নতুন এক জোড়া রানিং শু চুরি যাওয়ায় খুব মন খারাপ হয়েছিল ক্রিস্টিয়ান মায়ারের৷ চোর ধরতে সহায়তা চেয়েছিলেন সবার৷ জানা গেল, বার্লিনের ছোট্ট ওই এলাকায় মাত্র কয়েকদিনে অন্তত একশ জোড়া জুতা নিয়ে গেছে চোর৷
বিজ্ঞাপন
জার্মানির রাজধানী বার্লিনের দক্ষিণ-পশ্চিমে সেলেনডর্ফ এলাকার বাসিন্দা ক্রিস্টিয়ান মায়ার৷ খুব কষ্ট করে অবশেষে জুতোচোর ধরছেন তিনি৷
নিজের বা্ড়ির দরজার কাছ থেকে নতুন রানিং শু জোড়া হারিয়ে যাওয়ার পর কমিউনিটি নোটিসবোর্ড শেয়ার করার প্লাটফর্ম নেবেনআনডটডিই-তে বিষয়টা লিখে জানিয়েছিলেন ক্রিস্টিয়ান৷ চোর ধরতে এলাকাবাসীর সহায়তাও চেয়েছিলেন৷
প্রাণীরা কেন বেশি শুনতে পায়?
বিজ্ঞানিরা বলেন, বিবর্তনের ফলে মানুষের শ্রবণশক্তি কমেছে৷ আমরা হাতির মত খুব অল্প বা বাদুড়ের মত অতি উচ্চ কম্পাঙ্কের শব্দ শুনতে পাই না৷ অনেক প্রাণীর কানের নড়াচড়া শ্রবণক্ষমতা বাড়ানোর কৌশল৷ এভাবে তারা বিপদ থেকে বাঁচে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Pleul
খরগোশ কান ঘোরাতে পারে ২৭০ ডিগ্রি
খরগোশেরা শব্দের দিকে তাদের কান ঘুরিয়ে নেয়৷ এতে করে তারা আক্রমণকারী প্রাণীর গতিবিধি বুঝতে পারে৷ আবার কানের নড়াচড়ার সঙ্গে তাদের মনোজগতও টের পাওয়া যায়৷ যেমন, তাদের দু’কান খাঁড়া মানে একেবারে মনোযোগ দিয়ে কিছু শুনছে৷ এক কান খাঁড়া ও এক কান শোয়ানো মানে শুনছে কিন্তু মনোযোগ নেই৷ পিঠের ওপর দু’কান পরস্পর স্পর্শ করে পড়ে থাকা মানে নিরুদ্বেগ সময় কাটানো, কিন্তু কান যদি পরস্পর স্পর্শ না করে, তার মানে ভয় পেয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Pleul
বিড়াল ও কুকুর খুব মনোযোগী
মানুষের ক্ষমতার চেয়ে উচ্চ কম্পাঙ্কের শব্দ শুনতে পায় কুকুর৷ তারা মনিবের পায়ের শব্দ আলাদা করতে পারে৷ বিড়াল আরো বেশি সংবেদনশীল৷ কুকুরের যেখানে ১৮টি কানের পেশি আছে, বিড়ালের আছে ৩০টি৷ এমনকি তারা কান ১৮০ ডিগ্রি ঘোরাতে পারে৷ তাই চুপ করে বিড়ালের পিছু নেবেন? সম্ভব নয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Faber
আলট্রাসনিক তরঙ্গদৈর্ঘ্য ব্যবহার করে বাদুড়
বাদুড় রাতে উড়ে বেড়ানোর সময় শব্দের প্রতিধ্বনি ব্যবহার করে৷ তাদের মুখ থেকে আলট্রাসনিক তরঙ্গদৈর্ঘ্য বের হয় এবং তা সামনে কোন বস্তুর ওপর লেগে তা তাদের কানে ফেরত আসে৷ এতে বস্তুর অবস্থান ও আকার টের পায় তারা৷ বাদুড়ের কানে ২০টি পেশি আছে৷ এগুলো ব্যবহার করে তারা শব্দের প্রতিধ্বনির সূক্ষ্মতা যাচাই করে৷
ছবি: picture-alliance/Mary Evans Picture Library/J. Daniel
যার কান নেই, সেই শোনে সবচেয়ে ভালো
তুলনামূলক বড় আকারের এই মথগুলোর কান খুঁজে পাওয়া দুষ্কর৷ কিন্তু এর শুনতে পাবার ক্ষমতা প্রাণীকূলে সেরা৷ তারা মানুষের চেয়ে দেড়শ’ গুণ ভাল শোনে৷ আর বাদুড়ের চেয়ে ১০০ হার্ৎস বেশি শুনতে পায় এই মথগুলো৷
গুবরে, ঝিঁঝিঁ বা মথ পোকাগুলোর আলট্রাসাউন্ড সংবেদনশীল শ্রবণক্ষমতা রয়েছে৷ এরা তাদের শিকারীদের শুনতে পায়৷ তখন শত্রুর হাত থেকে বাঁচতে এরা আঁকাবাঁকা দৌঁড়ে পালায় বা গোলগোল করে উড়ে৷ কোন কোনটি ভয় দেখাতে নানান শব্দও তৈরি করে৷
ছবি: picture-alliance/AP Images/J. Schultz
চোয়াল দিয়ে শোনে ডলফিন
শুনতে হলে সবসময় কানের প্রয়োজন নেই৷ এর প্রমাণ ডলফিন৷ তারা বাদুড় ও তিমি মাছের মত পানির নীচে শব্দ তৈরি করে অপর বস্তু বা প্রাণীর অবস্থান ও আকার নির্ধারণ করে৷ কিন্তু সেই তথ্য সংগ্রহ করে চোয়াল ও দাঁত দিয়ে৷
ছবি: picture-alliance/WILDLIFE/W. Peolzer
হাতি বজ্রধ্বনি টের পায়!
বিরাট কান দিয়ে হাতি বৃষ্টির আগেই মেঘের হালকা গর্জন টের পায়, যা মানুষের কান শুনতে পায় না৷ এগুলো নিম্ন কম্পাঙ্কের বা ইনফ্রাসাউন্ড তরঙ্গদৈর্ঘ্যের শব্দ৷ তাদের পায়ের স্নায়ুকোষ দিয়ে তারা মাটির নীচের কম্পন ও শব্দ টের পায়৷
ছবি: picture-alliance/M. Reichelt
প্যাঁচা: প্রকৃতির ‘সার্ভেইলেন্স’ ক্যামেরা
প্যাঁচা শুধু রাতে দেখতেই পায়না, মাথাও ৩৬০ ডিগ্রি ঘোরাতে পারে৷ তাদের অসাধারণ শ্রবণক্ষমতাও আছে৷ তাদের দুই কান একরকম নয়৷ প্যাঁচা যখন উড়ে, তখন এক কান দিয়ে ওপরের শব্দ ও এক কান দিয়ে নীচেরটা শুনতে পায়৷ এতে তাদের শিকার করতে সুবিধা হয়৷
ছবি: DW
8 ছবি1 | 8
একজোড়া জুতো চুরির কথা জানাতে গিয়ে তিনি তো অবাক! জানা গেল অনেকেই একই চিন্তায় চিন্তিত৷ বাইরে রাখলে তাদের জুতোও আর থাকছে না! স্লিপার, স্নিকার, স্যান্ডেল, রানিং শু থেকে শুরু করে কোনো ধরনের পাদুকাই আর নিরাপদ নয়, সব চলে যাচ্ছে চোরের ঘরে!
জুতোচোর ধরায় পুলিশ কতটা তৎপর হতো কে জানে! তবে ক্রিস্টিয়ান মায়ার পুলিশের দিকে তাকিয়ে না থেকে নিজেই নেমেছিলেন চোর ধরার কাজে৷
কাজ হয়েছে তাতে৷ এক জোড়া নীল জুতো নিয়ে যাওয়ার সময় চোর হাতেনাতে ধরা পড়েছে তার ক্যামেরায়৷
১০০ জোড়া জুতো চুরির হোতা কিন্তু কোনো মানবসন্তান নয়, সে এক ধূর্ত শৃগাল! তার কাছ থেকে তিন জোড়া জুতা উদ্ধারের খবরও দিয়েছে বার্লিনের সংবাদপত্র টাগেসশ্পিগেল৷