গত সোমবার রাজশাহীর বাঘায় লাল মাফলার দেখিয়ে ট্রেন থামিয়ে দুর্ঘটনা থেকে বাঁচিয়ে দেয় দুই শিশু৷ পরে তাদের নিয়ে বিভিন্ন টেলিভিশনে করা সংবাদের ভিডিও ভাইরাল হয় ইন্টারনেটে৷
বিজ্ঞাপন
পরে ওই শিশু দু'টির বুদ্ধিমত্তায় বেঁচে যাওয়া ট্রেনের খবর প্রচার করে বাংলাদেশের বিভিন্ন টিভি চ্যানেল৷ চ্যানেল টোয়েন্টিফোর-এর ইউটিউব চ্যানেলে খবরটি প্রচারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তা ৫০ হাজার বারেরও বেশি দেখা হয়৷ অন্যান্য টিভিরও ইউটিউব চ্যানেল থেকে এ সংক্রান্ত খবরের ভিডিও ইন্টারনেট জগতে ছড়িয়ে পড়ে অল্প সময়ের মধ্যেই৷
গত সোমবার বাঘার আড়ানী স্টেশনের কাছে ঝিনা রেলগেট এলাকায় ভাঙা ছিল রেললাইন জোড়া দেওয়া ফিস প্লেট৷ সেখান থেকে হেঁটে যাচ্ছিল ঝিনা গ্রামের ছয় ও সাত বছরের সিহাবুর রহমান ও টিটোন আলী৷ সেখানে তাদের চোখে পড়ে ভাঙা ফিস প্লেট; সামনে থেকে আসছিল একটি তেলবাহী ট্রেন৷
উপস্থিত বুদ্ধি খাটিয়ে এ সময়ে তারা দু'জনে রেললাইনের ওপর লাল মাফলার তুলে ধরে৷ তা দেখে ট্রেনটি থামিয়ে দেন চালক৷ বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে জানানো হলে এ লাইনে সব ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়৷ পরে ভাঙা ফিস প্লেট জোড়া দিয়ে আধ ঘণ্টার মধ্যে আবার ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়৷
পরে বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চল বিভাগের আয়োজনে সংবর্ধনা দেয়া হয় এই দুই শিশুকে৷ ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি নগদ টাকা পুরস্কার দেওয়া হয় তাদের৷ এছাড়া পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম দরিদ্র পরিবারের এই দুই শিশুর লেখাপড়ার দায়িত্ব নিয়েছেন৷ নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে হিরোজ অফ আরানী হ্যাশ ট্যাগ দিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘‘আমার নির্বাচনি এলাকায় আড়ানী রেল লাইনের পাশেই আবাস তাদের৷ তাদের সারা জীবনের শিক্ষার দায়িত্ব নিয়েছি৷''
বিশ্বের সাতটি বিপজ্জনক রেললাইন
রেলগাড়িতে চড়তে অনেকেই পছন্দ করেন৷ তবে বিশ্বে এমন কয়েকটি রেললাইন আছে যেখান দিয়ে ট্রেনে যেতে হয়ত আপনার একটু ভয় লাগবে৷
ছবি: picture-alliance/Tuul/robertharding
পাম্বান ব্রিজ, ভারত
রামেশ্বরম আর পাম্বান নামে দু’টি দ্বীপের মধ্যে সংযোগ স্থাপনে ১৯১৪ সালে সেতুটি নির্মাণ করা হয়৷ সাগরের উপর নির্মিত এই ব্রিজটি ২ দশমিক ০৬ কিলোমিটার দীর্ঘ৷ রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় বেশি হওয়ায় ব্রিজটি দিন দিন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে৷
ছবি: picture-alliance/Tuul/robertharding
সাল্তা-আন্টোফাগাস্তা রেলওয়ে
আর্জেন্টিনার সাল্তা ও চিলির আন্তুফাগাস্তা শহরের মধ্যে এই রেললাইনটি অবস্থিত৷ প্রায় ২৭ বছর ধরে কাজ করার পর ১৯৪৮ সালে এর নির্মাণকাজ শেষ হয়৷ এই লাইনের একটি অংশ ভূপৃষ্ঠ থেকে ৪,২২০ মিটার উঁচুতে অবস্থিত৷ সে হিসেবে এটি বিশ্বের পঞ্চম সবচেয়ে উঁচুতে অবস্থিত লাইন৷ প্রায় সাড়ে নয়শ’ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রেললাইনে আছে ২৯টি ব্রিজ ও ২১টি টানেল৷
ছবি: Imago/Therin-Weise
জর্জটাউন লুপ, যুক্তরাষ্ট্র
কলোরাডো রাজ্যের এই রেললাইন দিয়ে এখন পর্যটকদের নিয়ে ট্রেন চলাচল করে৷ ৭ দশমিক ২ কিলোমিটার দীর্ঘ এই পথ পাড়ি দেয়ার সময় টুরিস্টরা আশেপাশের পাহাড়ের সৌন্দর্য দেখতে পারেন৷ এই পথের সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংশ হচ্ছে ‘ডেভিলস গেট হাই ব্রিজ’৷ মাটি থেকে এর উচ্চতা ৩০ মিটার৷
ছবি: CC by Don O'Brian
কুব়্যান্ডা সিনিক রেলওয়ে, অস্ট্রেলিয়া
৩৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রেললাইন ঘন রেনফরেস্টের মধ্যে দিয়ে গেছে৷ পথে বেশ কয়েকটি ঝর্ণার দেখা পাওয়া যায়৷ তবে মাঝেমধ্যে খাড়া পাহাড়ি পথ এসে পড়ায় যাত্রীদের একটু ভয়ও লাগতে পারে৷
ছবি: Imago/OceanPhoto
ডেভিলস নোজ, ইকুয়েডর
পাঁচশ’ মিটার উঁচু খাড়া পাহাড় থেকে হঠাৎ করে বেঁকে ঢাল বেয়ে ট্রেনে করে নীচে নামা নিশ্চয় কিছুটা বিপজ্জনক ও ভয়ের৷ ইকুয়েডরের এই রেললাইনটি ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ভূপৃষ্ঠ থেকে ২,৭০০ মিটার উঁচুতে অবস্থিত৷
ছবি: cc by Arabsalam
লিন্টন অ্যান্ড লিনমাউথ ক্লিফ রেলওয়ে, ইংল্যান্ড
লিন্টন ও লিনমাউথ শহরের মাঝে প্রায় ২৬০ মিটার খাড়া একটি পাহাড় অবস্থিত৷ এই দুই শহরের বাসিন্দাদের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করতে ১৮৯৮ সালে এই রেললাইনটি স্থাপন করা হয়৷ ভিডিও দেখতে উপরে (+) চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: CC by Janina Forbes
কাম্বার্স অ্যান্ড টলটেক সিনিক রেলরোড, যুক্তরাষ্ট্র
নিউ মেক্সিকো রাজ্যের চামা ও কলোরাডোর অ্যান্টোনিটো শহরের মধ্যে প্রায় ১০৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এই লাইনটি ১৮৮০ সালে নির্মিত হয়৷ এই লাইন দিয়ে এখনও কয়লাচালিত ট্রেন চলে৷ ভিডিও দেখতে উপরে (+) চিহ্নে ক্লিক করুন৷