টিগ্রের লড়াইয়ের ফলে ইরিট্রিয়া থেকে আসা এক লাখ উদ্বাস্তু খাবার পাচ্ছেন না। উদ্বিগ্ন জাতিসংঘ।
ছবি: ASHRAF SHAZLY/AFP
বিজ্ঞাপন
টিগ্রেতে ইথিওপিয়া ও টিগ্রে পিপলস রেভলিউশনারি ফোর্স(টিপিএলঅফ)-এর লড়াইয়ের ফলে অন্ততপক্ষে ৪৪ হাজার মানুষ সীমান্ত পেরিয়ে সুদানে চলে গেছেন। সেই উদ্বাস্তুদের খাবার ও থাকার জায়গার ব্যবস্থা করছে জাতিসংঘের উদ্বাস্তু বিষয়ক সংগঠন। কিন্তু টিগ্রেতেই বিভিন্ন শিবিরে আছেন ইরিট্রিয়া থেকে আসা এক লাখের বেশি উদ্বাস্তু। লড়াইয়ের ফলে তাঁদের খাবারে টান পড়েছে। যেহেতু টিগ্রেতে কাউকে ঢোকার অনুমতি দেয়া হচ্ছে না, তাই সেই সব শিবিরে খাবার পৌঁছে দেয়া যাচ্ছে না।
বুধবার সরকারি সেনা বনাম টিপিএলএফের লড়াইয়ের এক মাস পূর্ণ হলো। এই এক মাস ধরেই টিগ্রেতে কোনো যানবাহন ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। টেলিফোন, ইন্টারনেটও কার্যত বন্ধ। জাতিসংঘ ও অন্য বেশ কিছু এজেন্সি উদ্বাস্তু শিবিরে খাবার, ওষুধ ও অন্য অত্যাবশ্যকীয় জিনিস পৌঁছে দেয়ার জন্য বার বার আবেদন জানিয়েছে। কিন্তু তাতে কোনো ফল হয়নি।
জাতিসংঘের উদ্বাস্তু বিষয়ক সংগঠনের মুখপাত্র বাবর বালোচ সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, ''গত মাস থেকে লড়াই শুরু হওয়ার পরই উদ্বাস্তু শিবিরের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ ছিন্ন হয়ে যায়। এখন যা রিপোর্ট পাচ্ছি, তা খুবই চিন্তাজনক। শিবিরের আশপাশ থেকে অপহরণ হচ্ছে। জোর করে ধরে নিয়ে লড়াই করানোর অভিযোগও আসছে। এও শুনেছি, অনেকে শিবির ছেড়ে চলে গেছেন।'' তিনি জানিয়েছেন, ''আমরা জরুরি ভিত্তিতে শিবিরে যাওয়ার জন্য অনুমতি চেয়েছি।''
ইথিওপিয়ায় গৃহযুদ্ধ, পালাচ্ছেন টিগ্রের বাসিন্দারা
ইথিওপিয়ায় গৃহযুদ্ধ থেকে বাঁচতে দেশটির টিগ্রে অঞ্চল ছেড়ে পালাচ্ছেন সেখানকার বাসিন্দারা৷ অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন সুদান-ইথিওপিয়া সীমান্তে৷
ছবি: Mohamed Nureldin Abdallah/REUTERS
উম-রাকোবা শিবিরে শরণার্থীদের ভিড়
ইথিওপিয়ার টিগ্রে অঞ্চলে চলমান লড়াই থেকে বাঁচতে দেশটির সঙ্গে সুদানের সীমান্তে আশ্রয় নিয়েছেন অনেক শরণার্থী৷ গতকাল তোলা ছবিতে এক মাকে তার সন্তানদেরসহ দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Mohamed Nureldin Abdallah/REUTERS
সক্রিয় ইউএনএইচসিআর
ইথিওপীয় শরণার্থীদের বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করছেন জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর এক সদস্য৷ টিগ্রেতে গত তিন সপ্তাহ ধরে ইথিওপিয়ার সেনাবাহিনীর সঙ্গে টিগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্টের (টিপিএলএফ) লড়াই চলছে৷ টিপিএলএফ কার্যত ১৯৯১ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত ইথিওপিয়া শাসন করেছিল৷ তবে, ২০১৮ সালে আবি আহমেদ প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর পরিস্থিতি বদলে যায়৷
ছবি: Mohamed Nureldin Abdallah/REUTERS
সেটিট নদী পার হয়ে শিবিরে
টিগ্রে থেকে পালিয়ে আসা ইথিওপীয়রা সেটিট নদী পার হওয়ার পর নৌকা থেকে নিজেদের মালামাল তুলে নিচ্ছেন৷ টিগ্রেতে সংঘাত শুরুর পর অন্তত চল্লিশ হাজার মানুষ এলাকা ছাড়া হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ৷
ছবি: Mohamed Nureldin Abdallah/REUTERS
নারী ও শিশুদের ভোগান্তি চরমে
দুই পক্ষের সংঘাতে নারী ও শিশুদের ভোগান্তিও চরমে পৌঁছেছে৷ জাতিসংঘ সেখানে আন্তর্জাতিক আইনে লঙ্ঘন ঘটছে বলে সতর্ক করেছে৷
ছবি: Mohamed Nureldin Abdallah/REUTERS
বাসে করে শরণার্থীদের পরিবহন
টিগ্রে থেকে পালানো ইথিওপীয়দের একটি বাসে করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে৷ সংঘর্ষরত দুই পক্ষের মধ্যে শিগগিরই শান্তি ফেরার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না৷
ছবি: Mohamed Nureldin Abdallah/REUTERS
শান্তিতে নোবেল, দেশে অশান্তি
ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ গতবছর শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন৷ ইরিত্রিয়ার সঙ্গে দীর্ঘদিনের বৈরি সম্পর্কের অবসান ঘটিয়ে শান্তি স্থাপনে সক্ষম হওয়ায় তাকে এই পুরস্কার দেয়া হয়৷ তবে, দেশটির বর্তমান অশান্তি পরিস্থিতি নিরসনে তিনি যথার্থ ভূমিকা রাখতে পারছেন না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা৷
ছবি: Michel Euler/REUTERS
6 ছবি1 | 6
বালোচ জানিয়েছেন, শিবিরে আর খাবার নেই। ফলে ক্ষুধা ও অপুষ্টির শিকার হতে হচ্ছে শিবিরের মানুষদের। সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, জতিসংঘের ত্রাণ যাতে ওই শিবিরে পৌঁছতে পারে, তার ব্যবস্থা করা হবে। জাতিসংঘের রিপোর্ট হলো, টিগ্রের লড়াইয়ের ফলে দশ লাখ মানুষ ঘর হারিয়েছেন। সুদানে ৪৪ হাজার মানুষ চলে গেছেন। তাঁদের সকলেরই সাহায্য দরকার। তাই প্রথমে টিগ্রেতে ঢোকা জরুরি।
সরকারের দাবি, টিগ্রের লড়াইয়ে তারা বিজয়ী। রাজধানী মেকেলে এখন সেনার দখলে। টিপিএলএফ নেতারা পালিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী এরপরেও টিপিএলএফের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চান না।