1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
প্রযুক্তিআফ্রিকা

টিউনিশিয়ায় এআই সেন্সর দিয়ে দাবানল ঠেকানোর পরিকল্পনা

৪ এপ্রিল ২০২৫

টিউনিশিয়া অনেক বছর ধরে খরার সঙ্গে লড়ছে৷ চরম শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে দাবানলের সংখ্যা বেড়েছে, যা মানুষ ও পরিবেশের ক্ষতি করছে৷ এই ক্ষতি কমাতে একটি পাইলট প্রকল্প হাতে নিয়েছে বন বিভাগ৷

Eco Africa | Tunisia Fire
বন বিভাগের পাইলট প্রকল্পটি রেঞ্জারদের কাজ সহজ করবে এবং দীর্ঘমেয়াদে বন রক্ষা করবে৷ছবি: DW

তারা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় আগুনের সম্ভাব্য উৎস আগেই জানার চেষ্টা করছে৷ এ লক্ষ্যে স্টার্ট-আপ ‘স্মার্ট ফর গ্রিন'-এর সঙ্গে কাজ করছে বন বিভাগ৷ উত্তরাঞ্চলের রাস জেবেল এলাকায় ৩০০ হেক্টরের বেশি বন পর্যবেক্ষণে রাখতে এআই সেন্সর বসানো হয়েছে৷

স্টার্ট-আপের সহ-প্রতিষ্ঠাতা নাদের সাহলি বলেন, ‘‘আমরা সেন্সর হিসেবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করছি৷ এটা আগুনের উৎস চিহ্নিত করতে পারে এবং ভবিষ্যতে আগুন লাগার আশঙ্কা আছে কিনা তা-ও বলতে পারে৷ আগুনের উৎস চিহ্নিত করার পর এটা সরাসরি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাতে পারে৷''

তবে এটি এখনও পরীক্ষামূলক পর্যায়ে আছে, তাই এখন তথ্যগুলো শুধু স্টার্টআপকে পাঠানো হচ্ছে৷

স্মার্ট ফর গ্রিন এর প্রতিষ্ঠাতা করিম ফাতাল্লাহ বলেন, ‘‘সেন্সরগুলো আমাদের বনের পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে এবং সারা বছর বনে কী হচ্ছে তা জানতে সহায়তা করে৷ এর মানে হচ্ছে, আমরা বনের এমন এক মানচিত্র তৈরি করতে পারবো, যেখানে আগুন লাগার ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করা থাকবে৷ এছাড়া কোথায় গাছ বেশি শুকিয়েছে তাও জানা যাবে৷''

টিউনিশিয়ায় সামগ্রিকভাবে কম বৃষ্টিপাত হচ্ছে এবং দীর্ঘ সময় ধরে খরা চলছে৷ গত দশকে আগুনে পুড়ে যাওয়া জমির পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ২০ গুণ বেশি ছিল৷

দেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ এখনও বনভূমিতে ঢাকা৷ আর প্রায় দশ লাখ মানুষ বনে বাস করেন৷ বর্তমানে তারা ও স্থানীয় বনকর্মীরা আগুন লাগার পরই শুধু তার সঙ্গে লড়াই করে যাচ্ছেন৷

এআই দিয়ে দাবানল ঠেকানো

03:59

This browser does not support the video element.

কৃষি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা আশা করছেন, এআই এর সাহায্যে অগ্নিকাণ্ডের পূর্বাভাস পাওয়া গেলে ভবিষ্যতে আরও সুরক্ষার ব্যবস্থা করা যাবে, বিশেষ করে যেহেতু টিউনিশিয়ার জন্য বনগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷

কৃষি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা নওফেল বেন হাজা বলেন, ‘‘জাতীয় ও অর্থনৈতিকভাবে বন আমাদের জন্য এক বিশাল সম্পদ৷ এছাড়া সামাজিক ও পরিবেশগত দিক থেকেও৷ বন এলাকায় যেহেতু প্রায় দশ লাখ মানুষ বাস করেন, তাই তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব৷''

ক্যামেরা থেকে পাওয়া তথ্য স্টার্ট-আপের অফিসে বিশ্লেষণ করা হয়৷ কোম্পানিটি পরবর্তী ধাপ নিয়েও কাজ করছে - এমন এক ব্যবস্থা যার মাধ্যমে আগুনের খবর দ্রুত বনকর্মীদের জানানো যাবে৷

তড়িৎ প্রকৌশলী হামদি মুসা বলেন, ‘‘আমরা বনকর্মীদের কাজ সহজ করার জন্য একটি মোবাইল অ্যাপ তৈরি করছি৷ আমাদের প্রধান কার্যালয়ে আমরা সর্বশেষ তথ্য সরাসরি অ্যাপে ঢুকিয়ে দিব, যা বনকর্মীরা তাদের কম্পিউটার বা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে দেখতে পারবেন৷''

এদিকে, হারিয়ে যাওয়া বন ফিরিয়ে আনারও চেষ্টা করছে কিছু সংস্থা৷ যেমন ২০১৭ সাল থেকে লেজ আমিস ডু ক্যাপ্ট সংস্থা উত্তরাঞ্চলীয় কেফ, জাগুয়ান এবং জেনডুবাতে গাছ লাগাচ্ছে যেখানে অনেক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে৷ স্বেচ্ছাসেবকেরা ক্যারোব গাছ লাগাচ্ছেন, কারণ, এগুলির সহ্য ক্ষমতা ভালো এবং খুব কম পানির প্রয়োজন হয়৷

বন গবেষক আবদেলহামিদ খালদি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এই উদ্যোগগুলিকে সমর্থন করার জন্য অনুরোধ করেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা এই অঞ্চলগুলিতে পুনর্বনায়নের জন্য আরও বেশি করে ক্যারোব গাছ লাগাতে বন প্রশাসনকে অনুরোধ করছি৷ এই গাছগুলি পরিবেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ৷ এছাড়া এগুলি তাপ-প্রতিরোধী এবং অর্থনীতির জন্যও ভালো৷''

তবে এই মুহূর্তে বন বিভাগ নতুন এআই প্রকল্প নিয়ে বেশি উৎসাহী৷ কারণ, এটি শুধু অগ্নিকাণ্ডের পর দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানানোর বিষয় নয়, বরং আগুন লাগার আগেই সম্ভাব্য উৎসগুলি চিহ্নিত করারও বিষয়৷

বন বিভাগের পাইলট প্রকল্পটি এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে আছে৷ যদি সফল হয়, তাহলে কর্তৃপক্ষ আরও বড় পরিসরে এআই সেন্সর স্থাপনের আশা করছে৷ এটি রেঞ্জারদের কাজ সহজ করবে এবং দীর্ঘমেয়াদে বন রক্ষা করবে৷

মাবরুকা খেদির, ইউলিয়া মিল্কে/জেডএইচ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ