এসপিডি চায় কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি চাকরির চুক্তি, উদ্বাস্তুদের পরিবারকে জার্মানিতে নিয়ে আসার সুযোগ ও স্বাস্থ্যবীমার ক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি বীমাধারীদের সমানাধিকার৷ কিন্তু সিডিইউ-সিএসইউ কী চায়?
বিজ্ঞাপন
রবিবার সামাজিক গণতন্ত্রী দল এসপিডি বন শহরে তাদের দলীয় সম্মেলনে সিদ্ধান্ত নেয় যে, ইউনিয়ন দলগুলির সঙ্গে জোট সরকার গঠন সংক্রান্ত বিধিবদ্ধ আলাপ-আলোচনা শুরু করা হবে৷ অবশ্য এই সিদ্ধান্তের পক্ষে পড়ে মাত্র ৫৬ শতাংশ ভোট, বিপক্ষে ৪৪ শতাংশ৷ কাজেই সোমবার এসপিডি দলের সংসদীয় গোষ্ঠী বার্লিনে মিলিত হয়ে এই ফলাফল ও তার ফলশ্রুতির পর্যালোচনা করেছে৷ সোজা কথায় বলতে গেলে, এসপিডি দল নতুন জোট সরকার গঠন সম্পর্কে বিশেষ উচ্ছ্বসিত বোধ করছে না৷
‘বাগ্মী' শুলৎস?
সংসদীয় গোষ্ঠীর অধিবেশন চলে প্রায় দু'ঘণ্টা এবং দলনেতা মার্টিন শুলৎসকে এবারও সমালোচনার মুখে পড়তে হয়, তবে শুলৎস তার জবাবে এবার ভালোই ভাষণ দিয়েছেন, বলে শোনা যাচ্ছে, অন্তত রবিবার বনের দলীয় সম্মেলনে যা দিয়েছিলেন, তার চেয়ে বেশি প্রেরণাদায়ক৷ কিন্তু দলের অনেকেই এখনো বলছেন, সিডিইউ-সিএসইউ দলের সঙ্গে জোট সরকার গঠন সংক্রান্ত আলাপ-আলোচনায় এসপিডি দল অন্তত কয়েকটি বিষয়ে ‘জিততে' না পারলে, তথাকথিত মহাজোটের একটি নতুন সংস্করণ বাস্তবায়িত হওয়ার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ৷ কারণ, এসপিডি দলের চার লাখ চল্লিশ হাজার পার্টিবুকধারী সদস্য আলাপ-আলোচনার ফলাফল অনুমোদন না করলে মহাজোটের সেখানেই ভরাডুবি ঘটবে৷
সিডিইউ কেঁচে গণ্ডূষ করতে আগ্রহী নয়
রবিবারের ‘জয়ে' শুলৎস যত না উৎফুল্ল, তার চেয়ে বেশি স্বস্তি বোধ করছেন৷ কিন্তু তিনিও জানেন, তাঁর কাছে দলের এখন কী প্রত্যাশা: ‘‘প্রাথমিক আলাপ-আলোচনায় যে সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে, (জোট সরকার গঠন সংক্রান্ত আলাপ-আলোচনায়) আমরা সে সব আবার বিবেচনা করে দেখব৷'' প্রাথমিক আলাপ-আলোচনার ফলাফল একটি ২৮ পাতার দলিলে ধরে রাখা হয়েছে, সামাজিক গণতন্ত্রীদের কাছে যা একটি বুনিয়াদি খসড়া ছাড়া কিছু নয় – এক্ষেত্রে সিডিইউ দলের মনোভাব ঠিক তার উল্টো৷ সারল্যান্ড রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আনেগ্রেট ক্রাম্প-কারেনবাউয়ার সিডিইউ দলের তরফে প্রাথমিক আলাপ-আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন এবং বার্লিনে তাঁর প্রভাবও কিছু কম নয়৷ সপ্তাহান্তে তিনি স্যুডওয়েস্টরুন্ডফুংক সরকারি বেতারকেন্দ্রের একটি সাক্ষাৎকারে ঘোষণা করেন: ‘‘যারা (প্রাথমিক) সমঝোতার কিছু কিছু বিষয় পুনর্বিবেচনা করতে চান, তাদের দরুণ গোটা আপোশটাই ভেঙে পড়বে, যা আমরা ঘটতে দিতে রাজি নই৷''
স্বল্প মেয়াদের বদলে দীর্ঘমেয়াদি চাকরির চুক্তি
যেভাবে প্রতিদ্বন্দ্বীদের পরাস্ত করেন ম্যার্কেল
এমনকি ২০১৭ সালের নির্বাচনের আগেও তাঁর পথে বাধা হয়ে দাঁড়ানো রাজনীতিবিদদের নিষ্ক্রিয় বা পাশে সরিয়ে দিয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ নিজের দল বা বিরোধী দলের অনেক নেতাকেই নানাভাবে ঠেকিয়েছেন তিনি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/ANP/R. De Waal
‘কোল গার্ল’ যখন গুরুকে ছাড়লেন
দীর্ঘদিন চ্যান্সেলর পদে থাকে হেলমুট কোল ম্যার্কেলকে মন্ত্রিসভায় প্রথম সুযোগ দিয়েছেন এবং তাঁর উত্থানে সহায়তা করেছিলেন৷ কিন্তু ১৯৯৮ সালে চ্যান্সেলর পদ হারানোর পর ম্যার্কেল এবং সিডিইউ তাঁর বিপক্ষে চলে যায়৷ কোল কিছু সূত্র থেকে নগদ অর্থ সাহায্য নিয়েছিলেন৷ কিন্তু সে সব সূত্রের বিস্তারিত তিনি জানাননি যা দলের জন্য ক্ষতিকর বলে মন্তব্য করেছিলেন সেসময় সিডিইউ’র সাধারণ সম্পাদক আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Altwein
গেয়ারহার্ড শ্র্যোডার – রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের সমাপ্তি
২০০৫ সালের নির্বাচনে এসপিডি’র চ্যান্সেলর শ্র্যোডারকে পরাস্ত করেন ম্যার্কেল৷ তবে এই পরাজয়ে শ্র্যোডারের নিজের দাম্ভিকতাও কিছুটা ভূমিকা রেখেছিল৷ সেই নির্বাচনে খুব অল্প ব্যবধানে সিডিইউ’র কাছে হেরে যায় এসপিডি৷ যদিও নির্বাচনের আগে টিভি বিতর্কে তিনি দাবি করেছিলেন, যে জার্মানরা চায় তিনি ক্ষমতায় থাকুন৷ কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি এবং তিনি রাজনীতি থেকে বিদায় নেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ফ্রাঙ্ক-ভাল্টার স্টাইনমায়ার - দীর্ঘদিনের সঙ্গী
শুরুতে ম্যার্কেলের অধীনে চারবছর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন ফ্রাঙ্ক-ভাল্টার স্টাইনমায়ার৷ এরপর ২০০৯ সালের জাতীয় নির্বাচনে তাঁকে চ্যালেঞ্জ করেন সামাজিক গণতন্ত্রীদের এই রাজনীতিবিদ৷ কিন্তু সেই নির্বাচনে সুবিধা করতে পারেনি স্টাইনমায়ারের দল৷ পরবর্তীতে ২০১৩ সালে আবারো ম্যার্কেলের অধীনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হন স্টাইনমায়ার৷ আর চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে তিনি জার্মানির প্রেসিডেন্ট৷
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Kembowski
গ্যুন্টার ও্যটিঙার - পথের কাঁটা দূর হলো
ম্যার্কেল যে শুধু তাঁর সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেন এমন নয়৷ বরং নিজের দলে থাকা সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের লোভনীয় অন্য কোন পদেও পাঠিয়ে দেন৷ তাঁর সহকর্মী বাডেন-ভ্যুর্টেমব্যার্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী গ্যুন্টার ও্যটিঙারকে ২০১০ সালে তিনি ইউরোপীয় কমিশনে বড় পদে পাঠিয়ে দেন৷ অথচ ও্যটিঙারের সেই পদ পাওয়ার মতো কোনো অভিজ্ঞতাই ছিল না৷
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Seeger
রোনাল্ড কখ - বাতিলের তালিকায় ফেলে দেয়া
দুই কারণে রোনাল্ড কখ পরিচিত৷ প্রথমত, তিনি দলাই লামার বন্ধু৷ দ্বিতীয়ত, সরকারের দ্বৈত নাগরিকত্ব চালুর পরিকল্পনার বিরুদ্ধে কয়েক মিলিয়ন স্বাক্ষর সংগ্রহের জন্য৷ হেসে রাজ্যের এই রাজ্য প্রধান কখনো ম্যার্কেলের উত্থানে বাধা না হলেও হঠাৎ করেই মনে করেছিলেন তাঁকে বার্লিনে বড় পদের জন্য ডাকা হবে৷ কিন্তু ম্যার্কেলকে তাঁকে সেরকম কোন সুযোগ দেননি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ক্রিস্টিয়ান ভুল্ফ - একজন দুর্ভাগা রাষ্ট্রপতি
ক্রিস্টিয়ান ভুল্ফ প্রেসিডেন্ট হিসেবে ম্যার্কেলের প্রথম পছন্দ ছিলেন না৷ কিন্তু ২০১০ সালে হর্স্ট ক্যোলার পদত্যাগ করার পর সিডিইউ বর্তমান প্রতিরক্ষামন্ত্রী উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েনের ব্যাপারে ঐকমত্যে পৌঁছাতে না পারায় ভুল্ফ সুযোগ পেয়ে যান৷ ভুল্ফ তখন লোয়ার স্যাক্সনি রাজ্যের রাজ্যপ্রধান৷ পরবর্তীতে অবশ্য দুর্নীতির দায়ে প্রেসিডেন্টের পদ ছাড়তে হয় তাঁকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
পেয়ার স্টাইনব্রুক – সঠিক মানুষ, ভুল সময়
২০১৩ সালে ম্যার্কেল যখন তাঁর ক্যারিয়ারের তুঙ্গে, তখন এসপিডি থেকে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বেছে নেয়া হয় পেয়ার স্টাইনব্রুক’কে৷ ম্যার্কেলের অধীনে একসময় অর্থমন্ত্রী থাকা এই রাজনীতিবিদের চ্যান্সেলর পদ পাওয়ার সব যোগ্যতাই ছিল৷ কিন্তু সময়টা ঠিক ছিল না৷ ম্যার্কেলের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সুবিধা করতে পারেননি তিনি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
7 ছবি1 | 7
ক্রাম্প-কারেনবাউয়ার যা-ই বলুন না কেন, এসপিডির তরফে অন্তত তিনটি বিষয় পুনর্বিবেচনা করার দাবি ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে৷ এসপিডি দল চায় যে, কোনো বিশেষ কারণ না দেখিয়ে বাঁধা মেয়াদের চাকরিতে লোক নেওয়ার অন্ত ঘটুক – যেমন কোনো কর্মী মেটারনিটি লিভে গেলে, তার জায়গায় সেই বাঁধা সময়ের জন্য লোক নেওয়া চলতে পারে৷কিন্তু জার্মানিতে যে প্রায় ২৮ লাখ মানুষ বাঁধা মেয়াদের চাকরিতে আবদ্ধ রয়েছেন, তার মধ্যে বেশ কিছু কর্মীর ক্ষেত্রে তাদের চাকরির মেয়াদ বাঁধা কেন, তার কোনো কারণ দেখানো হয়নি বলে প্রকাশ৷ বিশেষ করে ৩০ বছরের কম বয়সিদের ক্ষেত্রে নাকি প্রায়ই এ ধরনের বাঁধা মেয়াদের চাকরির প্রস্তাব দেওয়া হয়ে থাকে৷ সিডিইউ-সিএসইউ দল বিষয়টি নিয়ে নতুন করে আলাপ-আলোচনা করতে রাজি কিনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়৷
সরকারি আর বেসরকারি স্বাস্থ্য বীমা
জার্মানিতে স্বাস্থ্যবীমাধারীদের একটি প্রধান অংশসরকারি, অর্থাৎ বাধ্যতামূলক বীমা করিয়ে থাকেন; অপরদিকে রয়েছেন প্রায় ৯০ লাখ মানুষ, যারা বেসরকারি বীমা সংস্থাগুলির সঙ্গে স্বাস্থ্যবীমা করিয়েছেন৷ তফাৎটা হলো এই যে, যেহেতু বেসরকারি বীমা সংস্থাগুলি সাধারণত ডাক্তার ও হাসপাতালের কর্মীদের বেশি পারিশ্রমিক দেয়, সেহেতু ডাক্তার ও হাসপাতাল তথাকথিত ‘প্রাইভেট পেশেন্ট'-দের অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে৷ এর ফলে জার্মানিতে (বেসরকারিভাবে) ‘দুই শ্রেণীর চিকিৎসা ব্যবস্থার' অবতারণা ঘটেছে: যেমন প্রাইভেট পেশেন্ট-রা তাড়াতাড়ি বড় ডাক্তারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট পান ও হাসপাতালে আলাদা ঘর পান, বাকি সাত কোটি বিশ লাখ ‘বাধ্যতামূলক স্বাস্থ্যবীমাধারীরা' যা পান না৷ এসপিডি দল এই পরিস্থিতির পরিবর্তন, অন্তত উন্নতি ঘটাতে চায়, যেমন সকলের জন্য একই স্বাস্থ্যবীমা (যা সিডিইউ-সিএসইউ ইতিপূর্বেই প্রত্যাখ্যান করেছে), অথবা সব ধরনের বীমাধারীদের চিকিৎসার জন্য একই পারিশ্রমিকের ব্যবস্থা করে (যা কিনা আলোচনাসাপেক্ষ)৷
অপ্রাপ্তবয়স্ক উদ্বাস্তুদের পরিবারকে জার্মানিতে আনার সুযোগ দেওয়া
বার্লিনের উদ্বাস্তু শিশুরা
বার্লিনের আলোকচিত্রশিল্পী ডানিয়েল জনেনব্যার্গ মিডিয়াতে উদ্বাস্তুদের দেখানোর ধরনটা বদলাতে চেয়েছিলেন৷ এভাবেই সৃষ্টি হয়েছে ‘দে হ্যাভ নেমস’ বা ‘ওদেরও নাম আছে’ পর্যায়ের ছবিগুলি৷
ছবি: Daniel Sonnentag
ছবির পিছনে থাকে মানুষ
শাহেদ বাস করে বার্লিনের ইন্টারন্যাশনাল কংগ্রেস সেন্টারে, যা এখন উদ্বাস্তু আবাসন হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে৷ সেখানেই ডানিয়েল জনেনব্যার্গ উদ্বাস্তু শিশুদের ছবিগুলি তুলেছেন৷ ‘উদ্বাস্তু কথাটার পিছনে যে সব মানুষ আছে,তাদের আমি দেখাতে চেয়েছিলাম,’ বলেছেন জনেনব্যার্গ৷
ছবি: Daniel Sonnentag
স্মৃতির বোঝা
আট বছর বয়সের এলহাম সিরীয় কুর্দি৷ জনেনব্যার্গ লক্ষ্য করেন, মেয়েটির চোখে যেন সবসময় কিছুটা বিষাদ জড়িয়ে থাকে, যদিও অন্য সময়ে সে বাকি শিশুদের মতোই হাসে, খেলে৷ কিন্তু তার হাসিতেও যেন কোথায় কান্না মিশিয়ে থাকে, যা জনেনব্যার্গকে নাড়া দেয়৷
ছবি: Daniel Sonnentag
সে জানেও না
চার বছরের আলি এসেছে ইরাক থেকে৷ তার পরিবারের লোকজনদের রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন সম্প্রতি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে৷ চেষ্টা চলেছে, উকিলকে দিয়ে আদালতে আপিল করে যদি কিছু করা যায়৷ বার্লিনের আইসিসি উদ্বাস্তু শিবিরে বহু মানুষ তাদের আইনগত পরিস্থিতি সম্পর্কে সরকারি সিদ্ধান্তের জন্য বছর খানেক ধরে অপেক্ষা করছেন৷
ছবি: Daniel Sonnentag
ক্লাউন সাজা
আট বছরের জয়নাব আর ছয় বছরের রুকাইয়া এসেছে ইরাক থেকে৷ জনেনব্যার্গের মতে বার্লিনে উদ্বাস্তু পরিস্থিতি সামাল দেবার কাজে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা চলেছে৷ ত্রাণ সংগঠনগুলি তারই মধ্যে যেটুকু করা সম্ভব করছে৷
ছবি: Daniel Sonnentag
ভাষা শেখা
ছবিতে জনেনব্যার্গের কাঁধে জয়নাব৷ জয়নাব নাকি তার বয়সের তুলনায় খুবই চালাক-চতুর, কথা বলতে পারে, বোঝে-শোনে - বলেন জনেনব্যার্গ৷ রিফিউজি ক্যাম্পের অন্য ছেলেমেয়েদের মতো জয়নাবও খুব তাড়াতাড়ি জার্মান ভাষা শিখে ফেলেছে, বড়রা যা পারে না৷
ছবি: Daniel Sonnentag
অমিলের চেয়ে মিল বেশি
ছয় বছরের আলমা ও তার বাবা আহমেদ৷ ‘‘আমরা সকলেই খাই-দাই, ঘুমোই, শান্তিতে, নিরাপদে ছেলেমেয়েদের মানুষ করতে চাই,’ বলেন জনেনব্যার্গ৷ ‘‘মানুষ মানুষের সঙ্গে কথা বললেই বুঝতে পারবে যে, আমাদের মধ্যে অমিলের চেয়ে মিলই বেশি৷’’
ছবি: Daniel Sonnentag
খবরের কাগজের প্রথম পাতায় যে ছবি থাকে না
সাত বছর বয়সের জারা এসেছে ইরাক থেকে৷ হাসিখুশি, ভাবুক, মিষ্টি একটি মেয়ে৷
ছবি: Daniel Sonnentag
সপরিবারে জার্মানিতে
ছয় বছরের আয়া ও তার সাত বছরের ভাই হামজা জার্মানিতে আছে তাদের ছোটবোন আলমা আর ছয় মাসের ভাই রাইয়ানকে নিয়ে৷ বাবা-মা’ও সাথে আছেন৷ ভালোবাসায় ভরা এই পরিবারে মানুষ হয়ে কোমল মনোবৃত্তির শিশু হামজা সৎ ও সবল হয়ে বেড়ে উঠবে বলে জনেনব্যার্গের ধারণা৷
ছবি: Daniel Sonnentag
ছিল কনফারেন্স সেন্টার, হলো রিফিউজি ক্যাম্প
ইন্টারন্যাশনাল কংগ্রেস সেন্টার বা আইসিসি ছিল বিশ্বের বৃহত্তম কনফারেন্স সেন্টারগুলির মধ্যে একটি৷ ২০১৪ সালে অ্যাজবেস্টস দূষণের কারণে কেন্দ্রটি বন্ধ করে দেওয়া হয় ও ২০১৬ সালে উদ্বাস্তুদের সাময়িক আবাসন হিসেবে আবার খোলা হয়৷ আজ সেখানে সিরিয়া, ইরাক, ইরান, আফগানিস্তান, ইরিত্রিয়া ও বলকান দেশগুলি থেকে আসা প্রায় ৬০০ মানুষ থাকেন৷
ছবি: Daniel Sonnentag
9 ছবি1 | 9
বিষয়টি নিয়ে অসন্তোষের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি৷ সিরিয়ার মতো যুদ্ধপীড়িত দেশ থেকে আগত উদ্বাস্তুরা জার্মানিতে প্রভূত সুরক্ষা পেয়ে থাকেন, যার মধ্যে পড়ে, পরিবারবর্গকে জার্মানিতে আনার সুযোগ৷ আপাতত এই ‘পারিবারিক পুনর্মিলনের অধিকার' দু'বছরের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছে৷ এসিপিডি, সিডিইউ ও সিএসইউ দলের প্রাথমিক আলাপ-আলোচনায় স্থির হয়েছে যে, ভবিষ্যতে প্রতি বছর ১,০০০ পারিবারিক সদস্যকে জার্মানিতে আসতে দেওয়া হবে৷ এক্ষেত্রে অনেক বিশেষজ্ঞের মত হলো এই যে, সাধারণভাবে উদ্বাস্তুদের জার্মান সমাজে অন্তর্ভুক্তি ও বিশেষ করে অপ্রাপ্তবয়স্ক উদ্বাস্তুদেরঅপরাধবৃত্তি থেকে দূরে রাখার জন্য তাদের পরিবারবর্গের উপস্থিতি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ৷ তা সত্ত্বেও সিএসইউ দল আরো বেশি উদ্বাস্তু-অভিবাসীদের জার্মানিতে আসতে দেওয়ার বিরুদ্ধে৷
এসপিডির একটা না একটা জিত চাই
এ কথার অর্থ, সিডিইউ-সিএসইউ দলকে কোনো-না-কোনো ক্ষেত্রে ছাড় দিতে হবে, কেননা, এসপিডি দলের সাধারণ সদস্যরা ঠিক সেটাই প্রত্যাশা করবে৷ মজার কথা, রবিবার সামাজিক গণতন্ত্রীদের দলীয় সম্মেলনে জোট সরকার গঠন সম্পর্কে যে বিপুল দ্বিধা প্রকাশ পেয়েছে ও সেই সরকার গঠন সংক্রান্ত চুক্তি যে শেষমেষ দলের সব সদস্যের কাছে অনুমোদনের জন্য পেশ করা হবে – এই দু'টি শর্তের পরিপ্রেক্ষিতে এসপিডির কোনো-না-কোনো (নতুন বা পুরনো) দাবি না মিটিয়ে ইউনিয়ন দলগুলির পক্ষে ক্ষমতায় আসা সম্ভব নয়৷
ইয়েন্স থুরাও/এসি
উদ্বাস্তু পরিস্থিতি ও জার্মান রাজনীতি
জার্মানিতে বিপুল সংখ্যক শরণার্থীদের আগমন শুধু সরকারি ব্যবস্থাপনাকেই বিপদের মুখে ফেলেনি, অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও তার ছাপ ফেলেছে: চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল-এর জনপ্রিয়তা আজ কমতির দিকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Gebert
উদ্বাস্তু শিবিরে দাঙ্গা
হামবুর্গ শহরের ভিলহেল্মসবুর্গ এলাকায় শরণার্থীদের প্রাথমিক আশ্রয়কেন্দ্রটি ভরে যাওয়ায় আগন্তুকদের তাঁবুতে থাকার ব্যবস্থা করা হয়৷ মঙ্গলবার (৬ই অক্টোবর) সেখানে আফগানিস্তান ও আলবেনিয়া থেকে আগত উদ্বাস্তুদের মধ্যে ব্যাপক দাঙ্গা বাঁধে৷ লোয়ার স্যাক্সনি-র ব্রাউনশোয়াইগ-এও অনুরূপভাবে আলজিরীয় ও সিরীয় উদ্বাস্তুদের মধ্যে দাঙ্গা বাঁধে একটি চুরির অভিযোগকে কেন্দ্র করে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/C. Charisius
ইসলাম বিরোধীরা আবার মাথা চাড়া দিয়েছে
ড্রেসডেনে ইসলাম বিরোধী পেগিডা গোষ্ঠীর বিক্ষোভ সমাবেশে গত সোমবার প্রায় ন’হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করেন৷ বিক্ষোভকারীরা মূলত চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল-কেই বর্তমান উদ্বাস্তু সংকটের জন্য দায়ী করছেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/B. Settnik
ম্যার্কেল লাগাম টানলেন
চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল দৃশ্যত তাঁর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টোমাস ডেমেজিয়ের-এর গুরুত্ব কিছুটা খর্ব করে চ্যান্সেলরের দপ্তরের প্রধান পেটার আল্টমায়ার-কে শরণার্থী সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড সমন্বয়ের দায়িত্ব দিয়েছেন৷
ছবি: Reuters
উদ্বাস্তুর লাশ
টুরিঙ্গিয়া রাজ্যের সালফেল্ড-এ অবস্থিত একটি রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী আবাসে সোমবার একটি অগ্নিকাণ্ডের পর ২৯ বছর বয়সি এক ইরিট্রিয়ান উদ্বাস্তুর লাশ পাওয়া যায়৷ কিভাবে এই শরণার্থী প্রাণ হারিয়েছেন, তা এখনও অজ্ঞাত৷ তবে আবাসটিতে ইচ্ছাকৃতভাবে অগ্নিসংযোগের কোনো হদিশ পুলিশ এখনও পায়নি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
যে কোনো পন্থায়
টুরিঙ্গিয়ায় এর আগেও উদ্বাস্তু আবাস হিসেবে চিহ্নিত বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে শরণার্থীদের আসা বন্ধ করার চেষ্টা করা হয়েছে৷ যেমন বিশহাগেন-এর এই বাড়িটির ছাদ পুরোপুরি পুড়ে গিয়েছে৷ গত সোমবার এখানে প্রথম উদ্বাস্তুদের আসার কথা ছিল৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Gränzdörfer
ঘরে বাইরে
শরণার্থী সংকট এখন জার্মানির অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও টান ধরাচ্ছে৷ চ্যান্সেলর ম্যার্কেলের সিডিইউ দলের জোড়োয়া দল বাভারিয়ার সিএসইউ৷ তাদের প্রধান হর্স্ট জেহোফার সেপ্টেম্বর মাসের শেষে একটি দলীয় সম্মেলনে বক্তা হিসেব আমন্ত্রণ জানান হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অর্বান-কে, যিনি সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে উদ্বাস্তুর স্রোত আটকানোর চেষ্টা করেছেন৷
ছবি: Reuters/M. Dalder
হাওয়া যদি বদলায়
বাভারিয়ার অর্থমন্ত্রী মার্কুস জ্যোডার ইতিপূর্বেও বলেছেন: ‘‘আমরা (অর্থাৎ জার্মানি) বিশ্বকে বাঁচাতে পারি না৷’’ এমনকি তিনি অস্ট্রিয়া সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার কথাও চিন্তা করেছেন৷ তবে জ্যোডার যখন সম্প্রতি রাজনৈতিক আশ্রয় প্রাপ্তির সাংবিধানিক অধিকার সীমিত করার কথা বলেন, তখন জেহোফার স্বয়ং সাথে সাথে তা প্রত্যাখ্যান করেছেন৷