ক্যাপিটল ভবন আক্রমণের এক বছর পূর্তিতে ডনাল্ড ট্রাম্পকে 'মিথ্যেবাদী' বললেন জো বাইডেন।
বিজ্ঞাপন
ঠিক এক বছর আগে ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল ভবন আক্রমণ করেছিলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকরা। তার এক বছর পূর্তি উপলক্ষে ক্যাপিটল ভবনেই এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। এদিনের বক্তৃতায় সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টকে মিথ্যেবাদী বলে আক্রমণ করেছেন বাইডেন।
ট্রাম্প সমর্থকদের তাণ্ডবে ক্যাপিটলে যত ক্ষয়ক্ষতি
বুধবার অনেকটা সময় ট্রাম্প সমর্থকদের দখলে ছিল মার্কিন ক্যাপিটল৷ বিস্তর ক্ষতি করেছেন তারা৷ জানুন ছবিঘরে...
ছবি: Alex Wong/Getty Images
যা হয়েছিল
বুধবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংসদভবন ক্যাপিটলে ঢুকে পড়লেন উত্তেজিত ডনাল্ড ট্রাম্প সমর্থকরা৷ পুলিশের বাধা না মেনে দখল নেন ক্যাপিটল ভবনের একতলার৷ বিক্ষোভকারীদের থামাতে পুলিশ প্রথমে কাঁদানে গ্যাস ও পেপার স্প্রে ব্যবহার করে৷ পরে, বাধ্য হয়ে গুলি চালায়৷ সব মিলিয়ে ক্যাপিটল ভবন ও সংবাদমাধ্যমের নানা সম্পত্তির অনেক ক্ষতি হয়৷
ছবি: REUTERS
রক্তাক্ত ক্যাপিটল
নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে ক্ষুব্ধ ট্রাম্প সমর্থকদের ক্রোধের আঁচ সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জ্যাকারি টেলরের আবক্ষমূর্তিতেও লেগেছে৷ ক্যাপিটলের ভেতরে হাতাহাতির ফলে রক্তপাত ঘটে, সেই রক্ত দেখা যাচ্ছে প্রেসিডেন্ট টেলরের মূর্তির গায়েও৷
ছবি: Samuel Corum/Getty Images
ভাঙচুর যত
বুধবার টেলিভিশন থেকে ইন্টারনেট সর্বত্র ছেয়ে ছিল ক্যাপিটলে ভাঙচুরের ছবি৷ বিক্ষুব্ধরা শুধু ক্যাপিটলের বিভিন্ন দরজা, জানালার কাঠ-কাঁচ ভেঙেই থামেনি, ভেতরের মূল পোডিয়ামও কাঁধে করে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে তারা৷ একটি ভিডিওতে দেখা যায় কয়েক শতক পুরোনো আসবাব, ঝাড়বাতি সব টেনে মাটিতে ফেলে দিতে৷
ছবি: Erin Scott/REUTERS
যা বলছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা
ক্যাপিটলে উপস্থিত হাউস প্রতিনিধি জেসন ক্রো বলেন, ‘‘আমাদের চারদিক থেকে ঘিরে ফেলা হয়৷ পালাবার পথ ছিল না৷ যখন আমি ইরাক বা আফগানিস্তানে লড়ছিলাম, তখনও আমি এতটা ভীত হয়েছিলাম৷ এরপর আর কখনো এমন অনুভূতি হয়নি৷ কিন্তু সেই সময় আমার সামনে লড়ে বিপদ থেকে বেরোবার পথ ছিল৷ লড়ার জন্য ক্যাপিটলে আমার পকেটের কলম ছাড়া আর কোনো অস্ত্র ছিল না৷’’
ছবি: Alex Wong/Getty Images
আক্রান্ত সংবাদমাধ্যম
শুধু ক্যাপিটলের ভেতরে নয়, বাইরে থাকা সংবাদমাধ্যমের কর্মীরাও আক্রান্ত হয়েছেন৷ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরা, মাইক ভাঙা হয়েছে৷ সাংবাদিকদের গালিও দেওয়া হয়৷ ওপরের ছবিতেও তার প্রতিফলন৷ ক্যাপিটলের দরজার ওপরে লেখা ‘মার্ডার দ্য মিডিয়া!’
ছবি: Erin Scott/REUTERS
সন্ত্রাস ও মৃত্যু
বুধবারের ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনের মৃত্যু হয়েছে৷ এর মধ্যে, রয়েছেন এক পুলিশকর্মীও৷ ভাঙচুর, মারামারি ও হাতাহাতির ভয়াবহতার কারণে মার্কিন তদন্ত সংস্থা এফবিআই বুধবারের ঘটনাকে ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়েছে৷
ছবি: Jonathan Ernst/REUTERS
6 ছবি1 | 6
বাইডেনবলেছেন, ''২০২০ সালের নির্বাচনে একের পর এক মিথ্যে বলে গেছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট। অ্যামেরিকার ইতিহাসে প্রথম কোনো প্রেসিডেন্ট সরাসরি গণতন্ত্রের উপর হামলা চালিয়েছেন। সমর্থকদের উত্তেজিত করে ক্যাপিটল ভবনে হামলা চালাতে উৎসাহ দিয়েছেন।''
এখানেই থেমে থাকেননি বাইডেন। ক্যাপিটল ভবনের হামলার জন্য সরাসরি ট্রাম্পকে দায়ী করেছেন তিনি। বলেছেন, এই প্রথম অ্যামেরিকায় ক্ষমতা হস্তান্তরের সময় সহিংস পথে হাঁটলেন কোনো প্রেসিডেন্ট।
তবে শুধু দোষারোপ নয়, বাইডেন বলেছেন, গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করতে হবে সমস্ত মার্কিন নাগরিককে। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সে কাজ করতে হবে। বস্তুত, ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসও একই কথা বলেছেন। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আর্জি পেশ করেছেন জনগণের সামনে।
কী ঘটেছিল সেই দিন
২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল ভবনে হামলা চালায় ট্রাম্পের সমর্থকরা। অভিযোগ, ডনাল্ড ট্রাম্পের কয়েকটি বক্তৃতা শোনার পরেই উত্তেজিত জনগণ ক্যাপিটল ভবন আক্রমণ করে। ঘটনায় পাঁচজনের মৃত্যু হয়। ১৩০ জন পুলিশ অফিসার আক্রান্ত হন। ক্যাপিটলের ভিতরে ঢুকে তছনছ করে দেওয়া হয় সবকিছু। অ্যামেরিকার ইতিহাসে প্রথম এমন হামলার ঘটনা ঘটে।
ক্যাপিটলে হামলার পরে গোটা দেশেই তার প্রভাব পড়ে। নতুন প্রেসিডেন্টের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানও কার্যত লৌহবলয়ের মধ্যে আয়োজিত হয়। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সে সময় দ্বিতীয়বার ইমপিচমেন্টের প্রস্তাব এনেছিল কংগ্রেস। একবছর পর ওই দিনের ঘটনার জন্য ট্রাম্পকে আক্রমণ করলেন বাইডেন।