টিগ্রেতে সেনার হাতে আক্রান্ত জাতিসংঘের প্রতিনিধি দল। তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। আটকও করে রাখা হয়েছিল।
বিজ্ঞাপন
ত্রাণ পৌঁছতে গিয়ে ইথিওপিয়া সরকারের সেনার হাতে আক্রান্ত জাতিসংঘের দল। একটি চেক পোস্ট পেরোতে গিয়ে বিপত্তি। সেনার দাবি, তাঁরা জাতিসংঘের দলটিকে থামাতে গুলি চালায়। তাঁদের সামান্য সময় আটক করে রাখা হয়েছিল।
জাতিসংঘের দলটি টিগ্রেতে একটি উদ্বাস্তু শিবিরে ত্রাণ পৌঁছে দিতে যাচ্ছিল। তখনই এই ঘটনা ঘটে। জাতিসংঘের তরফে জানানো হয়েছে, তারা ইথিওপিয়ার সর্বোচ্চ স্তরে বিষয়টি নিয়ে কথা বলছেন এবং এই ধরনের ঘটনা যাতে আর না হয়, তা নিশ্চিত করতে চাইছেন।
টিগ্রেতে ইথিওপিয়ার টাস্ক ফোর্সের প্রধান রেডওয়ান হুসেইন সাংবাদিকদের বলেছেন, জাতিসংঘের দলটি দুইটি চেকপোস্টে বলা সত্ত্বেও দাঁড়ায়নি। তৃতীয় চেকপোস্টও তারা একইভাবে পেরোতে যায়। তখন সেনা গুলি চালায়। গুলিতে কেউ আহত হননি। অল্প সময়ের জন্য জাতিসংঘের দলের সদস্যদের আটকও করা হয়েছিল। তারপর তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
গত সপ্তাহে ইথিওপিয়ার সরকার ও জাতিসংঘের মধ্যে টিগ্রেতে মানবিক সাহায্য পৌঁছে দেয়া নিয়ে চুক্তি হয়েছে। নভেম্বর থেকে সরকারি বাহিনী ও টিগ্রে পিপলস লিবারেশন ফোর্স(টিপিএলএফ)-এর মধ্যে লড়াই চলছে। তাতে হাজার কয়েক মানুষ মারা গেছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। জাতিসংঘের হিসাব, অন্ততপক্ষে সাড়ে নয় লাখ মানুষ গৃহহীন হয়েছেন।
টিগ্রে যুদ্ধে পালাচ্ছে মানুষ
টিগ্রেতে ইথিওপিয়া ও টিগ্রে পিপলস রেভলিউশনারি ফোর্স টিপিএলএফ এর লড়াইয়ের ফলে ইথিওপিয়া থেকে ৪৪ হাজার মানুষ সীমান্ত পেরিয়ে সুদানে পালিয়েছে৷ ঘরছাড়া ২০ লাখ মানুষ৷
ছবি: El Tayeb Siddig/REUTERS
খাবার সংকট
দেশের ভেতরে যুদ্ধ চলছে৷ ফলে খাবার সংকটের কারণে এসব মানুষ ইথিওপিয়া থেকে পালিয়ে আশ্রয় নিচ্ছে সুদানে৷
ছবি: Baz Ratner/REUTERS
বিচ্ছিন্ন টিগ্রে
এক মাস ধরে টিগ্রেতে কোন যানবাহন চলছে না৷ টেলি যোগাযোগ, ইন্টারনেট একেবারে বন্ধ৷ রোববার ইথিওপিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলা হয় টিগ্রের হুমেরা শহরে ৭০টি কবরের সন্ধান পেয়েছে, যেগুলোর কোনটিতে একজন, আবার কোনটিতে একাধিক মৃতদেহ রয়েছে৷ প্রতিবেদনে একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, টিপিএলএফ এর যোদ্ধারা এদের হত্যা করেছে৷ কিন্তু যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় লড়াইয়ে আহত-নিহতের সঠিক সংখ্যা জানা সম্ভব হচ্ছে না৷
ছবি: Baz Ratner/REUTERS
খাবার পাহারা
সুদানের কাসালা রাজ্যের একটি শরণার্থী শিবিরে ত্রাণের খাবারের বস্তাগুলো পাহারা দিচ্ছে সেনারা৷ বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি ডাব্লিউএফপি এসব শিবিরে খাদ্য সহায়তা দিচ্ছে৷
ছবি: Mohamed Nureldin Abdallah/REUTERS
সেটিট নদীর তীরে হাজারো মানুষ
ইথিওপিয়া থেকে পালিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ নদী পার হয়ে আসছে সুদানে৷
ছবি: El Tayeb Siddig/REUTERS
গৃহহীন ২০ লাখ
ট্রিগ্রেতে লড়াইয়ের কারণে গৃহহীন হয়েছেন ২০ লাখ মানুষ৷ সুদানের আল কাদারিফ রাজ্যের একটি শরণার্থী শিবিরে খাবারের জন্য অপেক্ষা করছেন অনেক মানুষ৷
ছবি: Mohamed Nureldin Abdallah/REUTERS
সম্বলহীন যাত্রা
এই শরণার্থী সুদানে যেতে সাঁতরে সেটিট নদী পার হচ্ছে৷ উঁচু করে রাখা হাতে গায়ের জামাটা ছাড়া আর কিছু নেই৷
ছবি: Mohamed Nureldin Abdallah/REUTERS
টিপিএলএফের শাসন
উত্তর ইথিওপিয়ার ইরিত্রিয়া ও সুদান ঘেঁষা এলাকায় এতদিন টিপিএলএফের শাসন চলতো৷ এই এলাকায় সুদান ও ইরিত্রিয়ার প্রভাব ছিলো বেশি৷
ছবি: Mohamed Nureldin Abdallah/REUTERS
টিপিএলএফকে কোণঠাসা
শান্তিতে নোবেল জয়ী ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ ক্ষমতায় আসার পর রাজনৈতিক সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন৷ আর সেজন্যই টিপিএলএফকে কোণঠাসা করার পরিকল্পনা করেন তিনি৷ টিগ্রেতে ৬০ লাখ মানুষের বাস৷
ছবি: Mohamed Nureldin Abdallah/REUTERS
এক মাস ধরে যুদ্ধ
টিগ্রেতে ইথিওপিয়া ও টিগ্রে পিপলস রেভলিউশনারি ফোর্স টিপিএলএফ এর লড়াইয় চলছে এক মাস ধরে৷ নভেম্বরের ৪ তারিখে শুরু হয় এই লড়াই৷ টিগ্রের লড়াইয়ে তাদের জয় হয়েছে বলে শনিবার দাবি করেছে সরকার৷ জানিয়েছে, রাজধানী মেকেলে এখন সেনার দখলে৷
ছবি: Mohamed Nureldin Abdallah/REUTERS
9 ছবি1 | 9
জাতিসংঘের মুখপাত্র জানিয়েছেন, তাঁদের দলে চার জন ছিলেন। তাঁরা রাস্তাঘাটের অবস্থা দেখছিলেন এবং ইরিত্রিয়ার উদ্বাস্তু শিবিরে যাচ্ছিলেন। সেনার তরফ থেকে জানানো হয়েছে, জাতিসংঘের দলকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে, তাঁরা যেন এইভাবে অ্যাডভেঞ্চার না করেন এবং এদিক ওদিক না যান। তাঁর দাবি, ইথিওপিয়ার সরকারই টিগ্রেতে ত্রাণসাহায্য পৌঁছে দেবে। জাতিসংঘের সঙ্গে চুক্তির অর্থ, তারা এই কাজে সরকারকে সাহায্য করবে। কিন্তু জাতিসংঘ নিজে থেকেই ত্রাণ শুরু করে দিয়েছে। মুখপাত্র বলেছেন, ইথিওপিয়ায় সরকার আছে, তাই তাঁদের বেবিসিটারের দরকার নেই।
কিন্তু জাতিসংঘ দুর্গত এলাকায় যেতে চায়। তারা স্বাধীনভাবে ঘোরাফেরা করতে চায় এবং ত্রাণ পৌঁছে দিতে চায়। জাতিসংঘের মুখপাত্র বলেছেন, টিগ্রের পরিস্থতি বেশ জটিল। সরকারের সঙ্গে আলোচনা চলছে। জাতিসংঘ দুর্গত এলাকায় নিজেই যেতে চায়।