1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

টিউনিশিয়ায় সরকার পতনের এক বছর পর

১৫ জানুয়ারি ২০১২

দেখতে দেখতে এক বছর হয়ে গেল৷ আরব বসন্তের শুরু যে টিউনিশিয়ায়, সেখানকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বেন আলি গত বছর ১৪ জানুয়ারি দেশ ছেড়ে সৌদি আরবে পাড়ি জমিয়েছিলেন৷

টিউনিশিয়ার প্রেসিডেন্ট মোনসেফ মারজুকিছবি: picture alliance/abaca

টিউনিশিয়ার শহর সিদি বুজিদে শুরু হয়েছিল সরকারবিরোধী আন্দোলন৷ উচ্চশিক্ষিত মোহাম্মদ বুআজিজি পুলিশের ব্যবহারে অসম্মানিত বোধ করে লজ্জায় নিজের গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন৷ সেটা ছিল ২০১০ সালের ১৭ ডিসেম্বর৷ এরপর জেগে ওঠা আন্দোলনের প্রায় একমাস পর সরকারের পতন হয়৷ এতে প্রাণ হারান প্রায় দু'শো জন৷

টিউনিশিয়ার ঘটনার জের ধরে একে একে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে মিশর, লিবিয়া, সিরিয়া, ইয়েমন সহ আরব বিশ্বের অনেক দেশে৷

বেন আলি সরকারের পতনের এক বছর পূর্তিতে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সরকার৷ গত বছর অক্টোবরে নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত হওয়া সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন মোনসেফ মারজুকি৷ তিনি একজন অভিজ্ঞ মানবাধিকার কর্মী৷

ফ্রান্সের একটি গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে মারজুকি বলেন, টিউনিশিয়ার জনগণ এখন সম্মানজনক জীবন যাপন করছেন৷ তারা এখন আর কোনো কিছুর ভয়ে ভীত নন৷

চাকরির দাবিতে এখনো চলছে বিক্ষোভছবি: picture-alliance/dpa

সিদি বুজিদ শহরের ৩০ বছর বয়সি কৃষক ইসাম আফি বলছেন, বিপ্লবের একমাত্র ও প্রধান কারণ ছিল ‘কারামা' মানে সম্মান৷ অর্থাৎ পরিবার নিয়ে সুখে স্বাচ্ছন্দ্যে থাকা যাবে, এটাই চান তারা৷

কিন্তু বিপ্লবের এক বছর পর কী পেয়েছেন তারা? সুখে থাকতে চাই চাকরি৷ যেটা চেয়েছিলেন মোহাম্মদ বুআজিজি'ও৷ কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে, গত এক বছরে বেকারত্বের হার আরও বেড়েছে৷ আগে যেটা ছিল ১৩ শতাংশ৷ সেটা এখন হয়েছে ১৮৷ এছাড়া গত বিশ বছরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হলেও গত বছর সেটা একেবারেই ছিল না৷ চাকরির অভাবে গায়ে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে আবারও৷ বছর শুরুর প্রথম সপ্তাহে এ কাজ করেছেন ছয়জন৷ এর মধ্যে, চাকরি হারিয়ে সেটা ফিরে পাওয়ার দাবিতে বিক্ষোভরত মধ্যবয়সি এক ব্যক্তি নিজের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেন৷ পরে তিনি মারা যান৷ তার এক সন্তান রয়েছে৷

এছাড়া টিউনিশিয়ার আয়ের প্রধান উৎস পর্যটন হলেও গতবছর সেখানে পর্যটকের উপস্থিতি প্রায় অর্ধেকে নেমে গেছে৷

অবশ্য এমন পরিস্থিতির জন্য বিপ্লবকে দায়ী করা যেতে পারে৷ কেননা ঐরকম উত্তপ্ত পরিবেশে পর্যটকরা যেতে চাইবেন না, সেটাই স্বাভাবিক৷ তাই বর্তমান সরকারের কাজ হচ্ছে পর্যটকদের আস্থা ফিরিয়ে আনা৷

তবে সমস্যা হচ্ছে, গণতান্ত্রিক নির্বাচনের মাধ্যমে সেখানে ক্ষমতায় গেছে ইসলামপন্থী দল এন্নাহদা৷ যদিও কাগজে কলমে তারা কট্টরপন্থী নন, এবং ইসলামি আইন চালুর কথাও তারা বলছেন না, কিন্তু তবুও অনেকে সেটা বিশ্বাস করছেন না৷ তাদের আশঙ্কা, ভবিষ্যতে হয়তো আসল রূপে ফিরে যেতে পারে এন্নাহদা৷ এমন পরিস্থিতিতে সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে যে, টিউনিশিয়ায় গিয়ে পর্যটকরা সমুদ্রস্নান থেকে বঞ্চিত হবেন না৷

এদিকে ৪৪ বছরের চিকিৎসক বুথাইনা বলছেন, মুসলমানদের মধ্যে কট্টরপন্থী একটি অংশ ইতিমধ্যে টিউনিশিয়ার মুসলমানদের বোরকা পরতে বল প্রয়োগ শুরু করেছে৷ এছাড়া বাইরে বের না হয়ে ঘরে বাচ্চা মানুষ করতে নারীদের পরামর্শ দিচ্ছে তারা৷

তবে এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন স্বয়ং প্রেসিডেন্ট মারজুকি৷ তিনি বলছেন, নির্বাচনে শতকরা ৬০ ভাগ ভোটার এন্নাহদা পার্টির বিপক্ষে ভোট দিয়েছে৷ তিনি বলেন, টিউনিশিয়া ইসলামপন্থীদের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে বলে যারা মন্তব্য করেন, তারা হয় খারাপ বিশ্বাস থেকে সেটা করেন, নয়তো সেটা তাদের অজ্ঞতা৷

প্রতিবেদন: জাহিদুল হক

সম্পাদনা: আরাফাতুল ইসলাম

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ