প্রেসিডেন্ট হয়েও ট্রাম্প প্রথামাফিক পথে হাঁটেননি। তিনি কী উত্তরাধিকার রেখে যাচ্ছেন? মার্কিন রাজনীতিতে ট্রাম্পের কতটা প্রভাব থাকবে?
বিজ্ঞাপন
মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসাবে ডনাল্ড ট্রাম্পের ঘটনাবহুল চার বছর শেষ হচ্ছে আগামী ২০ জানুয়ারি। কিন্তু তাঁর এই চার বছরের শাসনকাল নিয়ে প্রচুর আলোচনা হয়েছে ও হবে। হয়তো দশকজুড়ে হবে। তিনি হোয়াইট হাউসে প্রবেশ করার পর থেকেই তাঁর প্রশাসনকে একের পর এক বিতর্ক ও কেলেঙ্কারি সামলাতে হয়েছে। করোনা অতিমারি নিয়ে তিনি চটজলদি ব্যবস্থা নেননি। ক্যাপিটলে সহিংসতা নিয়ে তাঁর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তারপর এসছে তাঁকে দ্বিতীয়বার অভিশংসন করার চেষ্টা। এ সব বিতর্ক হয়ত আপাতত গত চার বছর ধরে তিনি কী করেছেন, সেই বিষয়টি ঢেকে দিতে পারে।
গত চার বছরে ট্রাম্পের শাসন, তাঁর উত্তরাধিকার দুইটি সম্পূর্ণ আলাদা লেন্স থেকে দেখা যেতে পারে। একটি হলো রক্ষণশীল, বড়লোক ব্যবসায়ী এবং ধর্মীয় দক্ষিণপন্থীদের মতামত। তাঁরা বলবেন, তিনি অ্যামেরিকার মহান প্রেসিডেন্টদের মধ্যে অন্যতম। কিন্তু অধিকাংশ মার্কিন নাগরিক যে ট্রাম্পের শাসনকে খুব ভালোভাবে দেখেন না, তা পিউ রিসার্চ পোল-এর ফল থেকে বোঝা যাচ্ছে। ট্রাম্প মাত্র ২৯ শতাংশ অ্যাপ্রুভাল রেটিং নিয়ে হোয়াইট হাউস ছাড়বেন।
তা সত্ত্বেও ট্রাম্পের সমর্থকরা মনে করেন, তিনি ২০১৬ সালে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তার অনেকগুলিই দ্রুত রূপায়ণ করেছেন এবং পুরো ব্যবস্থাকে ঝাঁকিয়ে দিতে পেরেছেন।
মার্কিন বিচারব্যবস্থায় পরিবর্তন
ফেডারেল বিচার ব্যবস্থা নিয়ে ট্রাম্প যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, সেই উত্তরাধিকার দীর্ঘস্থায়ী হবে। ভালো হোক বা খারাপ হোক, তার প্রভাব আগামী প্রজন্মের উপর পড়বে।
তিনি সুপ্রিম কোর্টের তিনজন বিচারপতিকে নিয়োগ করেছেন, যার ফলে সর্বোচ্চ আদালতের রক্ষণশীল ঝোঁক তীব্র হবে এবং যার প্রভাব এলজিবিটি, স্বাস্থ্য, ইমিগ্রেশন, শ্রমনীতি, রিপ্রোডাকটিভ রাইটসের উপর পড়বে।
তিনি ফেডারেল কোর্টের ২০০ জন বিচারক নিয়োগ করেছেন, যাঁরা রিপাবলিকান ও রক্ষণশীলদের পক্ষে রায় দেবেন বলে ধরে নেয়া যায়।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের নড়বড়ে চার বছর
২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে থেকেই নানা কারণে বিতর্কিত ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প৷ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পরও বিতর্ক তার পিছু ছাড়েনি৷ বরং নিত্য নতুন বিতর্কে জড়িয়েছেন তিনি৷
ছবি: Nicholas Kamm/AFP
প্রেসিডেন্সির প্রথম দিনেই নারীদের প্রতিবাদ
ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন ২০১৭ সালের ২১ জানুয়ারি৷ আর সেদিনই মার্কিন রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে অনেক নারী ট্রাম্পের যৌন কেলেঙ্কারির ইস্যুতে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন৷ তার বিরুদ্ধে অন্তত ২৬ নারী যৌন নিগ্রহের অভিযোগ এনেছেন৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/J. L. Magana
সৌদি আরবে প্রথম সফর
মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রথম বিদেশ সফর ছিল সৌদি আরবে৷ ২০১৭ সালের মে মাসে রিয়াদ সামিটে অংশ নেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোয়াপারেশন (ওআইসি) এর প্রতিনিধিরা৷ সেই সামিট অবশ্য তুরষ্ক এবং ইরান বয়কট করেছিল৷
ছবি: Balkis Press/ABACA/picture alliance
পর্ন তারকার সাথে ‘সমঝোতা’
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এক প্রতিবেদনে জানায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ঠিক আগে আগে ট্রাম্পের আইনজীবী মাইকেল কোয়েন পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসের সঙ্গে এক লাখ ত্রিশহাজার মার্কিন ডলারের বিনিময়ে সমঝোতা করেছিলেন৷ সেই তারকার সঙ্গে ট্রাম্পের পরকীয়া সম্পর্ক ছিল বলে দাবি পত্রিকাটির৷
ছবি: Getty Images/E. Miller
গুরুত্বপূর্ণ পদে পরিবারের সদস্যরা
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পদে তার পরিবারের সদস্যদের নিয়োগ দেন৷ তাদের মধ্যে অন্যতম ট্রাম্প কন্যা ইভান্কা ট্রাম্প, যিনি প্রেসিডেন্টের একজন উপদেষ্টা৷
ছবি: Evan Vucci/dpa/AP
শরণার্থীদের প্রতি ‘জিরো টলারেন্স’
ট্রাম্প আশ্রয়প্রার্থীদের উপর অত্যন্ত কঠোর নীতি আরোপ করেন এবং দেশটির দক্ষিণের সীমান্ত থেকে আশ্রয়প্রার্থীদের ফিরিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন৷ শুধু তাই নয় অনেক অভিবাসী পরিবারের শিশুদেরকে জোর করে বাবামায়ের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করেন তিনি৷ তার এই নীতির সমালোচনা করেছেন অনেকে৷
ছবি: Saul Loeb/Getty Images/AFP
রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক
মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ সবচেয়ে আলোচিত ছিল তার মধ্যে অন্যতম রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক৷ অনেকেই মনে করেন ২০১৬ সালের নির্বাচনে জিততে ট্রাম্পকে সহায়তা করেছিল রাশিয়া৷ যদিও এই অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি, তবে গত চারবছর রাশিয়ার সঙ্গে মার্কিন সম্পর্ক বেশ দোদুল্যমান ছিল৷
ছবি: Looks Film
সবচেয়ে লম্বা ‘শাটডাউন’
২০১৯ অর্থবছরের বাজেটকে কেন্দ্র করে কংগ্রেসে মতানৈক্যের কারণে মার্কিন ইতিহাসের সবচেয়ে দীর্ঘ ‘ফেডারেল গভর্মেন্ট শাটডাউন’ দেখেছে হোয়াইট হাউস৷ ২০১৮ সালের ২২ ডিসেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ২৫ জানুয়ারী অবধি এই অচলাবস্থা বহাল ছিল৷
ছবি: Getty Images/AFP/B. Smialowski
উত্তর কোরিয়ায় প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট
ক্ষমতায় থাকা কোন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পই প্রথম উত্তর কোরিয়ার মাটিতে পা রাখেন৷ উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে মার্কিন সম্পর্কের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে এই সফর৷
ছবি: Reuters/K. Lamarque
তালেবানের সঙ্গে চুক্তি
দীর্ঘ চেষ্টার পর গত বছর ট্রাম্প প্রশাসন আফগানিস্তান ইস্যুতে তালেবানের সঙ্গে একটি শান্তি চুক্তি করতে সক্ষম হয়৷ এর মাধ্যমে তালেবানের সঙ্গে ১৯ বছর ধরে চলা যুদ্ধের আপাতত অবসান ঘটেছে বলে মনে করা হচ্ছে৷ তবে এই চুক্তি আফগানদের কতটা উপকারে আসবে তা নিয়ে সন্দিহান অনেক বিশেষজ্ঞ৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/H. Sayed
সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে ইসরায়েলের চুক্তি
সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে সক্ষম হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প৷ ফলে উপসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গে ইসরায়েলের এখন অর্থনৈতিক এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক তৈরি হয়েছে৷
ছবি: Reuters/T. Brenner
ইরান ইস্যুতে উল্টো নীতি
ওবামা প্রশাসন ইরানের সঙ্গে যে পরমাণু চুক্তি করেছিল, তা থেকে সরে এসেছে ট্রাম্প প্রশাসন৷ দেশটির উপর আরো নানা নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করা হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/J. Martin
11 ছবি1 | 11
জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্লোবাল সেন্টার ফর পলিটিক্যাল ম্যানেজমেন্টের অধ্যাপক ও রিসার্চ ডিরেক্টর মাইকেল কর্নফিল্ড জানিয়েছেন, ''তিনজন বিচারপতিকে নিয়োগ করার আগে ট্রাম্প ধর্মীয় রক্ষণশীল ও রিপাবলিকান পার্টির এলিটদের সঙ্গে সমঝোতায় এসেছিলেন।''
২০১৯ সালের রিপোর্ট অনুসারে, সার্কিট বিচারকের প্রতি চারজনের মধ্যে একজনকে ট্রাম্প নিয়োগ করেছেন। তিনি সেখানে মতাদর্শগতভাবে অতি রক্ষণশীলদেরই নিয়োগ করেছেন। সেটাই তাঁর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল।
প্রেসিডেন্ট হিসাবে প্রথম বছরেই ট্রাম্প কর্পোরেট কর ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২১ শতাংশ করেছিলেন। সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রেও তিনি কর কমিয়েছিলেন, তবে সেটা ছিল সাময়িক এবং কর কমানোর হারও ছিল খুবই কম।
ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে অ্যামেরিকার ধনীরা বিপুলভাবে উপকৃত হয়েছিলেন। বাড়তি অর্থ তাঁরা অবশ্য শেয়ার বাজারে লাগিয়েছেন, তা দিয়ে কর্মীদের বেতন বাড়াননি।
কংগ্রেসের বাজেট অফিসের মতে, কর ছাড়ের ফলে দশ বছর ধরে দেশের ঘাটতি হবে এক দশমিক নয় ট্রিলিয়ান ডলার। ট্রাম্প-সমালোচকদের মতে, এর ফলে বিপাকে পড়বেন, কম আয়ের মানুষ। কারণ, এই ঘাটতির মোকাবিলায় রক্ষণশীলরা সামাজিক নিরাপত্তায় অর্থ কম করার দাবি তুলবেন।
বাণিজ্যিক চুক্তি নিয়ে আবার আলোচনা
ট্রাম্পের ক্ষমতায় আসার একটা কারণ হলো, তিনি অ্যামেরিকার সঙ্গে অন্য দেশের যে বাণিজ্যিক চুক্তি আছে, তা বাতিল করা বা বদল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তিনি সেটা করেছেনও। অনেক সময় অবশ্য বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। চীনের সঙ্গে তিনি বাণিজ্যিক যুদ্ধই শুরু করে দিয়েছিলেন। অনেক সময় দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। কিন্তু বিল ক্লিন্টনের সময় নর্থ অ্যামেরিকান ফ্রি ট্রেড প্যাক্ট বাতিল করে আলোচনা করে নতুন চুক্তি করতে পেরেছিলেন। তাঁর সমালোচকরাও মেনে নিয়েছিলেন যে, নতুন চুক্তি অ্যামেরিকার জন্য ভালো।
ট্রাম্প বলেছিলেন, নাফটা হলো অ্যামেরিকার সব চেয়ে খারাপ বাণিজ্যিক চুক্তি। তার বদলে তিনি মেক্সিকো ও ক্যানাডার সঙ্গে নতুন চুক্তি করেছেন।
ট্রাম্প নেই তাই...
প্রাকৃতিক দুর্যোগে হন্ডুরাসের বড় একটা অংশ বিধ্বস্ত৷এরই মাঝে যুক্তরাষ্ট্রে নতুন জীবনের স্বপ্ন দেখছেন কিছু মানুষ৷ট্রাম্প আর প্রেসিডেন্ট থাকছেন না- এই ভরসায় তারা এখন বাইডেনের দেশের পথে৷ দেখুন ছবিঘরে...
ছবি: Jose Cabezas/REUTERS
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আহ্বান
প্রথমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানানো হয় আহ্বান৷ আহ্বানটা ছিল এমন- কষ্টের জীবন থেকে মুক্তি পেতে চলুন আমরা হেঁটে যুক্তরাষ্ট্রে যাই৷ তারপরই হন্ডুরাসের উত্তরাঞ্চলীয় শহর পেদ্রো সুলা থেকে গুয়াতেমালার দিকে যাত্রা শুরু করেন কয়েকশ’ মানুষ৷ তাদের আশা, গুয়াতেমালা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে দারিদ্র্য থেকে মুক্তি পাবেন৷
ছবি: Jose Cabezas/REUTERS
আশার আসল কারণ
এক মাস আগেও যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানো দুরুহ ছিল৷ তখনও যে ডনাল্ড ট্রাম্প সে দেশের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট! অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে একরকম যুদ্ধই ঘোষণা করছিলেন ট্রাম্প৷কিন্তু নির্বাচনে জিতে আগামী ২০ জানুয়ারি নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেবেন জো বাইডেন৷ হন্ডুরাস থেকে হেঁটে দীর্ঘ যাত্রা শুরু করা মানুষগুলোর আশা, বাইডেনের আমলে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর এবং অর্থনৈতিকভাবে উন্নত দেশটিতে যাওয়া সহজ হবে৷
ছবি: Jose Cabezas/REUTERS
নিরুপায় তারা
মাত্র দু সপ্তাহের ব্যবধানে দু-দুটো হারিকেন হানা দিয়েছে হন্ডুরাসে৷ ইটা’র পরপরই আয়োটার আঘাতে প্রাণ ঝরেছে শতাধিক মানুষের, বিধ্বস্ত হয়েছে অনেক ঘর-বাড়ি৷ হেঁটে গুয়াতেমালা সীমান্তের দিকে হাঁটতে হাঁটতে হন্ডুরাসের এক টেলিভিশন চ্যানেলকে একজন বলছিলেন, ‘‘আমরা সব হারিয়েছি৷ যুক্তরাষ্ট্রে চলে যাওয়া ছাড়া আমাদের আর উপায় নেই৷’’
ছবি: Jose Cabezas/REUTERS
করোনা-সতর্কতা
এদিকে হন্ডুরাস থেকে রওনা হওয়া অভিবাসনপ্রত্যাশীদের করোনা সংক্রমণের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছে গুয়াতেমালার অভিবাসন কর্তৃপক্ষ৷ এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, সঙ্গে করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট এবং পাসপোর্ট না থাকলে কাউকে গুয়াতেমালায় প্রবেশ করতে দেয়া হবে না৷
ছবি: Yoseph Amaya/REUTERS
আশঙ্কা ছাপিয়ে আশার হাতছানি
ইটা্ এবং আয়োটা হারিকেন গুয়াতেমালাতেও আঘাত হেনেছে৷ তারপরও গুয়াতেমালা হয়েই যুক্তরাষ্ট্রে যেতে হবে হন্ডুরাসের এই অভিবাবনপ্রত্যাশীদের৷ পথের কষ্ট, আইনের চোখরাঙানি, করোনায় মৃত্যুর আশঙ্কা সবই তাদের কাছে তুচ্ছ৷ গুয়াতেমালার সীমানা পেরিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে গেলেই যে স্বপ্নপূরণ!
ছবি: Yoseph Amaya/REUTERS
5 ছবি1 | 5
ট্রাম্পের কট্টর বিরোধী ও হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি ২০১৯-এ বলেছিলেন, নতুন বাণিজ্য চুক্তি যে নাফটার থেকে ভালো তা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই।
ট্রাম্প প্রশাসনের সাফল্যের খতিয়ান তাঁর নীতির ভিত্তিতে করা হয় না, বরং তা কীভাবে অ্যামেরিকানদের সুবিধা করে দিয়েছে এবং বাকি বিশ্বের প্রতিক্রিয়ার ভিত্তিতেই করা হয়।
ট্রাম্পের 'অ্যামেরিকা ফার্স্ট' নীতি অনেক সময়ই ধোঁয়াটে ছিল। কিন্তু তিনি এই নীতি দিয়ে বাকি বিশ্বের মনোযোগ আকর্ষণ করতে পেরেছিলেন। ২০১৫ সালে সংবাদপত্রের নিবন্ধে ওবামার পররাষ্ট্র ও বাণিজ্যিক নীতির তুমুল সমালোচনা করে, ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, তিনি ক্ষমতায় এলে অ্যামেরিকা আবার জয়ীর আসনে বসবে। সেদিক থেকে দেখতে গেলে ট্রাম্পের শাসন করার রীতি ছিল প্রথার বাইরে এবং তা নিয়ে আগে থেকে কিছু বলা যেত না।
ট্রাম্পের নীতি সত্যিই সেরকম ছিল। তিনি ২০১৭ সালে প্যারিসের ক্লাইমেট এগ্রিমেন্ট থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, এটা অ্যামেরিকার জন্য অন্যায্য। তিনি ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি থেকেও বেরিয়ে এসেছিলেন। তিনি ইসরায়েলে মার্কিন দূতাবাস তেল আভিভ থেকে জেরুসালেমে সরিয়ে নিয়েছিলেন। উত্তর কোরিয়ার ডিক্টেটর কিম জং উনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক চালু করতে চেয়েছিলেন।
সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে
ট্রাম্পের বিখ্যাত টুইটার অ্যাকাউন্ট এখন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু প্রশাসন ও প্রচারের ক্ষেত্রে কীভাবে সামাজিক মাধ্যমকে ব্যবহার করতে হয় তা ট্রাম্প দেখিয়ে দিয়েছেন। সামাজিক মাধ্যমকে ব্যবহার করে ট্রাম্প তাঁর রাজনৈতিক ব্র্যান্ড তৈরি করেছিলেন। সামাজিক মাধ্যমকে ব্যবহার করে তিনি তাঁর রাজনৈতিক বিরোধীদের আক্রমণ করেছেন, প্রশাসনিক বদলের কথা ঘোষণা করেছেন, নিজের অনুগামীদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রেখেছেন। তিনি ছিলেন টুইটার-ইন-চিফ।
অ্যামেরিকার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ কমিউনিকেশনের প্রোগ্রাম ডিরেক্টর জেসন মলিকা ডিডাব্লিউকে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট থাকার সময় ওবামা প্রথাগতভাবে সামাজিক মাধ্যমকে ব্যবহার করেছেন। কিন্তু ট্রাম্প দেখিয়ে দিয়েছেন, সামাজিক মাধ্যম সম্পর্কে তিনি কী ভাবেন।