকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মুক্তি দিতে হবে৷ তাঁর জীবনের নিরাপত্তা না দিয়ে আটক করার নিন্দা জানাই আমরা৷''
এ প্রসঙ্গে প্রবীর সিকদারের ছেলে সুপ্রিয় সিকদার বলেন, ‘‘বাবাকে গ্রেপ্তার করার পর মামলাটি দায়ের করা হয়৷ এখন আমাদের পুরো পরিবার হুমকির মুখে আছে৷''
প্রবীর সিকদার তাঁর ফেসবুক স্টাটাসে লিখেছিলেন:
‘‘আমি আমার জীবন শঙ্কার কথা পুলিশকে জানিয়েছি৷ কোনো লাভ হয়নি৷ তখনও ফেসবুকের মাধ্যমে আমার জীবন শঙ্কার কথা জনতার আদালতে পেশ করেছিলাম৷ আর কোনো অভিযোগ করবার সময় ও সুযোগ আমি নাও পেতে পারি৷ আমি আজ ফেসবুকের মাধ্যমে জনতার আদালতে আবার জানিয়ে রাখছি সেই জীবন শঙ্কার কথা৷ আমি খুব স্পষ্ট করেই বলছি, নীচের ব্যক্তিবর্গ আমার জীবন শঙ্কা তথা মৃত্যুর জন্য দায়ী থাকবেন –
যেখানে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নেই
অনেক রাষ্ট্রেই সাংবাদিক ও ব্লগাররা হামলার শিকার হচ্ছেন৷ রিপোটার্স উইদাউট বর্ডার্স ২০১৫ সালের ‘প্রেস ফ্রিডম ইনবক্স’-এ বিশ্বের ১৮০টি দেশকে তুলে ধরেছে৷ সেই ব়্যাংকিং-এ যে দেশগুলি সবচেয়ে পেছনে, এই ছবিঘরে থাকছে তাদেরই কথা৷
ছবি: Fotolia/picsfive
ইরিট্রিয়া
‘বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম সূচিতে’ শেষ অবস্থানে রয়েছে ইরিট্রিয়া৷ পূর্ব আফ্রিকার এই দেশটিতে স্বৈরতন্ত্রের কারণে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নেই বললেই চলে৷ অনেক সাংবাদিককে জোর করে দেশ থেকে বের করে দেয়া হয়েছে৷ রেডিও ইরেনা একমাত্র গণমাধ্যম, যা ইরিট্রিয়ার নিরপেক্ষ সংবাদ প্রদান করে৷ তবে এটি প্রচারিত হয় প্যারিস থেকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Juinen
স্বৈরশাসকের স্বৈরশাসন
উত্তর কোরিয়াতেও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নেই৷ পুরো বিশ্ব থেকে দেশটিকে বিচ্ছিন্ন তরে রেখেছেন সে’দেশের স্বৈরশাসক কিম জং উন৷ তিনি যা চান, সেটাই গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়৷ রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ও রেডিও চ্যানেল ছাড়া তেমন কোনো গণমাধ্যম নেই৷ যে’সব ব্যক্তি তাঁদের স্বাধীন মতামত প্রকাশ করেন, তাঁদের রাজনৈতিক বন্দি শিবিরে রাখা হয় এবং এক সময় গুম করে ফেলা হয়৷ কখনো কখনো তাঁদের পরিবারের ওপরেও নেমে আসে বিপর্জয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Yonhap/Kcna
তুর্কমেনিস্তান
প্রেসিডেন্ট গুরবাঙ্গুলি বেরডিমুহামেদভ প্রায় দেশের সবগুলো গণমাধ্যমের মালিক৷ সংবাদপত্র রিসগাল কেবল ভিন্ন৷ তবে এর প্রতিটি সংস্করণে রাষ্ট্রের অনুমোদন নিয়ে ছাড়পত্র মেলে৷ এছাড়া ইন্টারনেট এবং ওয়েবসাইটেও হস্তক্ষেপ করে সরকার৷
ছবি: Stringer/AFP/Getty Images
ভিয়েতনাম
ভিয়েতনামেও কোনো স্বাধীন গণমাধ্যম নেই৷ ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি বলে দেয় সাংবাদিকরা কী লিখবেন৷ বেশিরভাগ প্রকাশক, সম্পাদক এবং সাংবাদিক ক্ষমতাসীন দলের সদস্য৷ সম্প্রতি কয়েকজন ব্লগার কর্তৃপক্ষের কার্যক্রমকে চ্যালেঞ্জ করলে তাঁদের জেলে পাঠানো হয়৷
ছবি: picture alliance/ZB/A. Burgi
চীন
রিপোটার্স উইদাউট বর্ডার্স বলছে, ব্লগার এবং সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে বড় কারগারটি রয়েছে চীনে৷ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কেউ কোনো সংবাদ প্রকাশ করলে, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হয়৷ এছাড়া বিদেশি সাংবাদিকদের উপর উত্তোরত্তোর চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে চীনে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/M. Schiefelbein
সিরিয়া
রিপোটার্স উইদাউট বর্ডার্স দেশটিকে গত কয়েক বছর ধরে মুক্ত গণমাধ্যমের শত্রু হিসেবে উল্লেখ করেছে৷ বাশার আল-আসাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের পর থেকে সিরিয়ায় অনেক সাংবাদিককে বিচারের মুখোমুখি হতে হয়েছে৷ হত্যা করা হয়েছে অনেকককে৷ অন্যদিকে আল-নুসরা ফ্রন্ট, যারা ইসলামিক স্টেট এবং আসাদের বিরুদ্ধে লড়ছে, তাদের হাতেও বিপন্ন হতে হচ্ছে সরকারি গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের৷ এছাড়া সাংবাদিকদের অপহরণের ঘটনাও ঘটে চলেছে অহরহ৷
এবং এই তিন জনের অনুসারী-সহযোগীরা৷ ফেসবুকের মাধ্যমে আমি সকল দেশবাসীর কাছে দোয়া চাইছি৷''
এরই প্রতিক্রিয়ায় রবিবার প্রবীর সিকদারকে ঢাকায় তাঁর ইন্দিরা রোডের কর্মস্থল থেকে গোয়েন্দা দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়, তাঁর করা অভিযোগের ব্যাপারে কথা বলার নামে৷ প্রবীর সিকদারের ছেলে সুপ্রিয় শিকার জানান, ‘‘এরপর রাত প্রায় একটা পর্যন্ত তাঁকে গোয়েন্দা কার্যালয়ে বসিয়ে রাখা হয়৷ এরইমধ্যে রাত সাড়ে ১০টার দিকে ফরিদপুর সদর থানায় তাঁর বিরুদ্ধে তথ্য-প্রযুক্তি আইনে মামলা দয়ের করেন স্থানীয় আদালতের এপিপি স্বপন পাল বাদি হয়ে৷ তিনি মামলায় অভিযোগ করেন যে, প্রবীর সিকদারের ফেসবুক স্ট্যাটাসের কারণে মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনসহ অন্যান্যদের সম্মান হানি হয়েছে৷'' প্রবীর সিকদার এবং মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফসহ অন্যান্যদের বাড়ি একই জেলায়, অর্থাৎ ফরিদপুরে৷
সুপ্রিয় অভিযোগ করেন, ‘‘প্রভাবশালীরা সোমবার ফরিদপুরের আদালতে প্রবীর সিকদারের পক্ষে কোনো আইনজীবীকে দাঁড়াতে দেননি৷ এমনকি কোনো আত্মীয়স্বজনকেও আদালত এলাকায় যেতে দেয়া হয়নি৷ হুমকির কারণে আমিও ফরিদপুর যেতে পারিনি৷''
আদালত এই পরিস্থিতিতে প্রবীর সিকদারকে কারাগারে পাঠিয়েছে৷ তাঁকে ১০ দিনের রিমান্ডে দেয়ারও আবেদন জানায় পুলিশ৷ আদালত মঙ্গলবার এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানাবে৷
তথ্য-প্রযুক্তি আইন (আইসিটি)-এর ৫৭ ধারা
প্রবীর শিকদারকে আটক করা হয়েছে আইসিটি আইনের ৫৭ ধারায়৷ ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘প্রবীর সিকদারের বিরুদ্ধে মামলা, আটক কোনোটাই আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করে হয়নি৷'' তিনি বলেন, ‘‘মন্ত্রীর সম্মান হানি হলে তিনি মামলা করতে পারতেন৷ একজন এপিপি কীভাবে মামলা করেন?''
সাংবাদিকদের জন্য দুঃসময়
একটি সমীক্ষা অনুযায়ী গত দশ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার পরিস্থিতি এতো খারাপ দেখা যায়নি৷ বিশ্ব জনসংখ্যার ৮০ শতাংশেরও বেশি মানুষ বাস করেন যে সব দেশে, সে সব দেশে সাংবাদিকদের কাজে হস্তক্ষেপ করা হয়৷
ছবি: AFP/Getty Images
মধ্য এশিয়ার পরিস্থিতি
ফ্রিডম হাউস নামে একটি প্রতিষ্ঠান ১৯৯৭টি দেশের ওপর একটি সমীক্ষা চালিয়েছে, যার ফলাফলে দেখা গেছে, তুর্কমেনিস্তান, উজবেকিস্তান এবং বেলারুশের সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সবচেয়ে কম৷ অন্যদিকে সাংবাদিকদের সবচেয়ে বেশি স্বাধীনতা রয়েছে নেদারল্যান্ডস, সুইডেন এবং নরওয়েতে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
সাংবাদিকদের ওপর হামলা
তুরস্কে অনেক সাংবাদিকদের ওপর হামলা করা হয়েছে৷ সাংবাদিক গ্যোকহান বিচিচি-কে প্রেপ্তার করা হয় গেজি পার্কে বিক্ষোভ চলাকালীন সময়ে৷ সাংবাদিকদের স্বার্থরক্ষা কমিটির মতে গত ডিসেম্বরের শুরুতে তুরস্কে ৪০জন সাংবাদিকদের আটক করা হয়৷
ছবি: AFP/Getty Images
অপ্রিয় রিপোর্ট
ইউক্রেনেও সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালানো হয়৷ বিশেষ করে কিয়েভের ময়দান স্কোয়ারে প্রতিবাদ বিক্ষোভের সময়৷ সরকারের সমালোচক সাংবাদিক টেটিয়ানা চর্নোভোল ঐ হামলার শিকার হন৷ তিনি পদচ্যুত প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ বিলাসী জীবনযাত্রার ওপর একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছিলেন৷ হাজারো মানুষ এই সাবেক প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিক্ষোভ করেন৷
ছবি: Genya Savilov/AFP/Getty Images
মিথ্যা বলা বন্ধ করুন!
চীন এবং রাশিয়াতেও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা সমালোচনার মুখে৷ দুই দেশের সরকারই মিডিয়ার ওপর প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে এবং সরকারের মতামত মিডিয়াকে জানানোর জন্য একটি আইনও প্রণয়ন করে৷ এমনকি রাশিয়ায় সংবাদ সংস্থা ‘রিয়া নভোস্তি’ বন্ধ করে সেটা রাষ্ট্রায়ত্ত্ব করা হয়৷ অনেক রুশ নাগরিকের তা পছন্দ না হওয়ায় তারা ‘মিথ্যা বলা বন্ধ করুন’ প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে বিক্ষোভে অংশ নেয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
মার্কিন সরকারের আড়িপাতা
অ্যামেরিকায় সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রয়েছে৷ কিন্তু মার্কিন তথ্যনীতি ক্রমঃশই প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছে৷ সমীক্ষা অনুযায়ী, সরকার সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া বেশ কঠিন হয়ে গেছে৷ শুধু তাই নয়, এমনকি সরকার সাংবাদিকদের কাছে তথ্য সূত্রও জানতে চায়৷ এছাড়া, মার্কিন সরকার সংবাদ সংস্থা এপি-র সাংবাদিকদের টেলিফোনেও আড়ি পেতেছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo
মুবারক জমানায় প্রত্যাবর্তন
মিশরে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে৷ প্রেসিডেন্ট মুরসির পতনের পর সেখানকার পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে৷ সমীক্ষা প্রতিষ্ঠান ফ্রিডম হাউস-এর মতে, ২০১৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে সামরিক অভ্যুথ্যানের পর থেকে বেশ কিছু সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয় হয় এবং পাঁচজন মারা যান৷
ছবি: AFP/Getty Images
মালিতে পরিস্থিতির উন্নতি
মালিতে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ইতিবাচক উন্নতি হয়েছে৷ প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ইসলামি বিদ্রোহীদের দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বিতাড়নের পর মালির আইন ও শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়৷ ২০১২ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর বেশ কিছু মিডিয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিলো৷ সেগুলো এখন আবার কাজ করছে৷
ছবি: AFP/Getty Images
কিরগিজিস্তান ও নেপালে ইতিবাচক প্রবণতা
যে সব দেশে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা বাড়ছে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে কিরগিজিস্তান৷ সেখানকার সাংবাদিকরা ২০১৩ সালে খুব কম আক্রমণের শিকার হয়েছেন৷ নেপালেও মিডিয়ার ওপর রাজনৈতিক প্রভাব কমেছে, যদিও সাংবাদিকদের হুমকি দেওয়া বন্ধ হয় নি৷ সমীক্ষা অনুযায়ী ইসরায়েলেও সংবাদপত্রের স্বাধীনতার উন্নতি হয়েছে এবং এখন তাঁরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছেন৷
ছবি: AFP/Getty Images
8 ছবি1 | 8
তিনি আরো বলেন, ‘‘যাঁদের বিরুদ্ধে প্রবীর সিকদার অভিযোগ করছেন তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা না নিয়ে প্রবীর সিকদারকেই আটক করলো পুলিশ, এটা হাস্যকর৷''
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের পাশাপাশি শহিদ পরিবারের এই সন্তানটির পাশে এসে দাঁড়িয়েছে গণজাগরণ মঞ্চ৷ মঞ্চের এক বিবৃতিতে তথ্য-প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারাকে ‘কালো আইন' উল্লেখ করে অবিলম্বে তা বাতিল এবং প্রবীর সিকদারের মুক্তির দাবি করা হয়েছে৷
গণজাগরণ মঞ্চের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘৫৭ ধারা নামক কালো আইনে গ্রেপ্তার হয়েছেন মুক্তিযুদ্ধে এক শহিদ পিতার সন্তান সাংবাদিক প্রবীর সিকদার৷ তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন একাত্তরের পরাজিত শক্তির বিরুদ্ধে কলম ধরায়৷ তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি বলে দাবি করা সরকারের সময়ে৷''
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমেও এ নিয়ে নিন্দা এবং প্রতিবাদের ঝড় বয়ে যাচ্ছে৷
২০০১ সালে দৈনিক জনকণ্ঠের ফরিদপুর প্রতিনিধি থাকার সময় সন্ত্রাসী হামলায় গুরুতর আহত হয়ে পঙ্গু জীবনযাপন করছেন প্রবীর সিকদার৷ তাঁর অভিযোগ, একাত্তরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সহযোগী মুসা বিন শমসেরের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন লেখার কারণে মুসার ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা ওই হামলা চালায়৷ মুসা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুপাতো ভাই ও আওয়ামী লীগ সভাপতিমন্ডলির সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমের ছেলের শ্বশুর৷ দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকায় ‘সেই রাজাকার' কলামে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মুসা বিন শমসেরের বিতর্কিত ভূমিকার বিবরণ তুলে ধরেছিলেন প্রবীর সিকদার৷
সম্প্রতি এক লেখায় মুসা বিন শমসের নিজেকে ‘বঙ্গবন্ধুর' সঙ্গে তুলনা করার পর, নিজের ফেসবুক পাতায় তার বিরুদ্ধে আবার সরব হন প্রবীর সিকদার৷ রবিবার গোয়েন্দা পুলিশ তাঁকে তুলে নেওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগেও মুসাকে নিয়ে তিনি ‘জেনে নিন কে এই প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের!' লেখাটি নিজের ফেসবুক পাতায় পোস্ট করেন৷ আর সেই সঙ্গে লেখেন – ‘যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা বাড়ছে! রেহাই নেই কারও!'
শহিদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান প্রবীর সিকদার বর্তমানে উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ এবং দৈনিক বাংলা ৭১ নামের দু'টি অনলাইন পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক৷ তিনি এর আগে সমকাল ও কালের কণ্ঠে কর্মরত ছিলেন৷ মুক্তিযুদ্ধে তাঁর পরিবারের ১৪ জন শহিদ হয়েছিল৷