1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

এক বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি

৮ আগস্ট ২০১৪

সত্যিই যেন একটা বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি – বিজ্ঞানীদের কাছে এখনও কিন্তু এমনটাই মনে হচ্ছে৷ ১০ বছর ধরে ধাওয়া করার পর, শেষে বুধবার ধূমকেতু ৬৭পি বা চুরিয়মোভ-গেরাসিমেনকোর কাছে পৌঁছেছে ইউরোপীয় মহাকাশ যান রোসেটা৷

Deutschland Raumfahrt ESA in Darmstadt Rosetta umkreist Kometen
ছবি: picture-alliance/dpa

পৃথিবী থেকে প্রায় ৫০ কোটি কিলোমিটার দূরে থাকা ধূমকেতুটিকে খুব কাছে থেকে পর্যবেক্ষণের চেষ্টায় বড় সাফল্য পেয়েছে রোসেটা৷ বিজ্ঞানীদের আশা পৃথিবীতে প্রাণের উৎস যে কার্বন এবং পানি, তা এই ধূমকেতু থেকেই এসেছিল কিনা – সেটা পরীক্ষা করে থেকে জানা যেতে পারে৷ রোসেটা নামের এই যানটির লক্ষ্য হচ্ছে আগামী এক বছর ধরে ধূমকেতুটিকে প্রদক্ষিণ করা এবং সেখানে একটি ল্যান্ডার অবতরণযান পাঠিয়ে তার উপাদানগুলো পরীক্ষা করা৷ এই প্রকল্পটিতে খরচ হয়েছে প্রায় দুইশ কোটি ডলার৷

ঐতিহাসিক গবেষণা

২০০৪ সালের ২রা মার্চ রোসেটা মহাকাশের উদ্দেশ্যে রওনা হয়৷ দীর্ঘ ১০ বছর ধরে সৌরমণ্ডলের ভিতর দিয়ে যাত্রা শেষে ৬৭পি ধূমকেতুর পাশে পৌঁছায় যানটি৷ ধূমকেতুর কাছে পৌঁছাতে গিয়ে রোসেটাকে নানা বাধা পেরিয়ে অতিক্রম করতে হয়েছে প্রায় ৬০০ কোটি কিলোমিটার পথ৷ এই যাত্রাপথে জার্মানির ডার্মস্টাট শহর থেকে বিজ্ঞানী ও প্রযুক্তিবিদরা তাকে নিয়ন্ত্রণ করেছে৷

দীর্ঘ অপেক্ষার পর রসেটার সাফল্য, বিজ্ঞানীরা খুশিছবি: Reuters

রোসেটা মহাকাশযান এখন ধূমকেতুর পাশে নিজেকে এমনভাবে স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে যাতে ধূমকেতুর কক্ষপথে এটি পাশাপাশি প্রদক্ষিণ করতে পারবে৷ জার্মানির ডার্মস্টাটে সংস্থাটির নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র থেকে অভিযানের সাফল্য ঘোষণা করেন ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি ইএসএ মহাপরিচালক জ্যঁ জ্যাকস ডর্ডাইন৷ বলেন, ‘‘দশ বছর, পাঁচ মাস এবং চারদিন ঘোরার পর এবং সূর্যকে পাঁচবার প্রদক্ষিণ করার পর চারশ কোটি মাইল ঘোরার পর অবশেষে লক্ষ্যে পৌঁছেছে রোসেটা৷ এখন আমরা বিজ্ঞানের একটা স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে পা রেখেছি৷ এটাই সুযোগ৷''

এর আগের মিশনগুলোতে যে মহাকাশযান পাঠানো হয়েছে সেগুলো ধূমকেতুর গতিপথের কাছ দিয়ে দ্রুত পার হয়ে গেছে৷ কেবল ধূলিকণার নমুনা এবং কিছু তথ্য সংগ্রহ ছাড়া ওই মিশনে আর কিছু অর্জন সক্ষম হয়নি৷

এই দীর্ঘ পথে শক্তি বাঁচানোর জন্য রোসেটাকে ৩১ মাসের জন্য অকেজো করে রাখা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা৷ চলতি বছরের জানুয়ারিতে তার কাজ আবার চালু করা হয়৷

গত দু'মাস ধরে ধীরে ধীরে কমানো হয়েছে রোসেটার গতি৷ ধূমকেতুটির গতি ঘণ্টায় প্রায় ৫৫ হাজার কিলোমিটার৷ আগামী ১৫ মাস ধরে রোসেটা এভাবেই ঘুরবে৷

সব কিছু ঠিকঠাক চললে এ বছরের নভেম্বরে রোসেটার সঙ্গে থাকা যান ফিলায়ে ল্যান্ডারকে ধূমকেতুর উপরে নামাতে চায় ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি৷ বিজ্ঞানীরা বলছেন, সব কিছু যদি পরিকল্পনা মাফিক চলে, তাহলে নভেম্বর নাগাদ তারা রোসেটাকে ফিরিয়ে আনতে মহাশূন্যে একটি অবতরণযান পাঠাবেন৷ ধূমকেতুর উপরে গর্ত করে পরীক্ষা চালানোরও পরিকল্পনা রয়েছে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির৷ এর ফলে ধূমকেতু সম্পর্কে আরও তথ্য জানা যাবে বলে বিজ্ঞানীদের ধারণা৷ হয়ত নভেম্বরে ধুমকেতুটির বরফস্তরে প্রবেশ করতে পারে রোসেটা৷

রোসেটা প্রকল্পের সাথে যুক্ত এক বিজ্ঞানী অবশ্য সংবাদ সংস্থা এএফপিকে জানালেন, ‘‘মিশন ইমপসিবল, অর্থাৎ যানটির অবতরণ অসম্ভব একটি কাজ৷ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঐ কর্মকর্তা জানান অবরতরণে ব্যর্থ হলেও ২০১৫ সালের শেষ পর্যন্ত ঐ ধূমকেতুকে প্রদক্ষিণ করার সময় বেশ কিছু নতুন তথ্য পাওয়া যেতে পারে৷''

প্রাচীন মিশরের সাংকেতিক লিপি ‘হায়ারোগ্লিফিকস'-এর জনক রোসেটা স্টোনের নামে এই মহাকাশ গবেষণাযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘রোসেটা'৷

এপিবি/ডিজি(এপি, ডিপিএ)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ