অবশেষে অনলাইনে বাংলা বানান ও ব্যাকরণ ঠিক করার অ্যাপ ‘সঠিক’ আসছে এই জুনেই৷ এই অ্যাপের মাধ্যমে বাংলা বানান ও ব্যাকরণ শুদ্ধ করা যাবে৷
বিজ্ঞাপন
সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ (আইসিটি) বাংলা একাডেমির সহায়তায় এই অ্যাপের কাজ করছে, যা প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে৷
আইসিটি বাংলা ভাষা প্রকল্পের পরিচালক মো. মাহবুব করিম জানান, বাংলা অভিধান নিয়ে আরো কাজ হবে৷ এর মধ্যে শব্দার্থ, অনুবাদ এসব নিয়ে আলাদা প্রকল্পে কাজ হবে৷
তবে ‘সঠিক’ অ্যাপ আসার আগেই আইসিটি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এই ফেব্রুয়ারি মাসেই আসছে আরেকটি অ্যাপ৷ যার নাম হলো বাংলা সেন্টিমেন্ট অ্যানালাইসিস অ্যাপ৷ যে কারো বাংলা বক্তব্য অ্যানালাইসিস করে ওই অ্যাপ বলে দেবে তার মনের অবস্থা কী৷
বাংলা একাডেমি কতটা ডিজিটাল
সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্পে বিভিন্ন খাতকে পর্যায়ক্রমে ডিজিটাল করছে। মুজিব জন্মশতবর্ষকে সামনে রেখে বাংলা একাডেমিকেও ডিজিটালাইজ করার প্রক্রিয়া এগিয়ে চলেছে বলে সংশ্লিষ্টদের দাবি। এ দাবি কতটা বাস্তবসম্মত? দেখুন ছবিঘরে...
ছবি: Mortuza Rashed/DW
অনলাইনে স্টলের লটারি
বাংলা একাডেমির বিক্রয়, বিপণন ও পুনর্মুদ্রন বিভাগের পরিচালক ডঃ জালাল আহমেদ জানান, অমর একুশে বইমেলার স্টল বন্টনের ক্ষেত্রে ডিজিটাল পদ্ধতিতে অনলাইনে লটারির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর ফলে অনিয়মের যে অভিযোগ ছিল, সেটি সম্পূর্ণ দূর হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
ছবি: Mortuza Rashed/DW
তথ্যকেন্দ্রের ডিজিটাল সহায়তা
বইমেলায় আগত দর্শনার্থীদের সুবিধার জন্য বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে একটি এবং সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে দুইটি তথ্যকেন্দ্রের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে দর্শনার্থীরা এসে স্টলের অবস্থান, বইয়ের প্রকাশক, লেখক এবং দাম সম্পর্কে অনলাইনে সহজেই তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন বলে জানিয়েছেন তথ্যকেন্দ্রের কর্মকর্তা রাজীব কুমার সাহা।
ছবি: Mortuza Rashed/DW
অনলাইন বইয়ের তালিকা হাল-নাগাদ নয়
ওয়েবসাইটে বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত বইয়ের তালিকায় দেখা যায়, মুক্তিযুদ্ধ, ফোকলোর, প্রাচীন ও মধ্যযুগের সাহিত্য, প্রাণিবিদ্যা, আইন শিক্ষা, সাংবাদিকতা ইত্যাদি বিষয়ে আলাদা শাখায় বইয়ের তালিকা থাকলেও ২৬ মে, ২০২১-এর পর থেকে সেটি আর হাল-নাগাদ করা হয়নি।
ছবি: Mortuza Rashed/DW
বইমেলার পৃথক ওয়েবসাইট
প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি মাসে অমর একুশে বইমেলাকে সামনে রেখে বাংলা একাডেমি একটি ওয়েবসাইট (ba21bookfair.com) চালু করেছে। এখানে বইমেলা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য প্রকাশ ও আর্কাইভ করা হচ্ছে। এই ওয়েবসাইটে ২০১৮ থেকে ২০২১ সালের বইমেলায় প্রকাশিত বইয়ের তালিকা, মেলার অনুষ্ঠানসূচি, ঘোষণা ইত্যাদি সন্নিবেশিত হয়েছে।
ছবি: www.ba21bookfair.com/Bangla Academy
‘আমাদের আধুনিকীকরণের কাজ এগিয়ে চলেছে’
বাংলা একাডেমির বিক্রয়, বিপণন ও পুনর্মুদ্রণ বিভাগের পরিচালক ডঃ জালাল আহমেদ বলেন, “বাংলা একাডেমি ডিজিটালাইজেশনের কাজ আমরা অনেকদিন ধরেই করছি। তবে পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে এমনটা বলা যাবে না। অনলাইনে আমরা বই বিক্রির উদ্যোগ গ্রহণ করেছি, আমাদের লাইব্রেরি ডিজিটালকরণের কাজ এগিয়ে চলেছে। সাধারণ মানুষ ইতিমধ্যে এর সুফল ভোগ করছে। আশা করা যায়, খুব শীঘ্রই বাকি কাজগুলোও আমরা শেষ করতে পারবো।“
ছবি: Mortuza Rashed/DW
অনলাইন অভিধান নেই
১৯৫৫ সালে প্রতিষ্ঠিত বাংলা একাডেমির বেশ কয়েকটি অভিধান বই আকারে থাকলেও এর কোনো অনলাইন সংস্করণ নেই। বাংলা একাডেমির সংক্ষিপ্ত বাংলা অভিধান, বাংলা উচ্চারণ অভিধান, বাংলা-ইংরেজি, ইংরেজি-বাংলা অভিধানগুলোর ব্যাপক চাহিদা থাকলেও এর অনলাইন সংস্করণ এখনো ছাড়া হয়নি৷ তবে বিষয়টি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচনাধীন আছে বলে জানান বাংলা একাডেমির একাধিক কর্মকর্তা।
ছবি: Mortuza Rashed/DW
বাংলা একাডেমির নিজস্ব ওয়েবসাইট
বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত বাংলা একাডেমির রয়েছে একটি নিজস্ব ওয়েবসাইট (banglaacademy.gov.bd)৷ ওয়েবসাইটটিতে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ও ফেলোশিপ, অফিস আদেশ ও বিজ্ঞপ্তি, কর্মকর্তাদের তালিকা ও ফোন নম্বর, প্রকাশনা, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু বিষয়ক বইয়ের পিডিএফ সংস্করণ ইত্যাদি সন্নিবেশিত আছে। এছাড়া অমর একুশে বইমেলার হালনাগাদ তথ্যও এখানে পাওয়া যাবে।
ছবি: Mortuza Rashed/DW
‘অনলাইনে তথ্য থাকলে এতবার আসতে হতো না’
উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শোয়াইব আহমেদ জানান, তিনি বইমেলায় ৪ বছর ধরে আসছেন। বইমেলা কতটুকু ডিজিটাল- জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রতিবারই তিনি ৮-১০টি বই কিনেন, কিন্তু তথ্যের অভাবে একদিনে সব বই কিনতে পারেন না। এখন মানুষের হাতে হাতে ইন্টারনেট সুবিধা রয়েছে। সেক্ষেত্রে অনলাইনে যদি বইয়ের হাল-নাগাদ তথ্য দেওয়া থাকতো, তাহলে জ্যাম ঠেলে দূর থেকে বারবার এসে বই কিনতে হতো না।
ছবি: Mortuza Rashed/DW
বইমেলায় ডিজিটাল কেনাকাটার সুবিধা
বইমেলা ২০২২-এ অংশগ্রহণকারী প্রকাশনা সংস্থা বাংলা প্রকাশ-এর বিক্রয় প্রতিনিধি সাদাত সিফাত বলেন, ‘‘গত ৩-৪ বছর যাবত আমাদের ক্রেতারা ডিজিটাল পেমেন্টের মাধ্যমে বই কিনতে পারছেন। এখন যেহেতু মেলায় দর্শনার্থীদের প্রায় সবারই স্মার্ট ফোন আছে, তাই দেখা যায় বই কিনতে এসে টাকার সংকটে কাউকে পড়তে হয় না। এটি আমাদের ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়পক্ষের জন্যই সুবিধাজনক।’’
ছবি: Mortuza Rashed/DW
‘অনলাইন-অফলাইন দুটোরই দরকার আছে’
অমর একুশে বইমেলা ২০২২ এর মেলায় অংশ নেওয়া সজিব বুক কর্ণারের স্বত্বাধিকারী আহমেদ সোবহান বলেন, “বইমেলার বইসহ সব তথ্য ইন্টারনেটে পাওয়া গেলে অবশ্যই ভালো৷ তবে বইয়ের সাথে যেহেতু মানুষের সম্পর্কটা আত্মার, তাই সশরীরে এসে বই ঘেঁটে দেখার মধ্যে একটা আলাদা আনন্দ আছে বলে আমি মনে করি। বইমেলার স্টলে আসা, ঘোরাঘুরি, দোকানে ভিড়, আড্ডা এই বিষয়গুলো যথেষ্ট উপভোগ করার মতো বলেই বইমেলা প্রাণের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে।’’
ছবি: Mortuza Rashed/DW
অনলাইন টিকার সনদ
পাঞ্জেরি পাবলিকেশনের বিক্রয় প্রতিনিধি তানজিল আল-দ্বীন বলেন, ‘‘আমরা যারা স্টলে আছি, তাদের সবার কোভিড টিকা সনদের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আমরা সবাই আমাদের সনদের একটি কপি অফিস কর্তৃপক্ষকে জমা দিয়েছি, পাশাপাশি অনলাইন একটি কপিও আমরা সাথে রেখেছি যেন প্রশাসন চাইলে সাথে সাথে দেখাতে পারি।’’
ছবি: Mortuza Rashed/DW
11 ছবি1 | 11
বাংলা বানান ও ব্যাকরণ সঠিক করার অ্যাপটি নিয়ে ২০১৭ সালে আইসিটি বিভাগ কাজ শুরু করে৷ তবে এর কিছু কাঠামোগত সমস্যা থাকায় ব্যবহারকারীদের জন্য প্রকাশ করায় সময় লাগছে বলে মাহবুব করিম জানান৷ এটা নিয়ে নানা পর্যবেক্ষণ আছে৷ সেই পর্যবেক্ষণগুলো আমলে নিয়ে সংশোধন করা হচ্ছে৷ তবে এটা ব্যাবহারকারীদের জন্য উন্মুক্ত করার পর আরেকটি প্রকল্পের মাধ্যমে এর পরবর্তী ধাপের উন্নয়ন নিয়ে কাজ হবে৷ তার কথায়, ‘‘ভাষায় অনেক পরিবর্তন আসে৷ সময়ের সাথে সেগুলো যেন সময়মত আপডেট করা যায় তার ব্যবস্থাও নেয়া হবে৷’’
বাংলা অ্যাপটিতে বাংলা একাডেমির বানান রীতি অনুসরণ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি৷ কিন্তু বাংলা একাডেমি নিজে কোনো বাংলা অনলাইন অভিধান, বানান বা ব্যাকরণ নিয়ে কাজ করছে না৷ তারা আইসিটি বিভাগকে সহায়তা করছে৷ এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে ২০২৪ সালে৷
বাংলা একাডেমির গবেষণা, সংকলন, অভিধান ও বিশ্বকোষ বিভাগের পরিচালক মো. মোবারক হোসেন জানান বাংলা একাডেমির অভিধান বিষয়ক মূল কাজ হলো আধুনিক বাংলা অভিধান৷ এটার নিয়মিত নতুন সংস্করণ বের হচ্ছে৷ এর বাইরে বাংলা থেকে ইংরেজি, ইংরেজি থেকে বাংলা, বাংলা বানান অভিধান, ব্যাকরণসহ আরো কিছু প্রকাশনা আছে অভিধান ও বিশ্বকোষ প্রকল্পে৷ অভিধান বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিক সর্বোচ্চ বিক্রিত বই৷
তবে বাংলা একাডেমির অনলাইন কোনো অভিধান নেই৷ একাডেমির ওয়েব সাইটে অভিধানের পিডিএফ লিংক পাওয়া গেলেও সেই লিংক খোলা যায় না বা সেখানে অভিধানের পিডিএফ সংস্করণটি নেই৷
মোবারক হোসেন জানান, ‘‘আইসিটি বিভাগ আমাদের আধুনিক বাংলা অভিধান পুরোটাই নিয়ে নিয়েছে৷ তারা অনলাইনে বাংলা বানানের যে অভিধান নিয়ে কাজ করছে সেখানে আমাদের অভিধানই ব্যবহার করা হচ্ছে৷ তাদের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে৷ আমাদের সাথে তারা নিয়মিত বৈঠকও করছেন৷’’
বাংলা একাডেমি নিজ উদ্যোগে বাংলার কোনো অনলাইন অভিধান করবে কী না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘এই বিষয়ে আমার কিছু জানা নাই৷ এটা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের ব্যাপার৷’’
এটা (অনলাইন অভিধান) ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের ব্যাপার: বাংলা একাডেমির মোবারক হোসেন
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার জানান, ‘‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল ২০১৫ সালে অনলাইনে বাংলা অভিধান ও বানান পরীক্ষা করার একটি প্রকল্প হাতে নেয়৷ ২০১৭ সালে এটা একনেক অনুমোদন করে৷ সেই প্রকল্পটি এখন চলছে৷ বাংলা ভাষায় ১৬টি টুলস ডেভেলপ করার জন্য এই প্রকল্পটি নেয়া হয়৷ এটার জন্য সরকার অর্থ বরাদ্দ দিয়েছে৷’’
তার মতে, এটা বেসরকারি পর্যায়ে বা বাণিজ্যিকভাবে করার সুযোগ নাই৷ বেসরকারি পর্যায়ে অর্থ ছাড়া কাজ করা যায় না৷ এটা বাণিজ্যিকভাবে করতে গেলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক ট্রলের শিকার হতে হয়৷ কিন্তু টাকা আয় না হলে এটা বেকরকারিভাবে কীভাবে করা সম্ভব?
জানা গেছে এই ১৬টি টুলস-এর মধ্যে আছে ১. ইউনিকোড ও বাংলা বর্ণমালার কোড সেট বিবেচনায় রেখে বাংলা সর্টিং অর্ডার নির্ধারণ ২. উন্নয়ন বা সমৃদ্ধকরণ ৩. বাংলা বানান ও ব্যাকরণ পরীক্ষক উন্নয়ন ৪. বাংলা ভাষার টেক্সট টু স্পিচ ও স্পিচ টু টেক্সট সফটওয়্যার উন্নয়ন ৫. বাংলা ফন্ট কনভার্টার উন্নয়ন ৬. তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলার লিখিত রূপ নির্ধারণ ৭. বাংলা মেশিন ট্রান্সলেশন ৮. বাংলা স্ক্রিন রিডার সফটওয়্যার ৯. প্রতিবন্ধীদের জন্য সফটওয়্যার ১০. বাংলা ফন্ট এবং সফটওয়্যার অন্তর্ভুক্তিকরণ ১১. বাংলা ওসিআর উন্নয়ন প্রভৃতি৷
ডিকশনারির কাজ করে আমি ফেলে রেখেছি: মোস্তাফা জব্বার
আইসিটি বিভাগের এই প্রকল্পে এপর্যন্ত ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে৷
এদিক বাংলা বানানের জন্য দেশীয় কিছু ওয়েবসাইট এবং মোবাইল অ্যাপ আছে৷ কিন্তু তার অনেকগুলো এখন আর কার্যকর নেই৷ আর সেগুলো বাংলাভাষীদের চাহিদা পুরণ করতে পারছে না৷ ব্যবহার পদ্ধতিও বেশ জটিল৷
অনলাইন প্রকাশনা সংস্থা সিসটেকের এরকম বাংলা বানান পরীক্ষার একটি ওয়েবসাইট আছে৷
প্রতিষ্ঠানটির ডিজিটাল বিভাগের এমডি এম রাশিদুল হাসান জানান, ‘‘আমরা করেছি সাধারণ মানুষের ব্যবহারের জন্য৷ এটা ফ্রি এবং যে কেউ ব্যবহার করতে পারেন৷ এখানে বাংলা একাডেমির বানান অনুসরণ করা হয়েছে৷’’
তার কথা, ‘‘বেসরকারি উদ্যোগে বাংলার জন্য আমরা অনেক কিছু করতে চাইলেও নানা জটিলতায় তা পারা যায় না৷ এখন পর্যন্ত অনলাইনে বাংলায় ভালো একটি স্পেলচেকার নাই৷’’
কোন ভাষায় কত অক্ষর
সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য ভাষা৷ কিন্তু আমরা কি জানি, কোন ভাষায় কতগুলি করে অক্ষর? একনজরে দেখে নেওয়া যাক আজকের গ্যালারিতে৷
ছবি: Getty Images
তামিল ২৪৭
তামিল ভাষায় মূল অক্ষর ৩১টি৷ তবে যুক্তাক্ষর ধরলে সেখানে আরো ২১৬টি অক্ষর যুক্ত হয়৷ অর্থাৎ, সব মিলিয়ে ২৪৭টি অক্ষর৷ বিশ্বের যে কোনো ভাষার চেয়ে বেশি অক্ষর তাই তামিলে৷
ছবি: Reuters/N. Bhalla
খামের ৭৪
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পুরনো দেশগুলির অন্যতম কম্বোডিয়া৷ খামের সংস্কৃতি বহু শতাব্দীর৷ খামের ভাষাও খুব সমৃদ্ধ৷ খামের ভাষায় ৭৪টি অক্ষর আছে, যার মধ্যে ৩৫টি ব্যাঞ্জনবর্ণ এবং ১৪টি স্বরবর্ণ৷ বাকি অক্ষরগুলি যুক্তবর্ণ৷ তবে ব্যাঞ্জনবর্ণের মধ্যে ৩৩টি এখন ব্যবহৃত হয়, ২টির কোনো ব্যবহার নেই৷
ছবি: Imago/blickwinkel
থাই ৭০
থাইল্যান্ডের ভাষা থাই৷ থাই ভাষায় সব মিলিয়ে ৭০টি অক্ষর, যার মধ্যে ৪৪টি ব্যাঞ্জনবর্ণ এবং ১৫টি স্বরবর্ণ৷ এই দুই অক্ষর মিলিয়ে বেশ কিছু যুক্তাক্ষরও তৈরি হয়৷
ছবি: Reuters/A. Perawongmetha
মালয়ালম ৫৮
দক্ষিণ ভারতের কেরলে মালয়ালম ভাষার প্রচলন আছে৷ এই ভাষায় মোট ৫৮টি অক্ষর, যার মধ্যে ১৩টি স্বরবর্ণ এবং ৩৬টি ব্যাঞ্জনবর্ণ৷ আর কিছু অন্তচিহ্ন আছে৷ ওই অঞ্চলের ছোট ছোট বেশ কয়েকটি ভাষাও মালয়ালম অক্ষরেই লেখা হয়৷
ছবি: UNI
তেলেগু ৫৬
ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশে তেলেগু মুখ্যভাষা৷ তেলেঙ্গানা প্রদেশেও৷ কন্নড় ভাষার সঙ্গে তেলেগু লিপির বহু মিল আছে৷ কারণ, দু’টি ভাষারই সৃষ্টি একই জায়গা থেকে৷ সব মিলিয়ে ৫৬টি অক্ষর আছে এই ভাষায়৷
ছবি: UNI
সিংহলী ৫৪
শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রভাষা ভাষা সিংহলী৷ অসামান্য সুন্দর এই ভাষার অক্ষর বিন্যাস৷ সব মিলিয়ে অক্ষরের সংখ্যা ৫৪৷ এই ভাষাতেও সংযুক্ত অক্ষরের প্রচলন আছে৷
ছবি: Reuters/D. Liyanawatte
বাংলা ৫২
বাংলায় সব মিলিয়ে ৩২টি অক্ষর৷তবে যুক্তাক্ষর ধরলে ৫২টি অক্ষর৷ দেবনাগরী লিপি না হলেও তার সঙ্গে বাংলা বর্ণের প্রচুর মিল৷ মূলত এই লিপির জন্ম ব্রাহ্মী থেকে৷
ছবি: DW/M. Mostafigur Rahman
কন্নড় ৪৯
দক্ষিণ ভারতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ৪টি ভাষার একটি কন্নড়৷ কর্ণাটকে মূলত এই ভাষা ব্যবহৃত হয়৷ কন্নড় ভাষায় ১৩টি স্বরবর্ণ আছে৷ তবে তার মধ্যে অনুস্বর এবং বিসর্গ নেই৷ কন্নড়ে ব্যাঞ্জনবর্ণের সংখ্যা ৩৬৷
ছবি: Jayalaxmi AgroTech
হিন্দি ৪৪
হিন্দিও স্বরবর্ণ এবং ব্যাঞ্জনবর্ণে বিভক্ত, যার মধ্যে ১১টি স্বরবর্ণ এবং ৩৩টি ব্যাঞ্জনবর্ণ৷ হিন্দি ভাষার উৎপত্তি দেবনাগরী থেকে৷ সংস্কৃতের প্রচুর প্রভাব আছে এই ভাষায়৷
ছবি: AP
হাঙ্গেরিয়ান ৪৪
লাতিন বর্ণমালা থেকেই হাঙ্গেরিয়ান বর্ণমালার উৎপত্তি৷ রোমান বর্ণমালার এ থেকে জেড ছাড়াও এই বর্ণমালায় আরো বেশ কিছু অক্ষর দেখতে পাওয়া যায়৷
ছবি: Getty Images/AFP/A. Kisbenedek
অবখাজ ৪১
জর্জিয়ার কোনো কোনো অংশে এই ভাষায় কথা বলা হয়৷ অবখাজ ভাষায় ৪১টি অক্ষর৷ ১৮৮০ সালে এই ভাষার বর্ণমালা তৈরি করা হয়৷
ছবি: Filip Warwick
আর্মেনিয়ান ৩৯
আর্মেনিয়ার প্রধান ভাষা আর্মেনিয়ান৷ তাদের বর্ণমালায় মোট অক্ষরের সংখ্যা ৩৬৷ তবে কালে কালে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৯৷
ছবি: Reuters/M. Sezer
রুশ ৩৩
আধুনিক রুশ বর্ণমালায় ৩৩টি অক্ষর৷ রুশ ভাষায় সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত অক্ষর ঔ, এ, আ এবং ন৷ রুশ ভাষার সাহিত্য সারা পৃথিবীতেই এক সময় অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিল৷
ছবি: picture alliance/Russian Look
আজারবাইজানি ৩২
আজারবাইজানে বলা হয় আজারবাইজানি ভাষা৷এই ভাষার অক্ষরবিন্যাসও তৈরি হয়েছে লাতিন বর্ণমালার উপর ভিত্তি করে৷ তবে লাতিনের চেয়ে কিছু আলাদা অক্ষরও তাদের বর্ণমালায় ব্যবহার করা হয়৷
ছবি: picture alliance/AA /Stringer
ইংরেজি ২৬
ইংরেজিতে মোট ২৬টি অক্ষর আছে, যার মধ্যে ৫টি ভাওয়েল এবং ২১টি কনসোনেন্ট৷ সারা পৃথিবীতেই ইংরেজি ভাষার ব্যাপক ব্যবহার৷ মূলত রোমান স্ক্রিপ্ট থেকেই তৈরি হয়েছে ইংরেজির বর্ণমালা৷
ছবি: AP
গ্রিক ২৪
গ্রিক বর্ণমালায় মোট ২৪টি অক্ষর, যার প্রথম অক্ষর আলফা৷ আর শেষ হয় ওমেগা দিয়ে৷ বিজ্ঞান এবং গণিতের বহু ক্ষেত্রে এখনো গ্রিক অক্ষর ব্যবহার করা হয় সারা পৃথিবীতেই৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/P.Karadjias
হিব্রু ২২
আরবি, ফারসি কিংবা উর্দুর মতো হিব্রু ভাষাও বাঁ দিক থেকে ডানদিকে লেখা হয়৷ এই ভাষার বর্ণমালায় মোট ২২টি অক্ষর আছে৷ইজরায়েলের রাষ্ট্রভাষা হিব্রু৷ এই ভাষার ইতিহাসও কয়েক হাজার বছর প্রাচীন৷