ট্রাম্প টিম ও রাশিয়ার মধ্যে অবৈধ যোগাযোগ নিয়ে বৃহস্পতিবার মুখ খুলবেন জেমস কোমি৷ এরই মধ্যে অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের সংঘাতের খবর নিয়ে জল ঘোলা হচ্ছে৷
বিজ্ঞাপন
রাশিয়ার ভূত কিছুতেই ট্রাম্প প্রশাসনের পেছন ছাড়ছে না৷ বরখাস্ত হওয়া এফবিআই প্রধান জেমস কোমি বৃহস্পতিবার মার্কিন সেনেটের এক কমিটির সামনে নিজের বক্তব্য রাখবেন৷ রাশিয়ার সঙ্গে নিজের টিমের সদস্যদের যোগাযোগ নিয়ে তদন্ত বানচাল করতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাঁর উপর কতটা চাপ সৃষ্টি করেছিলেন, সেই বিষয়টি অবশ্যই প্রাধান্য পাবে৷ তবে বুধবারই কোমি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, তিনি সরাসরি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলবেন না৷ তবে তাঁর উপর চাপ সৃষ্টির বিষয়টি খোলসা করে বলতেই হবে৷ ট্রাম্প তাঁকে আরও কী বলেছিলেন, সে সব বিষয়েও তাঁকে জেরা করতে চলেছেন কমিটির সদস্যরা৷
এদিকে প্রাক্তন এফবিআই প্রধান রবার্ট ম্যুলার একই বিষয়ে যে তদন্ত করছেন, সে ক্ষেত্রেও কোমি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছেন৷ ফলে সেই তদন্তের স্বার্থে তিনি সেনেটের কমিটির সামনে কতটা মুখ খুলবেন, তা নিয়েও জল্পনাকল্পনা চলছে৷ তবে মঙ্গলবার সেই কমিটির হাতে তদন্ত সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র আসায় সদস্যরা অনেক অপ্রিয় প্রশ্ন তুলতে পারেন বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন৷
চাপ সত্ত্বেও শান্ত থাকার চেষ্টা করছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প৷ রিপাবলিকান দলের সদস্যদের সঙ্গে এক আলোচনার পর ট্রাম্প কোমির উদ্দেশ্যে বলেন, ‘‘আই উইশ হিম লাক৷'' তবে প্রকাশ্যে নিশ্চিন্ত দেখালেও তিনি যে বিষয়টি নিয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন, সেই বিষয়টি স্বীকার করছেন তাঁর কাছের মানুষরাও৷
অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ সেশনস ও ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যে উত্তেজনার কিছু লক্ষণও চোখে পড়ছে৷ কোমি নিজে নাকি সেশনসকে বলেছিলেন, তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে একা থাকতে চান না৷ নিউ ইয়র্ক টাইমস এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে৷
বন্ধুদের কাছে শত্রুর মতো এলেন ট্রাম্প
নির্বাচনি প্রচারে ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের উপর তোপ দেগেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প৷ কিন্তু প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের প্রতি এমন বৈরি মনোভাব দেখাবেন, তেমনটা কেউ ভাবতে পারেনি৷
ছবি: Reuters/F. Lenoir
সৌদি আরবে স্বাচ্ছন্দ্য
নির্বাচনি প্রচারে সৌদি আরবের বিরুদ্ধে কড়া কথা শোনালেও প্রথম বিদেশ সফরের গন্তব্য হিসেবে সৌদি আরবকে বেছে নিয়ে সে দেশকে বিশেষ মর্যাদা দিলেন ট্রাম্প৷ সেখানকার নেতাদের সঙ্গে তাঁকে বেশ খোশমেজাজে দেখা গেছে৷ ইসরায়েলেও স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেছেন তিনি৷
ছবি: Reuters/J. Ernst
পোপের সঙ্গে সাক্ষাৎ
অ্যামেরিকায় নির্বাচনি প্রচারের সময় পোপ ফ্রান্সিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্প পরস্পরের সম্পর্কে বেশ কটু কথা বলেছেন৷ তাই ভ্যাটিকান সিটিতে ক্যাথলিক খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের শীর্ষ নেতার সঙ্গে ট্রাম্পের সাক্ষাতকে ঘিরে বিশেষ আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছিল৷ সদা হাস্যময় ও রসিকতার জন্য পরিচিত পোপ ফ্রান্সিসের মুখচ্ছবিই তাঁর মনোভাব প্রকাশ করছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/E. Vucci
ন্যাটো সম্মেলনে কড়া সুর
ভ্যাটিকান থেকে ব্রাসেলসে পৌঁছেই বদলে গেল ট্রাম্পের কণ্ঠ ও শরীরের ভাষা৷ ন্যাটো শীর্ষ নেতাদের সামনে এই সামরিক জোটের প্রতি সংহতি পুনর্ব্যক্ত করার বদলে তিনি ‘বকেয়া চাঁদা’ ও ‘মার্কিন করদাতাদের স্বার্থ’ নিয়ে সোচ্চার হয়ে পড়লেন৷
ছবি: Getty Images/M.Ngan
সৌজন্যবোধের অভাব
ন্যাটোর সবচেয়ে শক্তিশালী সদস্য দেশের প্রেসিডেন্ট হওয়া সত্ত্বেও নেতাদের ভিড়ে নিজেকে জাহির করতে পিছপা হননি ট্রাম্প৷ সবাইকে পেছনে ফেলে, প্রয়োজনে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে সামনের সারিতে পৌঁছতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি৷
ছবি: picture alliance/AP Photo/M.Dunham
ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি অবজ্ঞা
রাষ্ট্রজোট হিসেবে ইইউ সম্পর্কেও তাঁর অবজ্ঞা এখনো দূর হয়নি৷ মুক্ত বাণিজ্য, জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলা, রাশিয়ার দৌরাত্ম্যের মতো বিষয় সম্পর্কে ইইউ’র মনোভাব তিনি পছন্দ করেন না৷ শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনার পর সেকথা সাফ জানিয়েও দিয়েছেন ট্রাম্প৷
ছবি: Reuters/F. Lenoir
জার্মানির প্রতি বিদ্বেষ
‘জার্মানরা খারাপ, খুবই খারাপ’ – ইউরোপীয় কমিশন প্রেসিডেন্ট জঁ ক্লোদ ইয়ুংকারের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এমন মন্তব্য করেন৷ অ্যামেরিকা ও জার্মানির মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি নিয়ে ট্রাম্প শুরু থেকেই বিরক্ত৷ তবে মুক্ত বাণিজ্যের উপকার ও সার্বিক সুবিধার বদলে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নিতে চান তিনি৷
ছবি: Getty Images/M.Medina
জি-সেভেন বৈঠক
ন্যাটো ও ইইউ-র অনেক নেতার সঙ্গে আবার দেখা জি-সেভেন শীর্ষ সম্মেলনে৷ সেখানেও অ্যাজেন্ডা নিয়ে খুশি নন ট্রাম্প৷ বাকিদের সঙ্গে মতপার্থক্য বজায় রেখেই ট্রাম্প আবার ফিরে গেলেন ওয়াশিংটন৷