মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের বর্ণবাদী মন্তব্য থেকে নিজেকে দূরে রাখার কথা জানিয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসউইমেন নিয়ে ট্রাম্পের মন্তব্যের কড়া সমালোচনাও করেন ম্যার্কেল৷
বিজ্ঞাপন
বার্লিনে গ্রীষ্মকালীন সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন৷
তাঁর মতে, ট্রাম্পের ওই মন্তব্য অ্যামেরিকার মূল্যবোধের পরিপন্থী৷ একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘‘যে নারীদের কটাক্ষ করে ট্রাম্প মন্তব্য করেছেন, তাঁদের প্রতি সংহতি জানাচ্ছি৷’’
বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর অবদান এবং ত্যাগের মধ্য দিয়েই অ্যামেরিকা তার শক্তি অর্জন করেছে বলেও জানান জার্মান চ্যান্সেলর৷ কিন্তু দেশটির প্রেসিডেন্টের বক্তব্য দেশটির শক্তিমত্তারও পরিপন্থী৷
এর মধ্য দিয়ে, ট্রাম্পের সমালোচনায় বিশ্বের অন্য নেতাদের সঙ্গে কণ্ঠ মেলালেন জার্মান চ্যান্সেলর৷ কদিন আগে, ডেমোক্র্যাটিক পার্টির কংগ্রেসউইমেনদের উদ্দেশ্য করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্যুইটারে লিখেছেন, যেখান থেকে তাঁরা এসেছেন, সেখানে যেন তাঁরা ফিরে যান৷ এমনকি, সেখানকার সমস্যা সমাধানের পরামর্শও দিয়েছেন ট্রাম্প৷
শিল্পীর চোখে ম্যার্কেল
বিশ্বের ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের তালিকা প্রথম সারির একজন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ বুধবার ৬৫ বছর পূর্ণ করেছেন তিনি৷ জন্মদিনে দেখে নিন, কীভাবে শিল্পের তুলিতে ধরা পড়েছেন ম্যার্কেল৷
ছবি: Elizabeth Peyton
বিবর্তন
‘ক্ষমতার পদচিহ্ন‘ নামের সিরিজে আঙ্গেলা ম্যার্কেল, সাবেক চ্যান্সেলর গেরার্ড শ্র্যুডার ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইওশকা ফিশারকে তুলে ধরেছেন আলোকচিত্রী হেরলিন্ডে কোয়েলব্ল ৷ ছবি ও সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে রাজনীতিকদের বিবর্তন তুলে ধরেছেন তিনি৷
ছবি: Herlinde Koelbl
পপ আইকন
ভগ ম্যাগাজিনের জন্য ২০১৭ সালে ম্যার্কেলের এই চিত্রটি এঁকেছেন মার্কিন চিত্রশিল্পী এলিজাবেথ পেইটন৷ যৌবনের ছাপ রাখা ছবিতে তাঁর দৃঢ়তাকে তুলে ধরতে চেয়েছেন শিল্পী৷ ম্যার্কেলের ৩০ বছরের রাজনৈতিক জীবনের কয়েকশ’ ছবি থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ছবিটি আঁকা হয়েছে৷
ছবি: Elizabeth Peyton
মানবিকতা
২০১৫ সালে এভাবে টাইম ম্যাগাজিনের পারসন অব দ্য ইয়ার সংখ্যার প্রচ্ছদে স্থান পান আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ ছবির শিল্পী কলিন ডেভিডসন বলেন, ‘‘তাঁকে শান্ত ও নরম মনের মানুষ হিসাবে দেখানো হয়েছে, শরণার্থীদের প্রতি তাঁর মানবিক অবস্থানের কারণে৷’’ সেসময় ইউরোপের ঋণ এবং শরণার্থী সংকটে মানবিকতার হাত প্রসারিত করেছিলেন ম্যার্কেল৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/Time Magazine
অবসাদ
ডাচ শিল্পী এরিক ফন লিশাউটের তুলিতে এভাবে ধরা দিয়েছেন অবসাদগ্রস্ত ও বিষন্ন ম্যার্কেল৷ বন শহরের সমসায়মিক চিত্রকর্মের সংগ্রহশালা সংগ্রহ করেছে এ চিত্রটি৷ ফন লিশাউট বলেছেন, প্রতিকৃতিটি আঁকতে মাত্র এক ঘন্টা সময় নিলেও লাল লিপিস্টিকে অন্যরকমভাবে ফুটে উঠেছেন জার্মান চ্যান্সেলর৷
ছবি: Erik van Lieshout
জর্জ ডাব্লিউ বুশের তুলিতে
কেবল প্রখ্যাত শিল্পীদের নয়, শখের বশে চিত্রকরদের তুলিতে ধরা পড়েছেন ম্যার্কেল৷ সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ বুশ তুলিতে যে ত্রিশ বিশ্বনেতার ছবি এঁকেছেন, তাঁদের একজন ম্যার্কেল৷
ছবি: picture-alliance/dpa/L. W. Smith
রাজনীতির দেয়ালচিত্র
দক্ষিণ অ্যামেরিকার রাজনৈতিক বক্তব্য সম্বলিত ম্যুরালটি এঁকেছেন ইটালিয়ান শিল্পী ইয়ুপিতারফাব৷ চিত্রটিতে গ্রীসের প্রধানমন্ত্রী অ্যালেক্সিস সিপ্রাসের সঙ্গে অন্তরঙ্গ হতে দেখা যায় ম্যার্কেলকে৷
ছবি: picture-alliance/NurPhoto/G. Georgiou
রম্যচিত্র
আর্ট জাদুঘরের সংগ্রহশালার অন্যতম অনুষঙ্গ রাজনৈতিক রম্যচিত্র৷ এই ছবিতে উলঙ্গ ম্যার্কেলে কোলে উঠে পড়েছেন নেপোলিয়ান হ্যাট পড়া সাবেক ফরাসি প্রেসিডেন্ট সারকোজি৷ এঁকেছেন ব্রিটিশ শিল্পী ও রম্যলেখক কায়া মার৷
ছবি: picture-alliance/Photoshot/B. Strenske
সংলাপ
বুলেগিরার স্টারো জেলেজারে গ্রামে এই দেয়ালচিত্রটি এঁকেছেন চারুকলার শিক্ষার্থীরা৷ স্থানীয় বাসিন্দাদের ছবি দিয়ে দেয়ালচিত্রটির সূচনা হলেও পরে ম্যার্কেলের মতো রাজনীতিকদের সেখানে অন্তর্ভূক্ত করা হয়৷ সাধারণ মানুষের সঙ্গে ম্যার্কেলের সংলাপ দেখানো হয় তাতে৷
ছবি: picture-alliance/NurPhoto/H. Rusev
প্রতিবাদ
প্রতিবাদী অনেক ভাস্কর্যে বিকৃতভাবে ম্যার্কেল উপস্থাপন করা হয়েছে ম্যার্কেলকে৷ ‘ইউরোপিয়ান সিটিজেনশিপ‘ শিরোনামের ভাস্কর্যে ম্যার্কেলকে তুলে ধরা হয়েছিল মুণ্ডুহীন৷ উপরের ছবিটি ‘ট্রানজিট‘ নামক ইনস্টলেশনের, যেখানে দুই হাজার ৬০০ জনের একজন ম্যার্কেল৷
ছবি: Courtesy Georg Korner
হিপস্টার
‘হিপস্টোরি’ নামের সিরিজে ক্ষমতাবান ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের তরুন হিপস্টার হিসাবে তুলে ধরার চেষ্টা চালিয়েছেন ইসরায়েলি ইলুস্ট্রেটর আমিত শিমোনি৷ হাওয়াইয়ান শার্ট পড়া ট্রাম্প আর উঁচু খোপার ওবামার সঙ্গে ম্যার্কেল আছে সেখানে৷ কালো হ্যাট আর লিপিস্টিক পড়া ম্যার্কেলকে এভাবে হিপস্টার বানিয়েছেন শিমোনি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Kappeler
ব্যঙ্গচিত্র
কুঁচকানো চোখ আর মুখসমেত ম্যার্কেলের ছবিও কম আঁকা হয়নি৷ জার্মানির বাইরের বহু গণমাধ্যমেও এমন সব চিত্রায়ন দেশ ছাড়িয়ে তাঁর বিশ্বনেতা হওয়ার প্রমাণ বহন করে৷
11 ছবি1 | 11
কংগ্রেসউইমেনদের সবার জন্ম যুক্তরাষ্ট্রে হওয়ার পরেও ট্রাম্পের এমন বক্তব্যকে বর্ণবাদী আচরণ হিসেবে দেখা হচ্ছে৷ যদিও এমন অভিযোগ অস্বীকার করে ট্রাম্প বলেছেন, তার শরীরে বর্ণবাদের কোনো হাড় নেই৷
স্বাস্থ্যের হালচাল
সংবাদ সম্মেলনে উঠে আসে আঙ্গেলা ম্যার্কেলের স্বাস্থ্য প্রসঙ্গটি৷ বিগত কিছু দিনের মধ্যে ম্যার্কেলকে তিনবার কাঁপতে দেখা গেছে৷ এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আমি বুঝতে পারছি আমার শারীরিক অবস্থা নিয়ে জানতে চান, আমি কিন্তু উত্তর দিয়েছি৷’’
তিনি বলেন, ‘‘সরকারপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনে আমি নিজের কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ৷ এখন আমি শুধু একটা কথা বলতে চাই, আপনারা যদি একটা মুহূর্তের জন্যও আমাকে বুঝে থাকেন, তাহলে আমি আমার কাজটি করতে পারবো৷’’
কদিন আগে ৬৫ পুরো করা ম্যার্কেল বলেন, ‘‘২০২১ সালে রাজনৈতিক জীবনের সমাপ্তি টানবো৷ কিন্তু আমি তখনো সুস্থ থাকতে চাই, সুস্থভাবে চলতে চাই৷’’