1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

টিউনিশিয়ার সংহতির প্রয়োজন

রাইনার সলিচ/এসবি১৯ মার্চ ২০১৫

টিউনিসে জাতীয় মিউজিয়ামের উপর সন্ত্রাসী হামলা পশ্চিমা মূল্যবোধের উপর হামলা নয়৷ রাইনার সলিচ মনে করেন, এই হামলার লক্ষ্য ছিলো আরব বিশ্বের সামাজিক ভবিষ্যৎ সম্পর্কে স্বপ্ন৷

Tunesien Tunis Terroranschlag Bardo Museum Polizei Sicherheit Fahndung
ছবি: Reuters/Z. Souissi

জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রাংক ভাল্টার স্টাইনমায়ার অত্যন্ত সঠিকভাবে শব্দচয়ন করেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘টিউনিস-এর সন্ত্রাসী হামলা আসলে আমাদের সবার উপর এক কাপুরুষোচিত হামলা, মানবজাতির সাধারণ মূল্যবোধের উপর হামলা৷''

এটা শুধু কোনো দুঃখজনক ঘটনা সম্পর্কে ভেবেচিন্তে বলা এক কূটনৈতিক বিবৃতি নয়, এর পেছনে আরও গভীর সত্য রয়েছে, যাতে হামলাকারীদের সম্ভাব্য উদ্দেশ্য বোঝা যায়৷ তারা ভেবেচিন্তেই টিউনিশিয়াকে বেছে নিয়েছে৷ মডেল হিসেবে টিউনিশিয়ার সামাজিক ভবিষ্যতের স্বপ্নের উপর হামলা চালানো হয়েছে৷ এই ‘ভিশন' বা স্বপ্ন এমন এক আরব বিশ্বের, যেখানে স্থিতিশীলতা মানেই দমননীতি নয়৷ যেখানে নানা বাধা ও চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও গণতন্ত্র, সুশীল সমাজ, উন্নয়ন ও মানবাধিকারের সুযোগ রয়েছে৷

স্বপ্নের উপর হামলা

টিউনিশিয়া তথাকথিত ‘আরব বসন্ত'-র মাতৃভুমি হিসেবে পরিচিত৷ গোটা অঞ্চলে এটিই একমাত্র দেশ, যেখানে এই সব মূল্যবোধের কিছু চিহ্ন রয়েছে৷ সে দেশে নরম ইসলামপন্থি ও একাধিক ধর্মনিরপেক্ষ শক্তি ঘৃণা ও সংঘাতের বদলে সংলাপের পথই বেছে নিয়েছে৷ সুশীল সমাজ অত্যন্ত সক্রিয়৷ অন্যান্য আরব দেশের তুলনায় সে দেশে নাগরিক – বিশেষ করে নারীদের অধিকার প্রায় আদর্শ বলা চলে৷ শুধু সন্ত্রাসবাদী নয়, অঞ্চলের অনেক স্বৈরাচারী শাসকও এমন আদর্শ পছন্দ করে না৷ কারণ এই মডেলের সামনে তাদের নিজস্ব আদর্শ ও সামাজিক ধারণা প্রশ্নের মুখে পড়ে৷ মিউজিয়ামের উপর হামলা শুধু টিউনিশিয়ার প্রাক-ইসলামি ঐতিহ্যের উপর আঘাত নয়, যেমনটা ব়্যাডিকাল সালাফি ও জিহাদিরা সিরিয়া ও ইরাকে করে চলেছে৷ আজকের টিউনিশিয়াকে তারা পশ্চিমা জগতের ‘আদরের সন্তান' বলে মনে করে৷ তাই সে দেশের বিরুদ্ধে সংগ্রাম ন্যায্য বলে তারা মনে করে৷ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে টিউনিশিয়া গোটা অঞ্চলে সাফল্যের এক মডেল হয়ে উঠুক – যে কোনো মূল্যে তারা এমন সম্ভাবনা রুখতে চায়৷

সন্ত্রাসী আক্রমণের পর নগরবাসীদের স্বতঃস্ফুর্ত মিছিলছবি: picture-alliance/AP Photo/Adel Mhamdi

টিউনিসের জাতীয় মিউজিয়ামের উপর হামলা সে দেশের উন্নয়নের পথে হুমকি হয়ে উঠছে৷ এই ঘটনা দেখিয়ে দিচ্ছে, উত্তর আফ্রিকার ছোট এই দেশটিকে কীভাবে অসংখ্য সামাজিক ও নিরাপত্তাজনিত চ্যালেঞ্জ সামলাতে হচ্ছে৷ অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ভালো নয়৷ টিউনিসে হামলার পর সে দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন ক্ষেত্র আরও ক্ষতির মুখ দেখবে, এটা ধরে নেওয়া যায়৷ তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বেকারত্বের মাত্রাও অত্যন্ত বেশি৷ অনেক তরুণ-তরুণী দেশের মধ্যে নিজেদের কোনো ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছে না৷ অনেকে বে-আইনি পথে ইউরোপে পাড়ি দিচ্ছে৷ অনেকে আবার আদর্শ অথবা মোটা টাকার লোভে সিরিয়া অথবা ইরাকে জিহাদের দলে নাম লেখাতে যাচ্ছে৷ অন্য কোনো আরব দেশ থেকে এত শতাংশ মানুষ ‘ইসলামিক স্টেট' সহ অন্য সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর দলে নাম লেখাচ্ছে না, যেমনটা টিউনিশিয়ার ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে৷ দেশের মধ্যেও, বিশেষ করে সীমান্ত এলাকায় অনেক সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে৷

পশ্চিমা বিশ্বের ‘আদরের সন্তান'

ক্ষমা নেই: বলেছেন প্রেসিডেন্ট এসেবসিছবি: Reuters/Z. Souissi

জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী যখন বলেন, ‘‘এই হামলা আমাদের সবার উপর'' হয়েছে, তখন তিনি হয়ত বলতে চান, ইউরোপীয় পররাষ্ট্র ও উন্নয়ন সাহায্য নীতিও এই হামলার লক্ষ্য ছিল৷ এই নীতি গণতান্ত্রিক সুশিল সমাজ হিসেবে টিউনিশিয়ার বিকাশকে বড় মাত্রায় সাহায্য করেছে৷ তিনি এটাও বলতে পারতেন, ‘‘আমরা সবাই টিউনিশিয়া'', যেমন আমরা সবাই ‘জ্য সুই শার্লি' বলে উঠেছিলাম৷ সারা বিশ্বে যারা হিংসার শিকার হচ্ছে, তাদের প্রতি আমাদের যেমনভাবে সংহতি দেখানো উচিত৷

তবে শুধু কথায় কাজ হবে না৷ টিউনিশিয়ার আরও অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও সে দেশের নাগরিক সমাজকে সাহায্য করার প্রয়োজন আছে৷ নিরাপত্তার মতো ক্ষেত্রেও আরও স্পষ্ট সাহায্য চাই – তাতে যতই ঝুঁকি থাকুক না কেন৷ আরব বিশ্ব থেকেও আরও সহায়তার প্রয়োজন আছে৷ কারণ টিউনিশিয়ার স্বপ্ন মোটেই ‘পশ্চিমা' নয়৷ এই স্বপ্ন গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও আরব-ইসলামি ভাবধারা ভিত্তিক যুগোপযোগী এক মেলবন্ধন৷ এমন লক্ষ্যের জন্য সংগ্রাম সত্যি সার্থক৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ