সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে সাউথওয়েস্ট এয়ারলাইনের এক বিমান থেকে টেনেহিঁচড়ে এক নারী যাত্রীকে নামানোর ঘটনা ঘটেছে৷ অন্য যাত্রীদের করা সেই ভিডিও সাথে সাথেই ভাইরাল হয়ে যায়৷ পরে অবশ্য বিমান কতৃপক্ষ সেই যাত্রীর কাছে ক্ষমা চেয়েছে৷
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার বাল্টিমোর থেকে লসএঞ্জেলেসে যাচ্ছিলেন এক যাত্রী৷ ফ্লাইটে অনেকেরই পোষা প্রাণী ছিল৷ আর প্রাণীতেই তাঁর মারাত্মক অ্যালার্জির সমস্যা৷ ফ্লাইট কর্মকর্তাদের সেটি জানালে তাঁরা উল্টো বলেন, এমন কোনো মেডিকেল সার্টিফিকেট তো তিনি আগে দেননি৷ কাজেই তাঁকে প্লেন ছাড়তে হবে৷
এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে ডাকা হয়৷
ভিডিওটিতে দেখা যায়, আইন শৃংখলাবাহিনীর কযেকজন সদস্য সেই নারীকে রীতিমতো টেনেহিঁটড়ে সিট থেকে তুলে বের করে আনছেন৷ এ সময় বার বার তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমাকে স্পর্শ করবে না৷ আমি হেঁটে যেতে পারব৷’’
তারপরও তাঁকে টানতে থাকে পুলিশ সদস্যরা৷ তাঁকে না ছেড়েই ব্যঙ্গ করে পাল্টা বলে, ‘‘ঠিক আছে, তাহলে হাঁটো৷’’
এক পর্যায়ে সেই যাত্রী চিৎকার করে বলেন, ‘‘আমি একজন প্রফেসর, কী করছো আমার সাথে!’’
এই ঘটনার জন্য পরে ক্ষমা চেয়েছে সাউথওয়েস্ট এয়ারলাইন৷ কর্তৃপক্ষ বলেছে, ‘‘স্থানীয় আইন শৃংখলাবাহিনীর সদস্যরা ওই যাত্রীকে টেনে নামিয়েছে৷ এই ঘটনায় আমরা ভীষণভাবে মর্মাহত হয়েছি৷ আমরা এর জন্য ক্ষমাপ্রার্থী্৷ আমরা সরাসরি সেই প্রফেসরের সঙ্গেও যোগাযোগ করব৷’’
এই ঘটনায় ফ্লাইট থেকে হিংস্রভাবে নামানোর আরও কিছু উদাহরণ মনে পড়ে যায়৷ এপ্রিলে ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স থেকে এক যাত্রীকে নামানোর সময় তো তার মুখ রক্তাক্ত অবস্থায় ছিল৷ পরের মাসেই ডেল্টার এক ফ্লাইটে ক্যালিফোর্নিয়ার এক পরিবারকে সিট ছাড়তে রীতিমতো বুট দিয়ে আঘাত করা হয়৷
এএম/এসি
গোটাবিশ্বে যাত্রীবাহী বিমান বাড়ছে
বিশ্বব্যাপী যাত্রীবাহী বিমানের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে৷ শুধু ২০১৬ সালে এই বৃদ্ধি আগের তুলনায় ৬ দশমিক তিন শতাংশ বেশি৷ তবে এই বৃদ্ধির সুফল সবাই পাচ্ছে না, অন্তত সমানভাবে তো নয়ই৷ আর বড় আয় হচ্ছে অন্য কোথাও৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/M. Meissner
জনাকীর্ণ আকাশ
আরো যাত্রী মানে আরো বিমান৷ ২০৩৫ সাল নাগাদ এশিয়ায় যাত্রীবাহী বিমানের সংখ্যা দ্বিগুন বেড়ে ১৭,০০০ হবে৷ উত্তর আমেরিকায় এই সংখ্যা হবে ৯,৮০০ এবং ইউরোপে ৭,৯০০৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Becker
বৈমানিকদের চাহিদা বাড়ছে
আরো বিমান মানে আরো বৈমানিক দরকার৷ বোয়িংয়ের হিসেব অনুযায়ী, ২০৩৫ সাল নাগাদ অন্তত ৬১৭,০০০ নতুন বৈমানিক দরকার হবে, বিশেষ করে এশিয়ায়৷ মোটের উপর, ৬৭৯,০০০ নতুন রক্ষণাবেক্ষণকর্মী এবং ৮১৪,০০০ জন বাড়তি ফ্লাইট অ্যাসিস্ট্যান্টের দরকার হবে৷
ছবি: AFP/Getty Images/G. Bouys
সবচেয়ে বড় হাব
বিমানযাত্রীর সংখ্যা বিচারে ইউরোপের সবচেয়ে বড় হাবগুলো হচ্ছে লন্ডনের হিথ্রো, প্যারিসের শার্ল দ্য গল এবং জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বিমানবন্দর৷ ২০১৪ সালে ফ্রাঙ্কফুর্ট বিমানবন্দর থেকে দুই মিলিয়ন টন কার্গো পরিবহণ করা হয়েছে৷ পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বিমানবন্দরের অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টায়, সেখানে ২০১৫ সালে ১০০ মিলিয়ন বিমানযাত্রী ছিল৷
ছবি: picture alliance/dpa/F. Rumpenhorst
বাজেট এয়ারলাইন্সগুলো রক্ষা করছে
জার্মানির বিমান শিল্পে বৃদ্ধি অবশ্য জার্মান বিমানসংস্থাগুলোর কারণে খুব একটা হয়নি৷ বরং বিদেশি বিভিন্ন বিমানসংস্থার অবদান এতে বেশি৷ জার্মানির বিমানসংস্থাগুলোর দূরপাল্লার উড়ালের সংখ্যা গত ছয় বছর ধরে ধারবাহিকভাবে কমছে৷ অন্যদিকে, অতিরিক্ত সুবিধাহীন বাজেট এয়ারলাইন্সগুলোর, যেমন রাইনএয়ার এবং ইজিজেট, উড়ালের সংখ্যা ১৪ শতাংশ বেড়েছে৷
ছবি: AFP/Getty Images
ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ধর্মঘট কর্মসূচি
জার্মান পতাকাবাহী বিমানসংস্থা লুফৎহানসা গত বছর এক দশমিক আট বিলিয়ন ইউরো মুনাফা করতে সক্ষম হয়, যা আগের বছরের তুলনায় বেশি, যদিও বিমান সংস্থাটিকে একের পর এক ধর্মঘটের মুখোমুখি হতে হয়েছে৷ পাইলটদের ইউনিয়নের ধর্মঘটের কারণে লুফৎহানসার ২০১৪ সাল থেকে প্রায় আধা বিলিয়ন ইউরোর আর্থিক ক্ষতি হয়েছে৷ ইতোমধ্যে, অবশ্য ম্যানেজমেন্ট এবং পাইলটদের মধ্যে একটি সমঝোতা হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/R. Jensen
সবচেয়ে বেশি আয় যাদের
এভিয়েশন সামগ্রিকভাবে একটি লাভজনক ব্যবসা৷ তবে কিছু সংস্থা অন্যদের চেয়ে বেশ এগিয়ে৷ যদিও বিমান সংস্থাগুলো সাধারণত বিনিয়োগকৃত মূলধনের চার শতাংশ মুনাফা করতে পারে৷ জার্মানির বিমান বন্দর অপারেটর এবং বিমান উৎপাদনকারী সংস্থাগুলোর ক্ষেত্রে লাভের পরিমান ৬ থেকে ৭ শতাংশ৷ এছাড়া এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল এবং বুকিং সেবাদাতাদের লাভের পরিমাণ বিশ শতাংশ পর্যন্ত হয়ে থাকে৷
ছবি: picture-alliance/ dpa
আমাদের জন্য কী আছে?
ক্লান্ত যাত্রীদের জন্য বিছানা, মাসাজ, পায়ের কাছে বেশি জায়গা, চাইল্ডকেয়ার সেবা এবং বারসহ গোসলের ব্যবস্থা৷ হ্যাঁ, বিমানে এসব কিছুই অদূর ভবিষ্যতে পাবেন সাধারণ যাত্রীরা৷