টেস্ট সিরিজে পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করলো বাংলাদেশ
রাহেনুর ইসলাম
৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
পাকিস্তানের বিপক্ষে রাওয়ালপিন্ডিতে বাংলাদেশ দ্বিতীয় টেস্ট জিতল ৬ উইকেটে৷ ১৮৫ রানের লক্ষ্যটা নাজমুল হোসেনের দল পেরিয়ে যায় লাঞ্চের পর৷ তাতে ২-০ ব্যবধানে পাকিস্তানকে প্রথমবার টেস্টে হোয়াইটওয়াশ করলো বাংলাদেশ৷
বিজ্ঞাপন
‘বাবুরাম সাপুড়ে কোথা যাস বাপুরে' সুকুমার রায়ের কবিতা ডিজে গান হয়ে বাজছিল রাওয়ালপিন্ডির গ্যালারিতে৷ ওভারের বিরতিতে কখনও ভেসে আসছিল ‘শাবাশ বাংলাদেশ' গানের সুর৷
বিদেশের মাটিতে এভাবে টেস্টের ফাঁকে বাংলা গান অপ্রত্যাশিত রীতিমতো৷ তেমনি অপ্রত্যাশিত ছিল পাকিস্তানের মাটিতে বাংলাদেশের মাথা উঁচু করা পারফর্ম্যান্স৷ কারণ, এই সিরিজের আগে পাকিস্তানে খেলা ২০টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে জয়ের দেখা পায়নি বাংলাদেশ৷ আর পাকিস্তানের বিপক্ষে এই সিরিজের আগে টেস্টের ফল ছিল ০-১২!
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বাংলাদেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর টেস্টেও বিপ্লব হলো রীতিমতো৷ রাওয়ালপিন্ডিতে প্রথম টেস্টে ১০ উইকেটে পাকিস্তানকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ৷ সেই জয়টা বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছিল না৷ একই ভেন্যুতে বৃষ্টিতে চার দিনে নেমে আসা ম্যাচে আজ (মঙ্গলবার) দ্বিতীয় টেস্টেও দাপটে ৬ উইকেটে জিতে সেটা প্রমাণ করল নাজমুল হোসেনের দল৷
বাংলাদেশের কাছে পাকিস্তান হোয়াইটওয়াশ হলো ২-০তে৷ ২০২২ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নিজেদের মাটিতে প্রথমবার ৩-০তে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল পাকিস্তান৷ দেশের মাটিতে সেবারই প্রথম হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল তারা৷ দুই বছর না যেতে বাংলাদেশ সেই লজ্জা দিল দ্বিতীয়বার৷
নিজেদের ২৪ বছরের টেস্ট ইতিহাসে বাংলাদেশ এর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দুইবার ও জিম্বাবুয়েকে একবার হোয়াইটওয়াশ করেছে৷ এই তালিকায় এবার যোগ হলো পাকিস্তানের নাম৷ ২০০৯ সালে জয়টা ছিল দ্বিতীয় সারির ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে আর এবারের সাফল্য সময়ের অন্যতম সেরা দলের সঙ্গে৷
বাংলাদেশের দাপট এতটাই ছিল যে পেসার মির হামজা, খুররম শেহজাদরা নন বেশি ভয় ছিল বৃষ্টি আর কালো মেঘ নিয়ে৷ অথচ একটা সময় টেস্ট বাঁচাতে বৃষ্টির প্রার্থনাই করতেন বাংলাদেশি সমর্থকরা! রাওয়ালপিন্ডিতে শেষ দিন সকালে বজ্রসহ বৃষ্টির শঙ্কা থাকলেও শেষ পর্যন্ত সূর্য হেসেছে সকাল থেকে৷ সেই হাসি ছড়িয়ে পড়েছে বাংলাদেশিদের ব্যাটেও৷
২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের ব্যাটিং গড় ছিল ৩২.৫৫, যা এই সময়ে যেকোনো টেস্ট খেলুড়ে দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ৷ তাই জয়ের পাল্লাটা ঝুঁকে ছিল বাংলাদেশের দিকেই৷ পাকিস্তানি বোলাররা পারেননি অঙ্কটা বদলে দিতে৷
চতুর্থ দিন শেষে দুই ওপেনার জাকির হাসান ও সাদমান ইসলাম অপরাজিত ছিলেন ৪২ রানে৷ শেষ দিন দরকার ছিল ১৪৩ রান৷ মঙ্গলবার দিনের শুরুতেই ভারতীয় তারকা স্পিনার রবীচন্দ্রন অশ্বিন ‘এক্স’-এ লিখেন, ‘‘বাংলাদেশ এগিয়ে আছে তবে পাকিস্তানও নিজেদের দিকে আনতে পারে ম্যাচটা৷’’ সেটা আর হয়নি শেষ পর্যন্ত৷
দশম ওভারে মোহাম্মদ আলীর বলে জাকির হাসানের ব্যাটের নিচের অংশ ছুঁয়ে গিয়েছিল উইকেটরক্ষক সরফরাজ আহমেদের গ্লাভসে৷ বিস্ময়করভাবে পাকিস্তান আউটের আপিলই করেনি, আম্পায়ারও আউট দেননি৷
‘জীবন’ কাজে লাগিয়ে ইনিংসটা বড় করতে পারেননি জাকির৷ ৩৯ বলে ৪০ রান করা জাকিরকে বোল্ড করেন মির হামজা৷ গুড লেংথে পড়ে হালকা মুভমেন্টে বেরিয়ে যাওয়া বলটির লাইন মিস করে বোল্ড হন বাংলাদেশের এই ওপেনার৷
স্লিপে অপর ওপেনার সাদমান ইসলামের ক্যাচ ছেড়েছিলেন সালমান আগা৷ সাদমানও জীবন কাজে লাগাতে পারেননি৷ খুররম শেহজাদের করা পরের ওভারেই ফোর্থ স্টাম্পের হাফভলিতে ড্রাইভ খেলতে গিয়ে মিড অনে ক্যাচ দেন শান মাসুদকে (২৪ রান)৷
সিরিজ জুড়ে বিবর্ণ থাকা অধিনায়ক নাজমুল হোসেন এরপর মুমিনুল হকের সঙ্গে জুটি গড়ে জয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান বাংলাদেশকে৷ লাঞ্চ পর্যন্ত তৃতীয় উইকেটে দুজন গড়েন ৫২ রানের জুটি, বাংলাদেশের স্কোর ছিল ২ উইকেটে ১২২৷ জয়ের জন্য বাকি তখন ৬৩ রান৷
লক্ষ্য অল্প হলেও এই টেস্ট যেভাবে বারবার রং বদলেছে তাতে নিশ্চিত ছিল না কিছুই৷ প্রথম ইনিংসে ১ উইকেটে ১০৭ থেকে পাকিস্তান অলআউট হয়ে গিয়েছিল ২৭৪ রানে৷ মেহেদী হাসান মিরাজ নিয়েছিলেন ৫ উইকেট৷ জবাবে বাংলাদেশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল ২৬ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে৷
সেখান থেকে ফিনিক্স পাখির মতোই বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়ায় লিটন দাস ও মেহেদী হাসান মিরাজের সপ্তম উইকেটে ১৬৫ রানের জুটিতে৷ ৩০ রানের কমে ৬ উইকেট হারানোর পর টেস্ট ইতিহাসেই সপ্তম উইকেটে এই জুটিটা সর্বোচ্চ৷ লিটন দাস ১৩৮ আর মেহেদী হাসান খেলেন ৭৮ রানের ইনিংস৷ দলের স্কোর পঞ্চাশের কম থাকার সময় ব্যাটিং অর্ডারে পাঁচের নিচে নেমে লিটন করেছেন ক্যারিয়ারে তৃতীয় সেঞ্চুরি, টেস্ট ইতিহাসেই এমন কীর্তি গড়া প্রথম ব্যাটার তিনি৷
শোয়েব আখতারের শহর রাওয়ালপিন্ডিতে দ্বিতীয় ইনিংসে দাপট দেখান বাংলাদেশের পেসারা৷ ১০ উইকেটই নেন তিন পেসার হাসান মাহমুদ (৫ উইকেট), নাহিদ রানা (৪ উইকেট) ও তাসকিন আহমেদ (১ উইকেট)৷ টেস্টে এবারই প্রথম কোনো ইনিংসে ১০ উইকেটই নিয়েছেন বাংলাদেশের পেসাররা৷ নাহিদ রানা চতুর্থ দিন ঘণ্টায় একটি বল করেছিলেন ১৫২ কিলোমিটার গতিতে, যা বাংলাদেশি পেসারদের মধ্যে টেস্ট ইতিহাসেই সর্বোচ্চ৷
পেসারদের এমন দাপটের পর দায়িত্ব নিতে হতো ব্যাটসম্যানদের৷ দুই ওপেনারের বিদায়ের পর সেই দায়িত্বটা নেন তারা৷ নাজমুল হোসেন ও মুমিনুল হক তৃতীয় উইকেটে গড়েন ৫৭ রানের জুটি৷ লাঞ্চের পরই পার্টটাইম স্পিনার সালমান আগার বলে ৩৮ রানে ফেরেন নাজমুল হোসেন৷ একটু আগে শট খেলে শর্ট লেগে আব্দুল্লাহ শফিককে ক্যাচ দেন বাংলাদেশি অধিনায়ক৷
চতুর্থ দিন বাংলাদেশের হয়ে ফিল্ডিংয়ে নামেননি মুশফিকুর রহিম৷ তাঁর জায়গায় ফিল্ডিং করেছিলেন নাঈম হাসান৷ দ্বিতীয় দিনে কাঁধে আঘাত পাওয়া মুশফিক স্বাচ্ছন্দ্যই ছিলেন ব্যাট হাতে৷ আবরার আহমেদ টানা দুই বলে দুটি রিভিউ নিলেও দুবারই বল ব্যাটে লেগেছিল মুশফিকের৷
মুমিনুল হককে নিয়ে বাকি পথটা পাড়ি দিতে চেয়েছিলেন মুশফিক৷ কিন্তু জুটিটা ভাঙে ২৬ রানে৷ আবিরার আহমেদের বল মিড অনে থাকা ফিল্ডারের মাথার ওপর দিয়ে তুলে মারতে গিয়ে ৩৪ রান করা মুমিনুল ক্যাচ দেন সাইম আইয়ুবকে৷
বাকি পথটুকু সাকিব আল হাসানকে নিয়ে পাড়ি দেন মুশফিক৷ সাকিব ২১ ও মুশফিক অপরাজিত থাকেন ২২ রানে৷ আবরার আহমেদের বল কাভার দিয়ে বাউন্ডারিতে পাঠিয়ে জয় নিশ্চিত করেন সাকিব৷ তাতে বাংলাদেশ পায় পাকিস্তানের মাটিতে ঐতিহাসিক সিরিজ জয়৷
সংক্ষিপ্ত স্কোর
পাকিস্তান : ২৭৪ ও দ্বিতীয় ইনিংস ৪৬.৪ ওভারে ১৭২/১০ (সালমান ৪৭, রিজওয়ান ৪৩, মাসুদ ২৮; হাসান ৫/৪৩, নাহিদ ৪/৪৪)৷
বাংলাদেশ : ২৬২ ও দ্বিতীয় ইনিংস ৫৬ ওভারে ১৮৫/৪ (জাকির ৪০, নাজমুল ৩৮, মুমিনুল ৩৪; আবরার ১/৪০, হামজা ১/৪৬)৷
ফল : বাংলাদেশ ৬ উইকেটে জয়ী
সিরিজ : বাংলাদেশ ২-০তে জয়ী
ম্যান অফ দ্য ম্যাচ: লিটন দাস
ম্যান অফ দ্য সিরিজ: মেহেদী হাসান মিরাজ
যেসব টেস্ট জিতেছে বাংলাদেশ
সেই ২০০০ সালে টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ১৪৩ টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছে টাইগাররা৷ তার মধ্যে জয় এসেছে ২১টিতে৷ চলুন জেনে নিই সেই টেস্টগুলোর কথা৷
ছবি: Anjum Naveed/AP/picture alliance
আগস্ট ৩০-সেপ্টেম্বর ০৩, প্রতিপক্ষ পাকিস্তান: বাংলাদেশ ৬ উইকেটে জয়ী
পরপর ২ টেস্ট পাকিস্তানকে নিজেদের মাটিতে হোয়াইট ওয়াশ করেছে বাংলাদেশ৷ রাওয়ালপিন্ডিতে বাবর আজমদের দুই ইনিংসে ২৭৪ ও ১৭২ রানে অলআউট করে ৬ উইকেটের জয় তুলে নেন শান্তরা৷ লিটনের সেঞ্চুরি, মিরাজের অর্ধশতক ও ৫ উইকেট, হাসান মাহমুদের ৫ উইকেট এই জয়ে বড় ভূমিকা রাখে৷ এর মধ্য দিয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথমবারের মধ্য সিরিজ জয় পায় বাংলাদেশ৷
ছবি: Anjum Naveed/AP Photo/picture alliance
আগস্ট ২১-২৫, ২০২৪, প্রতিপক্ষ পাকিস্তান
টেস্টে বাংলাদেশের প্রথম ১০ উইকেটের জয়। এর আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৩ টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। ১৪তম টেস্টে ঐতিহাসিক জয়। টেস্টে নবম দল হিসেবে পাকিস্তানকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। বাকি থাকলো শুধু ভারত ও সাউথ আফ্রিকা। দেশের বাইরে বাংলাদেশের এটা সপ্তম জয়। ৬ উইকেটে ৪৪৮ রান তুলে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে পাকিস্তান। জবাবে বাংলাদেশ তাদের প্রথম ইনিংসে ৫৬৫ রানের বড় সংগ্রহ তোলে। পাকিস্তানের ২য় ইনিংস গুটিয়ে যায় ১৪৬ রানে।
ছবি: Farooq Naeem/AFP/Getty Images
২৮ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর, ২০২৩, প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড
সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১৫০ রানের বিশাল এক জয় পায় অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর দল। বাংলাদেশের হয়ে ৬ উইকেট নেন তাইজুল। নিউজিল্যান্ড : ৩১৭ ও ১৮১, বাংলাদেশ:৩১০ ও ৩৩৮৷
ছবি: Munir uz Zaman/AFP
জুন ১৪-১৮ (২০২৩), প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান
মিরপুরে ইতিহাস গড়ে বাংলাদেশ৷ ৫৪৬ রানের বিশাল ব্যবধানে ম্যাচ জেতে বাংলাদেশ, যা টেস্ট ইতিহাসে সর্বোচ্চ রানের ব্যবধানে জয়ের তিন নম্বরে আছে। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ ৩৮২ রানে অল-আউট হয়। পালটা ব্যাট করতে নেমে আফগানিস্তান ১৪৬ রান তুলেছিল। দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেটে ৪২৫ রান তুলে ব্যাটিং ছেড়ে দেয় বাংলাদেশ। শেষ ইনিংসে আফগানিস্তান অল-আউট হয় ১১৫ রানে।
ছবি: Munir uz Zaman/AFP
এপ্রিল ৩-৭ (২০২৩), প্রতিপক্ষ আয়ারল্যান্ড
মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টে ৭ উইকেটের জয় পায় টাইগাররা৷ আয়ারল্যান্ড ১ম ইনিংসে ২১৪ এবং ২য় ইনিংসে ২৯২ করে৷ বাংলাদেশ ১ম ইনিংসে ৩৬৯ এবং ২য় ইনিংসে ৩ উইকেটে ১৩৮ রান করে ৭ উইকেটের জয় পায়৷
ছবি: Farooq Naeem/AFP/Getty Images
জানুয়ারি ১-৫ (২০২২), প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড
নিউজিল্যান্ডকে তাদেরই মাটিতে হারিয়ে টেস্টে ঐতিহাসিক এক জয় পায় বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে যেকোনো ফরম্যাটেই এটি বাংলাদেশের প্রথম জয়। মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে প্রথম টেস্টের শেষ দিনে ৮ উইকেটের বড় জয় পেয়েছে মুমিনুলবাহিনী।
ছবি: Marty Melville/Photospor/AP/picture alliance
জুলাই ৭-১১ (২০২০) প্রতিপক্ষ জিম্বাবোয়ে
হারারের একমাত্র টেস্ট ২২০ রানে জিতেছে সফরকারীরা। বাংলাদেশের দেওয়া ৪৭৭ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে পঞ্চম দিনে দ্বিতীয় ইনিংসে জিম্বাবোয়ে অলআউট হয় ২৫৬ রানে। এই জয়ের অন্যতম রূপকার মেহেদী হাসান মিরাজ।
মুশফিকুর রহিমের দ্বিশতক (২০৩) আর মুমিনুলের শতকে (১৩২) ভর করে বাংলাদেশ জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে এক ইনিংস ও ১০৬ রানের জয় পায়৷ প্রথমে ব্যাট করতে নেমে জিম্বাবোয়ে ২৬৫ রান করেছিল৷ এরপর বাংলাদেশ খেলতে নেমে ছয় উইকেটে ৫৬০ রান তোলে৷ পরের ইনিংসে জিম্বাবোয়ে ১৮৯ রান করে অলআউট হয়ে যায়৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. U. Zaman
নভেম্বর ৩০-ডিসেম্বর ২, ২০১৮ প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ
মিরপুর টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ইনিংস ও ১৮৪ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ৷ এই প্রথম প্রতিপক্ষকে ফলো অন করানো ও ইনিংস ব্যবধানে জয়ের অনির্বচনীয় দুটি স্বাদ দল পেল একদিনেই৷ দুই ম্যাচের সিরিজে ২-০তে জয়৷ ম্যাচে বাংলাদেশের জয়ের নায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ৷ ১১৭ রানে ১২ উইকেট, বাংলাদেশের হয়ে এক ম্যাচে সেরা বোলিংয়ের কীর্তি৷ ম্যান অব দা ম্যাচ মেহেদী হাসান মিরাজ৷ ম্যান অব দা সিরিজ সাকিব আল হাসান৷
ছবি: Picture-alliance/AP Photo/A.M. Ahad
নভেম্বর ২২-২৪, ২০১৮ প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ
প্রতিপক্ষকে দুই ইনিংস মিলিয়ে সবচেয়ে কম বলে দুবার অলআউট করে জেতা ম্যাচের নতুন রেকর্ড গড়ে বাংলাদেশ৷ আড়াই দিনে টেস্ট জিতেছিল টাইগাররা৷ সাড়ে সাত সেশনের মতো খেলা হয়েছে এই টেস্টে৷ এটিই টেস্টে বাংলাদেশের দ্রুততম জয়৷ নাঈম হাসান প্রথম ইনিংসে পেয়েছেন ৫ উইকেট৷ দ্বিতীয় ইনিংসে তাইজুল পেয়েছেন ৬ উইকেট৷ মুমিনুল হক পেয়েছেন ম্যাচসেরার পুরস্কার৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. U. Zaman
নভেম্বর ১১-১৫, ২০১৮ প্রতিপক্ষ জিম্বাবোয়ে
জিম্বাবোয়ের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে ২১৮ রানের জয় পেয়েছে বাংলাদেশ৷ সিরিজ ১-১ ড্র৷ ৪৪৩ রানের লক্ষ্য তাড়ায় দ্বিতীয় সেশনে জিম্বাবুয়ে থামে ২২৪ রানে৷ ৩৮ রানে ৫ উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের সফলতম বোলার মেহেদী হাসান মিরাজ৷ দ্বিশত হাঁকিয়ে ম্যাচ সেরা মুশফিকুর রহিম৷ সিরিজ সেরা হয়েছেন তাইজুল ইসলাম৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman
জানুয়ারি ৬-১০, ২০০৫, প্রতিপক্ষ জিম্বাবোয়ে: বাংলাদেশ ২২৬ রানে জয়ী
টাইগাররা প্রথমবারের মতো টেস্ট জয়ের স্বাদ পায় চট্টগ্রামে৷ ২০০৫ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত সেই ম্যাচে প্রথম ইনিংসে ৪৮৮ রান তোলে স্বাগতিকরা৷ আর দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে ৯ উইকেটে ২০৪ রান করে৷ প্রথম ইনিংসে জিম্বাবোয়ের স্কোর ছিল ৩১২ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ১৫৪ রান৷
ছবি: Getty Images/AFP
জুলাই ৯-১৩, ২০০৯, প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ: বাংলাদেশ ৯৫ রানে জয়ী
দেশের বাইরে বাংলাদেশ প্রথম টেস্ট জয়ের দেখা পায় ২০০৯ সালের ১৩ জুলাই৷ কিংসটাউনে সেই টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৯৫ রানে হারায় টাইগাররা৷
ছবি: Getty Images/AFP/J. Samad
জুলাই ১৭-২০, ২০০৯, প্রতিপক্ষ ওয়েস্টইন্ডিজ: বাংলাদেশ চার উইকেটে জয়ী
সেবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর ছিল সাফল্যে ঠাসা৷ দ্বিতীয় টেস্টে সেন্ট জর্জেসে স্বাগতিকদের হারায় টাইগাররা, সেবার জিতেছিল চার উইকেটে৷
ছবি: Getty Images/AFP/R. Brooks
এপ্রিল ২৫-২৯, ২০১৩, প্রতিপক্ষ জিম্বাবোয়ে: বাংলাদেশ ১৪৩ রানে জয়ী
জিম্বাবোয়ের হারারেতে স্বাগতিকদের আবার ‘বধ’ করে টাইগাররা৷ প্রথম ইনিংসে ৩৯১ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৯ উইকেটে ২৯১ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ৷ জবাবে প্রথম ইনিংসে ২৮২ আর দ্বিতীয় ইনিংসে ২৫৭ রানেই গুটিয়ে যায় জিম্বাবোয়ে৷
ছবি: Getty Images/AFP/J. Njikizana
অক্টোবর ২৫-২৭, ২০১৪, প্রতিপক্ষ জিম্বাবোয়ে: বাংলাদেশ তিন উইকেটে জয়ী
ঢাকায় বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট জয়৷ তিন দিনে শেষ হওয়া সেই টেস্টে শুরুতে ব্যাট করতে গিয়ে প্রথম ইনিংসে ২৪০ রান করে জিম্বাবোয়ে৷ আর দ্বিতীয় ইনিংসে তাদের সংগ্রহ ছিল ১১৪৷ অন্যদিকে, প্রথম ইনিংসে ২৫৪ আর দ্বিতীয় ইনংসে ৭ উইকেটে ১০৭ রান তুলে জিতে যায় স্বাগতিকরা৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman
নভেম্বর ৩-৭, ২০১৪, প্রতিপক্ষ জিম্বাবোয়ে: বাংলাদেশ ১৬২ রানে জয়ী
খুলনায় জিম্বাবোয়েকে হারায় বাংলাদেশ৷ সেই টেস্ট পাঁচ দিন পর্যন্ত গড়ালেও শেষমেশ তেমন একটা সুবিধা করতে পারেনি জিম্বাবোয়ে৷ ফলাফল স্বাগতিকদের ১৬২ রানের জয়৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman
নভেম্বর ১২-১৬, ২০১৪, প্রতিপক্ষ জিম্বাবোয়ে: বাংলাদেশ ১৮৬ রানে জয়ী
আবারো চট্টগ্রামে জিম্বাবোয়েকে হারায় টাইগাররা৷ সেবার ব্যবধান ছিল ১৮৬ রানের৷
ছবি: Getty Images/AFP/Strdel
অক্টোবর ২৮-৩০, ২০১৬, প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড: বাংলাদেশ ১০৮ রানে জয়ী
এখন পর্যন্ত বড় কোনো ক্রিকেট শক্তির বিরুদ্ধে বাংলাদেশের একমাত্র টেস্ট জয় এটি৷ ঢাকায় ইংল্যান্ডকে নাস্তানাবুদ করে টাইগাররা৷
ছবি: Getty Images/AFP/D. Sarkar
মার্চ ১৫-১৯, ২০১৭, প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা: বাংলাদেশ ৪ উইকেটে জয়ী
একদিকে টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের শততম ম্যাচে জয়, অন্যদিকে প্রথমবারের মত শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে জয়-দুই দিক দিয়েই ঐতিহাসিক বাংলাদেশের এই টেস্ট ম্যাচটি৷ পঞ্চম দিনে ৪ উইকেটে জয় নিশ্চিত করে টাইগাররা৷ ম্যাচ সেরা হয়েছেন তামিম ইকবাল৷
ছবি: Getty Images/AFP/I. S. Kodikara
আগস্ট ২৭-৩০, ২০১৭, প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া: বাংলাদেশ ২০ রানে জয়ী
প্রথমবারের মত অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে বাংলাদেশ ইতিহাস গড়ে৷ এটা ছিল সাকিব ও তামিমের ৫০তম টেস্ট। সাকিব মোট ১০ উইকেট নিয়ে এবং তামিম দুই ইনিংসেই অর্ধশত করে স্মরণীয় করে রাখলেন এই টেস্টকে৷ ম্যাচ সেরা সাকিব আল হাসান৷ দ্রষ্টব্য: ইএসপিএন ক্রিকইনফো থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ছবিঘরটি তৈরি করা হয়েছে৷