টিকার সংশাপত্রে মোদীর ছবি নিয়ে মামলা
২০ অক্টোবর ২০২১সম্প্রতি কেরালা হাইকোর্টে একটি মামলা দায়ের করেছিলেন জনৈক পিটার মায়ালিপরমপিল। তাঁর প্রশ্ন ছিল, কেন করোনার সার্টিফিকেটে নরেন্দ্র মোদীর ছবি থাকবে? সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই কেন্দ্রকে নোটিস পাঠিয়েছে কেরালা হাইকোর্ট। দুই সপ্তাহের মধ্যে কেন্দ্রকে জবাব দিতে হবে।
ভারতে করোনার সার্টিফিকেটে প্রধানমন্ত্রীর ছবি নিয়ে বিতর্ক আরো জোরদার হলো। পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের তৃণমূল কংগ্রেস এর বিরোধিতা করেছিল। বস্তুত, সে সময় মোদীর ছবি সরিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের ছবি বসিয়েছিলেন সংশাপত্রে। এ নিয়ে রাজনৈতিক স্তরে একাধিকবার বিতর্ক হয়েছে। কংগ্রেস প্রশ্ন তুলেছে, করোনা সার্টিফিকেটে কেন মোদীর ছবি থাকবে? রাজ্যসভাতেও এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যেখানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী অন রেকর্ড জানিয়েছেন, মোদী নয়, প্রধানমন্ত্রীর ছবি ব্যবহার করা হয়েছে সার্টিফিকেটে। সঙ্গে টিকা নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথাও বলা হয়েছে। জনস্বার্থেই এই প্রচার করা হয়েছে।
কেরালা আদালতে যে ব্যক্তি মামলাটি করেছেন, তিনি বেশ কিছু দেশের টিকার সংশাপত্র জমা দিয়েছেন। যার মধ্যে জার্মানি, অ্যামেরিকা, যুক্তরাজ্যের সার্টিফিকেটও আছে। তার বক্তব্য, কোনো দেশেই টিকার সংশাপত্রে কারো ছবি ব্যবহার করা হয়নি। ভারতে এ কাজ করে আসলে 'ওয়ান ম্যান শো' তৈরির চেষ্টা করেছেন মোদী। যেন তিনি একাই করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করছেন। এটি সংকীর্ণ রাজনৈতিক প্রচার বলে উল্লেখ করা হয়েছে ওই মামলায়। ওই ব্যক্তির বক্তব্য, সাধারণ মানুষের করের টাকায় সরকারকে এ কাজ করার অনুমতি কে দিয়েছে?
প্রথম দিন শুনানি শোনার পরেই কেরালা হাইকোর্ট নোটিস পাঠায় কেন্দ্রকে। এদিকে এই মামলা সামনে আসার পরেই কেন্দ্রের কাছে তথ্য জানার অধিকার আইনে প্রশ্ন করেছে বেশ কয়েকটি সংবাদসংস্থা। সেখানে কেন্দ্রকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে, কার নির্দেশে ওই ছবি ছাপা হয়েছে। বিভিন্ন রাজ্যে নির্বাচন চলার সময়েও কি ওই ছবি ছাপা হয়েছে?
কেন্দ্রের উত্তরে জনস্বার্থের বিষয়টিকেই সামনে রাখা হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট করে কার নির্দেশে এ কাজ হয়েছে তা উল্লেখ করা হয়নি। কেন্দ্র জানিয়েছে, বিভিন্ন রাজ্যে নির্বাচনের সময় আদর্শ আচরণবিধি মেনে প্রধানমন্ত্রীর ছবি সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। যদিও বিরোধীদের বক্তব্য, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে কোনো কোনো রাজ্যে ছবি সরানো হয়েছিল।
করোনার সংশাপত্রে প্রধানমন্ত্রী বা মুখ্যমন্ত্রীর ছবি নিয়ে বিতর্ক দীর্ঘদিন ধরেই চলছে। কেরালা হাইকোর্টে ওঠা সাম্প্রতিক মামলাটি তা আরো কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।
এসজি/জিএইচ (পিটিআই, ইন্ডিয়া টুডে)