1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জ্যাকসনের নাচের ছন্দ স্তব্ধ হয়ে গেল অকস্মাত

২৬ জুন ২০০৯

গোটা বিশ্বকে নাচের ছন্দে মাতিয়ে দিয়েছিলেন তিনি৷ সেই শৈশব থেকেই৷ তিনি মাইকেল জ্যাকসন৷ মাত্র পঞ্চাশ বছর বয়স হয়েছিল তাঁর৷ ব্যক্তিজীবনের নানা সমস্যার মোকাবিলা করতে করতেই অকস্মাত থেমে গেল জ্যাকসনের ছন্দময় দুটি পায়ের যাত্রা৷

ছবি: AP

বৃহস্পতিবার দুপুর৷ লস অ্যাঞ্জেলেসে মস্তবড়ো ভাড়া করা যে প্রাসাদে মাইকেল জ্যাকসন থাকতেন, সেখানেই, সেই হলমবি হিলস-এর বাড়ির শোওয়ার ঘরে সাড়ে বারোটা নাগাদ অজ্ঞান অবস্থায় জ্যাকসনকে পাওয়া যায়৷ সঙ্গে সঙ্গেই কাছাকাছি একটি হাসপাতাল, উকলা মেডিক্যাল সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয় জ্যাকসনকে৷ তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে দমকল বিভাগের সাহায্য নেওয়া হয়৷ দমকল বিভাগের এক কর্মী স্টিভ রুডা যিনি জ্যাকসনকে হাসপাতালে পৌঁছে দেন, সেই রুডা লস অ্যাঞ্জেলেস টাইম সংবাদপত্রকে জানান, হাসপাতালে আনার আগেই নাকি মারা গিয়েছিলেন জ্যাকসন৷ কারণ, যখন হাসপাতালে আনা হচ্ছিল, তখনই শ্বাসপ্রশ্বাস বন্ধ হয়ে গিয়েছিল পপ স্টারের৷ এরপর রুদ্ধশ্বাস প্রতীক্ষা৷ অবশেষে চিকিৎকদের একটি দল ঘোষণা করেন, দুনিয়াখ্যাত পপ স্টার মাইকেল জ্যাকসন আর নেই৷ এই খবর আগুনের মত ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে৷ জ্যাকসনের অনুরাগীদের ভিড়ে ভেঙ্গে পড়ে হাসপাতাল চত্বর, তাঁর বাসস্থান৷

সেই ছোট্টবেলা থেকে গান গাইছেন, মঞ্চে আশ্চর্য সব ভঙ্গীতে নেচে গোটা দুনিয়াকে অবাক করে দিয়েছেন মাইকেল৷ ১৯৮৩ সালে তখন তরুণ মাইকেল জ্যাকসনের ভিডিও অ্যালবাম থ্রিলার হটকেকের মত বিক্রি হয়েছিল গোটা বিশ্বে৷ বেস্ট সেলার সেই ভিডিও অ্যালবামে মাইকেল জ্যাকসন রক অ্যান্ড রোলের অভিনব জাদু ছড়িয়ে দিয়েছিলেন৷ এরপর একের পর এক দুরন্ত সব গান আর কৃতকৌশলগত নৃত্যভঙ্গিমার নতুন নতুন আবিষ্কারের চমক, জ্যাকসন মানেই তখন অভিনবত্ব৷ পপুলার সঙ্গীত বা পপ এবং রকের জগতে এলভিস প্রিসলে একসময় যেভাবে গোটা বিশ্বের তরুণ প্রজন্মকে শাসন করেছেন, জ্যাকসন বলতে গেলে সেই এলভিসের ফেলে যাওয়া ব্যাটনটাই হাতে তুলে নিয়েছিলেন, অন্তত কিছুদিনের জন্য৷

মাইকেল জ্যাকসন- ১৯৮৩, ১৯৮৭ এবং ১৯৯০ সালেছবি: AP

জনপ্রিয়তার শিখরে আরোহন করতে করতে মাইকেল জ্যাকসন একসময়ে পরপর অজস্র বিতর্কে জড়িয়েছেন নিজেকে৷ তাঁর জীবনযাত্রাও ছিল অদ্ভুতরকম৷ বারবার বদলেছেন নিজেকে৷ চুল, চেহারা, এমনকি চামড়ার রঙ৷ শিল্পীর রোম্যান্টিসিজমের পাশাপাশি খামখেয়ালীপনাও বিভিন্ন সময়ে তাঁকে ঘিরে নানান খবরের জন্ম দিয়েছে৷ এই তো কিছুদিন আগে নিজের বাড়িতে প্রতিবেশী কিছু শিশুর সঙ্গে তিনি যৌন আচরণ করেছিলেন এমন ধরণের অভিযোগ আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছিল৷

বেশ কিছুদিন ধরে সঙ্গীতের জগত থেকে দূরে ছিলেন মাইকেল৷ হিসেবমত পঞ্চাশ বছরে পা দিয়েছেন গত বছরের অগাস্টে৷ নতুন করে গানের জগতে আবার ফিরে আসার ঘোষণা করেছিলেন৷ লন্ডনে আগামী অগাস্ট মাসে মস্তবড় কনসার্টে গান গাওয়ার কথা ছিল, সেটা হত জ্যাকসনের কামব্যাক৷ লস অ্যাঞ্জেলেসের বাড়িতে সেই কনসার্টের প্রস্তুতিই চলছিল গত দুই মাস ধরে৷ সেই পরিশ্রমের চাপ তাঁর দুর্বল শরীর নিতে পারে নি বলছেন বন্ধুবান্ধবেরা৷ দীর্ঘদিন ধরেই স্বাস্থ্য ভালো ছিল না৷ এমনিতেই অত্যন্ত শীর্ণকায় জ্যাকসন নিজের শরীর নিয়ে এত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন সারা জীবনে যার প্রভাব মারাত্মক হয়ে উঠছিল ক্রমশ৷ তার ওপর শেষের দিকে অর্থকষ্টও যথেষ্ট সমস্যা দিচ্ছিল মাইকেলকে৷ কিন্তু এত দ্রুত যে মৃত্যু এমন আচমকা তাঁকে কেড়ে নিয়ে যাবে, এটাও ভাবতে পারে নি কেউ৷ না তাঁর পরিবারের লোকজন, না জ্যাকসনের দুনিয়াজোড়া কোটি কোটি ভক্ত৷

তবু, সত্য আসলে সত্যই৷ মাইকেল জ্যাকসনের অকালমৃত্যুর অপ্রত্যাশিত সংবাদটা সেকথাকেই আবারও প্রমাণ করে দিল৷

প্রতিবেদক: সুপ্রিয় বন্দোপাধ্যায়, সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ