ব্রেক্সিটের সময়সীমা বাড়াতে চান মে
৫ এপ্রিল ২০১৯ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে ব্রেক্সিট কার্যকর করতে আগামী জুন মাসের শেষ পর্যন্ত বাড়তি সময় চেয়েছেন৷ ইউরোপীয় পরিষদের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টুস্ক-এর কাছে তিনি এই মর্মে আবেদন পাঠিয়েছেন৷ তবে টুস্ক সেই সময়সীমা এক বছর পর্যন্ত বাড়ানোর পক্ষে৷ মে ও টুস্ক অবশ্য সম্ভব হলে নির্ধারিত তারিখের আগেই ব্রেক্সিট কার্যকর করার পথ খোলা রাখতে চান৷ তবে ইইউ সদস্য দেশগুলি এমন কোনো প্রস্তাব মেনে নেবে কিনা, তা স্পষ্ট নয়৷ কোনো নির্দিষ্ট পরিকল্পনা ছাড়া ব্রেক্সিটের সময়সীমা বাড়ানোর বিষয়ে এতকাল ইইউ সংশয় প্রকাশ করে এসেছে৷
ব্রেক্সিট নিয়ে অচলাবস্থা কাটাতে ব্রিটেনের সরকার বৃহস্পতিবারও বিরোধী লেবার পার্টির সঙ্গে আলোচনা চালিয়েছে৷ দ্বিতীয় দফার এই আলোচনার পর শুক্রবারও দুই পক্ষ ঐকমত্যের লক্ষ্যে সংলাপ চালিয়ে যাবে বলে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন৷ লেবার দলের প্রতিনিধি জানিয়েছেন, চূড়ান্ত ব্রেক্সিট চুক্তির প্রশ্নে গণভোটের সম্ভাবনা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়েছে৷ উল্লেখ্য, ব্রেক্সিট চুক্তির পক্ষে সংসদে যথেষ্ট সমর্থন পেতে প্রধানমন্ত্রী বিরোধী দলের সহযোগিতা চাইছেন৷
প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে ও লেবার নেতা জেরেমি কর্বিন এমন সহযোগিতার সম্ভাবনার কারণে নিজেদের দলের একাংশের রোষের মুখে পড়েছেন৷ বিশেষ করে টোরি দলে বিদ্রোহের আশঙ্কা বেড়েই চলেছে৷ কট্টর ব্রেক্সিটপন্থিরা ‘সফট' ব্রেক্সিটের আশঙ্কায় রোষে ফেটে পড়ছে৷ তারা চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের পথে চলতে প্রধানমন্ত্রীর উপর চাপ দিচ্ছে৷ ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে সম্ভাব্য গণভোট নিয়েও তাদের ঘোর আপত্তি রয়েছে৷ অর্থমন্ত্রী ফিলিপ হ্যামন্ড এমন সম্ভাবনার পক্ষে সমর্থন জানানোয় কট্টরপন্থিরা রুষ্ট হয়েছে৷
লেবার দলের একাংশ সরকারের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করলেও ২৫ জন সংসদ সদস্য এক চিঠিতে তাদের নেতা জেরেমি কর্বিনকে ব্রেক্সিট চুক্তির স্বার্থে প্রয়োজনে বাড়তি পদক্ষেপ নেবার আবেদন জানিয়েছেন৷ তাঁদের মতে, বর্তমান পরিস্থিতিতে লেবার পার্টির দাবি পূরণ করার সুবর্ণ সুযোগ উঠে এসেছে, যা হাতছাড়া করা উচিত হবে না৷
এদিকে সংসদ প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে ক্ষমতা কেড়ে নেবার উদ্যোগ চালিয়ে যাচ্ছে৷ বুধবার রাতে সংসদের নিম্ন কক্ষ এক প্রস্তাব অনুমোদন করে চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের আশঙ্কা দূর করার উদ্যোগ নিয়েছে৷ বৃহস্পতিবার উচ্চ কক্ষে বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে৷ বিষয়টি আরও খতিয়ে দেখে সম্ভবত সোমবার ভোটাভুটি হবে৷ প্রস্তাবটি উচ্চ কক্ষেরও অনুমোদন পেলে প্রধানমন্ত্রীকে বাধ্য হয়ে আইন করে চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের আশঙ্কা দূর করতে হবে৷
ইউরোপীয় নেতারা চুক্তিহীন ব্রেক্সিট এড়ানোর শেষ প্রচেষ্টার দিকে নজর রাখছেন৷ ব্রিটেনে ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলের মধ্যে আলোচনার ফলে ব্রেক্সিট নিয়ে অচলাবস্থা কেটে যাবে বলে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল আশা প্রকাশ করেন৷ আয়ারল্যান্ডের রাজধানী ডাবলিনে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী লিও ভারাদকর-এর সঙ্গে আলোচনার পর ম্যার্কেল আরও বলেন, ইইউ-র বাকি ২৭টি দেশ চুক্তিহীন ব্রেক্সিট এড়াতে ঐক্যবদ্ধভাবে সব উদ্যোগ নেবে৷ আইরিশ প্রধানমন্ত্রী ধৈর্য ধরে লন্ডনের ঘটনাপ্রবাহের দিকে নজর রাখার পক্ষে সওয়াল করেন৷
এসবি/জেডএইচ (ডিপিএ, রয়টার্স)