ভয়াবহ অগ্নুৎপাত এবং সুনামিতে বিপর্যস্ত টোঙ্গা। সরকারিভাবে তিনজনের মৃত্যুর কথা ঘোষণা করা হয়েছে। বহু মানুষ নিখোঁজ।
বিজ্ঞাপন
শনিবার প্রথমে জলের তলার আগ্নেয়গিরিতে অগ্নুৎপাত হয়। তারপরেই ভয়াবহ সুনামি আছড়ে পড়ে টোঙ্গা দ্বীপে। যার জেরে ভয়াবহ ক্ষতিগ্রস্ত হয় মূলত দ্বীপের পশ্চিমাংশ। তবে গোটা দ্বীপেই কমবেশি ক্ষতি হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, অগ্নুৎপাতের পর ৫০ ফুট ঢেউ আছড়ে পড়ে টোঙ্গার পশ্চিম উপকূলে। এর ফলে পশ্চিম উপকূলের বসতিগুলি কার্যত জলের তলায় তলিয়ে গেছে। ম্যাঙ্গো, ফোনোইফুয়া, নমুকা দ্বীপুঞ্জ কার্যত ধ্বংস ধ্বংস হয়ে গেছে। ম্যাঙ্গোয়ার একটি বাড়িও আস্ত নেই। ফোনোইফুয়ায় দুইটি বাড়ি এখনো দাঁড়িয়ে আছে বলে খবর মিলেছে। নমুকাতেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
২১ শতকের ভয়াবহ সব সুনামি
গত পরশু সুনামি আঘাত হেনেছে ইন্দোনেশিয়ায়৷ গত ১৮ বছরে ৮-১০টি ভয়াবহ সুনামি আঘাত হেনেছে গোটা বিশ্বে৷ অগণিত মৃত্যুর সঙ্গে সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও ছিল মারাত্মক৷
ছবি: Reuters/Antara Foto/Bisnis Indonesia
ইন্দোনেশিয়ায় সুনামি
গত ২২ ডিসেম্বর ভয়াবহ সুনামি আঘাত হানে ইন্দোনেশিয়ায়৷ জাভা ও সুমাত্রা দ্বীপের নিকটবর্তী আনাক ক্রাকাতাও নামক আগ্নেয়গিরিতে উদগীরণের ফলে এই সুনামির সৃষ্টি হয়৷ এতে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ২৮০ জন মারা গেছে এবং আট শতাধিক আহত হয়েছে৷
আনাক ক্রাকাতাও একটি ছোট আগ্নেয়গিরি দ্বীপ৷ ১৮৮৩ সালে ইন্দোনেশিয়ার সবচেয়ে বড় আগ্নেয়গিরি ক্রাকাতোয়ার উদগীরণের ফলে এই আগ্নেয়দ্বীপের সৃষ্টি হয়৷
ছবি: picture-alliance/NurPhoto/D. Roszandi
নিউজিল্যান্ড ২০১৬
২০১৬ সালে নিউজিল্যান্ডে স্থানীয় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সুনামি আঘাত হানে৷ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্ত হওয়ার পরে নিউজিল্যান্ডে এটি ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সুনামি৷ কায়কোরা ভূমিকম্পে ২০ হাজার আফটারশক হয়েছিল৷ এবং ২২ মিটার উঁচু সুনামি আঘাত হানে৷ আগাম সতর্কতা থাকায় হতাহতের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে ছিল৷ মাত্র দু’জন নিহত ও ২০জন আহত হয় সেই সুনামিতে৷
ছবি: Imago/Xinhua/L. Huizi
বিধ্বস্ত জাপান
২০১১ সালে জাপানের সুনামি ছিল ইতিহাসের ভয়াবহতম সুনামিগুলোর একটি৷ সমুদ্রের গভীরে ঘটে যাওয়া ভূমিকম্পের ফলে ১৩৩ ফুট উঁচু এই সুনামির সৃষ্টি হয়৷ এতে ১৬ হাজার লোক নিহত হয়, আহত হয় অগণিত৷ এই সুনামিতেই ফুকোশিমা পারমাণবিক বিপর্যয় ঘটে৷ চেরনোবিল পারমাণবিক দুর্যোগের পর এটিই ছিল সবচেয়ে ভয়ঙ্কর দুর্যোগ৷
ছবি: Getty Images/AFP/S. Tomizawa
চিলির দু্র্যোগ
চিলি এমনিতেই ভূমিকম্পপ্রবণ৷ ১৯৬০ সালের ভূমিকম্পটি এখনো সর্বোচ্চমাত্রার রেকর্ড ধরে রেখেছে৷ ২০১০ সালে চিলিতে ৮ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পের ফলে উপকূল অঞ্চলে মারাত্মক সুনামি আঘাত হানে৷ সেই সময় জাপান ও রাশিয়ার সমুদ্র উপকূলে সুনামি সতর্কতা দেওয়া হয়৷ সেই সুনামিতে চিলির উপকূলীয় এলাকার ৫২৫ অধিবাসীর প্রাণহানি ঘটে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Hernandez
সলোমন আইল্যন্ড ২০০৭
পাপুয়া নিউগিনির সবচেয়ে সুন্দর দ্বীপ সলোমন আইল্যন্ডে ২০০৭ সালে আঘাত হানে ৪০ ফুট উঁচু সুনামি৷ ভূমিকম্পের ফলে সৃষ্ট এই সুনামিতে ৫২ জন নিহত হন এবং দ্বীপটির সহস্রাধিক বসতবাড়ি, হাসপাতাল, স্কুল বিধ্বস্ত হয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F. Robichon
ভারত মহাসাগরে তৃ্তীয় সর্বোচ্চ সুনামি
২০০৪ সালে ভারত মহাসাগরে হওয়া ভূমিকম্পটি ছিল ইতিহাসের তৃ্তীয় সর্বোচ্চ মাত্রার ভূমিকম্প৷ ৯ দশমিক ৯ মাত্রার সেই ভূমিকম্প থেকে সৃষ্ট সুনামি ভারত মহাসাগর সংলগ্ন ১৪টি দেশে আঘাত হানে৷ সেই সুনামিতে নিহত হয় ১৪ দেশের ২ লাখ ৩০ হাজার মানুষ৷ ছবিটি থাইল্যন্ডের সমুদ্র সৈকতে সুনামি আঘাত হানার পরের৷
ছবি: Getty Images/AFP/R. Gacad
6 ছবি1 | 6
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী অফিস ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে প্রথম বিবৃতি পেশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, যেটুকু খবর মিলেছে, তাতে এখনো পর্যন্ত তিনজন ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তারমধ্যে একজন যুক্তরাজ্যের নাগরিক। প্রধানমন্ত্রীর অফিস জানিয়েছে, অধিকাংশ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাতেই পৌঁছানো যায়নি। নৌবাহিনী জাহাজ নিয়ে গিয়ে উদ্ধারকাজের চেষ্টা চালাচ্ছে। নিউজিল্যান্ডের দুইটি নৌবাহিনীর জাহাজও উদ্ধারকাজে যোগ দিয়েছে বলে সরকারি সূত্র জানিয়েছে।
১৯৯১ সালে ফিলিপাইন্সে এই মাপের অগ্নুৎপাত হয়েছিল বলে বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য। তখনো বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।