বিতর্কের কেন্দ্রে ঝাপোরিজ্ঝিয়া পরমাণু কেন্দ্র। কিয়েভ ও মস্কোর অভিযোগ, এই পরমাণু কেন্দ্র উড়িয়ে দেয়ার চক্রান্ত চলছে।
বিজ্ঞাপন
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁকে ফোনে বলেছেন, রাশিয়া ঝাপোরিজ্ঝিয়া পরমাণু কেন্দ্রে বিস্ফোরণের পরিকল্পনা করেছে। ইউক্রেনের সেনার তরফে জানানো হয়েছে, ওই পরমাণু কেন্দ্রের দুইটি পাওয়ার ইউনিটের ছাদে বিস্ফোরক রাখা হয়েছে।
জেলেনস্কি টুইট করে জানিয়েছেন, ''আমি মাক্রোঁকে সাবধান করে দিয়ে বলেছি, রাশিয়া ঝাপোরিজ্ঝিয়া নিয়ে ভয়ংকর উসকানি দিচ্ছে। আইএইএ-র সঙ্গে একজোট হয়ে পরিস্থিতি যতটা সম্ভব নিয়ন্ত্রণে আনা যায়, তার চেষ্টা করা হবে বলে আমরা একমত হয়েছি।''
রাশিয়ার অ্যাটোমিক এনার্জি এজেন্সির প্রধান পরামর্শদাতা রেনাত কারছা সরকারি টেলিভিশনে বলেছেন, ''কিয়েভ ঝাপোরিজ্ঝিয়াতে গোলা মারার পরিকল্পনা করেছে। সেই সঙ্গে তারা বোমাও ফেলতে পারে।''
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, ''পরিস্থিতি যথেষ্ট উত্তেজক। কিয়েভ ঝাপোরিজ্ঝিয়াতে অন্তর্ঘাতমূলক কাজ করতে পারে। তার পরিণতি ভয়ংকর হবে।''
ইউক্রেন যুদ্ধ: পরমাণু যুদ্ধ কি আসন্ন!
ফের ঝাপোরিজ্ঝিয়া পরমাণু কেন্দ্রের সামনে রকেট হামলা রাশিয়ার। আরো অঞ্চল পুনর্দখলের দাবি জেলেনস্কির।
ছবি: REUTERS
রকেট হামলা
বৃহস্পতিবার পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের খুব কাছে রকেট হামলা চালায় রাশিয়া। রকেটের আঘাতে একটি বাড়ি সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। দুই জনের মৃত্যু হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে।
ইউক্রেন প্রশাসনের স্থানীয় সূত্র সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে, ভাঙা বাড়ির নীচে এখনো অন্তত পাঁচজন আটকে আছেন বলে মনে করা হচ্ছে। তাদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। মৃতদের মধ্যে একজন নারী। অন্যজনের অ্যাম্বুলেন্সে মৃত্যু হয়েছে।
ঝাপোরিজ্ঝিয়া পরমাণু কেন্দ্রটি রাশিয়া দখল করতে চায়। বুধবার এবিষয়ে দেশের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন একটি ডিক্রি জারি করেছিলেন। পরমাণু কেন্দ্রটির সম্পূর্ণ হস্তান্তর চেয়েছিলেন তিনি।
ছবি: REUTERS
ইউক্রেনের বক্তব্য
ইউক্রেন কোনোভাবেই পরমাণু কেন্দ্রটি রাশিয়ার হাতে দিতে প্রস্তুত নয়। বুধবার দেশের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, ইউক্রেন ঝাপোরিজ্ঝিয়া অঞ্চলে আরো তিনটি জায়গা পুনর্দখল করেছে। কোনোভাবেই ঝাপোরিজ্ঝিয়া পরমাণু কেন্দ্র রাশিয়ার হাতে তুলে দেওয়া হবে না।
ছবি: Ukrainian Presidency/AP/picture alliance
পরমাণু সংস্থার প্রধান ইউক্রেনে
ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সির প্রধান কিয়েভে গিয়ে জেলেনস্কির সঙ্গে দেখা করেছেন। কীভাবে ইউরোপের সবচেয়ে বড় পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রটিকে রক্ষা করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা করেছেন তিনি। জেলেনস্কিকে আশ্বাস দিয়েছেন।
ছবি: Valentyn Ogirenko/REUTERS
রাশিয়ার অধিকারে
যুদ্ধ শুরু হওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রটি রাশিয়া দখল করে। তার ভিতর থেকেই তারা লড়াই চালাচ্ছিল। কিন্তু পরমাণু কেন্দ্রটি দখল করলেও কর্মীদের তারা তাড়িয়ে দেয়নি। ইউক্রেনের কর্মীরাই সেখানে কাজ করছিলেন।
ছবি: Alexander Ermochenko/REUTERS
বাইডেনের ভয়
বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, রাশিয়ার সেনা লড়াইয়ে অনেক পিছিয়ে পড়েছে। এবং সে কারণেই তার ভয়, পুটিন যে কোনো সময় পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করতে পারেন। ঠান্ডা লড়াইয়ের পর পরমাণু অস্ত্র নিয়ে এত চিন্তা করতে হয়নি বলে এদিন মন্তব্য করেছেন বাইডেন।
ছবি: picture alliance / Consolidated News Photos
রাশিয়ার অবস্থান
পুটিন আগেই জানিয়ে রেখেছেন, দেশের সার্বভৌমত্ব আঘাত পেলে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করতেও তিনি ভয় পাবেন না।
ছবি: Dmitry Astakhov/Sputnik/REUTERS
ইউক্রেনের অবস্থান
জেলেনস্কি জানিয়েছেন, ২০১৪ সালে ইউক্রেনের যে জমি দখল হয়েছে, দেশের সেনা তা উদ্ধeর করতেও বদ্ধপরিকর। যার অর্থ ইউক্রেন ক্রাইমিয়া দখলেরও চেষ্টা করবে। পুটিন আগেই জানিয়েছিলেন, ক্রাইমিয়ায় আঘাত হানলে রাশিয়া ফের কিয়েভের অভিমুখে যাত্রা করবে।
ছবি: dpa/APA Images/Zuma/picture alliance
9 ছবি1 | 9
কোনো পক্ষই তাদের দাবির সমর্থনে কোনো তথ্যপ্রমাণ দেয়নি। এই পরমাণু কেন্দ্র রাশিয়ার সেনার অধিকারে আছে। এরপর একাধিকবার দুই পক্ষ অভিযোগ করেছে, ঝাপোরিজ্ঝিয়াকে লক্ষ্য করে গোলা ফেলছে অন্য পক্ষ।
আইএইএ-র বক্তব্য
জাতিসংঘের সংস্থা আইএইএ-র তরফে জানানো হয়েছে, তাদের বিশেষজ্ঞরা ঝাপোরিজ্ঝিয়াতে কোনো বিস্ফোরক দেখতে পাননি। তবে তারা বলেছেন, আরো কিছু জায়গায় তাদের যেতে দিতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা এই পরমাণু কেন্দ্রের কিছু এলাকায় সম্প্রতি গেছেন এবং এখনো পর্যন্ত তাদের চোখে অস্বাভাবিক কিছু ধরা পড়েনি। তবে তাদের তিন ও চার নম্বর রিঅ্যাক্টরের ছাদ-সহ কিছু এলাকায় যেতে দেয়া উচিত বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। কেন এই জায়গায় যাওয়া জরুরি, তা আইএএইএ জানায়নি।
ইউক্রেনের দাবি
ইউক্রেনের সেনা দাবি করেছে, তারা দনেৎস্কের মাকিভকাতে রাশিয়ার ইউনিট ধ্বংস করেছে। সেনা নির্দিষ্ট লক্ষ্যে আঘাত করার ফলে মাকিভকায় আর রাশিয়ার সেনার কোনো অস্তিত্ব নেই। এই দাবির সমর্থনে ভিডিও প্রকাশ করেছে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী।