শনিবার ইথিওপিয়ায় টিগ্রের রাজধানী দখল করেছে সেনা। তারপর প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছেন। তবে লড়াই এখনো থামেনি।
ছবি: Ashraf Shazly/AFP/Getty Images
বিজ্ঞাপন
টিগ্রে লিবারেশন পিপলস ফ্রন্টের হাত থেকে টিগ্রের রাজধানী দখল করেছে ইথিওপিয়ার সেনা, দাবি দেশের সরকারের। তবে টিপিএলএফ হার মানতে রাজি নয়। তারা জানিয়ে দিয়েছে, লড়াই চলবে। এমনকী তারা দাবি করেছে, বিমান বাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান তারা ধ্বংস করেছে। সেনার হাত থেকে অন্য একটি শহর দখল করে নিয়েছে। অবশ্য টিগ্রের রাজধানী দখল করার পরেই প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধবিরতির কথা জানিয়ে দিয়েছেন। দুই পক্ষের এই দাবি যাচাই করার কোনো উপায় নেই। ফোন ও ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ। টিগ্রেতে কাউকে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। ফলে সেখানকার পরিস্থিতি ঠিক কী, তা জানার উপায় নেই।
জাতিসংঘের উদ্বাস্তু বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচআরসি সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে, তাদের যেন অবিলম্বে টিগ্রের রাজধানীতে ঢুকতে দেয়া হয়। তারা সেখানে সাধারণ মানুষকে সাহায্য করতে চায়। ইতিমধ্যেই টিগ্রে ছেড়ে হাজার হাজার মানুষ সুদানে আশ্রয় নিয়েছেন। সুদানের রাজধানী খার্তুমে জাতিসংঘের উদ্বাস্তু বিষয়ক হাই কমিশনার ফিলিপো গ্র্যান্ডি বলেছেন, ''আমরা এখনো যেতে পারছি না। আশা করছি, দিন কয়েকের মধ্যে আমরা ঢুকতে পারব। ইথিওপিয়ার সরকার যুদ্ধবিরতির কথা ঘোষণা করেছেন। তার মানে এই নয় যে, সংঘর্ষ থেমে যাবে।''
টিপিএলএফও একই দাবি করেছে। তারা জানিয়ে দিয়েছে, লড়াই চলছে। অন্য একটি শহর তরা দখলও করে নিয়েছে। এই সংঘাত চলবে বলেও তারা জানিয়েছে।
ইথিওপিয়ায় গৃহযুদ্ধ, পালাচ্ছেন টিগ্রের বাসিন্দারা
ইথিওপিয়ায় গৃহযুদ্ধ থেকে বাঁচতে দেশটির টিগ্রে অঞ্চল ছেড়ে পালাচ্ছেন সেখানকার বাসিন্দারা৷ অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন সুদান-ইথিওপিয়া সীমান্তে৷
ছবি: Mohamed Nureldin Abdallah/REUTERS
উম-রাকোবা শিবিরে শরণার্থীদের ভিড়
ইথিওপিয়ার টিগ্রে অঞ্চলে চলমান লড়াই থেকে বাঁচতে দেশটির সঙ্গে সুদানের সীমান্তে আশ্রয় নিয়েছেন অনেক শরণার্থী৷ গতকাল তোলা ছবিতে এক মাকে তার সন্তানদেরসহ দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Mohamed Nureldin Abdallah/REUTERS
সক্রিয় ইউএনএইচসিআর
ইথিওপীয় শরণার্থীদের বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করছেন জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর এক সদস্য৷ টিগ্রেতে গত তিন সপ্তাহ ধরে ইথিওপিয়ার সেনাবাহিনীর সঙ্গে টিগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্টের (টিপিএলএফ) লড়াই চলছে৷ টিপিএলএফ কার্যত ১৯৯১ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত ইথিওপিয়া শাসন করেছিল৷ তবে, ২০১৮ সালে আবি আহমেদ প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর পরিস্থিতি বদলে যায়৷
ছবি: Mohamed Nureldin Abdallah/REUTERS
সেটিট নদী পার হয়ে শিবিরে
টিগ্রে থেকে পালিয়ে আসা ইথিওপীয়রা সেটিট নদী পার হওয়ার পর নৌকা থেকে নিজেদের মালামাল তুলে নিচ্ছেন৷ টিগ্রেতে সংঘাত শুরুর পর অন্তত চল্লিশ হাজার মানুষ এলাকা ছাড়া হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ৷
ছবি: Mohamed Nureldin Abdallah/REUTERS
নারী ও শিশুদের ভোগান্তি চরমে
দুই পক্ষের সংঘাতে নারী ও শিশুদের ভোগান্তিও চরমে পৌঁছেছে৷ জাতিসংঘ সেখানে আন্তর্জাতিক আইনে লঙ্ঘন ঘটছে বলে সতর্ক করেছে৷
ছবি: Mohamed Nureldin Abdallah/REUTERS
বাসে করে শরণার্থীদের পরিবহন
টিগ্রে থেকে পালানো ইথিওপীয়দের একটি বাসে করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে৷ সংঘর্ষরত দুই পক্ষের মধ্যে শিগগিরই শান্তি ফেরার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না৷
ছবি: Mohamed Nureldin Abdallah/REUTERS
শান্তিতে নোবেল, দেশে অশান্তি
ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ গতবছর শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন৷ ইরিত্রিয়ার সঙ্গে দীর্ঘদিনের বৈরি সম্পর্কের অবসান ঘটিয়ে শান্তি স্থাপনে সক্ষম হওয়ায় তাকে এই পুরস্কার দেয়া হয়৷ তবে, দেশটির বর্তমান অশান্তি পরিস্থিতি নিরসনে তিনি যথার্থ ভূমিকা রাখতে পারছেন না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা৷
ছবি: Michel Euler/REUTERS
6 ছবি1 | 6
গত ৪ নভেম্বর থেকে সেনার সঙ্গে টিপিএলএফের লড়াই চলছে। এই লড়াইয়ের ফলে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। রেড ক্রস জানিয়েছে, টিগ্রের হাসপাতালগুলির অবস্থা খুবই খারাপ। সেখানে প্রয়োজনীয় জিনিসের যোগান নেই। গ্লাভস পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে না। হাসপাতালে যা ছিল, তা দ্রুত ফুরিয়ে আসছে। তার উপর হাসপাতালে স্রোতের মতো আহতরা আসছেন। ফলে বাকি পরিষেবা বাতিল করতে হয়েছে। শুধু গুরুতর আহতদের চিকিৎসা চলছে।
অন্তত ৪৪ হাজার মানুষ টিগ্রে ছেড়়ে সুদানে গেছেন। ইউএনএইচআরসি জানিয়েছে, তাদের কাছে খাবার পৌঁছে দেয়াও বড় চ্যালেঞ্জ।