1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ওয়াসার পানি পরীক্ষা করে না বিএসটিআই

২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

সম্প্রতি বোতল ও জারে করে পানি বিক্রয়কারী তিন প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল করেছে বিএসটিআই৷ কিন্তু ঝামেলা হতে পারে এই শঙ্কায় ওয়াসার পানি পরীক্ষা না করার কথা ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন এক বিএসটিআই কর্মকর্তা৷

Leitungswasser
ছবি: picture-alliance/R. Weihrauch

‘বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউশন’ বিএসটিআই-এর উপ-পরিচালক রিয়াজুল হক বলেন, ‘‘ওয়াসা তো প্রচুর মানুষকে পানি দিচ্ছে৷ এই পানি শুধু খাবার কাজে নয়, নানা ধরনের কাজে ব্যবহার হচ্ছে৷ এটা আমরা পরীক্ষা করিনি৷ কারণ পরীক্ষার পর যদি দেখা যায় এই পানির মান আমাদের স্ট্যান্ডার্ডের নীচে, তাহলে একটা ঝামেলা হবে৷''

তবে ওয়াসার পানি পরীক্ষা করা তাদের জন্য বাধ্যতামূলক নয় বলে জানান বিএসটিআই কর্মকর্তা রিয়াজুল হক৷ ‘‘আমাদের কাজ বোতল ও জারের পানি নিয়ে,'' বলেন তিনি৷

উল্লেখ্য, গত অক্টোবরে বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, নগরাঞ্চলে পাইপলাইনে সরবরাহ করা ৮২ শতাংশ পানিতে ক্ষতিকারক ই-কোলাই ব্যাকটেরিয়ার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি৷ ওই প্রতিবেদনের পর নভেম্বরে উচ্চ আদালতে একটি রিট করা হয়৷

পানি বাজার থেকে এনে পরীক্ষা করি, পানির মান অনুমোদিত সীমার চেয়ে নীচে থাকলে লাইসেন্স বাতিল করা হয়:রিয়াজুল হক

This browser does not support the audio element.

ওই রিটের পর ঢাকা মহানগরীর ওয়াসার পানিতে ই-কোলাই ব্যাকটেরিয়া আছে কি না, তা পরীক্ষার জন্য পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট৷ পরবর্তী দুই মাসের মধ্যে পানি পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশও দেয়া হয়৷ চলতি মাসেই সেই প্রতিবেদন দেয়ার কথা থাকলেও কমিটি আবারও সময় নিয়েছে৷

রিটকারীর আইনজীবী তানভীর আহমেদ বলেছেন, প্রতিবেদন পেলে জানা যাবে, আসলে ওয়াসার পানিতে ই-কোলাই ব্যাকটেরিয়া আছে কি-না?

বিশ্বব্যাংকের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের প্রায় সাড়ে সাত কোটি মানুষ অপরিচ্ছন্ন এবং অনিরাপদ উৎসের পানি পান করছে৷ পানির নিরাপদ উৎসগুলোর ৪১ শতাংশই ক্ষতিকারক ই-কোলাই ব্যাকটেরিয়াযুক্ত এবং ১৩ শতাংশে রয়েছে আর্সেনিক৷ পাইপলাইনের পানির ৮২ শতাংশেই রয়েছে ই-কোলাই৷ ৩৮ শতাংশ টিউবওয়েলের পানিতে পাওয়া গেছে এই ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া, আছে আর্সেনিকও৷

স্বাস্থ্যের কী ক্ষতি হতে পারে?

ই-কোলাইসহ নানা ধরনের ব্যাকটেরিয়াযুক্ত পানি পান করলে কী ধরনের রোগ হতে পারে? জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের সাবেক ডীন অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘শুধু ই-কোলাই নয়, যে কোনো ধরনের ব্যাকটেরিয়াযুক্ত পানি পান করলে পেটের সমস্যা হতে পারে৷ পাতলা পায়খানা, বমিসহ নানা ধরনের সমস্যা হয়৷'' 

পানি টগবগ করে ফুটিয়ে পান করুন, তাহলে রোগব্যাধি থেকে মুক্তি সম্ভব: ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ

This browser does not support the audio element.

দীর্ঘমেয়াদি কোনো সমস্যা হয় কি-না? জবাবে তিনি বলেন, ‘‘যে রোগগুলো হয় সেগুলো নিরাময় উপযোগী৷ আপনি চিকিৎসা নিলে সুস্থ হয়ে উঠবেন৷ তবে পানি ফুটিয়ে খেলে সব ধরনের ব্যাকটেরিয়া মুক্ত করা সম্ভব৷ তাই আমার পরামর্শ, পানি টগবগ করে ফুটিয়ে নিয়ে তারপর পান করুন৷ তাহলে এই ধরনের রোগব্যাধি থেকে মুক্তি সম্ভব৷''

বিএসটিআই-এর কাজ

পানির মান দেখতে বিএসটিআই কী ধরনের কার্যক্রম চালাচ্ছে? জানতে চাইলে রিয়াজুল হক বলেন, ‘‘সারা দেশে বোতলজাত ও জারের পানি বিক্রির জন্য ১৭০টির মতো প্রতিষ্ঠান আমাদের কাছ থেকে লাইসেন্স নিয়েছে৷ আমরা নিয়মিত তাদের পানি বাজার থেকে এনে পরীক্ষা করি৷ সেখানে কারো পানির মান অনুমোদিত সীমার চেয়ে নীচে নেমে গেলে তাদের লাইসেন্সও বাতিল করা হয়৷ এটা বিএসটিআই-এর প্রতিদিনকার কাজ৷ কিন্তু অনুমোদনহীন অনেক প্রতিষ্ঠান পানি বিক্রি করছে৷ গত এক সপ্তাহে এমন ৪০ হাজার পানির জার ধ্বংস করা হয়েছে৷ এগুলোর মান একেবারেই নিম্নমানের৷''

লাইসেন্স বাতিল

‘প্রতারণার নাম বোতলজাত পানি' এই শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে উচ্চ আদালতে রিট করেছিলেন শাম্মী আক্তার নামে একজন নারী৷ তাঁর রিটের উপর ভিত্তি করে আদালত বিএসটিআইকে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন৷

বাজার থেকে সংগ্রহ ২২টির প্রতিবেদনের মধ্যে ১২টি মানসম্মত এবং ১০টি নিম্নমানের: জে আর খান রবিন

This browser does not support the audio element.

এরপর বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউশন বিএসটিআই পরীক্ষার জন্য বাজার থেকে ২৮টি পানির নমুনা সংগ্রহ করে বলে জানান শাম্মী আক্তারের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জে আর খান রবিন৷ ‘‘এর মধ্যে ২২টির প্রতিবেদনের মধ্যে ১২টি মানসম্মত এবং ১০টি নিম্নমানের৷ এই ১০টিকে শো'কজের পর তিনটি কোম্পানি জবাব দেয়নি৷ তাই তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে৷ বাকি সাতটি শো'কজের জবাব দিয়ে মানোন্নয়নের জন্য সময় চেয়েছে৷ এ কারণে তাদের লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছে৷ এছাড়া লাইসেন্স না থাকায় ৩৬ কারখানার উৎপাদন বন্ধ করা হয়েছে৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ