রোববার থেকে বাংলাদেশের সব জেলায় শুরু হচ্ছে করোনা ভাইরাসের টিকাদান কার্যক্রম৷ সারাদেশের এক হাজার পাঁচটি কেন্দ্রে রোববার টিকা দেওয়া হবে৷ একটি কেন্দ্রে সর্বোচ্চ ১৫০ জনকে টিকা দেওয়া যাবে৷
বিজ্ঞাপন
সক্ষমতা অনুযায়ী প্রথম দিন দেড় লাখ মানুষ টিকা নিতে পারবেন৷ শনিবার পর্যন্ত সারাদেশে টিকা নেওয়ার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছেন তিন লাখ ২৮ হাজার জন৷ এদিন প্রধান বিচারপতি, স্বাস্থ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে কয়েকজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, সচিবদের টিকা নেওয়ার কথা রয়ছে৷
সকাল ১০টায় নিজে টিকা নেওয়ার পর ভিডিও কনফারেন্সে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক৷
ডা. শহীদুল্লাহ দেওয়ান
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার লাইন ডিরেক্টর ও মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে জানান, ঢাকায় ৫০টি স্থানে টিকাদান কার্যক্রম চলবে৷ সেখানে কাজ করবে স্বাস্থ্যকর্মীদের ৩০০ জন৷ ঢাকার বাইরে সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মিলিয়ে ৯৫৫টি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে৷ এসব জায়গায় এক হাজার ৯১০টি দল টিকাদান কার্যক্রম পরিচালনা করবে৷ দুইজন স্বাস্থ্যকর্মী ও দুইজন স্বেচ্ছাসেবক মিলিয়ে প্রতিটি দলে চারজন সদস্য থাকবেন৷ প্রত্যেকটি দলের স্বাস্থ্যকর্মীরা সর্বোচ্চ ১৫০ জনকে টিকা প্রয়োগ করতে পারবেন৷ সে হিসেবে সব মিলিয়ে প্রথম দিনে দেড় লাখ মানুষকে টিকা দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে৷ সকাল আটটা থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত টিকাদান কার্যক্রম চলবে৷
স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও অধিদপ্তরের কথা মিলছে না
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন, কেন্দ্রে এসেও যাতে নিবন্ধন ও টিকা নেওয়া যায় সেই ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে৷ এক্ষেত্রে টিকা নিতে ইচ্ছুক ব্যক্তিকে জাতীয় পরিচয়পত্র সঙ্গে আনতে হবে৷ টিকাদানের আগে নিবন্ধন প্রক্রিয়া শেষ করতে না পারলে টিকাগ্রহীতার সব তথ্য রেখে দেওয়া হবে, স্বাস্থ্যকর্মীরা পরে তা ডেটাবেইজে তুলে দেবেন৷ নিবন্ধন করতে পারেননি, কিন্তু কেন্দ্রে যারা আসবেন তাদের ফেরত দেওয়া যাবে না বলে জানান তিনি৷ অনেকের কাছে স্মার্টফোন নেই, অনেকে নিবন্ধন করতে পারবেন না৷ এ কারণে চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে মেয়র-এমপিরা মানুষকে কেন্দ্রে নিয়ে আসবেন, টিকা দেবেন ও নিবন্ধন করাবেন৷
করোনা ভ্যাকসিনের যত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
বিশ্বের অনেক দেশে শুরু হয়েছে করোনার টিকাদান৷ তবে এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কী সেটি নিয়ে এখনও অনেকের মনে প্রশ্ন রয়েছে৷ ছবিঘরে থাকছে সে সম্পর্কে কিছু তথ্য৷
ছবি: Robin Utrecht/picture alliance
সাধারণ প্রতিক্রিয়া
যেকোন টিকারই সাধারণ কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে৷ যেমন, শরীরে ইনজেকশন দেয়ার স্থানটি লাল হয় বা ফুলে যায়৷ তিনদিনের মধ্যে অবসাদ, জ্বর, মাথা ব্যাথা, শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে ব্যাথা হতে পারে৷ তবে এর কোনটিই দীর্ঘস্থায়ী নয়৷ শরীরে টিকার কার্যকারিতা শুরু হলে অ্যান্টিবডি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হওয়ায় এমন প্রতিক্রিয়া স্বাভাবিক৷ অনুমোদন পাওয়া করোনা ভ্যাকসিনগুলোর ক্ষেত্রেও এমন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে৷
ছবি: Mark Lenninhan/AFP/Getty Images
গুরুতর প্রতিক্রিয়া
বিরল হলেও কিছু ক্ষেত্রে গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ঘটার সম্ভাবনা থাকে৷ যেমন, যুক্তরাজ্যে টিকা কর্মসূচি চালুর পর ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দুইজনের অ্যালার্জি দেখা দেয়৷ দেশটির কর্তৃপক্ষ এ ধরনের সমস্যা যাদের আছে তাদেরকে সতর্ক করেছে৷ তবে সার্বিকভাবে নিরাপদ হিসেবে বিবেচিত হওয়ার কারণেই করোনার বিভিন্ন টিকার অনুমোদন দিয়েছে ইউরোপীয় মেডিসিন এজেন্সি, যুক্তরাজ্যের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা৷
ছবি: Robin Utrecht/picture alliance
টিকার উপাদান
সাধারণত টিকায় দুর্বল বা মৃত ভাইরাস থাকে৷ যার মাধ্যমে শরীর সেই ভাইরাসের বিপরীতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে৷ তবে করোনার টিকাগুলোর মধ্যে কয়েকটি প্রথমবারের মতো এমআরএনএ প্রযুক্তিতে তৈরি৷ এতে কোন ভাইরাস থাকে না৷ তার বদলে কোভিড-১৯ এর জীবাণুর ব্লুপ্রিন্ট বা প্রতিরূপ থাকে৷ তাই দুই ধরনের টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দুই রকম হতে পারে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/J. Cairns
বায়োনটেক-ফাইজার
অনুমোদন পর্যায়ে বায়োনটেক-ফাইজার উদ্ভাবিত টিকার গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি৷ কোন কোন ক্ষেত্রে টিকা গ্রহীতা সাময়িক অবসাদ আর মাথা ব্যাথায় ভুগেছেন৷ এমআরএনএ ভ্যাকসিনটির ব্যবহার শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্রে একজন ও ব্রিটিনে দুইজনের ত্বক লাল হওয়া এবং শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা দেখা দিয়েছিল৷ যাদের অ্যালার্জি সমস্যা রয়েছে তাদেরকে সতর্ক করেছে বিট্রিশ মেডিসিনস অ্যান্ড হেলথকেয়ার প্রোডাক্টস রেগুলেটরি এজেন্সি৷
ছবি: Jacob King/REUTERS
মডার্না
বায়োনটেক-ফাইজারের মতোই এমআরএনএ ভিত্তিক মডার্নার টিকাটি৷ কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে এই টিকাগ্রহীতাদের তেমন কোন সমস্যা হয়নি৷ হালকা যেসব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়েছে সেগুলো ছিল সাময়িক৷ তবে ১০ শতাংশ অবসাদে ভুগেছেন বলে জানিয়েছে একটি স্বাধীন পর্যবেক্ষক প্যানেল৷ অল্প কয়েকজন রোগী অ্যালার্জি ও মুখের স্নায়ু নিষ্ক্রিয় হওয়ার মতো জটিলতায় ভুগেছেন৷ তবে কারণ সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত কিছু জানা যায়নি৷
ছবি: Dado Ruvic/Reuters
অক্সফোর্ড-আস্ট্রাজেনেকা
অক্সফোর্ড-আস্ট্রাজেনেকার টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে একজন মেরুদণ্ডের প্রদাহে ভুগেছেন৷ সেপ্টেম্বরে এই ঘটনার পর কিছুদিন ট্রায়াল বন্ধ ছিল৷ কিন্তু পরে একটি স্বাধীন বিশেষজ্ঞ প্যানেল পরীক্ষার পর জানিয়েছে সেটির কারণ ভ্যাকসিন নয়৷ এছাড়া টিকাটি নেয়ার পর ইনজেকশনের স্থানে ও পেশিতে ব্যথা, মাথাব্যাথা ও অবসাদগ্রস্ততার মতো সাধারণ প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে৷ তবে বয়স্কদের ক্ষেত্রে তা তুলনামূলক কম ছিল৷
ছবি: picture-alliance/NurPhoto/J. Porzycki
স্পুটনিক ফাইভ
তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শুরুর আগে গত আগস্টেই নিজেদের টিকা স্পুটনিক ফাইভ এর অনুমোদন দেয় রাশিয়া৷ দুই ধরনের পরিবর্তিত অ্যাডেনোভাইরাস ব্যবহার করা হয়েছে এতে৷ রুশ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, জ্বর, মাথাব্যাথার মতো টিকাটির কিছু সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে৷ তবে কোন গুরুতর প্রতিক্রিয়ার তথ্য পাওয়া যায়নি৷ তবে এ বিষয়ে পর্যাপ্ত তথ্য প্রকাশ না করার অভিযোগ রয়েছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে৷
ছবি: Sergei Karpukhin/TASS/dpa/picture alliance
দীর্ঘ প্রতিক্রিয়া
এখন পর্যন্ত যত তথ্য জানা গেছে সেগুলোর কোনটিই আসলে পরিপূর্ণ চিত্র তুলে ধরছে না৷ দীর্ঘ মেয়াদে টিকাগুলোর ব্যবহার মানবদেহে কী ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে তা অজানা৷ সেটি হয়ত সামনের মাস বা বছরগুলোতেই পরিস্কার হবে৷
ছবি: Borja Abargues/NurPhoto/Getty Images
8 ছবি1 | 8
আগে থেকে নিবন্ধন ছাড়া কেন্দ্রে গিয়ে টিকা নেওয়ার সুযোগের কথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী বললেও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনায় এমন কিছু নেই৷ ডা. মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, যাদের কাছে স্মার্টফোন নেই তারা কেন্দ্রে গেলে স্বাস্থ্যকর্মীরা তাদের রেজিস্ট্রেশন করিয়ে দেবেন৷ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছে থাকা মোবাইল ফোনে পরবর্তীতে নির্দেশনা যাবে, তিনি কবে টিকা নেবেন৷ তাৎক্ষনিকভাবে রেজিস্ট্রেশন করে টিকা নেওয়ার কোন সুযোগ নেই বলেই জানালেন ডা. নাজমুল৷
সারাদেশের সিভিল সার্জনদের কাছেও এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে৷ মাগুরার সিভিল সার্জন ডা. শহীদুল্লাহ দেওয়ান ডয়চে ভেলেকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব সম্প্রতি তাদের সঙ্গে বৈঠক করে বলেছেন, রেজিস্ট্রেশন ছাড়া কেউ কেন্দ্রে এলে তাকে রেজিস্ট্রেশন করিয়ে দেওয়া হবে৷ কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবে টিকা নিতে পারবেন না৷ কবে টিকা পাবেন সেটা তার মোবাইল ফোনে পরে বার্তা পাঠিয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে৷
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম বলেন, রোববার সকাল ১০টায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সে ৬৪ জেলার টিকা কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন৷ যারা টিকা নিবেন তাদের এক ঘণ্টা কেন্দ্রে থাকতে হবে৷ স্বাস্থ্যকর্মীদের পরামর্শ নেওয়ার পর তারা বাসায় ফিরবেন৷
ডা. মো. নাজমুল ইসলাম
কে কোথায় টিকা নিবেন
রোববার ঢাকার শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক টিকা নেবেন৷ প্রধান বিচারপতি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সকালে টিকা নেবেন সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে৷ দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউটে টিকা নিবেন৷ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব তোফাজ্জল হোসেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস (নিন্স) ও হাসপাতালে, কেবিনেট সচিব টিকা নেবেন শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি কেন্দ্রে৷
স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে জানানো হয়েছে, সরকারের অন্য মন্ত্রী, এমপিরা মহাখালীর শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে টিকা নেবেন৷ সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য সচিবালয় ক্লিনিক এবং সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল, আইনজীবীরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে টিকা নিতে পারবেন৷ এর বাইরেও সবাই নিজের পছন্দমতো জায়গা থেকে টিকা নিতে পারবেন৷
ভারত সরকারের উপহার হিসেবে ২০ লাখ ও ক্রয় চুক্তি অনুযায়ী ৫০ লাখ ডোজ টিকা আগেই দেশে পৌঁছেছে৷ স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, সরকার দেশের মোট জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ, অর্থাৎ ১৩ কোটি ৮২ লাখ ৪৭ হাজার ৫০৮ জন মানুষকে করোনা ভাইরাসের টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে৷ প্রতিজনকে দেওয়া হবে দুই ডোজ টিকা৷ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেছেন, প্রথম মাসে ৩৫ লাখ ডোজ টিকা দেওয়া হবে৷
২৭ জানুয়ারির ছবিঘর দেখুন...
করোনার টিকা কার্যক্রম শুরু
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে টিকা প্রদান কার্যক্রম উদ্বোধন করেছেন৷ কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে প্রথমদিন মোট ২৭ জনকে টিকা দেয়া হয়েছে৷
ছবি: facebook.com/ATNNews
প্রথম টিকা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে টিকা প্রদান কার্যক্রম উদ্বোধন করেন৷ তার উপস্থিতিতে পাঁচজনকে টিকা দেয়া হয়৷ প্রথম টিকা নেন কুর্মিটোলা হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনু বেরোনিকা কস্তা৷ এরপর টিকা নেন মেডিসিন কনসালটেন্ট ডা. আহমেদ লুৎফর মবিন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপিকা নাসিমা সুলতানা, ট্রাফিক পুলিশ মো: দিদারুল ইসলাম ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম ইমরান হামিদ৷
ছবি: facebook.com/ATNNews
সাহস দেন প্রধানমন্ত্রী
প্রথম টিকা নেয়া রুনুকে প্রধানমন্ত্রী জিজ্ঞেস করেন, ‘তুমি ভয় পাচ্ছো না তো?’ তখন রুন মাথা নেড়ে জানিয়ে দেন, তিনি ভয় পাচ্ছেননা৷ এরপর প্রধানমন্ত্রী তাকে বলেন, ‘তুমি সাহসি মেয়ে’৷ টিকা দেয়া শেষে প্রধানমন্ত্রী হাততালি দিয়ে তার সুস্থতা কামনা করেন৷ এভাবে বাকি চারজনের সঙ্গে কথা বলে তাদের ‘রিলাক্স’ করার চেষ্টা করেন প্রধানমন্ত্রী৷ এছাড়া যারা টিকা প্রয়োগের কাজে ছিলেন তাদেরকে তিনি ‘মাসল লুজ’ করারও পরামর্শ দেন৷
ছবি: facebook.com/ATNNews
‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’
টিকা নেয়া শেষে কেউ হাত তুলে, কেউ সালাম দিয়ে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ ও ‘জয় বাংলা’ বলেন৷
ছবি: facebook.com/ATNNews
মোট ২৭ জন
প্রথমদিন মোট ২৭ জনকে টিকা দেয়া হয়৷ আগামীকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার পাঁচ হাসপাতালের ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে টিকা দেওয়া হবে৷ ছবিতে তেজগাঁও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অধীনে সাব-সেন্টারে কাজ করা ডাঃ দেওয়ান মোঃ হেমায়েত হোসেইনকে টিকা নিতে দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
সারা দেশে শুরু ৭ ফেব্রুয়ারি
বাংলাদেশে যেহেতু করোনা টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হয়নি তাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রটোকল অনুযায়ী প্রথমে টিকা পাওয়া ব্যক্তিদের পর্যবেক্ষণ করা হবে৷ সব ঠিক থাকলে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হবে বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
অবজারভেশন রুম
কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে টিকা নেয়া ব্যক্তিদের পর্যবেক্ষণে রাখার জন্য একটি আলাদা কক্ষ ঠিক করা হয়েছে৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
নিবন্ধন প্রক্রিয়া
যারা টিকা নিতে চান, তাদের সবাইকে অনলাইনে নিবন্ধন করতে হবে৷ ‘সুরক্ষা’ (www.surokkha.gov.bd) প্ল্যাটফর্মের মোবাইল অ্যাপ ও ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে নিবন্ধন করতে হবে৷ নিবন্ধনের জন্য অন্যান্য তথ্যের সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর লাগবে৷ যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই তারা আপাতত করোনার টিকা পাবেন না৷
ছবি: surokkha.gov.bd
সরকারের পরিকল্পনা
আগামী ছয় মাসে তিন কোটি মানুষকে টিকা দেয়ার পরিকল্পনা করেছে সরকার৷ প্রতি মাসে ২৫ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়া হবে৷ জনপ্রতি দুটি করে মাসে ৫০ লাখ ডোজ টিকার প্রয়োজন হবে৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
প্রস্তুত পাঁচ হাসপাতাল
টিকা দিতে আপাতত ঢাকার পাঁচটি হাসপাতাল প্রস্তুত রাখা হয়েছে৷ এগুলো হলো ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, মুগদা জেনারেল হাসপাতাল, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল৷
ছবি: Mortuza Rashed
অগ্রাধিকার পাবেন যারা
অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এক কোটি ৬৯ লাখ ৩৭ হাজার ৯৭৩ জনকে করোনার টিকা দেয়ার জন্য পরিকল্পনা সাজিয়েছে সরকার৷ এদের মধ্যে আছেন কোভিড-১৯ স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত চার লাখ ৫২ হাজার ২৭ জন স্বাস্থ্যকর্মী, অনুমোদিত ছয় লাখ বেসরকারি ও প্রাইভেট স্বাস্থ্যকর্মী, দুই লাখ ১০ হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধা, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পাঁচ লাখ ৪৬ হাজার ৬২০ জন সদস্য, সামরিক ও বেসামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনীর তিন লাখ ৬০ হাজার ৯১৩ জন সদস্য৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
অগ্রাধিকার তালিকায় সরকারি কর্মকর্তা, সাংবাদিক
রাষ্ট্র পরিচালনায় অপরিহার্য ৫০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী, ৫০ হাজার গণমাধ্যম কর্মী, এক লাখ ৭৮ হাজার ২৯৮ জন জনপ্রতিনিধি, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার দেড় লাখ কর্মচারী, পাঁচ লাখ ৪১ হাজার ধর্মীয় প্রতিনিধি, মৃতদেহ সৎকারে নিয়োজিত ৭৫ হাজার ব্যক্তি, জরুরি সেবার চার লাখ কর্মী, স্থল, নৌ ও বিমানবন্দরের দেড় লাখ কর্মী, এক লাখ ২০ হাজার প্রবাসী অদক্ষ শ্রমিকও আছেন অগ্রাধিকারের তালিকায়৷
ছবি: bdnews24.com
আছেন জাতীয় দলের খেলোয়াড়রাও
জেলা উপজেলায় কর্মরত চার লাখ জরুরি সেবার সরকারি কর্মচারী, এক লাখ ৯৭ হাজার ৬২১ জন ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারী, স্বল্প রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার (যক্ষ্মা, এইডস, ক্যানসার) ছয় লাখ ২৫ হাজার জনগোষ্ঠী, ৬৪ থেকে ৭৯ বছর বয়সী এক কোটি তিন লাখ ২৬ হাজার ৬৫৮ জন্য ব্যক্তি, ৮০ বছর ও তদূর্ধ্ব ১৩ লাখ ১২ হাজার ৯৭৩ জন জনগোষ্ঠী, জাতীয় দলের খেলোয়াড় ২১ হাজার ৮৬৩ জনও আগে টিকা পাবেন৷