গভীর নিম্নচাপের কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে। সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত হেসেন।
বিজ্ঞাপন
ঝড়-বৃষ্টি-শিলাবৃষ্টি একসঙ্গে। যার জেরে মধ্য জার্মানির বিস্তীর্ণ অঞ্চল বিপর্যস্ত। কোথাও বন্যা পরিস্থিতি, কোথাও বা শিলা পড়ে ক্ষতি হয়েছে বাড়ি এবং গাড়ির। কোথাও আবার ঝড়ের দাপটে রাস্তায় গাছ ভেঙে পড়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে দূরপাল্লার রেল চলাচল।
হেসেনে ঝড়-বৃষ্টির কারণে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিভিন্ন জায়গায় জল জমে গেছে। রাস্তার উপর গাছ ভেঙে পড়েছে বেশ কিছু এলাকায়। বিপর্যয় মোকাবিলা কর্মীরা কাজে নামলেও কখন গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক হবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
ইটালি: বন্যায় বাড়ছে মৃতের সংখ্যা
ইটালির বন্যায় অন্তত ১৪ জন মারা গেছেন৷ তার ওপর ভূমিধস ও ঝড়ের কারণে জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেশটিতে ভ্রমণে সতর্কতা জারি করেছে৷
ইটালির উত্তরাংশেএমিলিয়া-রোমানিয়া অঞ্চলে ভয়ঙ্কর বন্যা হয়েছে৷ এতে সেখানে থাকা অনেক ইটালিয়ান তাদের ঘরে ফিরছেন৷ এদের কারো কারো কাদায় মাখামাখি অবস্থা৷ এতটা বন্যা হবে অনেকে বিশ্বাসই করতে পারেননি৷
ছবি: ANDREAS SOLARO AFP via Getty Images
বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানো
কোথাও কোথাও বন্যার পানি সরানোসহ এলাকা পরিষ্কারের কাজ শুরু হয়েছে৷ স্থানীয় পত্রপত্রিকাগুলোর খবরে দেখা গেছে, শত শত স্বেচ্ছাসেবী এই কাজে এগিয়ে এসেছেন৷
ছবি: Jennifer Lorenzini/REUTERS
আবার ভূমিধসের আশঙ্কা
আরো বৃষ্টি হতে পারে৷ এতে বন্যা ও ভূমিধস বাড়তে পারে৷ এ অবস্থায় জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভ্রমণে সতর্কতা জারি করেছে৷ বন্যায় এরইমধ্যে এক ডজনের বেশি মানুষ মারা যাবার খবর পাওয়া গেছে৷
ছবি: Igor Soban/PIXSELL/picture alliance
সরকারি সাহায্য
বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন৷ টুইটারে তিনি লিখেছেন, প্রয়োজনীয় ত্রাণ সরবরাহের জন্য সরকার প্রস্তুত৷
ছবি: Agazzi Sergio/IPA/ABACA/picture alliance
লোক সরিয়ে নেয়া হচ্ছে
এ যাবৎ ১০০টির মতো বিপদজনক ভূমিধসের খবর পাওয়া গেছে৷ এমিলিয়া-রোমানিয়া এলাকার দশ হাজারেরও বেশি অধিবাসীকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে৷
ছবি: ANDREAS SOLARO/AFP
নদীর পাড় ভেঙ্গেছে
প্রচণ্ড বৃষ্টিপাতে এই অঞ্চলের নদীগুলোর পানি উপচে পড়েছে৷ ২১টি নদীর পাড় ভেঙ্গে বন্যার পানিতে ৩৬টি শহর তলিয়েছে৷
শুধু মানুষদের নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে না, ইটালির সেনা ও কোস্ট গার্ড গৃহপালিত প্রাণীগুলোকেও নিরাপদে সরিয়ে নিতে সহযোগিতা করছে৷ কখনো কখনো হেলিকপ্টারও ব্যবহার করা হচ্ছে৷
ছবি: Claudia Greco/REUTERS
নিখোঁজ
এখনো কারো কারো খোঁজ মিলছে না৷ বিশেষ করে রাভেনা, ফোরলি-চেজেনা, রিমিনি ও বলোনিয়া প্রদেশ বন্যায় বেশি আক্রান্ত হয়েছে৷ সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন৷
ফ্রাঙ্কফুর্ট এবং হ্যানোভারের ট্রেন চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। বন্ধ রাখা হয়েছে বার্লিন এবং হামবুর্গের মধ্যবর্তী রেল যোগাযোগও। বহু জায়গায় মাঝ রাস্তায় ট্রেন দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে যাত্রীরা ট্রেনেই আটকে পড়েছেন। সারা রাত ট্রেনে কাটাতে হয়েছে অনেকে।
শিলা পড়ে বহু গাড়ি নষ্ট হয়েছে। গাড়ির উপর গাছ পড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। রাইন অঞ্চলেও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস ঘোষণা করা হয়েছে। নিম্নচাপের কারণেই এই বৃষ্টিপাত হবে বলে জানানো হয়েছে। রাইন অঞ্চল থেকে ওইনিম্নচাপ লোয়ার স্যাক্সনি এবং হামবুর্গের দিকে ঘুরবে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। ওই অঞ্চলে পৌঁছানোর পর নিম্নচাপটি দুর্বল হয়ে পড়বে।
বৃহস্পতিবার ঝড়ের গতিবেগ ছিল প্রায় ১০০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা। যে শিলা পড়েছে, তার আয়তন পাঁচ সেন্টিমিটারের কাছাকাছি।
শুধু জার্মানি নয়, আগামী কয়েকদিন নিম্নচাপের কারণে ইউরোপের একাধিক জায়গায় ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে হাওয়া অফিস। জলবায়ু পরিবর্তন এই ধরনের ঝড়ের অন্যতম কারণ বলে মনে কার হচ্ছে।
ডিপিএ জানিয়েছে, হাওয়া অফিসের বক্তব্য, ভূমধ্যসাগরে এই নিম্নচাপটি তৈরি হয়েছিল। স্পেন এবং ফ্রান্সেও ব্যাপক ঝড়বৃষ্টির আশঙ্কা আছে। এই নিম্নচাপের কারণে বৃষ্টিপাত আরো বাড়বে। ফলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কাও আছে।