টিগ্রেতে নীতিগতভাবে যুদ্ধবিরতিতে রাজি টিপিএলএফ। তাদের দাবি, টিগ্রে থেকে ইথিওপিয়া ও ইরিত্রিয়ার সব সেনাকে চলে যেতে হবে।
বিজ্ঞাপন
টিগ্রের রাজধানী শহর আবার দখল করে নিয়েছে বিদ্রোহী টিগ্রে পিপলস লিবরেশন ফ্রন্ট (টিপিএলএফ)। এরপর ইথিওপিয়ার সেনা একতরফা যুদ্ধবিরতির কথা ঘোষণা করেছে। টিপিএলএফ জানিয়েছে, তারা নীতিগতভাবে যুদ্ধবিরতি মেনে নিতে রাজি। তবে শর্ত হলো, টিগ্রে থেকে ইথিওপিয়া ও ইরিত্রিয়ার সেনা প্রত্যাহার করে নিতে হবে। আর ভবিষ্যতে নতুন করে সেনা অভিযান করা যাবে না।
টিপিএলএফ জানিয়েছে, তাদের গ্যারান্টি দিতে হবে যে, ভবিষ্যতে দ্বিতীয় সেনা অভিযান হবে না। সেই সঙ্গে টিগ্রেতে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের হাতে পুরো ক্ষমতা দিতে হবে, যাতে তারা সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করতে পারে।
২০১৮ পর্যন্ত টিপিএলএফ শুধু যে টিগ্রে শাসন করত তাই নয়, ইথিওপিয়ার কেন্দ্রীয় সরকারের উপরও তাদের যথেষ্ট প্রভাব ছিল। কিন্তু ২০১৮ সালে নতুন সরকার আসার পর পুরো ছবিটা বদলে যায়।
যুদ্ধ নয়, খাদ্য চাই
ইথিওপিয়ার টিগ্রেতে সাড়ে তিন লাখ মানুষ অনাহারে মৃত্যুর অপেক্ষায়। ৫৫ লাখ মানুষ চরম খাদ্য সংকটে। জাতিসংঘের রিপোর্টে প্রকাশ।
ছবি: Omer Erdem/AA/picture alliance
মন্বন্তর পরিস্থিতি
জাতিসংঘের খাদ্য সংক্রান্ত সংস্থা একটি বিস্তারিত রিপোর্ট পেশ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, টিগ্রের সাড়ে তিন লাখ মানুষ মন্বন্তর পরিস্থিতির মধ্যে আছে। ৫৫ লাখ॥ মানুষ খাদ্য সংকটে ভুগছেন। ২০১০ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে সোমালিয়ায় যে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল, বর্তমান পরিস্থিতি তার চেয়েও ভয়ংকর।
ছবি: AP
খাবার নেই শিশুদের
২০১০ থেকে ২০১২ সালের মন্বন্তরে সোমালিয়ায় মৃত্যু হয়েছিল প্রায় আড়াই লাখ মানুষের। তার মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি ছিল শিশু। টিগ্রের অবস্থা তার চেয়েও খারাপ বলে মনে করা হচ্ছে। শিশুদের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ বলে জানানো হয়েছে রিপোর্টে।
ছবি: Mahmoud Hjaj/AA/picture alliance
জি সেভেনে আর্জি
জাতিসংঘের মানবাধিকার সংগঠনের প্রধান মার্ক লোকক বৃহস্পতিবার একটি উচ্চপর্যায়ের ভারচুয়াল বৈঠক করেন। সেখানে জি সেভেন নেতাদের কাছে তিনি আর্জি জানান, টিগ্রে নিয়ে যেন আলোচনা করেন তারা। অনাহার কমানোর প্রস্তাব নেন।
ছবি: Baz Ratner/REUTERS
অর্থের প্রয়োজন
জাতিসংঘের বক্তব্য, টিগ্রের অবস্থা প্রতিদিন খারাপ হচ্ছে। তবে এখনো পরিস্থিতির পরিবর্তন করা সম্ভব। মানুষের কাছে খাবার এবং ওষুধ পৌঁছে দিতে হবে। কিন্তু তার জন্য বিপুল অর্থের প্রয়োজন। শক্তিশালী দেশগুলি যেন সেই অর্থের ব্যবস্থা করে। নইলে ২০ লাখ মানুষের মৃত্যু হতে পারে।
ছবি: Maria Gerth-Niculescu/DW
খাবার পৌঁছানো যাচ্ছে না
জাতিসংঘ জানিয়েছে, গ্রামের ভিতর এখনো খাবার পৌঁছে দেওয়া যাচ্ছে না। অস্ত্র নিয়ে গ্রামের বাইরে পাহারা দিচ্ছে সন্ত্রাসীরা। তাদের মোকাবিলা করার জন্যও এগিয়ে আসতে হবে শক্তিধর দেশগুলিকে।
ছবি: Minasse Wondimu Hailu/AA/picture alliance
ইথিওপিয়া সরকার এবং টিপিএলএফ
ইথিওপিয়ায় নতুন সরকার গঠনের আগে থেকেই টিগ্রের ক্ষমতা দখল করে রেখেছে টিগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্ট। নতুন সরকারের সঙ্গে তাদের তীব্র লড়াই হচ্ছে। তারই জেরে বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন লক্ষাধিক মানুষ। অনাহারে ভুগছেন লাখ লাখ মানুষ।
ছবি: Minasse Wondimu Hailu/AA/picture alliance
কবে থামবে যুদ্ধ
যুদ্ধ কবে থামবে, কেউ জানে না। পার্শ্বর্তী রাষ্ট্রগুলিও যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে মানুষকে বাঁচাতে হবে, এমনই সংকল্পের কথা বলা হয়েছে জাতিসংঘের রিপোর্টে। তার জন্য সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ছবি: Baz Ratner/REUTERS
7 ছবি1 | 7
গত বছর ইথিওপিয়া ও ইরিত্রিয়ার সেনার সঙ্গে টিপিএলএফের লড়াই শুরু হয়। সরকারের অভিযোগ ছিল, টিপিএলএফ সেনা ঘাঁটি আক্রমণ করেছে। তারপর থেকে সেনা ও টিপিএলএফের মধ্যে সমানে সংঘর্ষ চলছে। গত সোমবার টিগ্রের রাজধানীর দখল নেয় টিপএলএফ। এরপরই সরকার যুদ্ধবিরতির কথা ঘোষণা করেছিল।
টিগ্রের সংঘাতে ১৭ লাখ মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন। বিরোধীদের দাবি, লড়াই শুরুর পর ৫২ হাজার মানুষ মারা গেছেন। গত শুক্রবার জাতিসংঘ জানয়েছিল, টিগ্রের চার লাখ মনুষ দুর্ভিক্ষের মুখে।