প্রবল আন্তর্জাতিক চাপেও কাজ হলো না। উল্টে টিগ্রের রাজধানীতে ইথিওপিয়ার ফাইটার জেট বোমাবর্ষণ করেছে বলে খবর। জাতিসংঘের উদ্বাস্তু সংক্রান্ত সংস্থার প্রতিনিধি অ্যান এনকন্ট্রে জানিয়েছেন, তাঁর সহকর্মীরা এই বিমানহানার সাক্ষী। তাঁরা যেখানে আছেন, তার কাছেই বোমা পড়েছে। ইথিওপিয়াররাজধানী আদ্দিস আবাবা-তে তিনি আল জাজিরাকে বলেছেন, ''আমি জানি না, টার্গেট কী ছিল বা কাদের লক্ষ্য করে বোমা মারা হয়েছে। মানুষ পালাতে শুরু করেছেন।''
রয়টার্সকে চারজন কূটনীতিক ও সেনা সূত্র জানিয়েছে, রাজধানী শহরের ভিতর ও আশেপাশে বোমা ফেলা হয়েছে। এর ফলে হতাহতের সংখ্যা কত, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কিছুই জানা যায়নি। সরকার এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। টাস্ক ফোর্সের তরফে দাবি করা হয়েছে, সেনা রাজধানী থেকে ১২৫ কিলোমিটার দূরের শহর আলামাটা দখল করে নিয়েছে।
টিগ্রেতে এখনো সাংবাদিকদের ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। ফোন, ইন্টারনেট অধিকাংশ সময়ই বন্ধ থাকছে। তাই টিগ্রেতে সেনা বনাম টিগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্টের মধ্যে যে লড়াই চলছে, তার প্রকৃত ছবি এখনো পাওয়া যাচ্ছে না।
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আবহাওয়ার গতিপ্রকৃতিও পরিবর্তন হচ্ছে৷ শীতের দেশেও অনেক সময় নাভিশ্বাস উঠায় গরম৷ পৃথিবীর অতি গরমের ১০টি দেশের তালিকা করেছে ‘স্কাইমেট ওয়েদার’৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/R.K. Singhআফ্রিকার দেশ সুদানে বছরজুড়েই গরম থাকে৷ এমনকি, বৃষ্টির মধ্যে সেখানে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা উঠে৷ মরুর দেশ সুদানে গড় তাপমাত্রা থাকে ৫২ ডিগ্রি৷ একেবারে কম বৃষ্টিপাত হওয়ায় গরমে বেশি নাভিশ্বাস উঠে৷
ছবি: picture-alliance/imageBROKER/U. Doeringআরবের ধনী দেশ ওমান৷ অতি উষ্ণ দেশ হিসাবেও এটি আছে প্রথম সারিতে৷ বছরের পাঁচ থেকে ছয় মাস এখানে তাপমাত্রা ৫০-৫৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকে৷ দেশটির বেশির ভাগ জায়গাই এয়ার-কন্ডিশনড৷
ছবি: MHCযুদ্ধের বাইরে অন্য অনেক সমস্যা মোকাবেলা করে ইরাক৷ এর মধ্যে একটি বড় সমস্যা অধিক তাপমাত্রা৷ গরমের দিনে এখানকার তাপমাত্রা ৪৮ ডিগ্রি থেকে শুরু করে ৫৪ ডিগ্রিতে ছাড়িয়ে যায়৷ উত্তরের পর্বত এলাকায় বরফ পড়লেও পুরো দেশে তাপমাত্রা থাকে অসহনীয়৷
ছবি: Reuters/Rasheedবহু রকম আবহাওয়া প্রত্যক্ষ করা হয় ভারতে৷ দেশটির হিমালয় এলাকায় তাপমাত্রা মাইনাস ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নামে৷ আর রাজস্থানের মতো মরু এলাকায় তাপমাত্রা উঠে ৪৮ ডিগ্রি পর্যন্ত৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/R.K. Singhগ্রীষ্মে মধ্য অ্যামেরিকার দেশ মেক্সিকোতে গড় তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠে থাকে৷ এমন তাপমাত্রার মধ্যও মেক্সিকোর কয়েকটি সমুদ্র সৈকত পৃথিবী অন্যতম শীর্ষ পর্যটক গন্তব্য৷
ছবি: picture alliance / blickwinkel/imagesandstories১৩টি রাজ্য ও তিনটি প্রজাতান্ত্রিক এলাকা নিয়ে গঠিত পূর্ব-এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়া৷ দেশটির তাপমাত্রায় নানাবিধ পরিস্থিতি লক্ষ্য করা যায়৷ সারাবছর এখানে তাপমাত্রা থাকে ২৫-৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে৷ আর কোনো কোনো সময় এটা ৪০ ডিগ্রি পর্যন্ত উঠে৷
ছবি: Reuters/T. Sylvesterউত্তর আফ্রিকার দেশ আলজেরিয়ার আবহাওয়া বিচিত্র রকম৷ এখানে যেমন ভয়াবহ উষ্ণ দিন হয়, তেমনি সবচেয়ে ঠাণ্ডা রাত পাওয়া যায়৷ মৃদু বৃষ্টিপাতের দেশটিতে তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে উঠে৷ শীতকালে আলজেরিয়ায় গড় তাপমাত্রা থাকে ২৫ ডিগ্রি৷ আর গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রা থাকে অনেক শুষ্ক এবং আর্দ্র৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Messaraবেশির ভাগ অঞ্চল মরুভূমি হওয়ায় সৌদি আরবের তাপমাত্রা বেশি৷ বছরের বিভিন্ন সময়ে দেশটির তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠে৷ বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় তাপমাত্রা পরিবেশকে অসহনীয় করে তোলে৷ দিনের বেলা গরমের মাত্রা ৫২ ডিগ্রি পর্যন্ত ওঠা সেখানে খুব স্বাভাবিক ব্যাপার৷
ছবি: Getty Images/AFP/I. Timberlakeপৃথিবীর অন্যতম উষ্ণ দেশ ইথিপিওয়া৷ দেশটির ‘দানাকিল ডিপ্রেসন’ মরুভূমির অবস্থান সমুদ্রপৃষ্ঠের একশ‘ মিটার নিচে অবস্থিত৷ এখানে হরহামেশা লু হাওয়া বয়ে যায় এবং ভূমিকম্প হয়৷ দিনের বেলা তাপমাত্রা ৬৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছার রেকর্ডও আসে দেশটিতে৷
ছবি: Imago/photothekলিবিয়ায় গরমের কারণে গ্রীষ্মে চামড়া পুড়ে যাওয়াসহ বিভিন্ন ধরনের রোগব্যাধি হয়ে থাকে৷ লিবিয়ান মরুভূমির দখলের দেশটির বড় অংশ৷ এখানকার শুষ্ক আবহাওয়া তাপমাত্রা প্রায় ৫৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠায়৷ ১৯২২ সালে রেকর্ড ৫৭ দশমিক আট ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা উঠে লিবিয়ায়৷
ছবি: Reuters/H. Amara কিন্তু যা জানা গেছে, সমানে টিগ্রে থেকে মানুষ পাশের দেশ সুদানে চলে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যে ২৫ হাজার মানুষ সীমান্ত পেরিয়েছেন। কয়েকশ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। সরকারি মুখপাত্র জানিয়েছেন, ''এই লড়াই অনন্তকাল চলবে না। এটা ছোট অপারেশন। আমাদের আর কিছুটা সময় দিন।''
উগান্ডার প্রেসিডেন্ট মধ্যস্থতা করতে চেয়েছিলেন। আরো কিছু দেশ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে চেয়েছে। কিন্তু সরকারি মুখপাত্র জানিয়েছেন, তাঁরা তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা চান না।
ডিডাব্লিউ-র প্রতিনিধি কাই নেবে জানাচ্ছেন, এই লড়াইয়ের ফলে আঞ্চলিক পরিস্থিতি খারাপ হবে। এখনই বন্ধ না হলে এই সংঘাত গৃহযুদ্ধের চেহারা নিতে পারে বলে অনেকের আশঙ্কা। তা হলে আশপাশের এলাকায় এর প্রভাব পড়বে। ইথিওপিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী অবশ্য দাবি করেছেন, টিগ্রের পিপলস ফ্রন্টের কোনো শক্তি নেই। অল্প সময়ের মধ্যেই টিগ্রে অধিকার করা সম্ভব হবে।
জিএইচ/এসজি(এপি, এএফপি, রয়টার্স)