যতই বিতর্কিত হোক, নিজের অবস্থানে অনড় থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর শুভবুদ্ধি সম্পর্কে ক্ষীণ আশার আলোও নিভিয়ে দিলেন৷ প্রতিশ্রুতি দিলেন, বেআইনি অভিবাসীদের বিরুদ্ধে তিনি আপোশহীন থাকবেন৷
বিজ্ঞাপন
রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যতই সমালোচনার ঝড় উঠুক না কেন, মৌলিক বিষয়গুলির ক্ষেত্রে তিনি যে এখনো পর্যন্ত অনড় রয়েছেন, নিন্দুকেরাও তা স্বীকার করতে বাধ্য৷ ফলে সামান্য সংখ্যক যে সব মানুষ এখনো তাঁর চিত্তশুদ্ধির আশা করেন, তাঁদের সংখ্যা কমে চলেছে৷ মেক্সিকোর প্রেসিডেন্টের আমন্ত্রণে সে দেশে গিয়ে আলোচনার পরেও ট্রাম্প সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবে বেআইনি অভিবাসনের বিরুদ্ধে তিনি আপোশহীন সংগ্রাম চালাবেন৷ অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে তিনি মেক্সিকো সীমান্তে প্রাচীর গড়ে তোলার প্রস্তাব প্রত্যাহার করেননি৷ মেক্সিকো-কেই সেই প্রাচীরে ব্যয় বহন করতে হবে, এমন হুঁশিয়ারি থেকে সরে আসেননি৷
মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট এনরিকে পেনা নিয়েতো বেশ ফাঁপরে পড়েছেন৷ তিনি ভেবেছিলেন, ট্রাম্পকে আমন্ত্রণ করে তাঁর সঙ্গে সরাসরি কথা বললে সুর হয়তো কিছুটা নরম হবে৷ রিপাবলিকান পদপ্রার্থীকে আমন্ত্রণ করে প্রেসিডেন্ট নিজের দেশে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন৷ ট্রাম্প বিদায় নেবার পর সেই সমালোচনার মাত্রা আরও বেড়ে গেল৷ সফরের পর প্রেসিডেন্ট নিয়েতো ট্রাম্পকে হিটলার ও মুসোলিনির সঙ্গে তুলনা করেন৷
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আগামী নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অভিবাসন একটা বড় বিষয় হয়ে উঠেছে৷ ডেমোক্র্যাট দলে তাঁর প্রতিপক্ষ হিলারি ক্লিন্টনকে এ ক্ষেত্রে নরমপন্থি হিসেবে তুলে ধরে ট্রাম্প সীমান্তে অনুপ্রবেশ ও বেআইনি অভিবাসন বন্ধ করতে ১০ দফার এক পরিকল্পনা তুলে ধরেছেন৷
Trump returns to hardline position on illegal immigration
01:24
মেক্সিকো থেকে ফিরে অ্যারিজোনা রাজ্যে এক জনসভায় তিনি বলেন, থেকে থেকে সাধারণ ক্ষমার মাধ্যমে বেআইনি অভিবাসনকে কার্যত যেভাবে উৎসাহ দেওয়া হয়ে চলেছে, সেই নীতি বন্ধ করবেন৷ এমন সব মানুষ কখনো অ্যামেরিকায় আইনি বৈধতা ও নাগরিকত্ব পেতে পারবেনা৷ এমনকি প্রায় ১ কোটি ১০ লক্ষ বেআইনি অভিবাসীকে দেশ থেকে বিতাড়নের প্রস্তাবও দিয়েছেন তিনি৷ এই সব মানুষকে ট্রাম্প অপরাধী, ধর্ষণকারী ইত্যাদি তকমা দিয়ে থাকেন৷
ট্রাম্পের মেক্সিকো সফরের তুমুল সমালোচনা করেছেন হিলারি ক্লিন্টন৷ সে দেশে গিয়ে ট্রাম্প পরিণত নেতা হিসেবে নিজেকে তুলে ধরার চেষ্টা করলেও দেশে ফিরেই বিষোদগার শুরু করে দিয়েছেন৷ তাছাড়া প্রস্তাবিত সীমান্ত প্রাচীরের ব্যয়ভার নিয়ে আলোচনা হয়নি, ট্রাম্পের এই দাবিকে মিথ্যা বলে চ্যালেঞ্জ করেছেন ক্লিন্টন৷
ডোনাল্ড ট্রাম্পের মজার ৯টি উক্তি
ট্রাম্পকে পছন্দ বা অপছন্দ যা-ই করুন, তিনি যে পুরোদস্তুর একজন এন্টারটেইনার বা বিনোদনকারী তা আপনিও হয়ত মানবেন৷ এবার ছবিঘরে থাকছে তার অদ্ভুত ও মজার কিছু উক্তি৷
ছবি: Getty Images/B. Pugliano
৭/১১?
‘‘আমি ওখানেই ছিলাম, আমি দেখছিলাম পুলিশ আর দমকলবাহিনী ছোটাছুটি করছে৷ ৭/১১ এ ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার বিধ্বস্ত হওয়ার ঠিক পর মুহূর্তের ঘটনা৷’’ ট্রাম্প আসলে ৯/১১-র কথা বলতে গিয়ে ভুল তারিখ বলেছিলেন৷
ছবি: Reuters/C. Allegri
গোপনাঙ্গের ইঙ্গিত
‘‘এই হাতগুলোর দিকে তাকান, এগুলো ছোট? (রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বী মার্কোর উদ্দেশে) সে বলেছে, যেহেতু আমার হাতগুলো ছোট, তাই অন্য অঙ্গগুলোও ছোট৷ কিন্তু আমি বলছি, না, সেখানে কোনো সমস্যা নেই৷’’ (আসলে ট্রাম্প এখানে পুরুষাঙ্গ বোঝাতে চেয়েছেন৷)
ছবি: Reuters/M. Segar
অন্যের স্ত্রীর ঢাক পেটানো
প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী টেড ক্রুজের উদ্দেশ্যে টুইটারে: ‘‘টেড আমার স্ত্রী মেলানিয়ার একটি ছবি তার প্রচারণায় ব্যবহার করেছেন৷ সাবধান টেড, আমিও তোমার স্ত্রীর ঢাক পেটাতে পারি৷’’
ছবি: Reuters/M. Segar
মেয়ে
‘‘ইভাঙ্কা যদি আমার মেয়ে না হতো তাহলে আমি তার সঙ্গে হয়ত প্রেম করতাম৷’’ ইভাঙ্কা ট্রাম্পের বয়স ৩৪ বছর৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/J. Scott Applewhite
হিলারির স্বামী সন্তুষ্টি
‘‘হিলারি যেখানে নিজের স্বামীকে সন্তুষ্ট করতে পারে না, সেখানে পুরো অ্যামেরিকার জনগণকে কীভাবে সন্তুষ্ট করবেন?’’ ট্রাম্পের ইশারা বিল ক্লিনটন আর মনিকার সেই স্ক্যান্ডালের প্রতি৷
ছবি: DW/R. Spina
হিলারি প্রসঙ্গ
‘‘হিলারি ক্লিনটনের জনপ্রিয়তা আসলে ‘নারী’ স্ট্যাম্প এর জন্য৷ সত্যি কথা হলো, তিনি যা অঙ্গীকার করছেন, তার কিছুই দিতে পারবেন না৷ যদি হিলারি পুরুষ হতেন, তাহলে ৫ ভাগও ভোট পেতেন না৷ তিনি নারী বলেই এত ভোট পাচ্ছেন৷ আর মজার ব্যাপার হলো, নারীরা তাকে একদম পছন্দ করেন না৷’’
ছবি: Getty Images/S. Platt
বারাক ওবামার জন্মনিবন্ধন জাল
‘‘একটা গুরুত্বপূর্ণ সূত্র জানিয়েছে, বারাক ওবামার জন্ম নিবন্ধন আসলে জাল-’’ ট্রাম্পের উদ্দেশ্য ওবামার জন্ম যে যুক্তরাষ্ট্রে নয় তা খুঁজে বের করা এবং মানুষকে জানানো৷
ছবি: Getty Images/J.-J. Mitchell
ট্রাম্পের আইকিউ
‘‘আমার আইকিউ সাধারণের চেয়ে অনেক বেশি৷ দুঃখিত, এ নিয়ে আপনাদের দুঃখ পাওয়ার কিছু নেই, কারণ, এতে আপনাদের কোনো হাত নেই৷’’
ছবি: picture alliance/AP Photo/E. Vucci
মেক্সিকোর মানুষ
‘‘যখন মেক্সিকো যুক্তরাষ্ট্রে মানুষ পাঠায়, তারা তাদের সেরা মানুষদের পাঠায় না৷ এমন মানুষদের পাঠায় যাদের সমস্যা রয়েছে আর সেই সমস্যাগুলো তারা আমাদের উপর চাপিয়ে দেয়৷ সেইসব মানুষ মাদক আনে, অপরাধ আনে, পাশাপাশি তারা ধর্ষক৷ কেবল অল্প কয়েকজন ভালো মানুষ৷’’