1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জুলাই আন্দোলনের বিচারে তড়িঘড়ি করা উচিত হবে না: রাশনা ইমাম

১৮ জুলাই ২০২৫

জুলাই আন্দোলনের বিচারে তড়িঘড়ি করা হলে তা বিচারপ্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে বলে মনে করেন ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম৷ নারীদের এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে যথাযথ পরিবেশ তৈরি করতে না পারার পেছনে সরকারের ব্যর্থতার কথা জানালেন তিনি৷

Bangladesch Dhaka | Rashna Imam, Barrister
ছবি: DW

ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী৷ পড়াশোনা করেছেন যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড ও বাকিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ে৷ ২০১০ সাল থেকে তিনি বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনে আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন৷ আইন বিশেষজ্ঞ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক হিসেবে বাংলাদেশের গণমাধ্যমে এখন পরিচিত মুখ এই  আইনজীবী৷ ডয়চে ভেলেকে দেয়া সাক্ষাৎকারে জুলাই আন্দোলন ও তার পরবর্তী বাংলাদেশের সরকার, নতুন রাজনীতি, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিচার, নারী অধিকারসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন রাশনা ইমাম৷

ডয়চে ভেলে: জুলাই আন্দোলনের এক বছর পার করছে বাংলাদেশ৷ আজকের এই সময়ে এসে এক বছর আগের সেই আন্দোলন বা গণঅভ্যুত্থানকে কীভাবে দেখবেন?

রাশনা ইমাম: এটা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ছিল প্রথমে এভাবেই দেখবো৷ ১৫ বছর ধরে আমরা দেখেছি যে রাষ্ট্রের প্রত্যেকটা অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কীভাবে দলীয়করণ করা হয়েছিল, কীভাবে ধ্বংস করা হয়েছিল৷ ল অ্যান্ড অর্ডার, জুডিশিয়াল সার্ভিসকে পুরোপুরি রাজনীতিকরণ করা হয়েছিল৷ তাছাড়া ইলেকশনগুলো শ্যাম (জাল) ইলেকশন ছিল৷ আমরা আমাদের ভোটাধিকার একেবারেই প্রয়োগ করতে পারিনি বিশেষ করে গত তিনটা নির্বাচনে৷ অর্থনীতির অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয় ছিল, এখনও যে খুব উন্নতি হয়েছে তা না, কারণ রাতারাতি তো এগুলোর পরিবর্তন হবে না৷

টাকা পাচার থেকে শুরু করে ফাইন্যান্সিয়াল যত রকমের স্ক্যান্ডাল (কেলেঙ্কারি) হয়েছে, তো সব দিক থেকেই জুলাই অভ্যুত্থান একটা বিস্ফোরণ ছিল এবং  অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ছিল৷ এর ফলে আমরা রাষ্ট্র মেরামতের একটা সুযোগ পেয়েছি৷ এই সুযোগটা আমরা কিছুদূর কাজে লাগিয়েছি৷ কিন্তু আরো কার্যকরভাবে তা কাজে লাগানো যেত৷

আপনি বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত আছেন৷ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে একটি বড় অভিযোগ ছিল তারা বিচার ব্যবস্থাকে রাজনৈতিক স্বার্থে এবং  ভিন্নমত দমনে ব্যবহার করেছে৷ ঢালাও মামলা, গ্রেপ্তার, এসব নিয়ে বিরোধী দল, মানবাধিকার সংস্থাগুলোর সমালোচনা ছিল৷ এখন বিচার ব্যবস্থার পরিস্থিতি কেমন?

এটা একেবারেই সত্যি যে বিচার ব্যবস্থাকে দলীয়করণ করা হয়েছিল এবং অনেকটা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল ভিন্নমত দমনে৷ এখন রাতারাতি বা কিছুদিনের মধ্যে বা কয়েক বছরের মধ্যে এটাকে রিভার্স করা সম্ভব হবে না৷ এটা বাস্তব না৷ আমার মতে অল্প হলেও আমরা সংস্কার দেখতে পাচ্ছি৷ যেমন, সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল যেটা সাংবিধানিক বিচারকদের উপরে এনকোয়েরি (তদন্ত) করে রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করে তাদেরকে অপসারণ করা উচিত কিনা, যদি কোন নালিশ যায় তাদের কাছে৷ এই ব্যবস্থাটা কিন্তু ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে বাতিল করে দিয়েছিল৷ সেটা আবার রিস্টোর (পুনঃস্থাপন) করা হয়েছে৷ এটা একটা বড় পদক্ষেপ বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য৷

এছাড়া একটি অর্ডিন্যান্স জারি করা হয়েছে, যাতে করে নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বাধীন বডি প্রতিষ্ঠা করা যায় বিশেষ করে সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের নিয়োগের ক্ষেত্রে৷ এই অর্ডিন্যান্স নিয়ে অনেক ধরনের তর্ক-বিতর্ক আছে যে তা সংবিধানের সাথে হয়তো পুরোপুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়৷ কিন্তু আমাদের ওইদিকে এগিয়ে যাওয়া দরকার ছিল, যাতে একটা স্বাধীন বডি গঠন করা যায় যারা বিচারক নিয়োগ করতে পারবে৷ কারণ আমরা দেখেছি বিচারক নিয়োগের ক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়াটা পুরোপুরি দলীয়করণ করা হয়েছিল, নির্বাহী বিভাগের নিয়ন্ত্রণে ছিল বিচারক নিয়োগ এবং দলীয় স্বার্থে বিচারক নিয়োগ করা হচ্ছিল৷ তো সেটা বন্ধ করার একটা পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে এই অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে৷

এছাড়া আরেকটা দাবি আমাদের প্রধান বিচারপতি যেটা উত্থাপন করেছেন সরকারের কাছে, দেশের মানুষের কাছে সেটা হচ্ছে, একটি পৃথক সচিবালয় বিচার বিভাগের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ বিশেষ করে বিচার বিভাগের অর্থনৈতিক এবং প্রশাসনিক স্বাধীনতার জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ৷ আমি জানি না আপনি জানেন কিনা এখন কিন্তু বিচার বিভাগ প্রায় পুরোপুরি নির্ভর করে মন্ত্রণালয়ের উপরে আর্থিক এবং প্রশাসনিক সহায়তার জন্য৷ এটা যতক্ষণ পর্যন্ত পৃথক করা না হবে সত্যিকার অর্থে বিচার বিভাগ স্বাধীন হতে পারবে না৷

...অল্প হলেও কিছু সংস্কার এসেছে কিন্তু আগামীতে সেগুলো টেকসই হয় কী না সেটা নির্ভর করবে রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি থাকবে কী না তার উপরে৷

জুলাই আন্দোলনের ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ, তৎকালীন সরকারের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিচার চলছে? সরকারের সামনে দ্রুত বিচারের একটি চাপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ জুলাই আন্দোলনের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে আপনার মূল্যায়ন কী?

দ্রুত বিচারের যে দাবি উঠেছে এই দাবি নিয়ে কিন্তু আমার কিছু আশঙ্কা আছে৷ লক্ষ্য করবেন, আওয়ামী লীগ আমলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যতগুলো মামলা হয়েছিল, যতগুলো কনভিকশন হয়েছিল সব কিন্তু প্রশ্নবিদ্ধ ছিল৷ প্রশ্নবিদ্ধ ছিল কারণ ডিউ প্রসেস (যথাযথ প্রক্রিয়া) অনুসরণ করা হয়নি, প্রশ্নবিদ্ধ ছিল কারণ তড়িঘড়ি করে করা হয়েছে৷ এই একই ভুল আমাদের আবার করা উচিত হবে না৷ এই বিচারগুলো তড়িঘড়ি করে একেবারেই করা উচিত হবে না৷ সময় নিয়ে ডিউ প্রসেস ফলো করে বিচারগুলো করা উচিত, ট্রায়ালগুলো করা উচিত, যাতে করে বিশেষ করে গোটা বিশ্বের কাছে এগুলো প্রশ্নবিদ্ধ না হয়৷

...ধীরে সুস্থে বলতে আমি বলছি না যে ঝুলে যাওয়া উচিত৷ কিন্তু রাইট পেইসে (যথাযথ গতিতে) এগিয়ে যাওয়া উচিত৷

যারা এই দাবিগুলো তুলছে যে দ্রুত বিচার করতে হবে এই দাবিগুলো আমার কাছে তো কিছুদূর মনে হচ্ছে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দাবি৷ দ্রুত বিচারের অজুহাতটা ব্যবহার করছে নির্বাচন পেছানোর জন্য৷ অথবা তাদের ধারণাই নাই যে একটি বিচার প্রক্রিয়ায় কতটুক সময় লাগতে পারে৷ প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত এটা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার৷

এই যে বিচারের প্রক্রিয়ার কথা বললেন, যেটা নিয়ে এখন সবচেয়ে বড় সমালোচনা হচ্ছে ঢালাও মামলার ঘটনাগুলো নিয়ে৷ অনেক গ্রেফতার, জামিন না হওয়া, এগুলো নিয়ে বিতর্ক তৈরি হচ্ছে৷ এই বিষয়গুলোকে আপনি উদ্বেগজনক বলে মনে করেন কি?

হ্যাঁ, এই বিষয়গুলো উদ্বেগের জায়গা৷ প্রথমে যেমন হচ্ছিলো যাকে তাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছিলো, একটা বাণিজ্য হয়ে যাচ্ছিলো, হত্যা মামলায় কাউকে অভিযুক্ত করা সেটা হয়তো কিছুদূর কমেছে৷

আমার যে ভয়টা, সেটা হলো এগুলো পুরো বিচার ব্যবস্থাকে বিতর্কিত করে তুলবে৷ আওয়ামী লীগের অপরাধের, অপকর্মের তো কোনো কমতি নেই৷ তাহলে তাদের বিরুদ্ধে যে চার্জ গঠন করবো বা মামলা ঠুকবো সেটার তো অনেক যথাযথ কারণ আছে৷ কিন্তু ঢালাওভাবে হত্যা মামলায় ১০০ জন/২০০ জনকে অভিযুক্ত করে দিলাম এগুলোতে তো কোনো লাভ হবে না, বরং হিতে বিপরীত হবে৷ দেখা যাবে যে পরবর্তীতে তারা খালাস পেয়ে যাচ্ছে কারণ কোনো প্রমাণ নেই৷ একজন বিচারপতি তার সামনে থাকা প্রমাণের ভিত্তিতেইতো রায়টা দেবেন৷

ভিক্টিমদের অনেকে জানেনও না কীভাবে মামলা দায়ের করতে হয় এবং তারা কিন্তু ন্যায়বিচার পাচ্ছে না৷ বরং দেখা যাচ্ছে যারা কোনো ব্যক্তিগত কারণে কাউকে হত্যা মামলায় ফাঁসাতে চাচ্ছে এরা টাকা পয়সা দিয়ে নামগুলো ঢুকিয়ে দিচ্ছে৷ অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে যাদের বিরুদ্ধে মামলা করছে বা যাদের নাম ঢুকাচ্ছে এদের কোনো ধরনের সম্পৃক্ততাই ছিল না আওয়ামী লীগের সাথে৷

এগুলো পুরো বিচার ব্যবস্থাকে বিতর্কিত করে তুলবে: রাশনা ইমাম

This browser does not support the audio element.

জুলাই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটা বড় ধরনের পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ তরুণদের একটি অংশ রাজনীতিতে শুধু সক্রিয়ই হয়নি, নতুন দল গঠন করেছে৷ সব মিলিয়ে বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে কি পরিবর্তনের কোনো আভাস মিলছে? আপনার প্রত্যাশা কী এক্ষেত্রে?

প্রত্যাশা তো অনেককিছুই ছিল৷ কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত হতাশ হয়েছি আবারও৷ যে সমস্যা ছিল আমাদের বিদ্যমান রাজনীতিতে সেই সমস্যাগুলো জোরেশোরে এই তরুণদের দলের মধ্যেও চলছে৷ শুধু তা না এই দলটার জন্ম এবং যেই অসাধারণ সমর্থন পেয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছ থেকে সেটাও কিন্তু অনেক ধরনের প্রশ্ন তুলেছে যে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনের কোনো নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারবে কিনা৷

....এই নতুন দল বারবার যে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের কথা বলছে আমিতো সেটার কোনো ইঙ্গিত কোনো কিছুতেই পাচ্ছি না, তাদের কর্মেও পাচ্ছি না৷ যা যা শুনতে পাচ্ছি অত্যন্ত দুঃখজনক৷ যেমন কীভাবে ফান্ডেড হচ্ছে এই নিয়ে একটা ধোঁয়াশা এখনো রয়ে গেছে৷ কোনো নেতা বা কোনো নেত্রী ওনাদের স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে পারেননি৷ তারা যখন ক্যাম্পেইনিংয়ে যাচ্ছে পেছনে ২০০/৩০০ টি মোটরসাইকেল থাকছে৷ তাহলে সেই শো অব স্ট্রেংথ (শক্তি প্রদর্শন) বা মাসল (পেশিশক্তি) দেখাচ্ছে যেটা বিদ্যমান সব রাজনৈতিক দল দেখাচ্ছিল এত বছর৷ তাহলে নতুনটা কী?

জুলাই আন্দোলনে নারীদের ব্যাপকভাবে সক্রিয় অংশগ্রহণ লক্ষ্য করা গিয়েছিল৷ সম্প্রতি মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, জুলাই আন্দোলনে সামনে থাকা নারীরা পরবর্তী সময়ে কেন মুখ লুকিয়ে ফেললেন, তা বোঝার দরকার আছে৷ জুলাই আন্দোলনে অংশ নেওয়া অনেক নারী ঘর বন্ধ করে বসে আছেন৷ তারা হতাশাগ্রস্ত৷ এই পরিস্থিতি কেন হলো বলে আপনি মনে করেন?

এটা খুবই দুঃখজনক কারণ জুলাই আন্দোলনে ওনাদের অংশগ্রহণ খুবই দৃশ্যমান ছিল৷ এটা আমরা সবাই দেখেছি এবং অ্যাপ্রিশিয়েট করেছি৷ কিন্তু ক্রেডিট নেয়ার সময় যখন এলো বা দৃশ্যমান পদ পাওয়ার যখন বিষয় এলো তখন হাতেগোনা দুই একজন নারী ছাড়া বাকিদের কোনো অস্তিত্বই দেখতে পেলাম না৷ এটা কিন্তু ইন্ডিকেটিভ (ইঙ্গিতপূর্ণ)৷

সত্যিকার অর্থে নারীদের ক্ষমতায়ন কিন্তু এনসিপিতে আমি দেখতে পাচ্ছি না৷

এটার আরেকটা কারণ যেটা হতে পারে আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি সরকার এখনও নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি৷.... সেটা একটা বড় ধরনের কারণ হতে পারে, যে এই নারীরা কেন এগিয়ে আসছে না৷ কারণ এগিয়ে আসার অর্থই কিন্তু হয়রানির শিকার হওয়া৷ যেটা আমরা দেখছি সোশ্যাল মিডিয়াতেও হয়রানির শিকার হচ্ছে এমনকি এনসিপির নেত্রীরাও৷ এটাতো কিছুদূর হলেও সরকারের ব্যর্থতা যে তারা এমন একটি পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারেনি যেখানে নারীরা সামনে এসে তাদের ক্রেডিট নিতে পারে যেই কাজগুলো তারা করেছে৷

শেষ প্রশ্ন, জুলাই আন্দোলন বাংলাদেশের জন্য পরিবর্তনের একটি সুযোগ নিয়ে এসেছে৷ সেই সুযোগ যথাযথভাবে কাজে লাগানো কি যাচ্ছে বাংলাদেশ কোন পথে রয়েছে?

জুলাই আন্দোলনের কারণে আমরা একটা সুযোগ পেয়েছিলাম, রাষ্ট্র মেরামতের জন্য৷ ঐকমত্য কমিশন সব রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে বসছে যাতে ঐক্যমত স্থাপন করা যায়৷ ওনাদের বক্তব্য ছিল ঐক্যমত যেসব ব্যাপারে হবে সেগুলো বাস্তবায়ন করে ওনারা নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাবেন৷ তো এগুলোর বাস্তবায়ন কিন্তু কোনোটাই এখনও হয়নি কিছু হাতেগোনা ছাড়া৷

আরেকটা বিষয় হলো ধরুন ঐক্যমত অনেকগুলো বিষয়ে হয়েছে, কিন্তু সমস্যা হচ্ছে সেই সংস্কারগুলো আনতে হলে আমাদের সংবিধানে হাত দিতে হবে৷ এখন সংবিধানে হাত তো অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দিতে পারবে না৷ আপনি যদি সংবিধান সংশোধন করতে চান সেক্ষেত্রে আমাদের নির্বাচিত সরকার দরকার, পার্লামেন্ট দরকার যেটা আমাদের এখন নেই৷ আরেকটা দাবি উঠছিল তাহলে একটা গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে সংবিধানটাকে যাতে পুনর্লিখন করা যায়৷ কিন্তু আমার ব্যক্তিগত মতামত সেটার একেবারেই প্রয়োজন নেই কারণ, সংবিধানের সবকিছু খারাপ না৷ সংশোধন করেই যে সমস্যাগুলো আছে সেগুলো কিন্তু সংবিধান থেকে দূর করা যাবে৷ যতদূর শুনেছি আমাদের প্রধান উপদেষ্টা তিনিও বলেছেন ওনারা গণপরিষদ নির্বাচনের দিকে যাচ্ছেন না, সংবিধান পুনর্লিখনের দিকে যাচ্ছেন না৷

তাহলে যেটা দাঁড়াচ্ছে বেশিরভাগ বড় সংস্কারই ওনাদের করা সম্ভব হবে না৷ কারণ সেজন্য সংবিধানে হাত দিতে হবে৷ কিন্তু ছোট ছোট সংস্কার যেগুলো অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে করা যায় সেগুলো কিছু কিছু ওনারা করছেন৷ কিন্তু আমার আশঙ্কা একটাই এই রিফর্মগুলো কতটুকু টেকসই হবে দীর্ঘমেয়াদে! কারণ টেকসই না হলে সবকিছুই তো অহেতুক হয়ে যাবে৷ সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ও কিন্তু অনেক সংস্কারের কথা বলা হয়েছিল কিন্তু আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসলো সেগুলো বেশিরভাগই দিনের আলো দেখেনি৷

আশা করি যারাই আসবে ক্ষমতায় তারাই সংস্কার যেগুলো হচ্ছে সেগুলোকে টেকসই করে তুলবে এবং সেগুলো প্রকৃতপক্ষে বাস্তবায়ন করবে এবং যে ব্যাপারে ঐক্যমত হচ্ছে সেগুলোও তারা বাস্তবায়ন করবে যখন ক্ষমতায় আসবে৷

জুলাই-আগস্টের উত্তাল দিনগুলি

02:56

This browser does not support the video element.

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ