পাকিস্তানভিত্তিক উগ্র ইসলামপন্থি দল জৈশ-ই-মোহাম্মদের প্রধান মাসুদ আজহার৷ যেখানে ভারত চাইছে, জাতিসংঘের মাধ্যমে তাকে সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করতে, চীন সেখানে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে৷ কিন্তু কেন?
বিজ্ঞাপন
কাশ্মীর অঞ্চলকে ঘিরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক যে যুদ্ধাবস্থা তৈরি হয়েছিল, তার সূচনা করে জৈশ-ই-মোহাম্মদ নামের পাকিস্তানভিত্তিক একটি সন্ত্রাসী সংগঠন৷ কাশ্মীরে বোমা হামলা করে ভারতের ৪০ জওয়ান হত্যার পর এর দায় স্বীকার করে সংগঠনটি৷ এর আগেও ২০০১ সালে ভারতের পার্লামেন্ট ভবনে হামলা ও পাঠানকোট হামলায় এই সংগঠনটির জড়িত থাকার কথা আলোচিত হয়েছে৷ হামলার পর ভারত আবারো দাবি তুলেছে, পাকিস্তান যেন সে দেশের অভ্যন্তরের এমন সন্ত্রাসকে দমন করতে তৎপর হয়৷ একইসঙ্গে জৈশ-ই-মোহাম্মদের নেতা মাসুদ আজহারকে তাদের কাছে সোপর্দ করার দাবিও জানিয়েছে ভারত৷
মাসুদ আজহারকে যেন সন্ত্রাসী হিসেবে ঘোষণা করা হয়, সেজন্য তারা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বার বার আবেদন জানায়৷ গত ২৭ ফেব্রুয়ারি আজহারকে সন্ত্রাসী ঘোষণা দেবার বিষয়টি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব আকারে নিয়ে যায় ফ্রান্স৷
কাশ্মীরে বহুদিনের সংঘাত, বহুদিনের ক্ষত
স্বাধীনতার পর থেকেই ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্কে যেন গলার ফাঁস হয়ে রয়েছে কাশ্মীর৷ তাই কাশ্মীর সংক্রান্ত ঘটনাবলী আজ নিজেরাই ইতিহাস৷
ছবি: Getty Images/AFP/R. Bhat
১৯৪৭
বলা হয় দেশবিভাগের পর পাকিস্তান থেকে আগত উপজাতিক যোদ্ধারা কাশ্মীর আক্রমণ করে৷ তখন কাশ্মীরের মহারাজা ভারতের সাথে সংযোজনের চুক্তি করেন, যা থেকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়৷
ছবি: dapd
১৯৪৮
ভারত জাতিসংঘে কাশ্মীর প্রসঙ্গ উত্থাপন করলে পর, ৪৭ ক্রমিক সংখ্যক প্রস্তাবটি গৃহীত হয়৷ ঐ প্রস্তাব অনুযায়ী গোটা কাশ্মীরে গণভোট অনুষ্ঠিত হবার কথা রয়েছে৷
ছবি: Keystone/Getty Images
১৯৪৮
কিন্তু পাকিস্তান প্রস্তাব অনুযায়ী, কাশ্মীর থেকে সৈন্যাপসারণ করতে অস্বীকার করে৷ অতঃপর কাশ্মীরকে দু’ভাগে ভাগ করা হয়৷
ছবি: Getty Images
১৯৫১
ভারতীয় কাশ্মীরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ও ভারতের সঙ্গে সংযোজনকে সমর্থন করা হয়৷ অতঃপর ভারত বলে, আর গণভোট অনুষ্ঠানের কোনো প্রয়োজন নেই৷ জাতিসংঘ ও পাকিস্তানের মতে, গণভোট অনুষ্ঠিত হওয়া আবশ্যক৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F. Khan
১৯৫৩
কাশ্মীরের ‘প্রধানমন্ত্রী’ শেখ আব্দুল্লাহ গণভোটের সমর্থক ছিলেন ও ভারতের সঙ্গে সংযোজনকে বিলম্বিত করার চেষ্টা করেন৷ ফলে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ জম্মু-কাশ্মীরের নতুন সরকার ভারতের সঙ্গে কাশ্মীরের সংযোজনকে পাকা করেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F. Khan
১৯৬২-৬৩
১৯৬২ সালের যুদ্ধে চীন আকসাই দখল করে৷ তার আগের বছর পাকিস্তান কাশ্মীরের ট্রান্স কারাকোরাম ট্র্যাক্ট এলাকাটি চীনকে প্রদান করে৷
ছবি: Getty Images
১৯৬৫
কাশ্মীরকে কেন্দ্র করে আবার ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ হয়৷ কিন্তু যুদ্ধশেষে উভয় দেশের সেনা তাদের পুরোনো অবস্থানে ফিরে যায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Singh
১৯৭১-৭২
আবার ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ৷ যুদ্ধে পাকিস্তানের পরাজয়ের পর সিমলা চুক্তি সম্পাদিত হয় ১৯৭২ সালে৷ যুদ্ধবিরতি রেখাকে লাইন অফ কন্ট্রোল বা নিয়ন্ত্রণ রেখায় পরিণত করা হয় ও আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বিবাদ সমাধান সম্পর্কে ঐকমত্য অর্জিত হয়৷
ছবি: AP
১৯৮৪
ভারত সিয়াচেন হিমবাহ নিজ নিয়ন্ত্রণে আনার পর পাকিস্তান তা একাধিকবার দখল করার চেষ্টা করেছে, কিন্তু সফল হতে পারেনি৷
ছবি: AP
১৯৮৭
জম্মু-কাশ্মীরে বিতর্কিত নির্বাচনের পর রাজ্যে বিচ্ছিন্নতাবাদী স্বাধীনতা আন্দোলন শুরু হয়৷ ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে উগ্রপন্থাকে উসকানি দেওয়ার অভিযোগ করে, কিন্তু পাকিস্তান সে দোষারোপ চিরকাল অস্বীকার করে এসেছে৷
ছবি: AP
১৯৯০
গওকাদল সেতুর কাছে ভারতীয় সিআরপি রক্ষীবাহিনী কাশ্মীরি বিক্ষোভকারীদের উপর গুলি চালালে পর শতাধিক আন্দোলনকারী নিহত হন৷ প্রায় সমস্ত হিন্দু কাশ্মীর উপত্যকা ছেড়ে চলে যান৷ জম্মু-কাশ্মীরে সেনাবাহিনীকে আফসা বা আর্মড ফোর্সেস স্পেশাল পাওয়ার্স অ্যাক্ট অনুযায়ী বিশেষ ক্ষমতা প্রদান করা হয়৷
ছবি: AFP/Getty Images/Tauseef Mustafa
১৯৯৯
কাশ্মীর ভ্যালিতে গোটা নব্বই-এর দশক ধরে অশান্তি চলে৷ ১৯৯৯ সালে আবার ভারত-পাকিস্তানের লড়াই হয়, এবার কারগিলে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
২০০১-২০০৮
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আলাপ-আলোচনার যাবতীয় প্রচেষ্টা প্রথমে নতুন দিল্লির সংসদ ভবন ও পরে মুম্বই হামলার ফলে ব্যর্থ হয়৷
ছবি: picture-alliance/Pacific Press/F. Khan
২০১০
ভারতীয় সেনার গুলি লেগে এক বিক্ষোভকারীর মৃত্যুর পর কাশ্মীর ভ্যালি উত্তেজনায় ফেটে পড়ে৷ বিক্ষোভ চলে বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে, প্রাণ হারান অন্তত ১০০ জন৷
ছবি: picture-alliance/Pacific Press/U. Asif
২০১৩
সংসদ ভবনের উপর হামলার মুখ্য অপরাধী আফজল গুরুকে ফাঁসি দেওয়া হয়৷ এর পর যে বিক্ষোভ চলে, তা-তে দু’জন প্রাণ হারায়৷ এই বছরই ভারত আর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীদ্বয় মিলিত হয়ে উত্তেজনা উপশমের কথা বলেন৷
ছবি: Reuters
২০১৪
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ উপস্থিত থাকেন৷ কিন্তু এর পর নতুন দিল্লিতে পাকিস্তানি হাই কমিশনার কাশ্মীরি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে মিলিত হওয়ায় ভারত আলাপ-আলোচনা স্থগিত রাখে৷
ছবি: Reuters
২০১৬
আজাদ কাশ্মীর ভিত্তিক হিজবুল মুজাহিদীন-এর অধিনায়ক বুরহান ওয়ানি-র মৃত্যুর পর কাশ্মীরে স্বাধীনতা সমর্থকরা আবার পথে নেমেছেন৷ এই আন্দোলনে এ পর্যন্ত অন্তত ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছে ও বিক্ষোভ অব্যাহত আছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/R.S.Hussain
২০১৯
২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামা সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স (সিআরপিএফ)-এর গাড়িবহরে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে৷ এতে ৪২ জওয়ান নিহত হন৷ বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন জৈশ-ই-মোহাম্মদ হামলার দায় স্বীকার করেছে৷ এরপর ২৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান সীমান্তের ভেতরে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ঘাঁটিতে বিমান হামলা চালায় ভারতীয় বিমান বাহিনী৷
ছবি: picture-alliance/ZUMA Wire/P. Kumar Verma
২০১৯
ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ নং ধারা অনুযায়ী, জম্মু ও কাশ্মীরের কাছে কিছু বিশেষ অধিকার ছিল। ৫ আগস্ট স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ৩৭০ ধারাটি অবসানের দাবি তোলেন৷ বিল পাস হয়। একই দিনে তাতে সই করেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ৷ ফলে, কাশ্মীরের ‘বিশেষ মর্যাদা' বাতিল হয়। তাছাড়া মোদী সরকারের সিদ্ধান্তের ফলে জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের মর্যাদা হারায়। জম্মু ও কাশ্মীর ও লাদাখ নামে দুইটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠিত হয়।
ছবি: Reuters
19 ছবি1 | 19
নিরাপত্তা পরিষদের সব স্থায়ী সদস্য এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিলেও একটি দেশ দেয়নি – চীন৷ ভারতের কাছে চীনের এই আচরণ সে দেশটির সঙ্গে পাকিস্তানের মিত্র সম্পর্কের বহিঃপ্রকাশ হলেও চীন বলেছে যে, আজহারের বিরুদ্ধে ‘আরো তদন্তের' প্রয়োজন আছে৷
এ বিষয়ে চাইনিজ অ্যাকাডেমি অফ সোশ্যাল সায়েন্সেসের এশিয়া প্যাসিফিক ইনস্টিটিউটের ভারত বিষয়ক বিশেষজ্ঞ লিউ জিয়াওজু বলেন, ‘‘যখনই কোনো আ্ক্রমণ হয়, ভারত আজহারের সংগঠনের ওপর দোষ চাপায়, কিন্তু কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারে না৷ যখনই এমন কোনো ঘটনা ঘটে, ভারত দোষারোপ করে পাকিস্তানকে, অথচ প্রমাণ দেয় না৷''
তবে ইসলামাবাদের প্রতি বেইজিংয়ের এমন আগ্রহের কারণ অর্থনৈতিক বলেও মনে করেন জার্মান ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড সিকিউরিটি অ্যাফেয়ার্সের প্রধান ক্রিস্টিয়ান ভাগনার৷
‘‘চীনের জন্য নির্বাচিত সরকারের চেয়ে সেনাবাহিনী অনেক ভালো,'' বলেন তিনি৷ আজহারের বিরুদ্ধে ভোট দিলে পাকিস্তান আর্মির সঙ্গে তাদের সম্পর্কে ফাটল দেখা দিতে পারে বলে তাঁর ধারণা৷
সন্ত্রাসের অর্থনৈতিক ঝুঁকি
তবে ভাগনার মনে করেন, চীন তার অবস্থান পালটানোর আগেই পাকিস্তান সেনাকে তাদের কৌশল পরিবর্তন করতে হবে৷
‘‘যদি এসব গ্রুপের কারণে ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্সের কালো তালিকাতেই ঢুকতে হয়, তাহলে এদের দিয়ে কী কাজ হবে? বাজারে এর কী প্রভাব পড়বে?'' প্রশ্ন করেন ভাগনার৷
কাশ্মীর ইস্যুতে বিস্ফোরক সব মন্তব্য
কাশ্মীর বরাবরই ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে বিরোধের কারণ৷ পুলওয়ামায় জঙ্গি হানায় ৪২ সিআরপিএফ জওয়ানের মৃত্যু এ বিতর্কে এনেছে নতুন মোড়৷ খোদ ভারতের মধ্যেই এ নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন বিশিষ্ট ব্যক্তিরা৷ দেখুন কিছু মন্তব্য৷
ছবি: Getty Images/R. Bakshi
আলোচনার সময় শেষ: মোদী
পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনার সময় শেষ হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ কাশ্মীরে আক্রমণের পেছনে পাকিস্তানের মদদের ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, জঙ্গি ও তাদের সমর্থকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়া মানে তাদের উসাহিত করা৷
ছবি: Reuters/India's Press Information Bureau
ভারতকে প্রতিহত করা হবে: ইমরান খান
কোনো প্রমাণ ছাড়াই পুলওয়ামার ঘটনায় পাকিস্তানকে দোষারোপ করা হচ্ছে বলে মনে করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান৷ ঘটনার তদন্তে পাকিস্তান সহায়তা ও আলোচনা করতে প্রস্তুত বলেও জানিয়েছেন তিনি৷ কিন্তু ভারত কোনোভাবে আক্রমণ করে বসলে, সাথে সাথে তার কড়া জবাব দেয়া হবে বলেও জানান ইমরান খান৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/B.K. Bangash
নির্বাচনের আগেই কেন: মমতা
লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে আগে কেন এতো বড় হামলার ঘটনা ঘটলো, এ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি৷ এর আগে ‘তদন্ত না করে’ পাকিস্তানের ওপর ‘দোষ চাপানো’ উচিত নয় মন্তব্য করেও বিতর্কের জন্ম দেন মমতা৷
ছবি: DW/S. Bandopadhyay
পাকিস্তানের ধ্বংস জরুরি: কঙ্গনা রানাউত
বলিউডের একসময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শাবানা আজমিকে ‘রাষ্ট্রদ্রোহী’ বলে আখ্যা দিয়েছেন বলিউডের বর্তমান জনপ্রিয় অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউত৷ পাশাপাশি আহ্বান জানিয়েছেন চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেয়ার৷ বলছেন, শুধু পাকিস্তানের শিল্পীদের ভারতে নিষিদ্ধ করলেই হবে না, পাকিস্তানকেই ধ্বংস করতে হবে৷
ছবি: AP
বন্দুক হাতে থাকলেই হত্যা: লে. জে. ঢিলন
কাশ্মীরে কেউ বন্দুক হাতে নিলেই তাকে হত্যা করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ভারতের চিনার কর্পসের কমান্ডার লেফট্যানেন্ট জেনারেল কে জে এস ঢিলন৷ বন্দুক হাতে নিলে তা কেবল আত্মসমর্পণের উদ্দেশ্যে হতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি৷
ছবি: Imago/Zuma Press
কাশ্মীরকে বর্জন করুন: তথাগত রায়
‘কাশ্মীরে যাবেন না, কাশ্মীরী পণ্য কিনবেন না’, সামাজিক যোগোযোগ মাধ্যমে চলা এমন বক্তব্যের সাথে একমত পোষণ করেছেন মেঘালয় রাজ্যের গভর্নর তথাগত রায়৷ কিন্তু অনেকেই অবশ্য এর প্রতিবাদ জানাচ্ছেন, বলছেন, কাশ্মীর ভারতের অংশ, কাশ্মীরীরা ভারতের নাগরিক৷ ফলে নিজের দেশের একটা অঞ্চলের সব মানুষকে শত্রু বানিয়ে দেয়া উচিত নয়৷
ছবি: Reuters
পুরো দেশকে দোষ দেয়া যায় না: নভজ্যোত সিং সিধু
‘কিছু হাতে গোণা মানুষের জন্য পুরো দেশকে দায় দেয়া উচিত নয়’ বলে মন্তব্য করে তোপের মুখে পড়েছেন সাবেক ক্রিকেট খেলোয়াড় খেলোয়াড় ও পাঞ্জাবের পর্যটনমন্ত্রী নভজ্যোত সিং সিধু৷ এমন মন্তব্যের কারণে তাঁকে জনপ্রিয় টেলিভিশন অনুষ্ঠান ‘দ্য কপিল শর্মা শো’ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/A. Ali
বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে বর্জন করুন: হরভজন সিং
আসন্ন ক্রিকেট বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ না খেলতে ভারতের ক্রিকেট দলকে আহ্বান জানিয়েছেন সাবেক ভারতীয় অফস্পিনার হরভজন সিং৷ প্রয়োজনে ম্যাচটি ওয়াকওভার দিয়ে দেয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি৷ হরভজন মনে করেন, ভারতের যে শক্তি, তাতে একটি ম্যাচ না খেললেও তারা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার শক্তি রাখে৷
ছবি: AP
8 ছবি1 | 8
তিনি মনে করেন, পাকিস্তানের জন্য কোনো আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক অবরোধ সামলাবার উপায় নেই৷
‘‘সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ওপর পশ্চিমাবিশ্বের, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে৷ যদি যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়, তাহলে সেসব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অর্থ সাহায্য পাওয়া পাকিস্তানের জন্য কঠিন হয়ে পড়বে,'' ডয়চে ভেলেকে বলেন পাকিস্তানের সাবেক অর্থমন্ত্রী সাঈদ সালমান শাহ৷
তবে অর্থনীতিবিদ আজরা তালাত সাঈদ বলেন যে, নিরাপত্তা পরিষদে চীনের আপত্তির কারণ পাকিস্তান নয়, বরং ভারত৷
‘‘মাসুদ আজহারের বিষয়ে চীনের এমন অবস্থানের কারণ ভারতের সঙ্গে তাদের বিরোধ, ইসলামাবাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক নয়,'' বলেন আজরা৷ ‘‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের ঘনিষ্ঠতা এবং তিব্বতের নেতা দালাই লামাকে দেশটির সহযোগিতা, এ সব কারণেও ভারতকে কখনো সমর্থন করে না চীন৷''
ভারতের জন্য একটি ‘পরীক্ষা'
ভারতীয় গবেষণা প্রতিষ্ঠান ব্রুকিংস ইন্ডিয়ার ফেলো ধ্রুব জয়শঙ্কর ডয়চে ভেলেকে বলেন, বিষয়টি প্রতীকী হলেও আজহারকে সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করা ভারতের জন্য জরুরি৷ পাকিস্তান আগে কখনো চিহ্নিত গ্রুপগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি৷ আর জৈশ-ই-মোহাম্মদ তো এর মধ্যেই তালিকাভূক্ত৷
আজহারের ওপর সন্ত্রাসী তকমা থাকলে তাকে গ্রেফতার করা ভারতের জন্য সহজ হবে, তবে তাকে বৈশ্বিকভাবে সন্ত্রাসী ঘোষণা করা হলে ‘ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় গুরুত্ব দিয়ে দেখতে চাইছে' বলে প্রতীয়মান হবে৷