ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নির্বাচনের ফল পাল্টানোর মামলা স্থগিত
৬ জুন ২০২৪
২০২০ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের নির্বাচনের ফল পাল্টানোর ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ আনা হয়েছে ডনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে৷ বুধবার এই মামলা স্থগিত করার রায় দিয়েছেন জর্জিয়ার আপিল আদালত৷
বিজ্ঞাপন
জর্জিয়ার ফুল্টন কাউন্টির ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি ফানি উইলিস ট্রাম্প ও তার কয়েকজন সহযোগীর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ এনেছিলেন এবং মামলায় কাজ করার জন্য নেথান ওয়েডকে স্পেশাল প্রসিকিউটর নিয়োগ দিয়েছিলেন৷
কিন্তু গত মার্চ মাসে ট্রাম্পের আইনজীবীরা অভিযোগ করেন, ওয়েডের সঙ্গে উইলিসের ভালোবাসার সম্পর্ক রয়েছে৷ সে কারণে এই মামলা থেকে উইলিসকে সরিয়ে দেওয়ার আবেদন করেছিলেন তারা৷
তবে ফুল্টন কাউন্টির সুপিরিয়র কোর্ট জাজ স্কট ম্যাকাফি রায় দিয়ে বলেছিলেন, উইলিস মামলা চালিয়ে যেতে পারবেন৷ অবশ্য ম্যাকাফি এও বলেন, চাইলে ট্রাম্পের আইনজীবীরা তার দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে জর্জিয়ার আপিল আদালতে যেতে পারেন৷ এই আপিল আদালতই বুধবার ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনা ফৌজদারি মামলার কার্যক্রম স্থগিতের আদেশ দেন৷ কারণ, এই সময়ে আপিল আদালত ম্যাকাফির দেওয়া রায় রিভিউ করতে চেয়েছেন৷
আপিল আদালত যুক্তিতর্ক শোনার জন্য ৪ অক্টোবর দিন ধার্য করেছেন৷ এরপর রায় দেওয়ার জন্য আদালত আগামী বছরের মার্চের মাঝামাঝি পর্যন্ত সময় পাবেন৷ তার আগে নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনু্ষ্ঠিত হবে৷ অর্থাৎ, নির্বাচনের আগে এই মামলার রায় হচ্ছে না৷
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনা চারটি ফৌজদারি মামলার একটি ছিল এটি৷
এর আগে ৩০ মে নিউ ইয়র্কের এক আদালত অ্যামেরিকার প্রথম সাবেক প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পকে ফৌজদারি আরেক মামলায় দোষী সাব্যস্ত করেন৷ ১১ জুলাই সাজা ঘোষণা করা হবে৷ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনা ৩৪টি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয় তাকে৷ ব্যবসার নথিপত্র গোপন করে স্টর্মি ড্যানিয়েল্স নামের অতীতের এক পর্ন তারকার মুখ বন্ধ করতে ট্রাম্প অন্যায় করেছেন বলে জুরির সব সদস্য একযোগে তাকে দোষী হিসেবে গণ্য করেন৷ ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ঠিক আগে ট্রাম্প এমন কুকীর্তি করেছিলেন বলে আদালতে অভিযোগ করা হয়েছিল৷
পর্ন তারকার তথ্য গোপন-কাণ্ডে আদালতে ট্রাম্পের একদিন
মুখ বন্ধ রাখতে সাবেক পর্ন তারকাকে ঘুস দেয়ার অভিযোগে মামলা হয়েছিল আগেই৷ যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম সাবেক প্রেসিডেন্ট হিসেবে ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত ডনাল্ড ট্রাম্প সেই মামলার শুনানিতে আদালতে গিয়েছিলেন মলিন মুখে...
ছবি: Yuki Iwamura/via REUTERS
ট্রাম্প টাওয়ার থেকে আদালতের পথে
সাবেক পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলকে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে সেই তথ্য গোপন রাখার অভিযোগের মামলায় সোমবার আদালতে যান ডনাল্ড ট্রাম্প৷ ছবিতে ম্যানহাটনের আদালতের উদ্দেশ্যে ট্রাম্প টাওয়ার থেকে বের হতে দেখা যাচ্ছে তাকে৷
ছবি: Stefan Jeremiah/AP/dpa/picture alliance
আদালতে ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ ২০১৬-র প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে যৌন সম্পর্কের কথা গোপন রাখতে পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার ঘুস দিয়েছিলেন৷ পুরো বিষয়টি গোপন রাখতে ব্যবসায়িক তথ্য সংরক্ষণে জালিয়াতির অভিযোগও আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে৷ ছবিতে আইনজীবী টড ব্ল্যাঞ্জের সঙ্গে ম্যানহাটন ক্রিমিনাল কোর্টে প্রবেশ করতে দেখা যাচ্ছে তাকে৷
ছবি: Victor J. Blue/Pool/Getty Images
শান্ত, নীরব ট্রাম্প
২০১৬-র নির্বাচনের আগে স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে তথ্য গোপনের জন্য বিপুল অঙ্কের অর্থ দিয়ে থাকলেও তখন তার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ ওঠেনি৷ বরং সেই নির্বাচনে জিতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘটনাবহুল এক মেয়াদ পূর্ণ করেছিলেন৷ তার বিরুদ্ধে প্রথমে গোপনে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ তোলেন নিউ ইউয়র্কের ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি অ্যালভিন ব্র্যাগ৷ ছবিতে ম্যানহাটনের ফৌজদারি আদালতে নীরব শ্রোতা ট্রাম্প৷
ছবি: Brendan McDermid/REUTERS
সাংবাদিকদের মুখোমুখি
স্টর্মি ড্যানিয়েলসের সঙ্গে যৌন সম্পর্কের বিষয়টি গোপন রাখতে তাকে এক লাখ ৩০ হাজার ডলার দেয়ার অভিযোগ প্রথম থেকেই অস্বীকার করে আসছেন ট্রাম্প৷ সোমবার আইনজীবীও যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্টকে নির্দোষ প্রমাণের জন্য তথ্য এবং যুক্তি উপস্থাপন করেন৷ ছবিতে সোমবারের শুনানি শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি ট্রাম্প৷
ছবি: Victor J. Blue/Pool/Getty Images
পাল্টা অভিযোগ
মামলাটিকে প্রথম থেকেই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মনে করছেন ডনাল্ড ট্রাম্প৷ আগামী নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে আবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন৷ সেই নির্বাচনে আবার রিপাব্লিকান দলের প্রার্থী ট্রাম্প৷ নির্বাচনি প্রচারণায় ভীষণ ব্যস্ত থাকার সময়েই আদালতে হাজিরা দিতে হলো তাকে৷ এ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন ৭৭ বছর বয়সি ট্রাম্প৷
ছবি: Yuki Iwamura/via REUTERS
মামলার সম্ভাব্য পরিণাম
মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে সর্বোচ্চ চার বছরের কারাদণ্ড হতে পারে৷ তবে জরিমানা দিয়ে কারাবাস এড়ানোর সুযোগও পেতে পারেন ডনাল্ড ট্রাম্প৷