পর্যাপ্ত টিকা পাওয়া যাচ্ছে না বলে আপাতত করোনা সামলাতে ওষুধ কিনেছে জার্মানি৷ সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পকে এই ওষুধ দেয়া হয়েছিল৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রথম দেশ হিসেবে জার্মানি এটি ব্যবহার করবে৷
ছবি: Fabrizio Bensch/AFP/Getty Images
বিজ্ঞাপন
মার্কিন কোম্পানি রিজেনারন-এর এই ওষুধের নাম ‘আরইজিএন-কোভ২'৷ এটি আসলে আরইজিএন১০৯৮৭ ও আরইজিএন১০৯৩৩ নামক দুটি অ্যান্টিবডির এক ককটেল৷
জার্মানির স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়েন্স স্পান ‘বিল্ড আম জনটাগ’ পত্রিকাকে রবিবার জানান, চার হাজার ১২০ কোটি টাকা দিয়ে দুই লাখ ডোজ আরইজিএন-কোভ২ কেনা হয়েছে৷ সে হিসেবে এক ডোজ ওষুধের দাম পড়েছে প্রায় দুই লাখ ছয় হাজার টাকা৷
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা মানুষদের মধ্যে যারা করোনা সংক্রমিত হবেন তাদেরকে সংক্রমণের শুরুর দিকে এই ওষুধ দেয়া গেলে, তা রোগীদের মধ্যে সংক্রমণের প্রভাব বেশি বাড়তে দেয় না৷ বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালগুলোতে এই ওষুধ ব্যবহার করা হবে বলেও জানান তিনি৷
জার্মানিতে যে কারণে করোনায় মৃত্যু ৫০ হাজার ছাড়ালো
করোনার প্রথম ঢেউ সফলভাবে মোকাবেলা করে প্রশংসায় ভেসেছিলেন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে করোনায় মৃত্যু ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে৷ ছবিঘরে দেখুন বিস্তারিত...
ছবি: Martin Meissner/AP Photo/picture alliance
প্রথম করোনা রোগী
২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে চীনের উহানে ধরা পড়ার পর খুব দ্রুতই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে করোনা ভাইরাস৷ এক মাস পর, অর্থাৎ, ২০২০ সালের ২৭ জানুয়ারি জার্মানির বাভারিয়া রাজ্যে প্রথম করোনা রোগী ধরা পড়ে৷
ছবি: Jens Schlueter/Getty Images
নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ
করোনার প্রথম ঢেউয়ে ইউরোপের অন্যান্য দেশ, যেমন স্পেন, ইটালি এবং ফ্রান্স যখন কড়া লকডাউন দেয়, তখনও এ বিষয়ে কিছুটা ‘উদার’ ছিল জার্মানি৷ তবে দেশের হাসপাতালগুলোতে ডাক্তার, নার্স ও পর্যাপ্ত ভেন্টিলেটরের ব্যবস্থা করে পরিস্থিতি বেশ সফলভাবে সামাল দেয় দেশটি৷
ছবি: Axel Schmidt/AFP
চলাফেরায় নিয়ন্ত্রণ
জনগণের চলাফেরায় তখন কিছুটা নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছিল৷ সুপারশপ ছাড়া ‘কম প্রয়োজনীয়’ প্রায় সব দোকানপাট বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল৷
ছবি: Andreas Gora/imago images
করোনা পরীক্ষা
করোনার প্রথম ঢেউ সামলাতে জার্মান সরকারের যে ব্যবস্থ্যাগুলো আলোচনায় আসে সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো, করোনা পরীক্ষা ও চিহ্নিতকরণে দ্রুত পদক্ষেপ৷ এছাড়া দেশি-বিদেশি সবার জন্যই বিমানবন্দরেগুলোতে বাধ্যতামূলক টেস্টিং-এর ব্যবস্থা করা হয়, এমনকি অনেক জায়গায় রেজিস্টার বই রাখা হয় যাতে পরিদর্শকদের ঠিকানা লিপিবদ্ধ করে রাখা যায়৷
ছবি: Antonio Calanni/AP Photo/picture alliance
সুফল মিললো যতটা
এসব পদক্ষেপের ফলে জার্মানিতে করোনা সংক্রমণের হার অনেক কম ছিল৷
ছবি: Fabrizio Bensch/REUTERS
দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কা
শীতের শুরুতে জার্মানিতে বাড়তে থাকে সংক্রমণের হার৷ সংক্রমণ ঠেকাতে নানামূখী পদক্ষেপ ঘোষণা করে সরকার৷ সম্প্রতি কড়া লকডাউন আগামী ১৪ পর্যন্ত বহাল রাখার সিদ্ধান্তও এসেছে৷
ছবি: dpa/Sputnik/picture alliance
মৃতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়ালো
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে রেকর্ডসংখক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে৷ মৃতের সংখ্যা দিনে এক হাজার ছাড়িয়েছে৷ রবার্ট কখ ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, গত শুক্রবার পর্যন্ত জার্মানিতে করোনায় মৃতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে৷
ছবি: Ina Fassbender/AFP/Getty Images
সবচেয়ে বেশি মৃত্যু যে রাজ্যে
স্ট্যাটিস্টা ডটকমের তথ্য বলছে, জার্মানির নর্থ রাইন ওয়েস্টফালিয়া রাজ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি লোক মারা গেছেন৷ গত সোমবার পর্যন্ত রাজ্যটিতে নয় হাজার একশ ২৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন৷
ছবি: Ina Fassebnder/AFP/Getty Images
বেশি আক্রান্ত যেখানে
সংক্রমণের দিক থেকেও নর্থ রাইন ওয়েস্টাফালিয়া রাজ্য সবার উপরে৷ স্ট্যাটিস্টা বলছে, এ রাজ্যে মোট আক্রান্তের সংখ্যা চার লাখ ৫১ হাজার আটশ’ ৯৮ জন৷ উল্লেখ্য, জার্মানির ১৬টি রাজ্যের মধ্যে নর্থ রাইন ওয়েস্টাফালিয়া সবচেয়ে জনবহুল৷
ছবি: picture-alliance/NurPhoto/Y. Tang
সবচেয়ে কম যেখানে
করোনায় সবচেয়ে কম আক্রান্ত হয়েছে ব্রেমেন রাজ্য৷ গত সোমবার পর্যন্ত এ রাজ্যে মাত্র ২৩২ জন মারা গেছেন, আর আক্রান্ত হয়েছেন ১৪ হাজার নয়শ’ ৪৩ জন৷
ছবি: Sean Gallup/Getty Images
কেন বাড়ছে?
প্রথম ঢেউ মোকাবেলায় সফল জার্মানিতে এখন সংক্রমণ বেশি বাড়ার জন্য অনেকেই সরকারের উদারনীতিকে দায়ী করছেন৷ তাছাড়া সব রাজ্যে করোনার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেওয়াসহ নানা কারণে দেশের ভিতরে সমালোচনার মুখে পড়ে ম্যার্কেল সরকার৷
ছবি: Sean Gallup/Getty Images
কঠোর পদক্ষেপ
তবে পরিস্থিতি মোকাবিলায় এরইমধ্যে কঠোর পদক্ষেপ ঘোষণা করেছে সরকার৷ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত৷ বেশির ভাগ দোকানপাট বন্ধ রাখা, পার্টি বা জনসমাবেশ আয়োজনে নিষেধাজ্ঞা এবং সর্বশেষ জনসাধারণকে পাবলিক প্লেসে এফএফপি২ মাস্ক পড়ার কথাও বলা হয়েছে৷