সমস্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ। মিডিয়াকে যেতে দেয়া হচ্ছে না। ফলে ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রীর দাবি যাচাই করে দেখার উপায় নেই। তবে জাতিসংঘের এজেন্সি এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দাবি, কয়েকশ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। অনেককেই ছুরি মেরে, নানাভাবে অত্যাচার করে মারা হয়েছে। অ্যামনেস্টির দাবি, তাদের কাছে যে ছবি এসেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, স্ট্রেচারে করে মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। যাঁদের মারা হয়েছে, তাঁরা মূলত শ্রমিক। সংঘর্ষের সঙ্গে তাঁদের কোনো যোগ নেই।
গত এক সপ্তাহ ধরে উত্তর ইথিওপিয়ার টিগ্রেতে সেনাবাহিনীর সঙ্গে টিগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্ট বা টিপিএলএফের ভয়ঙ্কর লড়াইচলছে। লড়াই শুরু হওয়ার পরেই টিগ্রের সঙ্গে সমস্ত যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয় হয়েছে। ফোন লাইন বন্ধ। ইন্টারনেট পরিষেবাও নেই।
বেশ কিছুদিন হলো টিগ্রের দখল নিয়ে ইথিওপিয়ার সরকারি সেনা ও টিপিএলএফের মধ্যে লড়াই চলছে। এর আগেও সংঘর্ষ হয়েছে। ফেডারেল বাহিনী বিমানহানাও চালিয়েছে। কিন্তু এত লোকের মৃত্যুর খবর আসেনি।
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আবহাওয়ার গতিপ্রকৃতিও পরিবর্তন হচ্ছে৷ শীতের দেশেও অনেক সময় নাভিশ্বাস উঠায় গরম৷ পৃথিবীর অতি গরমের ১০টি দেশের তালিকা করেছে ‘স্কাইমেট ওয়েদার’৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/R.K. Singhআফ্রিকার দেশ সুদানে বছরজুড়েই গরম থাকে৷ এমনকি, বৃষ্টির মধ্যে সেখানে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা উঠে৷ মরুর দেশ সুদানে গড় তাপমাত্রা থাকে ৫২ ডিগ্রি৷ একেবারে কম বৃষ্টিপাত হওয়ায় গরমে বেশি নাভিশ্বাস উঠে৷
ছবি: picture-alliance/imageBROKER/U. Doeringআরবের ধনী দেশ ওমান৷ অতি উষ্ণ দেশ হিসাবেও এটি আছে প্রথম সারিতে৷ বছরের পাঁচ থেকে ছয় মাস এখানে তাপমাত্রা ৫০-৫৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকে৷ দেশটির বেশির ভাগ জায়গাই এয়ার-কন্ডিশনড৷
ছবি: MHCযুদ্ধের বাইরে অন্য অনেক সমস্যা মোকাবেলা করে ইরাক৷ এর মধ্যে একটি বড় সমস্যা অধিক তাপমাত্রা৷ গরমের দিনে এখানকার তাপমাত্রা ৪৮ ডিগ্রি থেকে শুরু করে ৫৪ ডিগ্রিতে ছাড়িয়ে যায়৷ উত্তরের পর্বত এলাকায় বরফ পড়লেও পুরো দেশে তাপমাত্রা থাকে অসহনীয়৷
ছবি: Reuters/Rasheedবহু রকম আবহাওয়া প্রত্যক্ষ করা হয় ভারতে৷ দেশটির হিমালয় এলাকায় তাপমাত্রা মাইনাস ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নামে৷ আর রাজস্থানের মতো মরু এলাকায় তাপমাত্রা উঠে ৪৮ ডিগ্রি পর্যন্ত৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/R.K. Singhগ্রীষ্মে মধ্য অ্যামেরিকার দেশ মেক্সিকোতে গড় তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠে থাকে৷ এমন তাপমাত্রার মধ্যও মেক্সিকোর কয়েকটি সমুদ্র সৈকত পৃথিবী অন্যতম শীর্ষ পর্যটক গন্তব্য৷
ছবি: picture alliance / blickwinkel/imagesandstories১৩টি রাজ্য ও তিনটি প্রজাতান্ত্রিক এলাকা নিয়ে গঠিত পূর্ব-এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়া৷ দেশটির তাপমাত্রায় নানাবিধ পরিস্থিতি লক্ষ্য করা যায়৷ সারাবছর এখানে তাপমাত্রা থাকে ২৫-৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে৷ আর কোনো কোনো সময় এটা ৪০ ডিগ্রি পর্যন্ত উঠে৷
ছবি: Reuters/T. Sylvesterউত্তর আফ্রিকার দেশ আলজেরিয়ার আবহাওয়া বিচিত্র রকম৷ এখানে যেমন ভয়াবহ উষ্ণ দিন হয়, তেমনি সবচেয়ে ঠাণ্ডা রাত পাওয়া যায়৷ মৃদু বৃষ্টিপাতের দেশটিতে তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে উঠে৷ শীতকালে আলজেরিয়ায় গড় তাপমাত্রা থাকে ২৫ ডিগ্রি৷ আর গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রা থাকে অনেক শুষ্ক এবং আর্দ্র৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Messaraবেশির ভাগ অঞ্চল মরুভূমি হওয়ায় সৌদি আরবের তাপমাত্রা বেশি৷ বছরের বিভিন্ন সময়ে দেশটির তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠে৷ বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় তাপমাত্রা পরিবেশকে অসহনীয় করে তোলে৷ দিনের বেলা গরমের মাত্রা ৫২ ডিগ্রি পর্যন্ত ওঠা সেখানে খুব স্বাভাবিক ব্যাপার৷
ছবি: Getty Images/AFP/I. Timberlakeপৃথিবীর অন্যতম উষ্ণ দেশ ইথিপিওয়া৷ দেশটির ‘দানাকিল ডিপ্রেসন’ মরুভূমির অবস্থান সমুদ্রপৃষ্ঠের একশ‘ মিটার নিচে অবস্থিত৷ এখানে হরহামেশা লু হাওয়া বয়ে যায় এবং ভূমিকম্প হয়৷ দিনের বেলা তাপমাত্রা ৬৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছার রেকর্ডও আসে দেশটিতে৷
ছবি: Imago/photothekলিবিয়ায় গরমের কারণে গ্রীষ্মে চামড়া পুড়ে যাওয়াসহ বিভিন্ন ধরনের রোগব্যাধি হয়ে থাকে৷ লিবিয়ান মরুভূমির দখলের দেশটির বড় অংশ৷ এখানকার শুষ্ক আবহাওয়া তাপমাত্রা প্রায় ৫৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠায়৷ ১৯২২ সালে রেকর্ড ৫৭ দশমিক আট ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা উঠে লিবিয়ায়৷
ছবি: Reuters/H. Amara অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, বহু মানুষকে ছুরি মেরে হত্যা করা হয়েছে। নির্যাতন করে মারা হয়েছে। এই সংখ্যাটা কয়েকশ হতে পারে। তাদের কাছে যে ছবি এসে পৌঁছেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, স্ট্রেচারে করে অসংখ্য মৃতদেহ সরানো হচ্ছে।
সরকারের কাছে অ্যামনেস্টি দাবি করেছে, অবিলম্বে ফোন ও ইন্টারনেট চালু করা হোক। যাতে টিগ্রেতে কী হচ্ছে তা ঠিকভাবে জানা সম্ভব হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, লুগড়ি বলে একটি জায়গায় ফেডারেল বাহিনীকে হারিয়ে দিয়েছিল টিপিএলইফ। তারপরই সেনাবাহিনী আক্রমণ করে টিপিএলএফকে। প্রবল লড়াই শুরু হয়।
গত ৪ নভেম্বর ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেনা শিবির আক্রান্ত হতে পারে। তাই সেনা যেন টিপিএলএফকে আক্রমণ করে। এরপর সংঘর্ষ শুরু হয়। বিমানহানাও হয়েছে। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী দাবি করেছেন, সরকারি বাহীনী খুব বড় জয় পেয়েছে। উত্তর টিগ্রেকে স্বাধীন করা সম্ভব হয়েছে।
জিএইচ/এসজি(রয়টার্স, এএফপি, এপি)