ঝাপোরিজ্ঝিয়াতে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা। মৃত অন্তত ১২। দনেৎস্কের টরস্কে ও অন্য গ্রাম থেকে রুশ সেনা পালালো।
বিজ্ঞাপন
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি রোববার জানিয়েছেন, ঝাপোরিজ্ঝিয়াতে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্ততপক্ষে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর পাশাপশি চলছে গোলাবর্ষণ। জেলেনস্কি জানিয়েছেন, ছয় শিশু-সহ ৪৯ জন হাসপাতালে ভর্তি।
এর আগে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন, ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ফলে ১৭ জন মারা গেছেন। সিটি কাউন্সিলের সেক্রেটারি কুর্তেভ বলেছেন, অন্ততপক্ষে ২০টি বাড়ি, ৪০টি অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিং রাশিয়ার গোলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ঝাপোরিজ্ঝিয়ার গভর্নর স্তারুখ সামাজিক মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিংয়ের ছবি পোস্ট করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, উদ্ধারকারী দল দেখছে, ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আর কেউ বেঁচে আছেন কি না।
ইউক্রেন যুদ্ধ: পরমাণু যুদ্ধ কি আসন্ন!
ফের ঝাপোরিজ্ঝিয়া পরমাণু কেন্দ্রের সামনে রকেট হামলা রাশিয়ার। আরো অঞ্চল পুনর্দখলের দাবি জেলেনস্কির।
ছবি: REUTERS
রকেট হামলা
বৃহস্পতিবার পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের খুব কাছে রকেট হামলা চালায় রাশিয়া। রকেটের আঘাতে একটি বাড়ি সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। দুই জনের মৃত্যু হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে।
ইউক্রেন প্রশাসনের স্থানীয় সূত্র সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে, ভাঙা বাড়ির নীচে এখনো অন্তত পাঁচজন আটকে আছেন বলে মনে করা হচ্ছে। তাদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। মৃতদের মধ্যে একজন নারী। অন্যজনের অ্যাম্বুলেন্সে মৃত্যু হয়েছে।
ঝাপোরিজ্ঝিয়া পরমাণু কেন্দ্রটি রাশিয়া দখল করতে চায়। বুধবার এবিষয়ে দেশের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন একটি ডিক্রি জারি করেছিলেন। পরমাণু কেন্দ্রটির সম্পূর্ণ হস্তান্তর চেয়েছিলেন তিনি।
ছবি: REUTERS
ইউক্রেনের বক্তব্য
ইউক্রেন কোনোভাবেই পরমাণু কেন্দ্রটি রাশিয়ার হাতে দিতে প্রস্তুত নয়। বুধবার দেশের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, ইউক্রেন ঝাপোরিজ্ঝিয়া অঞ্চলে আরো তিনটি জায়গা পুনর্দখল করেছে। কোনোভাবেই ঝাপোরিজ্ঝিয়া পরমাণু কেন্দ্র রাশিয়ার হাতে তুলে দেওয়া হবে না।
ছবি: Ukrainian Presidency/AP/picture alliance
পরমাণু সংস্থার প্রধান ইউক্রেনে
ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সির প্রধান কিয়েভে গিয়ে জেলেনস্কির সঙ্গে দেখা করেছেন। কীভাবে ইউরোপের সবচেয়ে বড় পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রটিকে রক্ষা করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা করেছেন তিনি। জেলেনস্কিকে আশ্বাস দিয়েছেন।
ছবি: Valentyn Ogirenko/REUTERS
রাশিয়ার অধিকারে
যুদ্ধ শুরু হওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রটি রাশিয়া দখল করে। তার ভিতর থেকেই তারা লড়াই চালাচ্ছিল। কিন্তু পরমাণু কেন্দ্রটি দখল করলেও কর্মীদের তারা তাড়িয়ে দেয়নি। ইউক্রেনের কর্মীরাই সেখানে কাজ করছিলেন।
ছবি: Alexander Ermochenko/REUTERS
বাইডেনের ভয়
বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, রাশিয়ার সেনা লড়াইয়ে অনেক পিছিয়ে পড়েছে। এবং সে কারণেই তার ভয়, পুটিন যে কোনো সময় পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করতে পারেন। ঠান্ডা লড়াইয়ের পর পরমাণু অস্ত্র নিয়ে এত চিন্তা করতে হয়নি বলে এদিন মন্তব্য করেছেন বাইডেন।
ছবি: picture alliance / Consolidated News Photos
রাশিয়ার অবস্থান
পুটিন আগেই জানিয়ে রেখেছেন, দেশের সার্বভৌমত্ব আঘাত পেলে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করতেও তিনি ভয় পাবেন না।
ছবি: Dmitry Astakhov/Sputnik/REUTERS
ইউক্রেনের অবস্থান
জেলেনস্কি জানিয়েছেন, ২০১৪ সালে ইউক্রেনের যে জমি দখল হয়েছে, দেশের সেনা তা উদ্ধeর করতেও বদ্ধপরিকর। যার অর্থ ইউক্রেন ক্রাইমিয়া দখলেরও চেষ্টা করবে। পুটিন আগেই জানিয়েছিলেন, ক্রাইমিয়ায় আঘাত হানলে রাশিয়া ফের কিয়েভের অভিমুখে যাত্রা করবে।
ছবি: dpa/APA Images/Zuma/picture alliance
9 ছবি1 | 9
ঝাপোরিজ্ঝিয়া শহর হলো পরমাণু কেন্দ্র থেকে ১২৫ কিলোমিটার দূরে। এখন রাশিয়ার সেনা পরমাণু কেন্দ্র দখল করে আছে।
শনিবার সকালে ক্রাইমিয়া ব্রিজে বিস্ফোরণের পর একটা অংশ ভেঙে পড়ে। এর ফলে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে শক্তিপ্রয়োগ করে পুটিনের জয় পাওয়ার চেষ্টার উপর প্রতীকী আঘাত করা হয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। এরপর থেকেই আশঙ্কা করা হচ্ছে, রাশিয়া প্রত্যাঘাত করবে।
পুটিনের দাবি
পুটিন জানিয়েছেন, ক্রাইমিয়া ব্রিজে বিস্ফোরণ একটা সন্ত্রাসবাদী কাজ এবং এর পিছনে ইউক্রেন আছে। তার অভিযোগ, রাশিয়ার বেসামরিক পরিকাঠামো ধ্বংস করার লক্ষ্য নিয়ে এই হামলা করা হয়েছে। ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী এর পরিকল্পনা করেছে এবং তারাই বিস্ফোরণের পিছনে আছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির পরামর্শদাতা এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, এখানে একটাই সন্ত্রাসী দেশ আছে। পুরো বিশ্ব জানে সেই দেশের নাম।
দনেৎস্ক থেকে
আলজাজিরা জানাচ্ছে, দনেৎস্কের টরস্কে ও অন্য গ্রাম থেকে রাশিয়ার সেনা তড়িঘড়ি পালিয়েছে। এই গ্রামগুলি এখন ইউক্রেনের সেনার অধিকারে। তারাই রাস্তায় পাহাড়া দিচ্ছে। প্রায় জনমানবশূন্য গ্রামে দেখা যাচ্ছে, রাশিয়ার সেনা বিভিন্ন বাড়ি দখল করেছিল। সেখান থেকে দ্রুত তারা পালিয়েছে। তাদের পোশাক বাড়িতে শুকাতে দেয়া ছিল। রাস্তায় রুশ সেনার প্রচুর মৃতদেহও পড়ে আছে বলে জানানো হয়েছে।