বক্তৃতার মাঝে কথা বলা যাবে না। বললে তা শোনা যাবে না। ট্রাম্প-বাইডেনের পরবর্তী বিতর্কে মিউট সুইচ ব্যবহার করা হবে।
বিজ্ঞাপন
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প এবং প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো বাইডেনের বিতর্কে এ বার মিউট সুইচ ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিলেন সংগঠকরা। মার্কিন প্রেসিডেনশিয়াল বিতর্ক সংগঠিত করার দায়িত্ব পালন করে প্রেসিডেনশিয়াল কমিশন অন ডিবেট। সোমবার তারাই এ কথা জানিয়েছে।
গত সেপ্টেম্বর মাসের ২৯ তারিখ প্রথম বিতর্কে অংশ নিয়েছিলেন ট্রাম্প এবং বাইডেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, মার্কিন ইতিহাসে এত উত্তপ্ত বিতর্ক খুঁজে পাওয়া মুশকিল। অভিযোগ, সেই বিতর্কে ট্রাম্প একাধিকবার বাইডেনকে থামিয়ে দিয়ে নিজের কথা বলার চেষ্টা করেছেন। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে একের পর এক বিষয়ে অপমানজনক শব্দ ব্যবহার করেছেন বাইডেন। সেপ্টেম্বর ২৯ এর বিতর্কের পরিপ্রেক্ষিতেই নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
বিতর্কে ১৫ মিনিট করে এক একটি সেগমেন্ট ভাগ করা হয়। একদম শুরুতে দুই বক্তাই দুই মিনিট করে বলার সুযোগ পান। গত বিতর্কে একদম প্রথম থেকেই দুই বক্তা দুইজনকে থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। মিউট সুইচ সে জন্যই নিয়ে আসা হচ্ছে। কেউ কাউকে থামানোর চেষ্টা করলেই মিউট সুইচ ব্যবহার করে বাধাদানকারীকে চুপ করিয়ে দেওয়া হবে।
কার্টুনিস্টদের চোখে মার্কিন নির্বাচন
আবারও ডনাল্ড ট্রাম্প, নাকি জো বাইডেন? কে হবেন পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট? বিশ্বের প্রখ্যাত কেরিক্যাচার শিল্পীদের ভাবনায় উঠে এসেছে নির্বাচনের বিভিন্ন দিক৷ আপনার কোন ছবি বা বিষয়বস্তু ভালো লেগেছে?
ছবি: Waldemar Mandzel/Toonpool
যুদ্ধাবস্থা
জো বাইডেনের রানিংমেট কমলা হ্যারিস বলেছিলেন ডনাল্ড ট্রাম্প নোংরা উপায়ে নির্বাচন জিততে চান৷ তাঁর মনোভাবটাই যেন প্রকাশ পেয়েছে জার্মান শিল্পী ইয়েনস ক্রিকের আঁকা ছবিতে৷ ট্রাম্প যে কাউকে পাত্তা দেন না সেটাই ফুটে উঠেছে এই ছবিতে৷
ছবি: Jens Kricke/toonpool.com
ট্রাম্পের জন্য প্রচারণা
ট্রাম্প তার প্রচারণায় বরাবরই নিজেকে সর্বোত্তম হিসেবে উল্লেখ করেন৷ যেমন: ‘‘আমার মতো বর্ণবাদবিরোধী মানুষ খুঁজে পাবে না৷’’ ‘‘আমার মতো কেউ নারীদের সম্মান করে না’’ এবং ‘‘যুক্তরাষ্ট্রে আমার মতো ভালো প্রেসিডেন্ট কখনোই আসবে না৷’’ কিন্তু মার্টিন এর্লের এই ছবিতে ট্রাম্পের ভিন্ন রূপ, তিনি ফটোগ্রাফারের প্রশংসা করছেন৷ কারণ কী? ছবিতে দেখে নিন৷
ছবি: Martin Erl/toonpool.com
টিভি বিতর্ক
এই ছবির মাধ্যমে চেক শিল্পী মারিয়ান কামেনস্কি বিশ্ববাসীর কাছে জানতে চাইছেন, মার্কিন নির্বাচনের বিতর্ক সংস্কৃতি কোথায় দাঁড়িয়েছে? এবারের বিতর্কে রাজনৈতিক বাক-বিতণ্ডার বদলে দুই পক্ষ একে অপরকে অপমান করতে ব্যস্ত ছিল৷
‘ঘুমন্ত জো’ এবং ভাঁড়
ট্রাম্প বাইডেনের উদ্দেশে বিতর্কে বলেছিলেন তিনি একজন ‘ঘুমন্ত বুড়ো মানুষ’ এবং ‘চরমপন্থি বামদের পাপেট’৷ অন্যদিকে বাইডেন ট্রাম্পকে আক্রমণ করেছিলেন বর্ণবাদী, মিথ্যুক, ভাঁড় এবং অ্যামেরিকার সবচেয়ে খারাপ প্রেসিডেন্ট বলে৷ ইটালির শিল্পী ক্রিস্টিলের আঁকা ছবিতে বিতর্কের প্রতিচ্ছ্ববি৷
শিশুর মতো আচরণ
আফ্রিকার মানুষও ট্রাম্পের আচরণকে শিশুতোষ বলে মনে করে৷ বুরকিনা ফাসোর কার্টুনিস্ট ডামিয়েন গ্লেজ তার ছবির মাধ্যমে বোঝাতে চেয়েছেন ট্রাম্প যে-কোনো মূল্যে ক্ষমতায় থাকতে চান, ঠিক যেন একটা শিশু৷
ট্রাম্পজিলা
প্রথম জাপানিজ গর্জিলা মুভি মুক্তি পেয়েছিল ১৯৫৪ সালে৷ যে পথ দিয়ে গর্জিলা যেতো তার ধ্বংসচিহ্ন রেখে যেতো৷ জাপানি কার্টুনিস্ট তাকেশি কিশিনো’র ছবিতে ট্রাম্পকে গর্জিলা হিসেবে দেখানো হয়েছে৷
শত্রুর শত্রু যখন মিত্র
গণতন্ত্রকে ‘কাঁচকলা দেখানো’ রাষ্ট্রনেতাদের ট্রাম্পের ভীষণ পছন্দ৷ যেমন: পুটিন, এর্দোয়ান, কিম জং উন৷ ডাচ কার্টুনিস্ট জেরেড রোয়ার্ডসের কার্টুনে তাই তাদের ‘আলফা মেলস’ হিসেবে দেখানো হয়েছে৷
মেইল-ইন ভোটের পক্ষে না!
মেইলের মাধ্যমে ভোট হলে তা হবে জালিয়াতি, মেইল-ইন ভোটের বিরুদ্ধে এমনটাই বলেছেন ট্রাম্প৷ এমনকি পোস্টাল সার্ভিসের তহবিল কাটছাট করেছেন৷ করোনা সংক্রমণ থেকে বাঁচতে বেশিরাগ ডেমোক্র্যাট এই পদ্ধতিতে ভোট দিতে আগ্রহী৷ মারিয়ান কামেনিস্কির আঁকা কার্টুনে ট্রাম্পের আচরণের বহিঃপ্রকাশ৷
ছবি: Waldemar Mandzel/Toonpool
চিরস্থায়ী রাজত্ব
অ্যামেরিকার সংবিধান অনুযায়ী কেনো কোনো প্রেসিডেন্ট তৃতীয় দফায় নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ট্রাম্প৷ তিনি কি আজীবন প্রেসিডেন্ট থাকতে চান? জার্মান কার্টুনিস্ট ক্রিস্টিয়ানে ফোলমানের আঁকা ছবিতে সেই সম্ভাবনা ফুটে উঠেছে৷
ছবি: Chrsitiane Pfohlmann/toonpool.com
9 ছবি1 | 9
আগামী বৃহস্পতিবার দুই প্রতিদ্বন্দ্বী মুখোমুখি হবেন। বিতর্ক ঘিরে অবশ্য উত্তাপ ছড়াতে শুরু করে দিয়েছে। ট্রাম্পের বক্তব্য, যে বিষয়গুলি বিতর্কের জন্য নির্বাচন করা হয়েছে, তা পক্ষপাতমূলক। দেশের বিদেশনীতি বিতর্কে সে ভাবে গুরুত্বই পাচ্ছে না। বাইডেন শিবিরের বক্তব্য, করোনা নিয়ে কথা বলতে চাইছেন না ট্রাম্প। কারণ, বলতে গেলেই নিজের ব্যর্থতা স্পষ্ট হয়ে যাবে।
মার্কিন প্রেসিডেনশিয়াল বিতর্কের বিষয় নির্বাচন করে বিতর্ক কমিটি। দেখা যাচ্ছে, এ বছর অ্যামেরিকার নাগরিকরা সব চেয়ে বেশি আলোচনা চাইছেন করোনা নিয়ে। সে কারণেই প্রতিটি বিতর্কেই করোনা রাখা হচ্ছে। বস্তুত, গত বিতর্কে ট্রাম্প বলেছিলেন, অ্যামেরিকায় করোনার প্রকোপ কমতে শুরু করেছে। কিছুদিনের মধ্যেই সব স্বাভাবিক হয়ে যাবে। কিন্তু গত কয়েক দিনে ফের সেখানে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। বলা হচ্ছে, ইউরোপের মতো অ্যামেরিকাতেও দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে।
ট্রাম্প নিজেও করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। সে কারণে গত বৃহস্পতিবার দুই প্রার্থীর বিতর্ক হয়নি। বাইডেন চেয়েছিলেন বিতর্ক ভার্চুয়াল হোক। কিন্তু ট্রাম্প তাতে সম্মত হননি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রথম বিতর্কের পর ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা আরও কমেছে। ওপিনিয়ন পোলে ট্রাম্পকে অনেকটাই পিছনে ফেলে দিয়েছেন বাইডেন।