টিকটক ও উই চ্যাট জাতীয় নিরাপত্তার বিরোধী। তাই এই সংস্থার সঙ্গে কোনো লেনদেন করতে পারবেন না অ্যমেরিকার লোকেরা। ট্রাম্পের নতুন নির্দেশ।
বিজ্ঞাপন
নতুন প্রশাসনিক নির্দেশ জারি করলেন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। জনপ্রিয় চীনা অ্যাপ টিকটক নিয়ে। সেখানে বলা হয়েছে, টিকটক জাতীয় নিরাপত্তার বিরোধী। তাই টিকটকের পেরেন্ট কোম্পানি বাইটড্যান্স-এর সঙ্গে কোনো লেনদেন করা যাবে না। ৪৫ দিন পরে এই নির্দেশ চালু হবে।
নিউ ইয়র্ক টাইমস জানাচ্ছে, একটি নয়, দুইটি প্রশাসনিক নির্দেশ জারি করেছেন ট্রাম্প। একটি টিক টক নিয়ে, অন্যটি উই চ্যাট নিয়ে। দ্বিতীয় নির্দেশে তিনি বলেছেন, উই চ্যাটের পেরেন্ট কোম্পানি টেনসেন্টের সঙ্গেও কোনো লেনদেন করা যাবে না বা সম্পর্ক রাখা যাবে না।
ট্রাম্পের নির্দেশে বলা হয়েছে, অ্যামেরিকার সেনা, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি এবং ট্রান্সপোর্টেশন সিকিউরিটি কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই তাঁদের কর্মীদের সরকারি ফোনে টিকটক নিষিদ্ধ করেছে।
করোনা নজরে রাখার কয়েকটি অ্যাপ
করোনার বিস্তার ঠেকাতে বিভিন্ন দেশ প্রযুক্তির সহায়তা নিচ্ছে৷ এক্ষেত্রে মোবাইল অ্যাপ, সফটওয়্যার, কিউআর কোড ব্যবহৃত হচ্ছে৷ ছবিঘরে থাকছে বিস্তারিত৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Keystone/L. Gillieron
অস্ট্রেলিয়া
করোনার বিস্তার ঠেকাতে ‘কোভিডসেফ’ অ্যাপ চালু করেছে সরকার৷ এর মাধ্যমে একজন অ্যাপ ব্যবহারকারী আরেকজন ব্যবহারকারীর দেড় মিটার দূরত্বের মধ্যে আসার তথ্য সংগ্রহ করছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা৷ ব্লুটুথ ওয়্যারলেস সিগন্যালের মাধ্যমে এই তথ্য জোগাড় করা হচ্ছে৷ একজন ব্যবহারকারী করোনা আক্রান্ত কারো সঙ্গে ১৫ মিনিট বা তার বেশি সময় ধরে ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে এসে থাকলে, সেই তথ্য বার্তা দিয়ে ঐ ব্যক্তিকে জানিয়ে দেয়া হয়৷
ছবি: Getty Images/Q. Rooney
চীন
নাগরিকদের চলাফেরার তথ্য সংগ্রহ করছে দেশটি৷ ‘আলিপে’ ও ‘উইচ্যাট’ অ্য়াপ ব্য়বহারকারীরা ব্যক্তিগত তথ্য, ভ্রমণের ইতিহাস, অসুস্থতার লক্ষণ ইত্যাদি তথ্য দেয়ার মাধ্যমে একটি কিউআর কোড পেয়ে থাকেন৷ বাসে, ট্রেনে, অফিসে, এমনকি নিজের বাড়িতে ঢুকতে এই কোড স্ক্যান করতে হয়৷ এভাবে হালনাগাদ তথ্য পেয়ে থাকে সরকার৷ কোডের রং সবুজ হলে চলাফেরায় বাধা নেই, হলুদ হলে সাতদিন আর লাল হলে ১৪ দিনের কোয়ারান্টিনে যেতে হয় নাগরিকদের৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Imaginechina/D. Qing
ইটালি
কেউ করোনা আক্রান্তের স্পর্শে এসেছেন কিনা, সেই তথ্য় জানতে অ্যাপ চালু করতে চায় ইটালি৷ সেজন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে৷ শত শত প্রস্তাব জমা পড়েছে৷ শিগগিরই তা চালু হবে৷ তবে এই অ্যাপ ব্যবহার ঐচ্ছিক হবে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photos/L. Bruno
দক্ষিণ কোরিয়া
‘কোভিড-১৯ স্মার্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’-এর মাধ্যমে করোনা রোগী ও যারা কোয়ারান্টিনে আছেন তাদের চলাফেরা পর্যবেক্ষণ করা হয়৷ এছাড়া যারা হোম-কোয়ারান্টিন মানছে না ভবিষ্যতে তাদের হাতে ইলেকট্রনিক ব্যান্ড পরানোর চিন্তা করছে দেশটি৷ কেউ এটি না পরলে তাকে আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হবে এবং তার খরচ ঐ ব্যক্তিকেই দিতে হবে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Keystone/L. Gillieron
ভারত
করোনা রোগী ও তাদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের গতিবিধি জানতে ‘আরোগ্যসেতু’ অ্যাপ চালু করেছে সরকার৷ প্রায় সাড়ে সাত কোটি মানুষ এটি ডাউনলোড করেছেন বলে সরকার জানিয়েছে৷ এগারোটি ভাষায় অ্যাপটি চালু হয়েছে৷ এই অ্যাপে করোনা নিয়ে সচেতনতা ও জরুরি স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে সহজে যোগাযোগের উপায়ও বলা আছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/M. Swarup
জার্মানি
আপনি করোনা আক্রান্ত কারো সংস্পর্শে এসেছেন কিনা, তা জানাতে অ্যাপল ও গুগল যৌথভাবে একটি সফটওয়্য়ার তৈরি করছে৷ মে মাসে এটি পাওয়া যেতে পারে৷ জার্মানি এই উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়েছে৷ যদিও জার্মানি একই কাজের জন্য নিজ উদ্য়োগে ‘পিইপিপি-পিটি’ নামে একটি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চেয়েছিল৷ কিন্তু সমালোচনার কারণে সেই পরিকল্পনা থেকে সরে এসেছে৷
ছবি: picture-alliance/NurPhoto/E. Contini
6 ছবি1 | 6
যেহেতু এই নির্দেশ ৪৫ দিন পরে চালু হবে, তাই এর মধ্যে মাইক্রোসফটের পক্ষে টিকটক কিনে নেওয়ার সুযোগ থাকছে। টিকটক কেনার জন্য বাইটড্যান্সের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে মাইক্রোসফট। তাদের হাতে ৪৫ দিন সময় থাকল। তার মধ্যে যদি তারা কিনতে পারে তো ভালো, না হলে তারপর টিকটক কার্যত নিষিদ্ধ হয়ে যাবে। টিকটকের মতো উই চ্যাটও অ্যামেরিকায় খুবই জনপ্রিয়।
ট্রাম্পের নির্দেশে বলা হয়েছে. টিকটক জাতীয় নিরাপত্তার পক্ষে বিপদের কারণ। কারণ, তাঁদের সংগ্রহ করা তথ্য চীনের কমিউনিস্ট পার্টি দেখতে পারে। ফলে অ্যামেরিকার লোকেদের ব্যক্তিগত সব তথ্য তাঁদের কাছে চলে যাচ্ছে। মার্কিন আধিকারিকদের সম্পর্কে এমন তথ্য তারা পেয়ে যেতে পারে, যা দিয়ে তাঁদের ব্ল্যাকমেল করা যাবে।
মাইক্রোসফট টিকটকের অ্যামেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের অপারেশন কিনতে চায়। ট্রাম্প আগেই জানিয়েছিলেন, মাইক্রোসফট বা অন্য কোনো বড় মার্কিন সংস্থা যদি টিকটক কিনে নিতে চায়, তা হলে তাঁর কোনো আপত্তি নেই। তবে তা ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে করতে হবে।
চীন এর জবাবে বলেছিল, টিকটক নিয়ে ট্রাম্পের অভিযোগ মিথ্যা। তাঁরা এইভাবে ট্রাম্পের চাপে টিকটকের মার্কিন অপারেশন সে দেশের সংস্থাকে বিক্রির বিরোধী। এই ধরনের কোনো লেনদেনে চীনের মত নেই।