ট্রাম্পের 'বিগ বিউটিফুল বিল' কী প্রভাব ফেলবে অ্যামেরিকায়?
৩ জুলাই ২০২৫
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বড় রাজনৈতিক জয় পেলেন বলাই যেতে পারে। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর 'বিগ বিউটিফুল বিল' পাশ করানোর ব্যাপারে সেনেটরদের উপর চাপ দিচ্ছিলেন তিনি। ৪ জুলাইয়ের মধ্যে বিলটি পাশ করাতে চাইছিলেন তিনি। শেষপর্যন্ত সেই লক্ষ্য পূরণ হয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্টের। কিন্তু নতুন এই বিতর্কিত বিল নিয়ে তার নিজের দলের মধ্যেই প্রশ্ন আছে।
জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক বিশ্লেষক পিটার লোগ ডিডাব্লিউকে বলেছেন, ''একটি বড় অংশের মানুষ এই বিলের বিরোধিতা করছেন কারণ, নতুন আইনে অ্যামেরিকানদের চিকিৎসা এবং সামাজিক নিরাপত্তার উপর সরকারের যে ব্যয় ছিল তা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।''
কী আছে নতুন বিলে?
দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হওয়ার লড়াইয়ে নেমে নির্বাচনি প্রচারে বার বার এই বিলের কথা বলেছেন ট্রাম্প। জানিয়েছেন, ক্ষমতায় এলেই তিনি এই বিল বাস্তবায়িত করবেন। অবশেষে তা সম্ভব হলো। স্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তা খাতে ব্যয় সংকোচ করার পাশাপাশি এই বিলে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী এবং অভিবাবসনপ্রত্যাশীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করার অধিকার দেওয়া হয়েছে। জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বাড়ানোর ব্যাপারেও এই বিলে বিপুল অর্থ ধার্ষ করা হয়েছে। পাশাপাশি সামরিক খাতে ব্যয় বাড়ানোর কথাও বলা হয়েছে এই বিলে।
প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমলে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এই বিলে সেই সিদ্ধান্তগুলিকে রদ করে দিচ্ছে।
অবৈধ অনুপ্রবেশ বন্ধের যে প্রকল্প ট্রাম্প গ্রহণ করেছেন, তাতে ব্যয় করা হবে ১৭৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। মেক্সিকোয় সীমান্ত পাঁচিল তৈরিতেও এই অর্থ খরচ হবে বলে জানানো হয়েছে। সীমান্তে পুলিশের সংখ্যা বাড়ানো হবে বলেও জানিয়েছেন ট্রাম্প। সামরিক খাতে ব্যয় করা হবে ১৫৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে মিসাইল এবং যুদ্ধ জাহাজ তৈরিতে। পরমাণু অস্ত্র তৈরিতেও বেশ কিছু অর্থ ব্যয় করা হবে বলে জানা গেছে।
তবে পরিবেশবিদেরা সবচেয়ে বেশি চিন্তিত জীবাশ্ম জ্বালানি নিয়ে। প্রচারে ট্রাম্প একটি কথা বার বার বলেছেন, 'ড্রিল বেবি ড্রিল'। অর্থাৎ, নতুন করে খনিজ তেল উত্তোলন শুরু করতে হবে। এই বিলে সেই খাতে ব্যয় ধার্য করা হয়েছে। তোলা হবে প্রাকৃতিক গ্যাসও। এর আগে বিকল্প শক্তির জন্য সরকার যে অর্থ ব্যয় করেছিল, তা বদলে দেওয়ার নীতি নিয়েছেনট্রাম্প। ইলেকট্রিক গাড়িতে ছাড় বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।
বিলের বিরোধিতা
ট্রাম্পের একসময়ের বন্ধু ইলন মাস্ক থেকে রিপাবলিকান দলের একাধিক সদস্য এই বিলের বিরোধিতা করছেন। তাদের অভিযোগ, ট্রাম্প মার্কিন অর্থনীতিকে খাদের ধারে নিয়ে গিয়ে দাঁড় করাচ্ছেন। এর ফলে যে কোনো সময় বিপর্যয় ঘটতে পারে। পাশাপাশি যেভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়গুলিকে উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, তা নিয়েও বহু বিশেষজ্ঞ আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে দেশের ভিতর।
ম্যাথিউ ওয়ার্ড অ্যাগিয়াস/এসজি