আওয়ামী লীগ সরকার পতনের এক বছর এখনো পূর্ণ হয়নি। কিন্তু যে ঐক্যের ভিত্তিতে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে সকল রাজনৈতিক দল ও শ্রেণি, পেশার মানুষ আন্দোলন করেছিলেন, সেই ঐক্য আর এখন দেখা যাচ্ছে না কেন?
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘‘একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে হলে আমাদের অবশ্যই বিচার, সংস্কার এবং গণপরিষদের মাধ্যমে নতুন সংবিধানের দিকে যেতে হবে এবং জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে যে টালবাহানা শুরু হয়েছে, তা সহ্য করা হবে না।''ছবি: Rajib Dhar/AP/picture alliance
বিজ্ঞাপন
কিভাবে ফিরতে পারে সেই ঐক্য?
শুধুমাত্র বিএনপির কারণে সেই ঐক্য ধরে রাখা যায়নি বলে মনে করেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-র যুগ্ম আহবায়ক মনিরা শারমিন। ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, "জুলাই ঘোষণাপত্রের ব্যাপারে ঐকমত্য কমিশন দারুণ আন্তরিক। অন্য রাজনৈতিক দলগুলোও যখন কোনো একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছে, তখন বিএনপি বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তাদের কারণেই জুলাই ঘোষণাপত্র করা যাচ্ছে না। তারা ফ্যাসিবাদী শাসন ব্যবস্থার কিছু বিষয় জিইয়ে রাখতে চায়। তাই আমরা বলেছি, সরকার যদি জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে না পারে, তাহলে আমরা সেটা দেবো।”
তবে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ইমরান সালেহ প্রিন্স ডয়চে ভেলেকে বলেন, "সেই ঐক্য পুরোপুরি শেষ হয়ে যায়নি। আমি মনে করি, এখনো আমাদের মধ্যে ঐক্য আছে। তবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পৃথক কর্মসূচি থাকবে, তারা সে অনুযায়ী কাজ করবে। একটি দেশে সবাই একটি বিষয়ে একমত হবে এমন তো না। আলোচনার মাধ্যমে সমাধান আসবে। কিন্তু আলোচনায় একমত হতে না পারার অর্থ এই নয় যে, আমাদের মধ্যে ঐক্যমত নেই। আমরা মনে করছি, একটা নির্বাচনের মাধ্যমে সেই ঐক্য আবার পুনর্পতিষ্ঠা হতে পারে।”
ঢাকায় জনতার উল্লাস, গণভবন জনতার দখলে
শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানা দেশ ছাড়ার পর গণভবনে ঢুকে পড়েছে অসংখ্য মানুষ৷ অন্যদিকে, শাহবাগে জড়ো হয়েছেন লাখো জনতা৷
ছবি: DW
গণভবনে সাধারণ মানুষ
শেখ হাসিনা গণভবন ছাড়ার পর সোমবার বেলা আড়াইটায় গণভবনের ভেতরে ঢুকে পড়েন সাধারণ মানুষ৷
ছবি: DW
গণভবনে উল্লাস
গণভবনের মাঠে তাদের হাত উঁচু করে উল্লাস করতে দেখা গেছে৷ তারা স্লোগান দিতে থাকেন৷
ছবি: DW
সংসদ ভবন
সংসদ ভবনের সামনে হাজারো মানুষের ঢল৷
ছবি: DW
সংসদ ভবন
সংসদ ভবনের সামনে হাজারো মানুষের ঢল৷
ছবি: DW
রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে আগুন
রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে আগুন জ্বলছে৷
ছবি: DW
হাজারো মানুষ রাস্তায়
রাজধানী জুড়ে মানুষের ঢল৷
ছবি: DW
হাজারো মানুষ রাস্তায়
রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে মানুষের ঢল৷
ছবি: DW
কারো হাতে শাড়ি কারো হাতে আসবাব
গণভবন থেকে বের হওয়া মানুষের হাতে শাড়িসহ নানান আসবাব দেখা গেছে৷ এছাড়া ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিস নিয়ে বেরিয়ে আসতে দেখা যায়৷
ছবি: DW
শাহবাগে লাখো মানুষ
ঢাকার প্রতিটি এলাকা থেকে লাখো মানুষ মিছিল নিয়ে যাচ্ছেন শাহবাগের দিকে৷ সেখানে ইতোমধ্যে লাখো মানুষের জমায়েত হয়েছে৷
ছবি: Sazzad Hossain/DW
সায়েন্স ল্যাবে হাজারো মানুষের বিজয় উল্লাস
রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব এলাকায় জড়ো হওয়া হাজারো মানুষকে সোমবার বিকেলে বিজয় উল্লাস করতে দেখা গেছে৷ এই এলাকার তরুণ-তরুণীদের রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় রিকশায় যেতে দেখা গেছে৷ তাদের হাতে ও মাথায় পতাকা৷
ছবি: DW
বিক্ষোভকারীদের উল্লাস
রাজধানী ঢাকার রাস্তায় সকাল থেকে নেমে পড়েন সাধারণ জনতা৷ স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত রাজপথ৷
ছবি: Suvra Kanti Das/ZUMA/dpa/picture alliance
আনন্দে সামিল সেনাবাহিনী
বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আনন্দে শামিল হতে দেখা যায় সেনাবাহিনীকেও৷ ট্যাঙ্কের মাথায় চড়ে থাকা বাহিনীকে হাসতে হাসতে হাত মেলাতেও দেখা যায় সাধারণ মানুষের সঙ্গে৷
ছবি: Sazzad Hossain/DW
আনন্দে সামিল সেনাবাহিনী
সাধারণ মানুষের সাথে হাত মেলাচ্ছেন সেনা সদস্যরা৷
ছবি: Mohammad Ponir Hossain/REUTERS
জাতীয় পতাকা হাতে রাস্তায়
স্লোগান এবং উল্লাসের মাধ্যমে বিজয় উদ্যাপন করছেন সাধারণ মানুষ৷ বাংলাদেশের পতাকা হাতে অনেকে গণভবনের মাথায় চড়েন৷ সেখানে থেকে আনন্দে চিৎকার শুরু করেন সাধারণ মানুষ৷
ছবি: DW
আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আগুন
ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা৷ এছাড়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বাড়িতে হামলার অভিযোগ উঠেছে৷
স্থানীয় সময় বিকেল ৪টায় সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান জানান, প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন৷ সেনাপ্রধান বলেন, ‘‘এখন রাজনৈতিক ক্রান্তিকাল চলছে৷ একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হবে৷ সব হত্যার বিচার হবে৷ সেনাবাহিনীর ওপর আস্থা রাখেন৷ আমরা রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছি৷’’
ছবি: DW
শেখ হাসিনার দেশত্যাগ
বেলা আড়াইটায় বঙ্গভবন থেকে একটি সামরিক হেলিকপ্টার শেখ হাসিনাকে নিয়ে যাত্রা করে৷ এ সময় তার সঙ্গে তার ছোট বোন শেখ রেহানা ছিলেন৷
ছবি: Mohammad Ponir Hossain/REUTERS
18 ছবি1 | 18
ঐক্য ধরে রাখতে না পারার কারণ জানতে চাইলে রাজনৈতিক বিশ্লেষক রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী ডয়চে ভেলেকে বলেন, "গত বছরের জুলাইয়ে যে আন্দোলন হয়েছিল, সেখানে যারা অংশ নিয়েছিলেন, তাদের ৮০ ভাগ ছিল শ্রমজীবী মানুষ আর ২০ ভাগ উচ্চ শ্রেণির মানুষ। যে ৮০ ভাগ শ্রমজীবী মানুষ অংশ নিয়েছিলেন, তারা কিন্তু আন্দোলনের পর ঘরে ফিরে গেছেন। এখন সেই ঐক্য নিয়ে যারা দেনদরবার করছেন, তারা উচ্চ শ্রেণির। এখানে তাদের স্বার্থের সংঘাত আছে। ফলে তারা কখনো একত্রিত হতে পারবে না। কারণ, তাদের স্বার্থ ভিন্ন ভিন্ন জায়গায়। ফলে, যেটা ঘটার ছিল, সেটাই ঘটেছে বলে আমি মনে করি।”
আরেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক, বেসরকারি সংস্থা খান ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রোকসানা খন্দকার ডয়চে ভেলেকে বলেন, "আজকে এই ঐক্যে ফাটল ধরার কারণ সরকার নিজেই। মানুষ যে আকাঙ্খা নিয়ে আন্দোলন করেছিল, সেই আকাঙ্খা থেকে সরকার অনেক দূরে। মানুষের মূল আকাঙ্খা ছিল গণতন্ত্র পূণঃপ্রতিষ্ঠা। সেটা কি হয়েছে? আমরা বলতে পারি এখনো হয়নি। তরুণ সমাজকে এই এক বছরে আমরা কী দিতে পেরেছি? সরকারের উচিত হবে রাজনৈতিক দলগুলোর আকাঙ্খাকে ধারণ করে নির্বাচনের দিকে যাওয়া।”
‘সরকার আসলে যেসব কাজ করার দরকার নেই তারা সেই কাজে ব্যস্ত’
This browser does not support the audio element.
বাংলাদেশের কমিউনিষ্ট পার্টি (সিপিবি)-র সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স ডয়চে ভেলেকে বলেন, "মূলত দু'টি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য নিয়ে অভ্যুত্থান হয়েছিল, একটি গণতন্ত্রকে সুপ্রতিষ্ঠিত করা, আরেকটি হলো বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়া। বৈষম্যহীন দেশ গড়ার কাজ তো শুরুই হয়নি। আর গণতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠিত করতে একটি নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। সে পথেও এই সরকার এগোতে পারেনি। জুলাই অভ্যুত্থানে যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের মৃত্যুর জন্য দায়ীদের বিচারের ব্যবস্থা করা, শহীদদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া- এই কাজগুলো হচ্ছে, কিন্তু যে গতিতে হওয়া দরকার সেটা হচ্ছে না। সরকার আসলে যেসব কাজ করার দরকার নেই তারা সেই কাজে ব্যস্ত। ফলে নির্বাচন বিলম্বিত হওয়ার কারণে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অবিশ্বাসের জন্ম নেয়। সেই অবিশ্বাস থেকেই ঐক্যে ফাটল ধরে। সরকার চাইলে এখনো সেটা ফিরিয়ে আনতে পারে।”
অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে প্রত্যাশা ও চ্যালেঞ্জ
নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে প্রত্যাশা ও সরকারের কিছু চ্যালেঞ্জ নিয়ে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলেছে ডিডাব্লিউ৷
ছবি: MUNIR UZ ZAMAN/AFP
সিফাত নাহার, চিকিৎসক
স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের ক্ষেত্রে ওষুধের অপ্রতুলতা, পর্যাপ্ত সরঞ্জামের অভাব, লোকবলের অভাবসহ আরো অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে৷ এসব কারণে আমরা প্রায়ই প্রতিকূলতার সম্মুখীন হই৷ মাঝেমধ্যে অনাকাঙ্ক্ষিত ও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়৷ তাই আমার প্রত্যাশা থাকবে, এই সরকার কর্মক্ষেত্রে চিকিৎসকসহ সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এবং সীমাবদ্ধতাগুলো দূর করার চেষ্টা করবে৷
ছবি: DW
দীপংকর সরকার দীপু, ভিজুয়াল আর্টিস্ট
বেশিরভাগ মানুষের আস্থা অর্জন, জানমালের নিরাপত্তা বিধান, দুর্নীতিকে সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখা, সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা- ইত্যাদি সরকারের চ্যালেঞ্জ৷ আর সরকারের কাছে প্রত্যাশা থাকবে তারা যেন দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে আনতে পারেন, দুর্নীতি নির্মূল করতে পারেন, মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে পারেন ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে পারেন৷
ছবি: DW
সাদিয়া মরিয়ম রূপা, আলোকচিত্রী ও শিক্ষক
প্রত্যাশা: পাহাড় থেকে সেনাশাসন হটাতে হবে, পাহাড় দখলমুক্ত করতে হবে৷ ক্ষমতাধর ও আইনপ্রণেতাদের জনগণের কাছে জবাবদিহিতা থাকতে হবে৷ বাকস্বাধীনতা খর্ব করা যাবে না৷ বিচারব্যবস্থাকে স্বাধীন করতে হবে৷ জনস্বার্থবিরোধী সব চুক্তি বাতিল করতে হবে৷
ছবি: DW
আলী আরাফাত জাকারিয়া, লেখক
প্রত্যাশা: রাষ্ট্র সংস্কার, বিশেষ করে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার, আইন-শৃঙ্খলা ঠিক করা, পুলিশকে দলীয় রাজনীতি থেকে দূরে রাখা, দুর্নীতি দমন ও ছাত্র হত্যার বিচার করা, আর্থিকখাতে দুর্নীতি করা ব্যক্তিদের বিচার এবং সর্বোপরি নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা অক্ষুণ্ণ রাখা৷ চ্যালেঞ্জ: অর্থনীতি ঠিক করা, সতর্কতার সাথে সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করে পুলিশ রিফর্ম করা৷
ছবি: DW
ফারহানা শারমিন শুচি, উদ্যোক্তা
স্বচ্ছ সরকার চাই৷ রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি ছিল, সেগুলো নির্মূল করতে হবে৷ দীর্ঘদিন ধরে অন্যায়, অবিচার দেখেছি৷ এগুলো থেকে বেরিয়ে আসতে হবে৷ দুর্নীতিবাজদের সরিয়ে তরুণ প্রজন্মকে নিয়োগ দিতে হবে৷ দুর্নীতি দূর করতে শিক্ষার্থীদের মনিটরিং দরকার৷
ছবি: DW
আমিরুল, প্রকৌশলী
প্রত্যাশা: কথা বলা ও রাস্তায় নামার অধিকার ফিরিয়ে আনা৷ এখন যে পরিস্থিতি সেটা আগে মোকাবেলা করুক, সব স্বাভাবিক করে আনুক এটাই আশা করি৷ প্রাইমারি ফোকাস হওয়া উচিত রাষ্ট্রকে আগে গড়ে তোলা৷ নৈরাজ্য হবার পরে যে অবস্থা বা গত সরকার ১৫ বছর যেভাবে শাসন করেছে এটা থেকে স্বাভাবিক করার জন্য দেশকে একটা শক্তিশালী জায়গায় নেওয়া উচিত৷ অর্থনৈতিক দিক থেকে এবং সকল দিকই যেন ঠিকঠাক করতে পারে৷
ছবি: DW
শিমু আক্তার, শিক্ষার্থী ও ভলিবল খেলোয়াড়
আশা করবো বর্তমান সরকার শিক্ষার্থীদের বৈষম্যবিরোধী বাংলাদেশ গড়ার দাবির কথা মাথায় রেখে রাষ্ট্র পুনর্গঠন করবে৷ তবে দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা পুনরুদ্ধার করা এই সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জিং হতে পারে৷
ছবি: DW
আবুল বাশার, শরবত বিক্রেতা
আমি চাই এই সরকার সুন্দরভাবে দেশ পরিচালনা করবে যেন গরিব, ধনী সবাই শান্তিতে বাস করতে পারেন৷ রাজনৈতিক দলগুলোর ক্ষমতার প্রতি লোভ এই সরকারকে বিপদে ফেলতে পারে বলেও মনে করেন তিনি৷
ছবি: DW
রুপসী চাকমা, শিক্ষার্থী
পার্বত্য চট্টগ্রামে বহুদিন ধরে ‘সেনাশাসন’ চলছে৷ যত ধরনের বৈষম্য তৈরি করা দরকার, সেটা তারা করেছে৷ আমরা সেনাশাসন প্রত্যাহার চাই৷ কল্পনা চাকমার গুমের যে ঘটনা ঘটেছিল তার তদন্ত ও সন্ধান চাই৷ দীর্ঘদিন ধরে যে স্বৈরাচারী শাসনব্যবস্থা ছিল সেটা নির্মূল করা বেশ চ্যালেঞ্জিং হবে৷ দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা নির্মূল করে সংস্কার করাই হবে অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম চ্যালেঞ্জ৷
ছবি: DW
জয়নাল, পান বিক্রেতা
সরকারের কাছে আমার প্রত্যাশা, দ্রব্যমূল্য যেন কম থাকে, সাধারণ মানুষ যেন কম দামে খাবার কিনতে পারে৷ তবে মনে হয় দ্রব্যের দাম কমানো অনেক কঠিন হবে৷ অবশ্য সরকার যদি আন্তরিকভাবে চেষ্টা করে, তাহলে হয়তো পারবে৷
ছবি: DW
ইসরাত জাহান ইমু, শিক্ষার্থী
দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন সময়ে হয়ে আসা ছাত্র আন্দোলনের সকল দাবি যেন এই সরকার পূরণ করে৷ এছাড়া অফিস-আদালত থেকে শুরু করে সব প্রতিষ্ঠানে গণতন্ত্র নিশ্চিত করতে হবে৷ কাঠামোগত দুর্নীতি দূর করতে হবে৷ নতুন সংবিধান তৈরি করে প্রশাসনিক কাঠামো এমনভাবে পরিবর্তন করতে হবে যেন পরবর্তী কোনো সরকার আবার স্বৈরাচারী হয়ে উঠতে না পারে৷
ছবি: DW
11 ছবি1 | 11
গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে সরকারের কর্মসূচি
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে মাসব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। গত ১৯ জুন সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী জানিয়েছিলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে স্মরণ করতে আগামী ১ জুলাই থেকে বিশেষ কর্মসূচি পালনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, জুলাইয়ের ১ তারিখ থেকে কর্মসূচি শুরু হবে। কিন্তু মূল ইভেন্ট শুরু হবে জুলাইয়ের ১৪ তারিখ থেকে। এটি চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সংস্কৃতি উপদেষ্টা বলেন, এই কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য জুলাইয়ে যেরকম পুরো বাংলাদেশ এক হয়েছিল, আবার সে অনুভূতিটাকে ফিরিয়ে আনা।
ঘোষিত কর্মসূচি: ১ জুলাই মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডা ও গির্জাসহ সব উপাসনালয়ে শহীদদের স্মরণে দোয়া ও প্রার্থনা। জুলাই ক্যালেন্ডার দেওয়া হবে। জুলাই হত্যাযজ্ঞের খুনিদের বিচারের দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচির শুরু হবে; যা চলবে ১ আগস্ট পর্যন্ত। জুলাই শহীদ স্মরণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাবৃত্তি চালু হবে।
৫ জুলাই, বিভিন্ন সময়ে অবৈধ আওয়ামী সরকারের জুলুম নির্যাতন প্রচারে দেশব্যাপী পোস্টারিং কর্মসূচি চালু। ৭ জুলাই, Julyforever.org ওয়েবসাইট চালু। ১৪ জুলাই ‘মোরা ঝঞ্ঝার মতো উদ্দাম', ১৪ জুলাইয়ের ভিডিও শেয়ার, একজন শহীদ পরিবারের সাক্ষ্য; যা চলবে ৩৬ জুলাই পর্যন্ত। জুলাই নারী দিবস হিসেবে এই দিনটিকে উল্লেখ করা হয়েছে। এদিন প্রত্যেক জেলায় জুলাই শহিদ স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন। শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে ৬৪টি জেলায় ও দেশের প্রতিটা বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাইয়ের ভিডিও প্রদর্শন। টিএসসিতে ডকুমেন্টারি প্রদর্শন, প্রজেকশন ম্যাপিং ও জুলাইয়ের গান এবং ড্রোন শো।
‘বিএনপি বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে’
This browser does not support the audio element.
১৫ জুলাই, ‘আমি চিৎকার করে কাঁদিতে চাহিয়া', ভিডিও শেয়ার, জুলাইয়ের স্মৃতিচারণ, ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী ও জুলাইয়ের গান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এলইডি ওয়াল ইনস্টলেশন, প্রজেকশন ম্যাপিং, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ডকুমেন্টারি প্রদর্শন। ১৬ জুলাই, ‘কথা ক', ভিডিও শেয়ার, শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে তিনটি বিভাগীয় শহরে ‘ভিআর শো' প্রদর্শন, রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ আবু সাঈদ স্মরণ অনুষ্ঠান, জুলাইয়ের গান এবং ড্রোন শো প্রদর্শন, চট্টগ্রামে জুলাইয়ের গান এবং ড্রোন শো প্রদর্শন।
১৭ জুলাই, ‘শিকল-পরা ছল', ভিডিও শেয়ার। প্রতীকী কফিন মিছিল, দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘জুলাই স্মরণ' অনুষ্ঠান। বিভিন্ন প্রাইভেট ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট শিক্ষক ও শিক্ষিকাদের ১৭ জুলাইয়ের অভিজ্ঞতা বর্ণনা অনুষ্ঠান। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের নিয়ে ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী। ১৮ জুলাই, ‘আওয়াজ উডা', ভিডিও শেয়ার, ১ মিনিটের প্রতীকী ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট, জুলাইয়ের গান, ডকুমেন্টারি প্রদর্শন ও ড্রোন শো, ঢাকার বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ‘জুলাই স্মরণ' অনুষ্ঠান, ট্র্যাশন শো ও ম্যারাথন। ১৯ জুলাই, ‘কত বিপ্লবী বন্ধুর রক্তে রাঙা', ভিডিও শেয়ার, শহীদদের স্মরণে সমাবেশ-১ নরসিংদী, সাভার, ঢাকাসহ সারা দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে জুলাইয়ের তথ্যচিত্র প্রদর্শন। এইদিনটিকে গণহত্যা ও ছাত্র-জনতার প্রতিরোধ দিবস হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এরপর থেকে প্রতিদিনই ভিডিও প্রচারসহ বেশ কিছু কর্মসূচী রয়েছে। শেষে ৩৬ জুলাই (৫ আগস্ট) ‘শোনো মহাজন' নামে ভিডিও শেয়ার, ৬৪ জেলার কেন্দ্রে জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ, শহীদ পরিবারের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ, শহীদদের জন্য প্রার্থনা, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ অভিমুখে বিজয় মিছিল, এয়ার শো, গানের অনুষ্ঠান, ‘জুলাইয়ের ৩৬ দিন'সহ জুলাইয়ের অন্যান্য ডকুমেন্টারি প্রদর্শন, ড্রোন শো এবং র্যাপের সঙ্গে বচসা।
এক্সপ্লেইনার: বাংলাদেশ পরিস্থিতি ও উপমহাদেশের রাজনীতি
20:06
বিএনপির মাসব্যাপী কর্মসূচি
জুলাই অভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তিতে বিএনপির বিশেষ আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যোগ দিয়েছেন দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। গুলশানের বাসভবন ফিরোজা থেকে ওই সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত হন খালেদা জিয়া। এছাড়া তার ছেলে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও লন্ডন থেকে ওই সভায় ভার্চুয়ালি যোগ দেন। মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে এই আলোচনা সভা শুরু হয়।
‘জুলাই-অগাস্ট গণঅভ্যুত্থান, শোক ও বিজয়ের বর্ষপূর্তি পালন কমিটির' আহ্বায়ক রুহুল কবির রিজভী বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ৩৬ দিনের যে কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি, সেগুলোর মধ্যে প্রথম হলো এই আলোচনা সভা। এছাড়া অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে আছে, বিজয় মিছিল, মৌন মিছিল, ছাত্র সমাবেশ, আলোচনা সভা, সেমিনার, রক্তদান, গ্রাফিতি অঙ্কন, পথনাটক, ফুটবল টুর্নামেন্ট, শিশু অধিকারবিষয়ক অনুষ্ঠান, ডেঙ্গু ও করোনা প্রতিরোধে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমসহ ২২টি ভিন্নধর্মী আয়োজন। মঙ্গলবার প্রথম প্রহরে রাত ১২টা ১ মিনিটে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মোমবাতি জ্বালিয়ে ‘আলোয় আলোয় স্মৃতি সমুজ্জ্বল' কর্মসূচি পালনের মধ্য দিয়ে অভ্যুত্থান ঘিরে বিএনপির কর্মসূচি শুরু করেছে।
বিএনপির চার দশক
৪৬ বছরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল, বিএনপি৷ দেশের অন্যতম বড় রাজনৈতিক দলটির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া৷ যুক্তরাজ্যে নির্বাসিত আছেন সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান৷ এত বছরে কী ছিল দলটির পথচলা?
ছবি: Getty Images/Keystone
প্রেক্ষাপট
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সেনা সদস্যদের গুলিতে সপরিবারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিহত হন৷ এরপর প্রায় তিন বছর বাংলাদেশে ছিল অনির্বাচিত সরকার৷ সে সময় দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেন তৎকালীন সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান৷ পরে ১৯৭৯ সালের দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন এগিয়ে এলে রাজনৈতিক দল গঠন করেন৷
ছবি: imago/Belga
প্রতিষ্ঠা
বিএনপি গঠন করার আগে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল (জাগদল) নামে আরেকটি দল তৎকালীন উপ-রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুস সাত্তারকে সভাপতি করে গঠন করা হয়েছিল৷ পরে তা বিলুপ্ত করে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে প্রধান করে গঠিত হয় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল, বিএনপি৷ ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর রমনা রেস্তোরাঁয় আনুষ্ঠানিক ঘোষণাপত্র পাঠ করে দলের যাত্রা করেন জিয়াউর রহমান৷
ছবি: imago/United Archives International
নির্বাচন ও মৃত্যু
জিয়া রাষ্ট্রপতি থাকা অবস্থাতেই ১৯৭৯ সালে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচন৷ এ নির্বাচনে বিএনপি ২৯৮টি আসনের মধ্যে ২০৭টিতে জয়লাভ করে৷ তখন মালেক উকিলের নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ ৩৯টি ও মিজানুর রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ ২টি আসনে জেতে৷ নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেবার মাত্র দুই বছরের মাথায় ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামের সার্কিট হাউসে এক ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানে নিহত হন৷
ছবি: Getty Images/Keystone
খালেদার রাজনীতিতে আসা
জিয়ার মৃত্যুর পর নেতাকর্মীদের আহ্ববানে তিনি ১৯৮২ সালের ৩ জানুয়ারি বিএনপিতে যোগ দেন৷ ১৯৮৩ সালের মার্চ মাসে তিনি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হন৷ ১৯৮৩ সালের ১ এপ্রিল দলের বর্ধিত সভায় প্রথম বক্তৃতা করেন৷ ১৯৮৪ সালের ১০মে পার্টির চেয়ারপার্সন নির্বাচিত হন৷
ছবি: AP
এরশাদবিরোধী আন্দোলন ও খালেদা জিয়া
জিয়ার মৃত্যুর পর উপরাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুস সাত্তার রাষ্ট্রপতি হন৷ তবে তাঁকে হটিয়ে ১৯৮৩ সালে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ রাষ্ট্রক্ষমতায় আসেন৷ বিএনপি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে স্বৈরাচারী এরশাদ সরকার বিরোধী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে৷ এই আন্দোলনে বেগম জিয়া ও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা দু’জনই ছিলেন, যদিও আপোষহীনতার কারণে খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তা বেড়ে যায়৷
ছবি: Getty Images/AFP/FARJANA K. GODHULY
সরকার গঠন
১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচন৷ এ নির্বাচনে জয়লাভ করে সরকার গঠন করে বিএনপি৷ ১৯৯৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল প্রশ্নবিদ্ধ আরেকটি নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠন করে৷ কিন্তু আওয়ামী লীগসহ বিরোধী দলগুলোর প্রতিবাদে মাত্র ৪৫ দিন টিকতে পারে সেই সরকার৷
ছবি: AP
শেষবার সরকারে
২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় নির্বাচনে জিতে আবারো সরকার গঠন করে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট৷এই সরকারই ছিল বিএনপির শেষ সরকার৷ এই সরকারের মেয়াদ শেষ হবার পর নানা বিতর্ক ও ঘটনার প্রেক্ষাপটে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় ছিল প্রায় দুই বছর৷ সে সময় খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনা উভয়কেই জেলে যেতেও হয়েছিল৷ পরে অবশ্য দু’জনই ছাড়া পান৷
ছবি: Getty Images
জোটের রাজনীতি
বিএনপি এ পর্যন্ত বারবার জোট করেছে৷ প্রথম সাতদলীয় জোট করে এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে৷ এরপর জামায়াতে ইসলামীসহ গড়ে চারদলীয় জোট৷ পরবর্তীতে জোটে দলের সংখ্যা বাড়তে থাকে৷ সেটি ঠেকে বিশ দলীয় জোটে৷
ছবি: bdnews24.com
রাজনৈতিক ভুল ও কারাগারে খালেদা
সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের পর আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে অংশ নেয়নি বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট৷ এই নির্বাচনে অংশ না নেয়াকে অনেকেই রাজনৈতিক ভুল বলে মনে করেন৷ তাঁর বিরুদ্ধে থাকা নানা মামলার মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আদালত তাঁকে কারাদণ্ড দেয়৷
ছবি: picture-alliance/epa/A. Abdullah
বিদেশে তারেক রহমান
মানি লন্ডারিংসহ নানা মামলার কারণে যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয়ে আছেন জিয়াপুত্র ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান৷
ছবি: AP
10 ছবি1 | 10
জুলাই ঘোষণাপত্রের দাবিতে অনড় এনসিপি
জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদ আদায়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) অনড় থাকবে বলে জানিয়েছেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে টালবাহানা সহ্য করা হবে না। মঙ্গলবার গণঅভ্যুত্থানপূর্তি উপলক্ষে রংপুরের পীরগঞ্জে বাবনপুর জাফরপাড়া গ্রামে শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের পর এ কথা বলেন তিনি। চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক দফার ঘোষক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘‘একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে হলে আমাদের অবশ্যই বিচার, সংস্কার এবং গণপরিষদের মাধ্যমে নতুন সংবিধানের দিকে যেতে হবে এবং জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে যে টালবাহানা শুরু হয়েছে, তা সহ্য করা হবে না।''
নাহিদ ইসলাম আরো বলেন, ‘‘এনসিপির ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা' কর্মসূচি মানে দেশ গঠনের জন্য যে উদ্যোগ দরকার তার জন্য এ কর্মসূচি। এ কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা মানুষের সঙ্গে কথা বলবো। আবু সাঈদের স্বপ্ন, জুলাইয়ের স্বপ্ন- আমরা মানুষের কাছে তুলে ধরবো। আবু সাঈদ লড়াইয়ের অনুপ্রেরণা। তিনি বলেন, আবু সাঈদের মতো অন্য সব শহীদেরা ফ্যাসিবাদী বিলোপের বিরুদ্ধে আমাদের যে লড়াই, তার অনুপ্রেরণা। যুগ যুগ ধরে বাংলাদেশের মানুষ আবু সাঈদ, ওয়াসীম, মুগ্ধসহ সব শহীদদের এবং আহত যোদ্ধাদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।''