টিপিএলএফ আবার টিগ্রের রাজধানী মেকেলের দখল নিয়েছে বলে দাবি করলো। ইথিওপিয়া সরকারও একতরফা যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে।
বিজ্ঞাপন
গত আট মাস ধরে টিগ্রেতে প্রবল লড়াই চলছে। ইথিওপিয়ার সেনা রাজধানী সহ অন্য এলাকার দখল নেয়ার পরেও টিগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্ট(টিপিএলএফ) লড়াই চালিয়ে গেছে। টিপিএলএফের দবি, তারা আবার রাজধানীতে ঢুকে পড়েছে ও রাজধানীর দখল নিয়েছে।
মেকেলের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, টিপিএলএফ বাহিনী আবার রাজধানীতে ঢুকে পড়েছে। ইথিওপিয়া সরকার যে প্রশাসক ও অন্য কর্মকর্তাদের নিয়োগ করেছিল, তারা অনেকেই শহর ছেড়ে পালিয়েছে। টিপিএলএফের মুখপাত্র সংবাদসংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, ''রাজধানী শহর এখন আমাদের দখলে।''
টিগ্রের এই বিদ্রোহীরা নিজেদের টিগ্রে ডিফেন্স ফোর্স(টিডিএফ)-এর সদস্য বলেন। তাদের এক কর্মকর্তা সংবাদসংস্থা এএফপি-কে বলেছেন, তারা শহরে ঢোকার পর সাধারণ মানুষ উচ্ছ্বসিত। তারা রাস্তায় নেচে বাহিনীকে অভিবাদন জানিয়েছেন।
অ্যামেরিকা, যুক্তরাজ্য ও আয়ারল্যান্ড চায় জতিসংঘের নিরাপত্ত পরিষদ টিগ্রে নিয়ে আলোচনা করুক। তবে সেই আলোচনার কোনো তারিখ ঠিক হয়নি। গত ১৫ জুন নিরাপত্তা পরিষদ টিগ্রে নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করছিল। কিন্তু চীনের আপত্তিতে কোনো যৌথ ঘোষণা করা যায়নি।
যুদ্ধ নয়, খাদ্য চাই
ইথিওপিয়ার টিগ্রেতে সাড়ে তিন লাখ মানুষ অনাহারে মৃত্যুর অপেক্ষায়। ৫৫ লাখ মানুষ চরম খাদ্য সংকটে। জাতিসংঘের রিপোর্টে প্রকাশ।
ছবি: Omer Erdem/AA/picture alliance
মন্বন্তর পরিস্থিতি
জাতিসংঘের খাদ্য সংক্রান্ত সংস্থা একটি বিস্তারিত রিপোর্ট পেশ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, টিগ্রের সাড়ে তিন লাখ মানুষ মন্বন্তর পরিস্থিতির মধ্যে আছে। ৫৫ লাখ॥ মানুষ খাদ্য সংকটে ভুগছেন। ২০১০ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে সোমালিয়ায় যে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল, বর্তমান পরিস্থিতি তার চেয়েও ভয়ংকর।
ছবি: AP
খাবার নেই শিশুদের
২০১০ থেকে ২০১২ সালের মন্বন্তরে সোমালিয়ায় মৃত্যু হয়েছিল প্রায় আড়াই লাখ মানুষের। তার মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি ছিল শিশু। টিগ্রের অবস্থা তার চেয়েও খারাপ বলে মনে করা হচ্ছে। শিশুদের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ বলে জানানো হয়েছে রিপোর্টে।
ছবি: Mahmoud Hjaj/AA/picture alliance
জি সেভেনে আর্জি
জাতিসংঘের মানবাধিকার সংগঠনের প্রধান মার্ক লোকক বৃহস্পতিবার একটি উচ্চপর্যায়ের ভারচুয়াল বৈঠক করেন। সেখানে জি সেভেন নেতাদের কাছে তিনি আর্জি জানান, টিগ্রে নিয়ে যেন আলোচনা করেন তারা। অনাহার কমানোর প্রস্তাব নেন।
ছবি: Baz Ratner/REUTERS
অর্থের প্রয়োজন
জাতিসংঘের বক্তব্য, টিগ্রের অবস্থা প্রতিদিন খারাপ হচ্ছে। তবে এখনো পরিস্থিতির পরিবর্তন করা সম্ভব। মানুষের কাছে খাবার এবং ওষুধ পৌঁছে দিতে হবে। কিন্তু তার জন্য বিপুল অর্থের প্রয়োজন। শক্তিশালী দেশগুলি যেন সেই অর্থের ব্যবস্থা করে। নইলে ২০ লাখ মানুষের মৃত্যু হতে পারে।
ছবি: Maria Gerth-Niculescu/DW
খাবার পৌঁছানো যাচ্ছে না
জাতিসংঘ জানিয়েছে, গ্রামের ভিতর এখনো খাবার পৌঁছে দেওয়া যাচ্ছে না। অস্ত্র নিয়ে গ্রামের বাইরে পাহারা দিচ্ছে সন্ত্রাসীরা। তাদের মোকাবিলা করার জন্যও এগিয়ে আসতে হবে শক্তিধর দেশগুলিকে।
ছবি: Minasse Wondimu Hailu/AA/picture alliance
ইথিওপিয়া সরকার এবং টিপিএলএফ
ইথিওপিয়ায় নতুন সরকার গঠনের আগে থেকেই টিগ্রের ক্ষমতা দখল করে রেখেছে টিগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্ট। নতুন সরকারের সঙ্গে তাদের তীব্র লড়াই হচ্ছে। তারই জেরে বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন লক্ষাধিক মানুষ। অনাহারে ভুগছেন লাখ লাখ মানুষ।
ছবি: Minasse Wondimu Hailu/AA/picture alliance
কবে থামবে যুদ্ধ
যুদ্ধ কবে থামবে, কেউ জানে না। পার্শ্বর্তী রাষ্ট্রগুলিও যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে মানুষকে বাঁচাতে হবে, এমনই সংকল্পের কথা বলা হয়েছে জাতিসংঘের রিপোর্টে। তার জন্য সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ছবি: Baz Ratner/REUTERS
7 ছবি1 | 7
যুদ্ধবিরতির ঘোষণা
ইথিওপিয়া সরকার টিগ্রেতে একতরফা যুদ্ধবিরতির কথা ঘোষণা করেছে। অন্তর্বর্তী সরকার এই যুদ্ধবিরতির কথা জানিয়েছে। সেই ঘোষণা কতটা কার্যকর হবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। কারণ, অন্তর্বর্তী সরকারের অনেকেই শহর ছেড়ে পলিয়েছেন। ইথিওপিয়া সরকার জানিয়েছে, এই যুদ্ধবিরতির ফলে কৃষকরা চাষ করতে পারবেন। টিগ্রেতে যারা শান্তি চান, তারাও একটা সুযোগ পাবেন।
সরকার জানিয়েছে, সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই যুদ্ধবিরতি চলবে। তবে টিপিএলএফ বা টিডিএফ যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।