1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ঝুঁকিপূর্ণ সমগ্র বাংলাদেশ: ভুল, অবহেলা না সার্কাস?

১৬ এপ্রিল ২০২০

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ও তার ভয়াবহতা নিয়ে কথা আলাপ শুরু হয়েছে অন্তত তিন মাস আগে৷ কর্তৃপক্ষ বলেছিলেন, আমাদের সব প্রস্তুতি আছে৷

Sars-CoV-2 Illustration
ছবি: Reuters/NEXU Science Communication

সব প্রস্তুতির এই দেশে সব ফ্লাইট চালু রাখা হলো৷ হঠাৎ হঠাৎ বিদেশফেরতদের কপালে হাত দিয়ে দেখা হলো জ্বরটর আছে কিনা, এর কিছুদিন পর থেকে ঠিকানা সাকিন জেনে রেখে বলা হলো কিছুদিন ঘর থেকে বের হবেন না৷ বিদেশফেরতরা একটু জিরিয়ে নিয়ে ঘুরলেন, ফিরলেন, হাডুডু খেললেন, কেউ কেউ ঘটা করে বেছে নিলেন জীবনসঙ্গী৷ নিরাপদে এদেশে আসতে পারলো করোনা ভাইরাস

সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দিন রাত সালাম নিতে নাভিশ্বাস উঠলো নগরবাসীর৷ নির্বাচনের পরে চলতে থাকলো আনন্দ আয়োজন, কনসার্ট৷ একজন মেয়র ধরে বেঁধে লোকজনকে শেখালেন কীভাবে হাত ধুতে হয়৷

সমগ্র বাংলাদেশকে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণার বিজ্ঞপ্তিছবি: Health Ministry of Government of Bangladesh

১০ দিনের ছুটি হলো৷ সবাই মিলে চলে গেল যার যার নিজ বাড়িতে৷ গণপরিবহন বন্ধ করে দেওয়া হল৷ ঢাকার সঙ্গে সব জেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা হলো৷ রাস্তায় পুলিশ, ম্যাজিস্ট্রেট৷ বাইরে বের হলেই কান ধরে উঠবোস বা কোনো মেম্বার চেয়ারম্যানের লাঠির বাড়ি৷ রীতিমত তথ্য বিবরণী দেগে সেনাবাহিনী জানালো এবার থেকে রাস্তায় কড়াকড়ি৷

এর মধ্যেই একদিন দলে দলে মুরগি বোঝাই হয়ে ফিরে এলেন আমাদের শ্রমিক ভাইবোনেরা৷ কারণ রপ্তানি করা হয় এমন কারখানা খোলা রাখা যাবে যদি করোনা ঠেকানোর উপযুক্ত ব্যবস্থা থাকে৷ এই উপযুক্ত ব্যবস্থা কী তা দেখা গেল কেউ জানে না৷ তাই ছুটি বাড়ানো হলো, শ্রমিকেরা কেউ ফিরে গেলেন আবার, আবার মুুরগি বোঝাই৷

আলেম উলামাদের কেউ কেউ বললেন, কাবা শরীফসহ সারা দুনিয়াতে বন্ধ হলেও আমােদর দেখার সময় নাই৷ কেউ বললেন, করোনা থাকলে কোরান মিথ্যা হয়ে যাবে! করোনা ভাইরাস মহাসমারোহে বিস্তারও লাভ করতে পারলো, অন্তত ছড়িয়ে যাওয়ার মতো উপযুক্ত পরিবেশ যে পেল, সেটা করোনার ইন্টারভিউ না নিয়েও মোটামুটি বলা যায়৷ এর মধ্যে থানকুনি থেকে ইথানল বা গরম পানি সবই চলেছে রমরম করে৷

খালেদ মুহিউদ্দীন, প্রধান, ডয়চে ভেলে বাংলা বিভাগছবি: DW/P. Böll

দিনের বেলায় কাঁচাবাজারে গাদাগাদি করে মানুষকে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য কিনতে দেখা যাচ্ছে৷ আবার আমাদের সাবধান করা হচ্ছে সন্ধ্যা ছয়টার পর বাইরে না যেতে৷ যেন করোনার হাতে কোনো হাতঘড়ি আছে, যা দেখে সে সংক্রমিত হওয়ার সময় মিলিয়ে নেবে৷

বৃহস্পতিবার বিকেলে পরম ক্ষমতাধর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ এক পত্র মারফত বললেন, যেহেতু, জনসাধারণের একে অপরের সাথে মেলামেশা নিষিদ্ধ করা ছাড়া সংক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভব নয় এবং যেহেতু বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় এই রোগের সংক্রমণ ঘটেছে৷ সেহেতু ২০১৮ সালের ৬১ নম্বর আইনের ১১(১) ধারার ক্ষমতাবলে সমগ্র বাংলাদেশকে সংক্রমণের ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হলো

সিরিয়াসলি! জনাব আজাদ, আপনি মনে করছেন এখন আপনার এই আদেশ দেওয়ার যথাযথ সময়! কথায় কথায় উন্নত দুনিয়া বা সারা পৃথিবীর উদাহরণ দেওয়া হয়৷ পুরো পৃথিবী প্রস্তুতিহীন ছিল বলে যে ভুল করেছে আপনি জেনে শুনে সময় পেয়েও সেই ভুলই করবেন?

খালেদ মুহিউদ্দীন ডয়চে ভেলের বাংলা বিভাগের প্রধান। ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত।
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ