1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ট্রাম্পের ‘অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা’-র কৌশলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

টেরি শুলৎজ/জেডএ/এসিবি২৩ আগস্ট ২০১৭

অবশেষে আফগানিস্তানের জন্য নয়া কৌশল ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র৷ ন্যাটোর সদস্যদের কেউ কেউ এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে, আবার কেউ কেউ আরো পরিষ্কার ধারণা দাবি করেছে৷

Afghanistan US Soldaten Patrouille nahe Kandahar Flugplatz
ছবি: Getty Images/AFP/Smialowski

২০১৬ সালে আফগানিস্তানের যুদ্ধ সমাপ্তির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন৷ সেই প্রতিশ্রুতি ভেঙ্গে সোমবার নতুন করে সেখানে অভিযান পরিচালনার ঘোষণা দেন৷

তবে ন্যাটো সদস্যরা যা শুনতে চেয়েছিল- কতজন সেনা নতুন করে মোতায়েন করা হবে- সে ঘোষণা দেননি৷ অবশ্য পাকিস্তানের দিকে অভিযোগের তীর ছুঁড়ে দিয়ে জঙ্গিবাদ নির্মূলে ট্রাম্পের নতুন এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে কাবুল৷

‘‘কত সেনা মোতায়েন করা হবে, তা নিয়ে এখনই কথা বলতে চাই না,'' ট্রাম্প বলেন৷ ‘‘সেখানকার পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করেই কৌশল নির্ধারিত হবে৷ অ্যামেরিকার শত্রুরা আগে থেকে আমাদের পরিকল্পনা জেনে যাবে, এটা হতে পারে না৷ কবে আঘাত হানা হবে, সেটা বলতে চাই না, তবে এটা বলতে চাই যে আঘাত আমরা হানব৷''

‘অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা'

ট্রাম্পের এই ঘোষণাকে ইতিবাচকভাবেই দেখছেন সাবেক ন্যাটো কর্মকর্তা মোহাম্মদ শফিক হামদাম৷ তিনি বলেন, কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার কথা না বললেও আফগানিস্তানে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যে যুদ্ধের ঘোষণা ট্রাম্প দিয়েছেন, সেটিই গুরুত্বপূর্ণ৷

আফগানিস্তান বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হামদাম জানান, এই ঘোষণা সরাসরি দেখার জন্য কাবুলের মানুষ সোমবার ভোর থেকেই টিভিসেটের সামনে অপেক্ষা করছিলেন৷

‘‘আফগানিস্তানের জন্য দিনটি ছিল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ,'' ডয়চে ভেলেকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলছিলেন তিনি৷ ‘‘আর কোনো ঘোষণার জন্য আমরা এতদিন অপেক্ষা করে ছিলাম না৷ আফগানরা এতটাই খুশি যে, তারা মনে করছে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো কখনোই আফগানিস্তানকে একা ফেলে যাবে না৷''

তালিবানকে দমন করার জন্য পাকিস্তানেরও মদদ চাওয়ায় ট্রাম্পের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন হামদাম৷ কারণ, তালিবানদের মূল শক্তির উৎস যে পাকিস্তানে, এ বিষয়টি এর আগে কোনো মার্কিন নীতিনির্ধারক উচ্চারণ করেননি৷

‘‘তালিবান ও এ অঞ্চলের অন্য জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর অভয়ারণ্য পাকিস্তান- এ বিষয়ে আর চুপ থাকার কোনো সুযোগ নেই৷'' বলছিলেন ট্রাম্প৷ ‘‘পাকিস্তান সেসব জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোকে লালন করেছে, যারা প্রতিনিয়ত আমাদের লোকদের হত্যা করছে৷ আমরা পাকিস্তানকে হাজার কোটি টাকা দিচ্ছি৷ অথচ তারা সেসব জঙ্গিদেরই আশ্রয় দিচ্ছে, যাদের বিরুদ্ধে আমরা যুদ্ধ করছি৷''

হামদাম বলেন, ‘‘গত ১৬ বছর ধরে আফগানরা যা বলতে চাইছিলেন, সেই কথাগুলোই এসেছে এই ঘোষণায়৷ এই সমস্যার একটি আঞ্চলিক সমাধান দরকার, যা বাস্তবায়নে সবসময়ই পাকিস্তানকে একটি বাধা হিসেবে দেখি৷ আরো পরিষ্কার করে বলতে গেলে, ২০০১ সালের পর থেকে পাকিস্তান তালিবান ও অন্য জঙ্গিগোষ্ঠীদের লালন-পালন, প্রশিক্ষণ, অর্থায়ন, অস্ত্র সরবরাহ ও রাজনৈতিক প্রশ্রয় দিয়ে আসছে৷ ট্রাম্পের কৌশলে এই বিষয়গুলোকে পরিষ্কারভাবেই তুলে আনা হয়েছে৷''

সংখ্যার অপেক্ষায় ন্যাটো

এদিকে ব্রাসেলসে, ন্যাটো মহাসচিব জেন্স স্টোলেনবার্গও ট্রাম্পের ‘অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা' নেয়ার কৌশলকে স্বাগত জানিরয়েছেন৷ এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘‘ন্যাটো আফগানিস্তানের কাছে পুরোপুরি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ৷ সেক্রেটারি ম্যাটিস ও আমাদের আন্তর্জাতিক সহযোগীদের নিয়ে আমি ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণ করতে চাই৷''

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘‘ন্যাটো সদস্য ও সহযোগীরা আফগানিস্তানে উপস্থিতি বাড়ানোর বিষয়ে সংকল্পবদ্ধ৷ দেশটিতে এখন এই জোটের ১২,০০০ সেনা মোতায়েন আছে৷ গেল কয়েক সপ্তাহে আরো ১৫টিরও বেশি দেশ আমাদের এ ধরনের মিশনে সেনা সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছে৷''

স্টোলেনবার্গ আরো বলেন, যেসব সেনা মোতায়েন আছে তার সিংহভাগই যুক্তরাষ্ট্রের৷ সেক্ষেত্রে ন্যাটোর যে সম্মিলিত ফোর্স সেখানে যুক্তরাষ্ট্র নতুন সেনা যোগ করবে না, তাঁরা নিজেরা আলাদাভাবে অভিযান পরিচালনা করবে, সেটা পরিষ্কার হওয়া দরকার৷

এদিকে, ট্রাম্পের ঘোষণাকে স্বাগত জানালেও যুক্তরাষ্ট্র ঠিক কত সৈন্য মোতায়েন করবে সেটি না জানা পর্যন্ত ন্যাটোর অপর সদস্য রাষ্ট্রগুলো তাদের অবস্থান পরিষ্কার করবে না৷

আফগান সাংবাদিক ও লেখক বিলাল সারওয়ারি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘দিন দিন মাঠ পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে৷ তালিবানরা নতুন নতুন এলাকার দখল নিচ্ছে এবং আঘাত হানছে৷ এ অবস্থায় নতুন সেনা মোতায়েন করা হলে তারা সেখানে কী ভুমিকায় থাকবে সেটিও বড় বিষয়৷''

জার্মানি ও অন্য সহযোগীরা যুক্তরাষ্ট্রের অপেক্ষায়

ট্রাম্প তাঁর ঘোষণায় বলেছিলেন যে, ন্যাটোর অপর সদস্য রাষ্ট্রগুলোও তাঁকে সহযোগিতা করবে বলে তিনি আশাবাদী৷ কিন্তু ন্যাটো বিশেষজ্ঞ জার্মান মার্শাল ফান্ডের সিনিয়র ফেলো ব্রুনো লেটে বলেন, ‘‘এখন পর্যন্ত আফগানিস্তানে প্রায় এক হাজার ইউরোপীয় সৈন্য নিহত হয়েছেন৷ অথচ সেখান থেকে আশানুরূপ কোনো সাফল্য এসেছে বলে ইউরোপ মনে করে না৷''

জার্মান প্রতিরক্ষা মন্ত্রী উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন পরিষ্কারভাবেই বলেছেন যে, আফগানিস্তানে নতুন করে সেনা মোতায়েনের বিষয়টি অতটা সহজভাবে নেবে না জার্মানি৷

একইভাবে এসব মিশনে অর্থ খরচের বিষয় আছে৷ সেটিও বিবেচনায় থাকবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা৷

লেটে মনে করেন, যদি বিষয়টি এমন হয় যে, আফগান সেনাদের জঙ্গিবাদ দমনে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে, তাহলে ইউরোপ এক কথায় রাজি হয়ে যাবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ