ট্রাম্পকে চ্যালেঞ্জ করার দৌড়ে এগিয়ে গেলেন সান্ডার্স
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০
নভেম্বর মাসে অ্যামোরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক দলের প্রার্থী বাছাই পর্ব জমে উঠেছে৷ মঙ্গলবার বার্নি সান্ডার্স একটি প্রাইমারিতে এগিয়ে গেলেন৷ আপাতত সবার নজর ‘সুপার টিউজডে'-র দিকে৷
বিজ্ঞাপন
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক দলের কোন নেতা প্রার্থী হিসেবে ডনাল্ড ট্রাম্পকে পরাজিত করার ক্ষমতা রাখেন? সেই প্রশ্নের জবাব খুঁজতে একের পর এক রাজ্যে তাঁরা সমর্থনের জন্য লড়াই করছেন৷ নানা বয়সের নানা আদর্শের নেতারা আপাতত নিজেদের সেরা প্রমাণ করার জন্য পরস্পরের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত৷ বিভিন্ন রাজ্যে ডেমোক্র্যাটিক দলের ভোটাররা সেরা প্রার্থী বেছে নিচ্ছেন৷
মঙ্গলবার নিউ হাম্পশায়ার রাজ্যে বাকিদের পেছনে ফেলে এগিয়ে গেলেন বার্নি সান্ডার্স৷ ‘প্রাইমারি' পর্বে সামান্য ব্যবধানে হলেও পিট বুটিজিজকে হারিয়ে তিনিই শীর্ষ স্থান দখল করলেন৷ উল্লেখ্য, বুটিজিজ আইওয়া রাজ্যের প্রাইমারিতে প্রথম স্থান দখল করেছিলেন৷ ২০১৬ সালে এই রাজ্যে প্রাইমারি পর্বে হিলারি ক্লিন্টনের বিরুদ্ধে সান্ডার্স ২২ পয়েন্টে এগিয়ে ছিলেন৷ এবার মাত্র দুই পয়েন্টে এগিয়ে থেকে তাঁকে সন্তুষ্ট থাকতে হলো৷ সান্ডার্স এ দিন বলেন, ‘‘এই জয় ডনাল্ড ট্রাম্পের সমাপ্তির সূচনা৷''
প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট ও অভিজ্ঞ নেতা জো বাইডেন পর পর দুটি প্রাইমারিতেই খারাপ ফল করেছেন৷ মঙ্গলবার তাঁকে পঞ্চম স্থান পেয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে৷ আইওয়া রাজ্যে তিনি চতুর্থ স্থান পেয়েছিলেন৷ সবচেয়ে সম্ভাবনাময় প্রার্থী হিসেবে যাত্রা শুরু করেও তিনি এখনো যথেষ্ট সমর্থন আদায় করতে পারছেন না৷ ফেব্রুয়ারির শেষে সাউথ ক্যারোলাইনা ও ৩রা মার্চ ‘সুপার টিউজডে'-এর দিনে দক্ষিণের কয়েকটি রাজ্যের প্রাইমারিতেও ভালো ফল না করলে বাইডেনের পক্ষে দৌড়ে টিকে থাকা কঠিন হবে৷ তবে দক্ষিণে তিনি কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারদের সমর্থনের আশা করছেন৷ মঙ্গলবারও বাইডেন বলেন, ‘‘শেষ কোথায়, দৌড় তো সবে শুরু হচ্ছে৷''
আর এক সম্ভাবনাময় প্রার্থী এলিজাবেথ ওয়ারেনও মঙ্গলবার খারাপ ফল করেছেন৷ তিন মাস আগেও নিউ হাম্পশায়ার রাজ্যে সমর্থনের বিচারে শীর্ষে থাকা সত্ত্বেও মঙ্গলবার তিনি চতুর্থ স্থানে নেমে গেলেন৷ ফলে তাঁর প্রচার অভিযানের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে৷ ২২শে ফেব্রুয়ারি নেভাদা ও ২৯শে ফেব্রুয়ারি সাউথ ক্যারোলাইনা রাজ্যে প্রাইমারি পর্বে তাঁর জনপ্রিয়তার দিকে সবার নজর থাকবে৷ সান্ডার্স ও তিনি প্রকৃত বামপন্থি আদর্শে বিশ্বাসী বলে পরিচিত৷
‘সুপার টিউজডে'-র আগে পর্যন্ত এই দৌড় থেকে দূরে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নিউ ইয়র্ক শহরের প্রাক্তন মেয়র ও ধনকুবের মাইকেল ব্লুমবার্গ৷ টেলিভিশনে প্রচার অভিযানের পেছনে কোটি কোটি ডলার ব্যয় করে আপাতত তিনি নিজের অবস্থান পাকা করতে ব্যস্ত৷ মূলত ‘সুপার টিউজডে' পর্বের পর যে সব প্রার্থী টিকে থাকবেন, তাদের সঙ্গেই সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামবেন তিনি৷ বিশেষ করে ক্যালিফোর্নিয়া ও টেক্সাসের মতো বড় রাজ্যে ভালো ফল করার আশা করছেন ব্লুমবার্গ৷
কে হবেন পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট
চলতি বছরই অনুষ্ঠিত হবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন৷ ডেমোক্রেটরা এরই মধ্যে নিজ দলের প্রার্থীতা পেতে লড়াই শুরু করেছেন৷
ছবি: Getty Images/S. Olson
মাইকেল বেনেট
৫৫ বছর বয়সী এই রাজনীতিবিদ বর্তমানে কলোরাডোর সিনেটর৷ প্রগতিশীল ডেমোক্রেট হিসেবে তার পরিচিতি রয়েছে৷ ২০১৩ সালের অভিবাসী আইন প্রণয়নের পেছনে যারা ভূমিকা রেখেছেন তিনি তাদের একজন৷ প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে গলা চড়ানোটাই নম্রভাষী এই রাজনীতিবিদের বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা৷
ছবি: Getty Images/AFP/B. Bennett
জো বাইডেন
জো বাইডেন বা জোসেফ আর বাইডেন জুনিয়র৷ ওবামার শাসনামলের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট এ পর্যন্ত দুইবার প্রেসিডেন্ট হওয়ার লড়াইয়ে সামিল হয়েছেন৷ শেষবারের মত এই দৌড়ে নামার সুযোগ পাচ্ছেন ৭৭ বছর বয়সী ডেমোক্রেট৷
ছবি: picture-alliance/newscom/K. Dietsch
মাইকেল ব্লুমবার্গ
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার প্রতিযোগিতায় এরইমধ্যে আলোচিত হয়েছেন নিউ ইয়র্কের সাবেক মেয়র মাইকেল ব্লুমবার্গ৷ ট্রাম্পকে হারাতে ১০০ কোটি ডলার খরচে প্রস্তুত আছেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন এই বিলিওনেয়ার৷ গত অক্টোবরে রিপাবলিকান দলত্যাগ করে দুই যুগ পর আবারও ডেমোক্রেট শিবিরে ভিড়েছেন তিনি৷ তার বয়স ৭৭ বছর৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/J. Locher
করি বুকার
ডেমোক্রেটদের মনোনয়নের দৌড়ে আছেন নিউ জার্সির সিনেটর ও নুয়ার্কের সাবেক মেয়র করি বুকারও৷ বৈষম্য দূরীকরণের ইস্যুকে তিনি সামনে নিয়ে এসেছেন৷ ভালবাসা, ঐক্য আর সাম্যের প্রচারও চালাচ্ছেন পঞ্চাশ বছর বয়সী এই রাজনীতিবিদ৷
ছবি: Reuters/L. Millis
পিট বুডিজেজ
নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে সর্বকনিষ্ঠ পিট বুডিজেজ৷ ইন্ডিয়ানার সাউথ বেন্ডের এই মেয়র সাবেক সামরিক কর্মকর্তা৷ বয়স মাত্র ৩৭ বছর৷ কিন্তু নির্বাচনের জন্য অর্থ সংগ্রহে এগিয়ে আছেন সবার চেয়ে৷ অর্থনীতি আর জলবায়ু তার প্রচারের মূল বিষয়৷
ছবি: Reuters/R. Mummey
জন ডেলানি
সাবেক কংগ্রেসম্যান ও ব্যবসায়ী জন ডেলানি৷ প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়ার জন্য মরিয়া তিনি৷ ২০১৭ সাল থেকেই এজন্য দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন৷ আইওয়ার প্রতিটি কাউন্টি এরইমধ্যে ভ্রমণ করেছেন তিনি৷ কিন্ত শেষ পর্যন্ত টিকিট পান কীনা সেটি দেখার বিষয়৷
ছবি: Getty Images/AFP/B. Bennett
তোলসি গ্যাবার্ড
২০১৬ সালের নির্বাচনে বার্নি স্যান্ডার্সকে সমর্থন দিয়েছিলেন তোলসি গ্যাবার্ড৷ ৩৮ বছর বয়সী এই রাজনীতিবিদ এবার নিজেই প্রার্থী হতে চাইছেন৷ পূর্বের সমকামী বিরোধী অবস্থানের জন্য এরই মধ্যে তিনি ক্ষমা চেয়েছেন৷ সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাসার আল আসাদের সঙ্গে বৈঠক করেও সমালোচিত হয়েছে৷ বিদেশে মার্কিন সামরিক আগ্রাসণের বিরুদ্ধে অবস্থান রয়েছে তার৷
ছবি: AFP
এমি ক্লোবুসার
৫৯ বছর বয়সী এমি ক্লোবুসার মিনেসোটার সিনেটর৷ মাদক, ঔষধসহ বিভিন্ন ইস্যুতে অবস্থান নিয়ে আলোচিত হয়েছেন তিনি৷ জো বাইডেনের পর উদারপন্থী ডেমোক্রেটদের মধ্যে তার জনপ্রিয়তাই সবচেয়ে বেশি৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/A. Souffle
ডেভাল পেট্রিক
মেসাচুসেটস এর সাবেক গভর্নরও লড়ছেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থী হতে৷ অ্যামেরিকার ইতিহাসের দ্বিতীয় কৃষ্ণাঙ্গ গভর্নর নির্বাচিত হন তিনি ২০০৬ সালে৷ সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার বন্ধু হিসেবে ডেভাল পেট্রিকের পরিচিতি রয়েছে৷
ছবি: AFP/Getty Images/S. Maturen
বার্নি স্যান্ডার্স
৭৮ বয়সী স্যান্ডার্স ২০১৬ সালেও লড়েছেন নির্বাচনের টিকেট পেতে৷ সেবার পিছিয়ে পড়েন হিলারির কাছে৷ তিনি নিজেকে ‘ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিস্ট’ হিসেবে অভিহিত করেন৷ সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা, বিনা পয়সায় পড়াশোনার প্রতিশ্রুতি নিয়ে নির্বাচনে লড়তে চান এই বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ৷
ছবি: AFP/F. J. Brown
টম স্টেয়ার
৬২ বছর বয়সী এই বিলিওনেয়ার জলবায়ু কর্মী হিসেবে নাম কুড়িয়েছেন৷ ট্রাম্পের ইমপিচমেন্টের পক্ষে তিনি কয়েক কোটি ডলার ব্যয় করে টিভি বিজ্ঞাপন প্রচার করেছেন৷
ছবি: Getty Images/A. Wong
এলিজাবেথ ওয়ারেন
ম্যাসাচুসেটসের সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন৷ হার্বার্ডের সাবেক অধ্যাপক তিনি৷ ৭০ বছর বয়সী এই রাজনীতিবিদও আছেন ডেমোক্রেটদের প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর দৌড়ে৷
ছবি: AFP/F. J. Brown
ডনাল্ড ট্রাম্প
রিপাবলিকান প্রার্থী হিসেবে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প যে আবারও নির্বাচনে লড়ছেন সেটি নিশ্চিত৷ তাকে চ্যালেঞ্জ জানাতে কে আসছেন ডেমোক্রেট শিবির থেকে সেটিই এখন দেখার বিষয়৷