জেব্রা মাছ বা ডোরাকাটা মাছ আমাদের অনেকের পরিচিত, বিশেষ করে যাঁরা অ্যাকোয়ারিয়ামে মাছ পোষেন, তাঁদের৷ কিন্তু এই ‘জেব্রা দানিও’ যে একটি ‘মডেল অরগ্যানিজম’ বা ‘আদর্শ প্রাণিসত্তা’, তা কি জানতেন?
বিজ্ঞাপন
ডোরাকাটা ‘জেব্রা দানিও' অ্যাকোয়ারিয়ামের মাছ হিসেবে খুবই জনপ্রিয়৷ মাছটির বাস হিমালয় পর্বতমালার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের নদী ও ঝর্ণাগুলিতে৷ আবার বৈজ্ঞানিক গবেষণাতেও এদের ব্যবহার করা হয়, যেমন জার্মানির ট্যুবিঙেন শহরের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানে৷
মনুষ্যদেহের বিকাশ বোঝার জন্য পরীক্ষাগারে এই জেব্রা মাছ পর্যবেক্ষণ করা হয়: ট্যুরিঙেন শহরে মাক্স প্লাঙ্ক ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা ঠিক যা করছেন৷ ১৯৯৫ সালে চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ক্রিস্টিয়ানে ন্যুসলাইন-ফলহার্ড এখানেই কাজ করেন৷ তিনিই প্রথম আবিষ্কার করেন যে, মানুষ এবং অপরাপর প্রজাতির জীবদের সঙ্গে জেব্রা মাছের অনেক সাদৃশ্য আছে, যে কারণে জেব্রা মাছকে ‘মডেল অরগ্যানিজম' বা আদর্শ প্রাণিসত্তা বলে গণ্য করা হয়৷ ক্রিস্টিয়ানে ন্যুসলাইন-ফলহার্ড বলেন:
মাছ খান, সুস্থ থাকুন
মাছে তেমন কোনো চর্বি নেই, রয়েছে প্রচুর প্রোটিন, যা শারীরিক ও মানসিকভাবে মানুষকে ফিট রাখতে সহায়তা করে৷ বলেন খাদ্য বিশেষজ্ঞরা৷
ছবি: DW/Sarah Wiertz
মাংসের বদলে মাছ
আজকাল প্রায়ই লক্ষ্য করা যায় অনেক জার্মানই মাংসের পরিবর্তে নানা ধরণের মাছ খেতে পছন্দ করেন৷ বিশেষকরে যাঁরা স্বাস্থ্য সচেতন তাঁরা তো অবশ্যই৷ মাছে তেমন কোনো চর্বি নেই, রয়েছে প্রচুর প্রোটিন, যা শারীরিক ও মানসিকভাবে মানুষকে ফিট রাখতে সহায়তা করে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/T. Schamberger
খাবারের মুকুট
জার্মানিতে মাছকে বলা হয় ‘খাবারের মুকুট’৷ মাছ মস্তিষ্কের রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে৷ জার্মান খাদ্য গবেষণা কেন্দ্রের পরামর্শ, প্রতিটি মানুষেরই সপ্তাহে অন্তত দু’দিন মাছ খাওয়া প্রয়োজন৷ মাছ হৃদরোগ ও ক্যানসার থেকেও দূরে থাকতে সাহায্য করে৷ মাছ বুদ্ধি বাড়াতে সাহায্য করে৷
ছবি: AP
নানা জাতের মাছ
জার্মানিতে নানা রকম মাছ পাওয়া যায়৷ ছোট বড়, নদীর মাছ, সামুদ্রিক মাছ, লোনা পানির মাছ, হ্রদের মাছ, তাজা মাছ, হিমায়িত, ধূমায়িত এবং টিনজাত মাছ৷
ছবি: picture alliance/Bildagentur Huber
মাছ ভাজি
জার্মানরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মাছ ভাজি খায়, আমাদের বাঙালিদের মতো রান্না করে খুবই কম খেয়ে থাকেন তাঁরা৷ ডয়চে ভেলের ক্যান্টিনে সপ্তাহে প্রায় দু’দিন মাছ দেওয়া হয়৷ ক্যান্টিনে এরকম একটি ট্রাউট মাছের ভাজির দাম ৭ ইউরো, বাইরে যার দাম প্রায় দ্বিগুণ৷
ছবি: Fotolia/Comugnero Silvana
কাটা মাছ
বাজারে পাঠানোর আগে এভাবেই মাছ ‘প্রসেস’ করা হয়৷ মাছ কেটে পরিষ্কার করে, কাঁটা বেছে ‘স্লাইস’ করে তবেই সেটা বাজারে যায়৷ তবে কিছুটা ছোট আকারের মাছ কার্প, ট্রাউট, হেরিং, সি ব্রাস ইত্যাদি মাছ আস্তই পাওয়া যায় বাজারে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
সখের জেলে
জার্মানিতে অনেকেই সখ করে মাছ ধরেন, তবে তাঁদের অবশ্যই মাছ ধরার লাইসেন্স থাকতে হবে৷ তাছাড়া যে কোনো জায়াগায় মাছ ধরা যায় না, শুধু যেসব জায়গায় অনুমতি রয়েছে সেখানেই মাছ ধরা সম্ভব৷
ছবি: DW
তাজা মাছের বাজার
এভাবেই সুন্দর করে সাজানো থাকে মাছের বাজারে মাছগুলো৷ দেখে মনে হয়, মাছগুলো যেন মাছ-প্রেমীদের ডাকছে৷ মাছ মস্তিষ্ককে সজাগ রাখে, তাই ডাক্তাররা মাছ খেতে সবসময়ই পরামর্শ দিয়ে থাকেন, বিশেষকরে ছাত্র-ছাত্রী এবং বয়স্কদের৷ তবে সবার জন্যই মাছ খুব উপাদেয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ধূমায়িত মাছ
ধূমায়িত বা ‘স্মোক্ড’ মাছ জার্মানদের কাছে বেশ প্রিয়, বিশেষ করে রুটির সাথে তাঁরা এ ধরনের বিশেষ প্রক্রিয়ায় রান্না করা মাছ খেতে পছন্দ করেন৷ ম্যাকরেল নামের এক মাছ যার মধ্যে খুব সামান্য হলেও আমাদের ইলিশের স্বাদ খুঁজে পাওয়া যায়৷ তবে সেই মাছ ‘স্মোক্ড’ অবস্থায়ই বেশি পাওয়া যায়৷
ছবি: picture-alliance/chromorange
বরফ দেওয়া মাছ
এভাবেই মাছকে যত্ন করে বরফের ওপর সুন্দর করে সাজিয়ে রাখা হয়৷ শুধুমাত্র মাছের জন্য রয়েছে আলাদা বাজার, সেখানে এ ধরনের মাছ পাওয়া যায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
মাছ খান, সুন্দর আর স্লিম থাকুন
মাছ খাওয়ার পরামর্শ আজকাল চারিদিকে শোনা যায়৷ ডাক্তার থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য সচেতন যে কেউ এই পরমার্শ দেন৷ তবে ছোটবেলা থেকেই এই অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত বলেও মনে করেন বিশেষজ্ঞরা৷ শরীরে আয়োডিনের ঘাটতিও পূরণ করে থাকে বেশ কিছু মাছ৷
ছবি: DW/Sarah Wiertz
10 ছবি1 | 10
‘‘মাছেরা মেরুদণ্ডী প্রাণী, কাজেই মেরুদণ্ডী প্রাণীদের যাবতীয় বুনিয়াদী প্রণালী মাছেদের মধ্যেও দেখা যায়৷ শরীরের বিপাকের শক্তি কিংবা হজমশক্তি, কিংবা রক্ত অথবা হৃৎপিণ্ড, জেব্রা মাছে এ সব বুনিয়াদী প্রক্রিয়া খুঁটিয়ে দেখা যায়, যার পর প্রশ্ন জাগে: ‘এগুলো কি মানুষের মধ্যে এক, না আলাদা?' মানুষকে দিয়ে কাজ শুরু না করে প্রথমে জেব্রা মাছ নিয়ে কাজ করার সুবিধেটা হলো সেখানে৷''
ল্যাবোরেটরিতে
গত এক দশক ধরে মাক্স প্লাঙ্ক ইনস্টিটিউট ফর ডেভেলপমেন্টাল বায়োলজি-র গবেষকরা অনুসন্ধান করে দেখছেন, জেব্রা মাছেরা তাদের ডোরাগুলো পায় কোথা থেকে৷ জীবদেহের মলিকিউলের অনুসন্ধান অথবা বিশ্লেষণের জন্য গবেষকরা মাছের ভ্রূণে ফ্লুরোসেন্ট প্রোটিন ঢুকিয়ে দেন, যা আলো বিকিরণ করে৷ ল্যাব ম্যানেজার ব্রিগিটে ভাল্ডারিশ বলেন:
‘‘আমি কোষ প্রতিস্থাপন করছি, অর্থাৎ আমি দাতা ভ্রূণগুলিতে একটি ফ্লুরোসেন্ট মার্কার দিয়েছি৷ এই দাতা ভ্রূণগুলি গ্রহীতা ভ্রূণের অংশ হয়ে যাচ্ছে এবং সেই গ্রহীতা ভ্রূণের মধ্যেই বেড়ে উঠছে৷ এই পদ্ধতিতে আমি বাড়ন্ত ভ্রূণগুলিতে এক-একটি কোষের খোঁজ রাখতে পারছি সেগুলি বড় হয়ে ওঠা পর্যন্ত৷''
বিকাশের সূচনায় যখন কোষগুলির অভিবাসন শুরু হয়, তখন সেগুলোকে নীল থেকে অতিবেগুনি রশ্মির আলোয় সবুজ দেখায়৷ গবেষকরা এই কোষ অভিবাসন পর্যবেক্ষণ করে জীবদেহের বিভিন্ন প্রক্রিয়া সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারেন, যেমন ক্ষতের নিরাময় পদ্ধতি৷ ক্রিস্টিয়ানে ন্যুসলাইন-ফলহার্ড ব্যাখ্যা করলেন:
প্রাণিজগতের রেকর্ডধারীদের কথা
প্রাণিজগতের বৈচিত্র্য নিয়ে ভাবলে অবাক হতে হয়৷ কেউ খুব ছোট, কেউ খুব বড়৷ প্রাণীদের চলন-বলনেও কত বৈচিত্র্য! কেউ দৌড়ায় ঝড়ের বেগে, কেউ লাফিয়ে চলে, কারো আবার বিচরণ আকাশের কাছাকাছি৷ ছবিতে দেখে নিন তাদের৷
ছবি: picture-alliance/dpa
চিতা : দ্য স্প্রিন্টার
ক্ষুধার্ত চিতার সামনে পড়লে আর রক্ষা নেই, ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার বেগে ছুটতে পারে চিতা৷ নিঃশব্দে শিকারের কাছাকাছি গিয়ে এমন বেগে তাড়া করতে শুরু করলে ভয়ঙ্কর এই শিকারী প্রাণীর হাত থেকে রক্ষা পাওয়া অনেকটা ভাগ্যের ব্যাপার৷ একটাই আশার কথা- চিতা বেশিক্ষণ খুব দ্রুত দৌড়াতে পারেনা৷ তাই কয়েকশ মিটারের মধ্যে ধরতে না পারলে হরিণের মতো পছন্দের খাবার হাতছাড়া করার হতাশায়ও ভুগতে হয় চিতাকে৷
ছবি: Fotolia/stephane angue
গতির সঙ্গে কষ্টসহিষ্ণুতা
‘প্রংহর্ন’ অন্য হরিণদের মতোই ক্ষিপ্রগতির হলেও এক জায়গায় পৃথিবীর বাকি প্রাণীদের চেয়ে এগিয়ে৷ কিছু প্রাণী শুরুতে খুব দ্রুত ছুটতে পারলেও কিছুক্ষণের মধ্যে ক্লান্ত হয়ে পড়ে, ফলে গতিও কমে আসে দ্রুত৷ প্রংহর্ন সেরকম নয়৷ পাঁচ কিলোমিটার পর্যন্ত অনায়াসে ঘণ্টায় ৭০ কিলোমিটার গতিতে ছুটতে পারে৷ ফলে চিতা, বাঘ, সিংহ বা অন্য যে-কোনো প্রাণীই শিকার করতে আসুক, শুরুর ঝড়টা সামলে নিলে প্রংহর্নকে আর কে পায়!
ছবি: Getty Images
দ্রুততম পাখি
সব পাখি কিন্তু ওড়ে না৷ কোনো কোনো পাখি ডানা না মেলে দু পায়ে ছুটতেই বেশি ভালোবাসে৷ বিশালদেহী উটপাখি তো উড়তেই পারেনা৷ তবে দৌড়ায় অবিশ্বাস্য গতিতে৷ ঘণ্টায় ৭০ কিলোমিটার গতিতে ছোটে বলে তারা যে শুধু পাখিজগতের দ্রুততম সদস্য তা-ই নয়, অন্তত আধঘণ্টা পর্যন্ত ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটারের বেগ ধরে রাখতে পারে বলে তাদের কষ্টসহিষ্ণুতারও প্রশংসা করতে হয় আলাদাভাবে৷
ছবি: AP
‘শকুন হইতে সাবধান’
১৯৭৩ সালে একটা বিমান প্রায় বিধ্বস্ত হতে বসেছিল শকুনের কবলে পড়ে৷ ১১ হাজার ২০০ মিটার অর্থাৎ ৩৬ হাজার ৭৪৫ ফুট ওপর দিয়ে উড়ছিল বিমানটি৷ এক রুপেল শকুন উড়তে উড়তে সেখানে গিয়ে হাজির এবং বিমানের সঙ্গে ধাক্কা৷ পাখি সাধারণত ১০০ থেকে ২,০০০ মিটার উঁচুতে ওড়ে৷ শুধু অভিবাসী পাখিরাই প্রবল শীতে মৃত্যুর আশঙ্কা থেকে বাঁচতে যখন দেশান্তরী হয়, বিশেষ করে যখন হিমালয়ের ওপর দিয়ে উড়তে হয়, তখন বড় জোর ৯,০০০ মিটার উঁচুতে ওঠে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
সবচেয়ে উঁচুতে লাফ
বিশাল আকৃতির বুনো বেড়াল শ্রেণির এই প্রাণী একেবারে জায়গায় দাঁড়িয়ে সাড়ে পাঁচ মিটার, অর্থাৎ ১৮ ফুট ওপরের মগডাল থেকে শিকার ধরে আনতে পারে৷ স্থলচর আর কোনো প্রাণী লাফিয়ে এত উঁচুতে উঠতে পারেনা৷ ৫০ কেজি ওজনের শরীর নিয়ে পুমা কী করে যে এত উঁচুতে লাফিয়ে উঠতে পারে, কে জানে! প্রাণীকুলে ডলফিনই শুধু পুমার চেয়ে বেশি, ৭ মিটার উঁচুতে উঠতে পারে লাফিয়ে৷ তবে জলচর ডলফিন লাফের আগে অনেকটা পথ সাঁতরে গতি বাড়িয়ে নেয়৷
ছবি: Bas Lammers
সবচেয়ে ছোট পাখি
সবচেয়ে ছোট পাখির নাম হামিং বার্ড৷ সাধারণ জ্ঞানের বই পড়ে এটা নিশ্চয়ই অনেক আগেই জেনে গেছেন সবাই৷ সবচেয়ে ছোট হামিং বার্ডের শরীর দুই ইঞ্চি বা ৬ সেন্টিমিটারের মতো৷ ওজন অন্য পাখির পালকের সমান, মাত্র ২ গ্রাম! খুব ছোট পাখি, খুব ছোট ডানাও তাদের৷ তাই উড়তে হয় অনেক কষ্ট করে৷ ওড়ার সময় সেকেন্ডে ৪০ থেকে ৫০ বার ডানা ঝাপটায় হামিং বার্ড৷
ছবি: Fabian Schmidt
সবচেয়ে গভীরে
ডাইভ দিয়ে সমুদ্রের পানির ৩,০০০ মিটার গভীরে চলে যায় তিমি৷ একঘণ্টা শ্বাসপ্রশ্বাস বন্ধ করে থাকতেও পারে সেখানে৷ আর কোনো স্তন্যপায়ী প্রানী পানির এত গভীর তলদেশে যেতে পারে না৷ এতক্ষণ ধরে তিমির মতো শ্বাস বন্ধ রাখাটা অন্য কোনো প্রাণীর পক্ষে সম্ভব নয়৷ তিমি নাকি ডাইভ দেয়ার সময়ই মস্তিস্ক আর হৃৎপিণ্ডে রক্ত পাঠিয়ে দেয়৷ আর এভাবেই দম বন্ধ করে ঘণ্টা পার করার জাদু দেখায় পৃথিবীর সবচেয়ে বড় এই প্রাণী৷
ছবি: 2010 Universum Film GmbH / Richard Herrmann
খরতাপে নির্বিকার
‘অরিক্স’ হরিণ ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় তপ্ত হাওয়া গায়ে মেখে নিশ্চিন্তে ঘুরে বেড়ায়৷ মানুষ হলে অমন তাপে মৃত্যু নির্ঘাত৷ অরিক্সের দেহের রক্ত শীততাপ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে৷ তাছাড়া তৃষ্ণা খুব কম পায় বলে অন্য প্রাণীদের মতো গরমে ঘন ঘন পানি পান করারও দরকার পড়েনা৷ সপ্তাহে একবার পানি পান করলেই সুস্থ থাকে অরিক্স৷ এমন হলে কারো গায়ে তাপ দুর্ভোগ হয় কী করে!
ছবি: picture-alliance/zb
সেরা কান
প্রাণীকুলে সেরা কান বাঁদুরের৷ নিশাচর এই প্রাণী তার বড় বড় কান শব্দের উৎসের দিকে ঘোরালে যেন দীর্ঘ এক চোঙ চলে যায় সেখানে, টেনে নিয়ে আসে শব্দকে৷ ঘুটঘুটে অন্ধকারেও বাঁদুরের তাই পোকামাকড় ধরে খেতে কোনো অসুবিধা হয়না৷
ছবি: picture-alliance/dpa
লাফের আসল চ্যাম্পিয়ন
মাছিদেরও আছে অসাধারণ এক ক্ষমতা৷ শরীরের উচ্চতার চেয়ে ২০০ গুণ উঁচুতে লাফিয়ে উঠতে পারে তারা৷ ফ্রগহপার তো আরেক কাঠি সরেস৷ নিজের শরীরের উচ্চতার চেয়ে ৪০০ গুণ বেশি উঁচুতে এক লাফে হেসেখেলে উঠে যায় তারা!
ছবি: picture-alliance/dpa
10 ছবি1 | 10
‘‘প্রাথমিক বিকাশের সময় কোষগুলোর টাইম-ল্যাপ্স সিকোয়েন্সে ছবি তুললে দেখা যায়, কী ভাবে হৃৎপিণ্ড তৈরি হচ্ছে, পেশিগুলো কী ভাবে তৈরি হচ্ছে, ধমনীতে কী ভাবে রক্ত বইছে৷ ইঁদুর নিয়ে পরীক্ষায় এ সব করা যায় না, কেননা তাদের ভ্রূণগুলো মাতৃদেহে খুব ভালোভাবে লুকনো থাকে৷ মাছেরা ডিম পাড়ে, কাজেই মাইক্রোস্কোপের নীচে এ সব দেখা সম্ভব৷''
ময়ূরের পেখম, সাদা বাঘ ও ডোরাকাটা মাছ
ডেভেলপমেন্টাল বায়োলজি বা জীবদেহের বিকাশ সংক্রান্ত বিজ্ঞানে এখনও একটি প্রশ্নের জবাব পাওয়া যায়নি: জেব্রা মাছের নিকটাত্মীয়দেরও অন্যরকম দেখতে কেন? একই পূর্বপুরুষ থেকে যাদের উৎপত্তি, তারা নানা ধরনের রং ও নকশা পায় কোথা থেকে? জীববৈচিত্র্যে এই প্রক্রিয়ার ভূমিকা কী? আবার ক্রিস্টিয়ানে ন্যুসলাইন-ফলহার্ড:
‘‘আমরা এখনও বুঝে উঠতে পারিনি, ময়ূর তার ছটা পায় কোথা থেকে, তার পেখম, তার বর্ণালী৷ এ রহস্যের সমাধান হয়ত আমরা কখনোই করতে পারব না, কেননা ময়ূরদের পর্যবেক্ষণ করা সোজা কাজ নয় – যেমন সাদা বাঘদের পর্যবেক্ষণ করা আরো কঠিন!''
গবেষকরা ইতিমধ্যে আবিষ্কার করে ফেলেছেন যে, সাদা বাঘরা সাদা হয় একটি জেনেটিক মিউটেশন বা জিন-গত রূপান্তর থেকে৷ মানুষ ও জীবজন্তুর অ্যালবিনিজম-এর ব্যাখ্যাও তাই৷ কে জানে, হয়ত দীন-হীন জেব্রা মাছ একদিন ময়ূরের পেখম তোলার রহস্যও ভেদ করতে সাহায্য করবে৷