‘ট্রাম্প ট্যারিফ' কি শুধুই বাণিজ্যযুদ্ধের পদধ্বনি?
কিংবা বলা ভালো, হতেই হবে। কেননা, এ দিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প নয়া এক সংকটের সামনে দাঁড় করিয়ে দেন গোটা বিশ্বকে। এ সংকটের মধ্যে ‘যুদ্ধ'ও আছে, যার ডাকনাম ‘বাণিজ্যযুদ্ধ'। সেই অর্থে স্থল, জল ও আকাশপথে ধুন্ধুমার যুদ্ধ বাধিয়ে বসেননি বটে, দুনিয়ার সবচেয়ে ক্ষমতাধর এই প্রেসিডেন্ট, তবে তিনি রীতিমতো বিশ্ববাণিজ্যের ভিত নাড়িয়ে দেন! তাঁর ঘোষিত পাল্টা শুল্ক বিশ্বের বড়, মাঝারি, ছোট— সব কিসিমের দেশকে ফেলে দেয় বাণিজ্যের বিপুল ক্ষতির আশঙ্কার মুখে, যার তাৎক্ষণিক প্রভাব পড়ে বিশ্বজুড়ে শেয়ার বাজারে। শুল্ক-ঝড়ে সূচকে নামে বিরাট ধস।
‘ট্রাম্প ট্যারিফ' নামে খ্যাতি পাওয়া এই শুল্ক আরোপের প্রতিক্রিয়ায় এরই মধ্যে বিভিন্ন দেশ বিভিন্ন সুরে কথা বলেছে। কারো বা স্বর কোমল, কারো চড়া, কারোটায় ‘যুদ্ধাংদেহী' মেজাজের ছাপ।
তবে এক সপ্তাহের মাথায় ৯ এপ্রিল বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর আরোপিত পাল্টা শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প। যদিও এ সময়ে পাল্টা শুল্ক ন্যূনতম ১০ শতাংশ হারে কার্যকর হবে।
এ ঘোষণাকে বলা যেতে পারে মন্দের মধ্যে অনেকটাই ভালো। এতে করে বিশ্বব্যাপী যে স্বস্তি ফিরে এসেছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু অস্বস্তির একটা কাঁটাও কিন্তু বিঁধে থাকল। সব দেশের ক্ষেত্রে এক নিয়ম প্রযোজ্য হলেও চীনের জন্য ‘ভিন্ন' পথে চলার কথা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট, যার সহজ অর্থ দাঁড়াচ্ছে ‘দ্বৈরথ'। তাই এ বাণিজ্যযুদ্ধের পোশাকি নাম হতে পারে ‘চীন-বধ'!
অতিবৃহৎ অর্থনৈতিক শক্তিগুলোর মধ্যে চীন ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কের জবাবে বেছে নিয়েছে ‘প্রত্যাঘাতের পথ'। ট্রাম্পও ‘দ্বিগুণ' আঘাতের জন্য যে প্রস্তুত, তা নিয়ে এতটুকু রাখঢাক রাখেননি নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে। সেখানে চীনের পণ্যে শুল্ক বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করার কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন, ‘‘বিশ্বের বাজারগুলোর প্রতি চীন শ্রদ্ধার ঘাটতি আছে।''
এমন নয় যে শুধু চীন একাই ট্রাম্পের শুল্কারোপের জবাবে পাল্টা পদক্ষেপ নিয়েছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নও কিন্তু যুদ্ধের প্রস্তুতি হিসেবে আস্তিন গুটিয়েছে, অবশ্য একই সঙ্গে তারা আলোচনার দরজা খোলা রেখেই মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়িয়েছে। একই পথে হেঁটেছিল মেক্সিকো ও কানাডাও। তবে এরা সবাই ‘ছাড়' পেয়েছে, এক চীন রইলো যুক্তরাষ্ট্রের তিরের নিশানায়।
অবশ্য চীন একলাফে মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক ৫০ শতাংশ বাড়িয়ে ৮৪ শতাংশ করেছে। এতে বেজায় চটেন ট্রাম্প। ৮ এপ্রিল রাতেই জানা যায়, চীনের পাল্টা শুল্ক আরোপে খেপে গিয়ে ট্রাম্প দেশটির পণ্যে শুল্ক বাড়িয়ে ১০৪ শতাংশ করেছেন। এরপর বাড়ালেন আরো ২১ শতাংশ। সব মিলিয়ে ১২৫ শতাংশ। কিন্তু ১০ এপ্রিল হোয়াইট হাউস জানায়, চীনের প্রায় সব পণ্যের ওপর মোট শুল্কের পরিমাণ হবে ১৪৫ শতাংশ। কেননা, আগে থেকেই ফেন্টানিল (একধরনের প্রাণঘাতী সিনথেটিক মাদক) উৎপাদনকারী দেশগুলোর ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। সেই শুল্কও এর সঙ্গে যুক্ত হবে। অর্থাৎ ১০ এপ্রিল থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ১০০ ডলারের চীনা পণ্য ঢুকতে শুল্ক দিতে হচ্ছে ১৪৫ ডলার।
২.
‘হঠকারী হারে' আরোপ করা শুল্ক ৯০ দিনের জন্য ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার বিষয়ে ট্রাম্পের ঘোষণা দেওয়ার পরপরই হোয়াইট হাউসের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট। সেখানে তিনি বলেন, যেসব দেশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করেনি, সেসব দেশকে পুরস্কৃত করা হবে। তিনি একে অবশ্য ‘বাণিজ্যযুদ্ধ' বলতে নারাজ। ‘অবশ্য চীন একে উসকে দিয়েছে' বলে মন্তব্য করে মার্কিন অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘‘এই স্থগিতাদেশ আলোচনার জন্য আমাদের সময় দেবে। আরো দেশ যোগাযোগ করবে বলে আশা করছি।''
ট্রাম্পও জানান, ৭৫টির বেশি দেশ মার্কিন প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। দেশগুলো বাণিজ্য, বাণিজ্য বাধা, শুল্ক, মুদ্রার মান নিয়ে কারসাজি, অশুল্ক বাধাসংক্রান্ত বিষয়ে সমঝোতা চায়। তারা আলোচনার অনুরোধ জানিয়েছে।
৩.
মার্কিন পণ্যের ওপর চীনের বর্ধিত শুল্কও ১০ এপ্রিল থেকে কার্যকর হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ককে ‘নিপীড়নমূলক' অভিহিত করে তারা পাল্টা এ পদক্ষেপ নেয়। তবে চীনের কাছ থেকে ‘ইটের বদলে পাটকেল খেয়ে' ট্রাম্প যে কতটা চটেছেন, তার আন্দাজ পাওয়া যায় হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারোলাইন লেভিটের বক্তব্যে। এক সংবাদ
সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘‘ট্রাম্প চীনের ওপর শুল্ক বাড়িয়েছেন। কারণ, আপনি যখন যুক্তরাষ্ট্রকে আঘাত করবেন, তখন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পাল্টা আরও কঠিন আঘাত করতে যাবেন।''
ট্রাম্পের এমন মনোভাবে স্পষ্ট তিনি নিজেকে দুনিয়ার একমাত্র ‘মোড়ল' ভাবছেন। তাঁর কথার বাইরে কিছু হবে না, তা যতই অবিবেচনাপ্রসূত বা হঠকারীই হোক না কেন! কিন্তু আজকের বিশ্বায়িত জামানায় তা কতটা বাস্তবসম্মত? আর্থিক সক্ষমতা, প্রযুক্তির ঢাল আর সামরিক শক্তিমত্তায় যা খুশি তা করাই কি তবে ‘পোস্ট-ট্রুথ' এই সময়ের চল ও চলন? যেমনটা দেখা যাচ্ছে গাজার ক্ষেত্রে। মানবতা, মৌলিক অধিকার, ন্যায়, শান্তি—এসব পায়ে দলে ইসরায়েল সেখানে লাগাতার তাণ্ডব চালাচ্ছে। এতে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের সায় নেই, এ কথা পাগলেও বিশ্বাস করে না। এমন উদাহরণের কমতি নেই, যা সভ্যতার ধারণাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে।
৪.
যুক্তরাষ্ট্রের ওপর অতি-নির্ভরশীল ছোট দেশগুলো বশ্যতা স্বীকার করে নিয়েছিল। দ্বিধায় পড়ে যায় ভারতের মতো অতিবর্ধনশীল অর্থনীতির দেশগুলো। কেননা, বাস্তবতা হলো স্বল্প মেয়াদে হলেও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের বাণিজ্য-সম্পর্কে ফাটল ধরতে দেওয়া প্রায় দুঃসাধ্য। বলার অপেক্ষা রাখে না, বর্তমান জোগান-শৃঙ্খল ব্যবস্থায় ট্রাম্পের বর্ধিত শুল্কের নেতিবাচক প্রভাব সব দেশের ওপরেই পড়তে বাধ্য। ক্ষতিগ্রস্ত হবে উৎপাদনও। জোগান-শৃঙ্খলের প্রশ্ন বাদ দিলেও, যুক্তরাষ্ট্রকে পাশ কাটিয়ে বাকি বিশ্ব নিজেদের মধ্যে বাণিজ্য চালিয়ে যাবে, এমন সম্ভাবনাও শূন্যই বলা চলে। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারের অভ্যন্তরীণ চাহিদা হারালে সব দেশেরই পণ্যের চাহিদা কমবে। অন্য কোনো বাজারে সেই ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়াও সম্ভব নয়। তা ছাড়াও বাণিজ্য শুধু বাণিজ্য নয়, এর সঙ্গে জড়িত ভূ-রাজনীতিও।
ধরে নেওয়া যাক, যুক্তরাষ্ট্রকে একঘরে করে ফেলা হলো। সে ক্ষেত্রে বিশ্ব-অর্থনীতি আরও বেশি মাত্রায় চীন-নির্ভর হয়ে পড়বে, যা অনেক দেশ বা জোটের কাছেই গ্রহণযোগ্য হবে না। চটজলদি উদাহরণ হতে পারে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
৫.
শুল্কদ্বন্দ্বের সুরাহায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগাযোগ করতে আগ্রহী বলে জানিয়েছে চীন। যদিও তারা এ-ও বলেছে, ট্রাম্প চীনকে আঘাত করতে থাকলে বা পুরোপুরি বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু করতে চাইলে তারাও সে জন্য প্রস্তুত আছে।
বাণিজ্যবিষয়ক এক শ্বেতপত্রে চীন বলেছে, দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্য যেন সব সময় উভয়ের জন্য লাভজনক হয়, সে চেষ্টা তারা করেছে। ‘ট্রাম্প ট্যারিফ'-এ বৈশ্বিক বাণিজ্যব্যবস্থা, নিরাপত্তা ও বৈশ্বিক সরবরাহব্যবস্থার স্থিতিশীলতা বিনষ্ট হবে বলে শ্বেতপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নও খুব ভিন্ন কিছু বলেনি। ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ককে ‘বিশ্ব অর্থনীতির জন্য বড় আঘাত' অভিহিত করেছেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ভন ডার লেন। তিনি বলেছেন, এর ফলে নিত্যপণ্য, পরিবহন ও ওষুধের দাম বেড়ে যাবে। এতে নিম্ন আয়ের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। উরসুলা স্বীকার করেন, গুরুতর ত্রুটি রয়েছে বিশ্ব বাণিজ্যব্যবস্থায়।
ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, ট্রাম্পের শুল্ক আরোপে ইউরো অঞ্চলে যে পড়বে বলে আগে হিসাব করা হয়েছিল, তারা এখন মনে করছে, প্রভাব আরও বেশি হবে।
ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের মূল্যায়ন হলো, বিশ্ব এক অভূতপূর্ব পরিস্থিতির মুখে পড়েছে। এক প্রতিবেদনে তারা বলেছে, এক জরিপে অংশ নেওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৬২ শতাংশ আশঙ্কা করছে, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি শ্লথ হবে।
আর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, তাঁর দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যকে ‘শুল্ক-ঝড়' থেকে রক্ষার জন্য নতুন শিল্পনীতি গ্রহণে তিনি প্রস্তুত। পাশাপাশি মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে অর্থনৈতিক চুক্তির চেষ্টাও তনি চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী।
৬.
ট্রাম্পের শুল্ক আরোপে বিশ্ব-অর্থনীতির পাটাতনে ধাক্কা লেগেছে ঠিকই, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র নিজেও বিপদমুক্ত থাকল না। কেননা, দেশটির অর্থব্যবস্থা অনেকাংশেই আমদানিনির্ভর। শুল্ক বাড়ানোয় তাদের আমদানির খরচ বাড়বে, যার প্রভাব পড়বে পণ্যের দামে। অর্থাৎ মূল্যস্ফীতি ঘটবে। ফলে স্বল্পমেয়াদে হলেও মার্কিনিদের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পাবে।
যদিও ট্রাম্প প্রশাসনের যুক্তি, বৈদেশিক পণ্যের আমদানি কমায় অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়বে, বাড়বে কর্মসংস্থান, এমনকি বাড়বে বেতন-ভাতাও। এতে লাভবান হবে সাধারণ মানুষ। তবে এই যুক্তির গোড়ার গলদ আছে। অভ্যন্তরীণ বাজারের পুরো চাহিদা মেটানোর মতো পণ্য উৎপাদনে মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলো পুরোপুরি প্রস্তুত নয়। উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াতে হবে তো বটেই, কিন্তু তারও আগে অর্থনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে নিশ্চয়তা প্রয়োজন। শুধু মানুষের ক্রয়ক্ষমতার ভরসায় উৎপাদন বাড়ানোর জন্য মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলো বিনিয়োগ করবে কি না, এ প্রশ্ন তাই ফেলনা নয়। সুতরাং দেশটিতে একই সঙ্গে মূল্যস্ফীতি ও আর্থিক স্থবিরতার আশঙ্কা আছে, অর্থনীতির পরিভাষায় যাকে বলা হয় ‘স্ট্যাগফ্লেশন'; ‘ইনফ্লেশন' এবং ‘স্ট্যাগন্যান্ট'-এর সমন্বিত রূপ। অবশ্য স্ট্যাগফ্লেশনের মেয়াদ সুনির্দিষ্ট করে বলা কঠিন। মেয়াদ স্বল্প থেকে মাঝারি যা-ই হোক, এর রাজনৈতিক অভিঘাত যে খুব মৃদু হবে না, তা বলাই বাহুল্য। বিভিন্ন দেশের প্রতিশোধমূলক শুল্কে যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানিও মার খেতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রে মন্দার আশঙ্কা করেছে জেপি মর্গান, আইএমএফ। জেপি মর্গানের ভাষ্য, বছর শেষে মূল্যস্ফীতি এখনকার ২ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে বেড়ে ৪ দশমিক ৪ শতাংশে উঠতে পারে। বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান গোল্ডম্যান স্যাক্স মন্দার আশঙ্কা গত সপ্তাহের ৩৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে চলতি সপ্তাহে ৪৫ শতাংশ করেছে।
অবশ্য আপাতত তিন মাসের জন্য শুল্ক ১০ শতাংশে নামিয়ে আনায় ‘বিপদসংকেত' স্বাভাবিকভাবেই কয়েক ধাপ কমে এসেছে।
৭.
ট্রাম্পের এই বাণিজ্যযুদ্ধের মূল লক্ষ্য চীন। চীনের উত্থান ঠেকাতে ট্রাম্পের ‘গ্রেট আমেরিকা' একরকম মরিয়াই। ট্রাম্পের অনুসারী বিপুলসংখ্যক মার্কিনিরও বিশ্বাস, তাঁদের বর্তমান দুর্গতির কারণ চীন। কারখানা স্থানান্তর, চাকরি হারানো— সব মিলিয়ে তাঁরা ভালো নেই।
দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্প ক্ষমতায় বসার পর যতগুলো ‘কালজয়ী বাণী' দিয়েছেন, সেগুলোর একটি— এত দিন যুক্তরাষ্ট্রকে অনেকে অর্থনৈতিকভাবে ছিঁড়েখুঁড়ে খেয়েছে; তা আর হতে দেওয়া হবে না। তাই তিনি ২ এপ্রিলকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘স্বাধীনতা দিবস' আখ্যা দিয়েছেন।
কিন্তু ট্রাম্পকে কে বোঝাবে—‘স্বাধীনতা' মানে স্ব-এর অধীন, মানে নিজের অধীন, যার আরেক অর্থ আইনের অধীন, বিধির অধীন, নিয়মের অধীন। আরও বিস্তৃত পরিসরে বললে ‘সভ্যতার অধীন'।
তাই অপরকে শায়েস্তা করার চিন্তায় দিশেহারা হয়ে হাতলছাড়া তলোয়ার নিয়ে যুদ্ধে নামাও বোকামি। এতে নিজের হাত অক্ষত নাও থাকতে পারে।
