শাহবাগের প্রজন্ম চত্বরে আন্দোলনের সূচনায় সহায়তা করেছে ফেসবুক৷ তবে এখন ফেসবুকের পাশাপাশি টুইটারেও সরব আন্দোলনকারীরা৷ উদ্দেশ্য নিজেদের আন্দোলন সম্পর্কে সঠিক তথ্যটি বিদেশিদের কাছে পৌঁছে দেওয়া৷
বিজ্ঞাপন
একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচার বাংলাদেশে হলেও আন্তর্জাতিকভাবে বিষয়টি নিয়ে নানাবিধ আলোচনা চলছে৷ এমনকি শাহবাগের আন্দোলনকারীরা বলছেন, কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে তাদের অবস্থান কর্মসূচিকে ভিন্নভাবে প্রচারের চেষ্টা করছে কিছু আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম৷ সেই চেষ্টা রুখতে শাহবাগের প্রজন্ম চত্বরের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সোচ্চার বর্তমান প্রজন্মের মুক্তি সেনারা৷ টুইটারে তাদের হ্যাশট্যাগ #shahbag৷
‘প্রজন্ম চত্বরে’ জনসমুদ্র
কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছে বাংলাদেশের অসংখ্য মানুষ৷ তার ফাঁসির দাবিতে ঢাকার শাহবাগে ব্লগারদের সমবাশ সব মানুষের সমাবেশে পরিণত হয়েছে৷
ছবি: STR/AFP/Getty Images
তরুণ প্রজন্মের প্রতিবাদ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী লাকি আক্তার শাহবাগে কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে অত্যন্ত সোচ্চার৷ অন্যান্যদের সঙ্গে নিয়ে প্রজন্ম চত্বর মাতিয়ে রেখেছেন তিনি৷ আন্দোলন শুরুর পর থেকেই লাকি অবস্থান করছেন সেখানে৷
ছবি: Reuters
মানুষের ক্ষোভের প্রতীক
সবার কণ্ঠেই একই সুর৷ তাঁরা আদালতের রায় মেনে নিতে পারছেন না৷ নানা শ্রেণি, পেশা আর বয়সের মানুষ শাহবাগে একাত্ম হচ্ছেন৷ তাঁদের দাবি সব যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি৷
ছবি: Getty Images
ব্লগারদের উদ্যোগ
শাহবাগ চত্বরে প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দেয় বাংলাদেশের ব্লগার অ্যান্ড অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট নেটওয়ার্ক৷ সাড়া দেখে তাঁরা নিজেরাই অভিভূত, অনুপ্রাণিত৷
ছবি: picture alliance/ZUMA Press
নিরলস প্রতিবাদ
সবার মুখে একটিই কথা – কাদের মোল্লার ফাঁসি ছাড়া ঘরে ফিরবেন না, মাঠে থাকবেন যতদিন প্রয়োজন ততদিন৷ রাতের অন্ধকারেও তাদের কণ্ঠ উজ্জ্বল রয়েছে৷
ছবি: STR/AFP/Getty Images
শাহবাগ থেকে প্রেরণা
শাহবাগের প্রতিবাদকারীদের ছবি অনেককেই অনুপ্রেরণা জাগাচ্ছে৷ এই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল, রংপুর সহ সব বিভাগ ও জেলা শহরে৷ সেখানেও নেমেছে মানুষের ঢল৷
ছবি: STR/AFP/Getty Images
প্রতিবাদের পরিণতি
শুক্রবার শাহবাগে হয়েছে মহাসমাবেশ৷ হাজারো তরুণের ভিড় সেখানে৷ তাঁদের অবস্থান চলতেই থাকবে৷ এদিকে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, জামায়াতকে কিভাবে নিষিদ্ধ করা যায় তা নিয়ে কাজ শুরু করেছে সরকার৷
ছবি: Getty Images
নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না
প্রচলিত সংবাদ মাধ্যমের পরিবেশিত তথ্য দিয়ে এখন আর সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না৷ ব্যক্তি নিজেই এখন তথ্য পরিবেশন করতে পারেন৷ কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সহায়তায় ব্লগাররা তাই প্রমাণ করল৷
ছবি: Reuters
ওয়াই-ফাই
শাহবাগের ‘প্রজন্ম চত্বরে’ ওয়াইফাই নেটওয়ার্কের ব্যবস্থাও করা হয়েছে৷ প্রতিবাদকারীরা অনলাইনে তাদের কর্মসূচি সম্পর্কে যাতে আরো জানাতে পারেন, সেজন্য এই ব্যবস্থা৷ টুইটারে এই আন্দোলন সম্পর্কে #shahbag হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করা হচ্ছে৷
ছবি: REUTERS
রাজনৈতিক আন্দোলন নয়
শাহবাগের আন্দোলনকে কিছুতেই রাজনীতিকরণ করতে দেবে না প্রতিবাদকারীরা৷ গত কয়েকদিনে রাজনীতিবিদরা সেখানে গিয়ে বিশেষ সুবিধা করতে পারেননি৷ অবস্থানকারীরা তাদের বক্তব্য শুনতে রাজি নন৷
ছবি: Getty Images
প্রতিবাদ কতদিন?
দাবি আদায় না করে শাহবাগ ছাড়তে রাজি নন প্রতিবাদকারীরা৷ ব্লগার অ্যান্ড অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট নেটওয়ার্কের ফেসবুক ইভেন্টে মেয়াদ রয়েছে ২৬ মার্চ অবধি৷ তবে পুরো বিষয়টি নির্ভর করছে প্রতিবাদকারীদের উপর৷ তাঁদের নিয়ন্ত্রক তাঁরা নিজেরাই৷
ছবি: Reuters
10 ছবি1 | 10
ডয়চে ভেলের টুইটার পাতাতে আন্দোলনকারীদের কিছু বার্তা আমরা পেয়েছি৷ জিন্নাত গোনিম নামক ঢাকার এক বাসিন্দা টুইটারে একটি পোস্টার শেয়ার করেছেন৷ সেখানে তিনি ডয়চে ভেলেসহ এএফপি, এপি, আল-জাজিরা, বিবিসিকে উল্লেখ করে জানিয়েছেন, ‘‘আমরা কোনো রাজনৈতিক দল, ধর্ম বা জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধি নই৷ আমরা বাংলাদেশি৷ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাচ্ছি, আমার মায়ের হত্যাকারীর, বোনের ধর্ষকের বিচার চাচ্ছি৷ আমাদের আপনার সহায়তা প্রয়োজন৷''
শাহবাগের আন্দোলন সম্পর্কিত এই পোস্টার দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ছে টুইটার এবং ফেসবুকে৷ এখানে বলা প্রয়োজন, সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলোতে আসা বিভিন্ন বার্তার প্রতি নিয়মিত খেয়াল রাখে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো৷ ডয়চে ভেলের অভিজ্ঞতার আলোকেই বলা যায় সেকথা৷ ফলে আন্দোলনকারীদের পরিষ্কার এই বার্তা অন্যান্য আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের কাছেও যে দ্রুত পৌঁছে যাবে, সেটা অনায়াসেই বলা যায়৷
ফেসবুক, টুইটার ছাড়াও বিভিন্ন কমিউনিটি বাংলা ব্লগেও যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে একের পর এক নিবন্ধ প্রকাশ করা হচ্ছে৷ সামহয়্যার ইন ব্লগের দৃষ্টি আকর্ষণ বক্সে শোভা পাচ্ছে ‘রাজাকারের ফাঁসির দাবিতে গর্জে উঠেছে বাংলাদেশ: চল চল শাহবাগ চল' শিরোনামের নিবন্ধটি৷ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম ব্লগ জানাচ্ছে আলোকদি গ্রামে কসাই মোল্লার ‘প্রতীকী ফাঁসির' কথা৷ এভাবে বিকল্প মাধ্যম হিসেবে পরিচিত ফেসবুক, টুইটার, ব্লগ এগিয়ে নিচ্ছে এই প্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধাদের আন্দোলন৷
সর্বশেষ যে খবর তাতে, শুক্রবার মহাসমাবেশের পর শনিবারও আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে শাহবাগের ‘প্রজন্ম চত্বরে'৷ পাঁচ ফেব্রুয়ারি বিকেলে দখল করে নেওয়া শাহবাগ চত্বর এক মুহূর্তের জন্য হাতছাড়া করেননি আন্দোলনকারীরা৷ বরং ক্রমশ বাড়ছে এই আন্দোলনের পরিধি৷ ঢাকার আন্দোলনকারীদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা কাদের মোল্লার ফাঁসি দাবি করছে৷ শুধু কাদের মোল্লা নয়, সকল যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি চায় তারা৷