টিকটকের উপর নিষেধাজ্ঞা এখনই জারি হচ্ছে না অ্যামেরিকায়। জানিয়ে দিল ওয়াশিংটনের একটি আদালত।
বিজ্ঞাপন
টিকটক নিয়ে সামান্য হলেও ধাক্কা খেলেন ডনাল্ড ট্রাম্প। ওয়াশিংটনের একটি আদালত রোববার জানিয়ে দিয়েছে, এখনই বাতিল করা যাবে না টিকটক। মার্কিন নাগরিকরা ফোনে টিকটক ডাউনলোড করতে পারবেন। তবে ১২ নভেম্বর থেকে টিকটক সম্পূর্ণ বাতিলের যে সিদ্ধান্ত ট্রাম্প প্রশাসন আগেই জানিয়েছিল, সে বিষয়ে এ দিন কোনও রদবদল করেনি ওই আদালত।
সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে মার্কিন নাগরিকদের ফোনে টিকটক আর ডাউনলোড করা যাবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। অবশ্য একই সঙ্গে ট্রাম্প বলেছিলেন, টিকটক যদি কোনও মার্কিন সংস্থা কিনে নেয়, তা হলে সিদ্ধান্তের পুনর্বিবেচনা করবেন। এই মাসেই টিকটকের মার্কিন শেয়ার কিনে নিয়েছে ওরাকেল। কিন্তু যে ভাবে তারা তা কিনেছে, তা নিয়ে এখনও মার্কিন প্রশাসন খুব সন্তুষ্ট নয় বলেই মনে করা হচ্ছে।
সমান্তরাল সংস্কৃতির তারকারা
তাঁরা কেউ গান করেন৷ কেউ নাচ৷ কেউ বা বিউটি টিপস দিয়ে ব্লগ লেখেন৷ টিকটক, ভাইন, ইনস্টাতে তাঁদের কোটি কোটি ফলোয়ার৷ খুব কম বয়সে তাঁরা হয়ে উঠেছেন তারকা, সমান্তরাল সংস্কৃতির তারকা৷
ছবি: Getty Images/EIF & XQ
মজার তারকা
নিজেকে নিয়ে জোকস শেয়ার করতেন ভাইন-এ৷ আর বন্ধু ও পরিবারের লোকেদের প্র্যাংক করতেন৷ ভাইনে তাঁর ফলোয়ারের সংখ্যা ৮১ লাখ৷ টুইটারে ফলোয়ার এক কোটি ১৩ লাখ৷ ইনস্টাতে দুই কোটি ১০ লাখ৷ ক্যামেরন ডালাসকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি৷ অভিনয় করছেন৷ নেটফ্লিক্সে তাঁকে নিয়ে রিয়্যালিটি শো হচ্ছে 'চেসিং ক্যামেরন'৷
ছবি: Getty Images/J. McCarthy
এক নম্বরে
চার্লি ডামেলিও৷ বয়স মাত্র ১৬৷ টিকটকে ফলোয়ার সাত কোটি ৬৪ লাখ৷ এই মুহূর্তে তিনিই এক নম্বরে৷ গত বছর তিনি তাঁর প্রথম পোস্ট করেন৷ নাচের৷ কিছুদিনের মধ্যেই হইহই করে ফলোয়ারের সংখ্যা বাড়তে থাকে৷ ইনস্টাতেও তাঁর অনুগামী আড়াই কোটির বেশি৷ মাত্র এক বছরের মধ্যেই খ্যাতির চূড়োয়৷ নিউ ইয়র্ক টাইমসের মতে, তিনি এখন টিকটকের রানী৷ বোন ডিক্সি-রও ফলোয়ার প্রচুর৷ ছবিতে বোনের সঙ্গে দেখা যাচ্ছে তাঁকে৷
ছবি: Getty Images/EIF & XQ
অ্যাডিসনের কামাল
অ্যাডিসন রে৷ নাচ করেন৷ মাত্র ১৯ বছর বয়স৷ মূলস্রোত থেকে তিনি উঠে আসেননি৷ তিনি টিকটক তারকা৷ তাঁর ফলোয়ারের সংখ্যা পাঁচ কোটি ৩০ লাখ৷ সবকটি পোস্ট মিলিয়ে তিনি ৩১০ কোটি লাইক পেয়েছেন৷ এই অভাবনীয় জনপ্রিয়তা নিয়ে তিনি আছেন বর্তমানে টিকটক জনপ্রিয়তার তালিকায় দুই নম্বরে৷
ছবি: Getty Images
কিং সত্যিই রাজা
জ্যাক কিং-ই বা কম কী৷ তিনি ডিজিট্যালি সম্পাদিত ছয় সেকেন্ডের ভিডিও বানান, যা দেখে মনে হয় তিনি ম্যাজিক করছেন৷ নিজের ভিডিওকে তিনি বলেন 'হাতের ডিজিটাল ভোজবাজি'৷ টিকটকে সাড়ে চার কোটি ফলোয়ার৷ তারকাদের মধ্যে তাঁর বয়স সামান্য বেশি৷ ৩০ বছর
ছবি: Getty Images/AFP/L. O´Connor
ফিটনেস কুইন
তিনি পার্সোনাল ট্রেনার, লেখক, এবং উদ্যোগপতি৷ কেইলা ইটসিনেস মাত্র ২৯ বছরে বয়সেই টাইমসের সব চেয়ে প্রভাবশালী ৩০ জন নারীর তালিকায় ঠাঁই পেয়েছেন৷ তাঁর ফিটনেস ই বুক সিরিজ 'বিকিনি বডি গাইডস' এবং খাবার ও ওয়ার্কআউটের অ্যাপ 'ফিট উইথ কেইলা' জনপ্রিয়তার শিখরে৷ ফিটনেস ই বুক তো কয়েক মাসের মধ্যেই ১০ লাখ বার ডাউনলোড হয়েছিল৷
ছবি: Getty Images/M. Schipper
গানের সুরে
টিক টকে তাঁর ফলোয়ারের সংখ্যা চার কোটি ১০ লাখ, ইনস্টাতে এক কোটি ৯৭ লাখ৷ সব সামাজিক মাধ্যম মিলিয়ে ৭ কোটি ৫৫ লাখ ফলোয়ার৷ লরেন গ্রে-র বয়স মাত্র ১৮৷ এর মধ্যেই সুরের দোলায় দুলিয়ে দিচ্ছেন কোটি কোটি মানুষকে৷ এক বছর ধরে তিনি ছিলেন টিকটকের সব চেয়ে জনপ্রিয় তারকা৷ এখন অবশ্য কিছুটা পিছনে চলে গেছেন৷ একাধিক পুরস্কার পেয়েছেন৷
ছবি: Getty Images/American Heart/M. Coppola
স্পেনসার এক্স
তিনিও গায়ক৷ বয়স ২৯ বছর৷ টিক টকের ফলোয়ার সংখ্যার নিরিখে সাত নম্বরে৷ প্রায় চার কোটি ফলোয়ার৷ তাঁর ইউ টিউব চ্যানেলে গান শোনা হয়েছে ৭ কোটি ৬০ লাখ বার৷ অ্যামেরিকার এই তারকা সমান্তরাল সংস্কৃতির বড় তারকা৷
ছবি: Getty Images for Mashup LA
প্রভাবশালী টিনএজার
বয়স মাত্র ১৯৷ হলে কী হয়, বেবি এরিয়ল টাইম ও ফোর্বসের সব চেয়ে প্রভাবশালী এন্টারটেইনারের তালিকায় নাম তুলে ফেলেছেন৷ তাঁরও খ্যাতি টিকটক, ইনস্টা, ইউ টিউবের কল্যাণে৷ গান করেন, অভিনয়ও৷ টিকটকে ফলোয়ার সংখ্যা ৩ কোটি ৪৫ লাখ৷
ছবি: Getty Images/J. Kopaloff
খ্যাতির সঙ্গে অর্থও
এই তারকারা শুধু খ্যাতিই নয়, পাচ্ছেন প্রচুর অর্থও৷ মাস তিনেক আগের খবর, টিকটকের একেবারে শীর্ষে থাকা তারকারা প্রতিটি পোস্টের জন্য ৪০ থেকে ৪৮ হাজার ডলার পান৷ তাছাড়া আছে বিজ্ঞাপন, নানা অনুষ্ঠান, অন্য সামাজিক মাধ্যম থেকে বিপুল আয়৷ ফলে অল্প বয়সেই তাঁদের সমৃদ্ধির ভাড়ার উপচে পড়ছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Turkia
9 ছবি1 | 9
এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের আগের সিদ্ধান্ত এখনো বদলায়নি। ফলে রোববারেই অ্যামেরিকায় টিকটক ডাউনলোড বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু টিকটক প্রস্তুতকারক সংস্থা মার্কিন আদালতে আপিল করে বলেছিল, ডাউনলোড বন্ধ হয়ে গেলে বিপুল ক্ষতির মুখে পড়বে সংস্থাটি। যা আর সামলানো যাবে না। তাদের সেই দাবি মাথায় রেখেই আপাতত প্রশাসনের সিদ্ধান্তের উপর স্থগিতাদেশ জারি করেছে আদালত। তবে ১২ নভেম্বরের সিদ্ধান্ত এখনও বহাল আছে। ওই সিদ্ধান্তের উপর আদালত কোনও সিদ্ধান্ত জারি করেনি।
টিকটক, উইচ্যাটের মতো কয়েকটি অ্যাপের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল মার্কিন প্রশাসন। তাদের বক্তব্য ছিল, এই অ্যাপগুলির মাধ্যমে মার্কিন নাগরিকদের সমস্ত তথ্য চীনের হাতে চলে যাচ্ছে। ফলে জাতীয় নিরাপত্তার সমস্যা হচ্ছে। মার্কিন প্রশাসনের অভিযোগ ছিল, এই অ্যাপগুলির মাধ্যমে চীন অ্যামেরিকায় গুপ্তচরবৃত্তি করছে। তবে একই সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়ে রেখেছিল, কোনও মার্কিন সংস্থা অ্যামেরিকার টিকটক কিনে নিলে তারা সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবে।