1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ডাকসুর কোটি টাকা ব্যয়ে অস্বচ্ছতা

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১১ মার্চ ২০২০

ডাকসু নির্বাচনের এক বছর পূর্ণ হয়েছে৷ এই সময়ে এক কোটি ১১ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়েছে কোনো অনুমোদন ছাড়া৷ এমন অভিযোগ এনে ভিপি নূর বলছেন তিনি একটাকাও ব্যয়ের সুযোগ পাননি৷

Bangladesch Universität Dhaka, studentische AnführerInnen | DUCSU Building
ছবি: DW/M.M. Rahman

২৮ বছর পর ২০১৯ সালের ১১ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ-ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়৷ মোট ২৫টি পদের মধ্যে জিএস এবং এজিএসসহ ২৩টি পদ পায় ছাত্রলীগ৷ আর ভিপি ও সমাজসেবা সম্পাদকের পদ পায় ছাত্র অধিকার পরিষদ, যারা কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিল৷ নির্বাচিতরা ২২ মার্চে দায়িত্ব নিলেও ভিপি নুরুল হক নূর গত এক বছরে কার্যত কোণঠাসা ছিলেন৷
তবে ডাকসুর ভিপি এবং এজিএসসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা মনে করেন ডাকসু সচল হওয়ার ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের সহাবস্থানের পরিবেশ আগের চেয়ে ভালো হয়েছে৷ কথা বলার সুযোগ বেড়েছে, শিক্ষার্থীদের অধিকার নিয়ে সচেতনতাও বেড়েছে৷ কিন্তু আরো যা অর্জন সম্ভব ছিলো তা হয়নি সমন্বয়হীনতার কারণে৷ এজন্য নূরের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের অবস্থানকে দায়ী করা হচ্ছে৷

বরাদ্দের টাকা ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন
ডাকসুর জন্য বরাদ্দ এক কোটি ৮৯ লাখ টাকার মধ্যে এ পর্যন্ত খরচ হয়েছে এক কোটি ১১ লাখ টাকার কিছু বেশি৷ এই টাকা বিভিন্ন সম্পাদক ও সদস্যরা নানা অনুষ্ঠান, প্রকাশনা ও উন্নয়ন খাতে ব্যয় করেছেন৷

লেজুড়বৃত্তিমুক্ত স্বাধীন ছাত্র রাজনীতির জন্য কাজ করে যাবো: নুরুল হক নূর

This browser does not support the audio element.

ডাকসু ভিপি নূর  অভিযোগ করেন, ‘‘এইসব অর্থ খরচে ডাকসুর কোনো অনুমোদন ছিলো না৷ ডাকসুর কোনো বৈঠকে এইসব ব্যয় বরাদ্দ অনুমোদন করা হয়নি৷ আমারও অনুমোদন নেয়া হয়নি৷ এই টাকা হয়তো ছাত্রদের জন্যই ব্যয় হয়েছে৷ কিন্তু এতে কোনো স্বচ্ছতা ছিলো না৷ কোনো নিয়ম নীতি মানা হয়নি৷ আর আমি ছাত্রদের জন্য ১০ হাজার টাকা বরাদ্দ চেয়েও পাইনি৷’’

তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ডাকসুর এজিএস এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন৷ তিনি বলেন, ‘‘ভিপি আসলে কোনো বরাদ্দ নিতে চাননি৷ ডাকসুর প্রধান নির্বাহী হিসেবে তারতো বরাদ্দ নেয়ার সুযোগ ছিলো৷ কিন্তু তিনি ছাত্রদের সার্বিক কল্যাণ না চেয়ে কারো সাইকেলের জন্য অথবা শিক্ষা সফরের জন্য টাকা চেয়েছেন৷ তিনি আসলে ছাত্র রাজনীতি করেননি৷ তিনি এখান থেকে জাতীয় রাজনীতির প্রতিষ্ঠা চেয়েছেন৷ দূতাবাস কেন্দ্রিক রাজনীতি করেছেন৷’’ 

অর্জন কী?
এই এক বছরে বড় অর্জন কী জানতে চাইলে নূর বলেন, ‘‘বিভিন্ন বিভাগে উন্নয়ন ফিসহ নানা ফির নামে অতিরিক্ত অর্থ নেয়া হতো সেগুলো আমরা কমিয়েছি৷ মেয়েদের আবাসিক হলে প্রবেশের সময় রাত ১০টা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে৷ লাইব্রেরিতে পড়ার সময়ও রাত ১০টা পর্যন্ত করা হয়েছে৷ হলে ও লাইব্রেরিতে নিরাপদ পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ আর সার্বিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক পরিবেশের উন্নয়ন ঘটেছে৷ এখন সব ছাত্র সংগঠন সক্রিয়ভাবে কাজ করতে পারছে৷’’

আসাবিক সমস্যার সামাধান ছাড়া এই সংকট কাটবেনা: সাদ্দাম হোসেন

This browser does not support the audio element.

সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘‘নারী শিক্ষার্থীদের জন্য স্যানিটারি ন্যাপকিনের ভেন্ডিং মেশিন চালু হয়েছে৷ চালু করা হয়েছে জোবাইক৷ শিক্ষার্থীদের গবেষণাপত্র প্রকাশের ব্যবস্থা হেয়েছে৷ খেলাধুলা ও সংস্কৃতি চর্চার ক্ষেত্রে অনেক উদ্যোগ নেয়া হয়েছে৷ ক্যাম্পাসে লেজুড়বৃত্তির ছাত্র রাজনীতি বন্ধ হয়েছে৷ আমরা ধর্মভিত্তিক ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করতে পেরেছি৷ এটা বড় অর্জন৷’’ 

নূরের ব্যর্থতা
গণরুম ও গেস্টরুম নির্যাতন বন্ধে ব্যর্থতার কথা স্বীকার করেন ভিপি নূর৷ তিনি বলেন, ‘‘এটা বন্ধ করা যায়নি৷ এটা আমার বড় ব্যর্থতা, ডাকসুর চরম ব্যর্থতা৷ তবে এর দায় আমাকে দেয়া যাবে না৷ কারণ যে সরকার ক্ষমতায় থাকে সেই সরকারের ছাত্র সংগঠন এই গেস্টরুম নির্যাতন ও গণরুম কালচার অব্যাহত রাখে৷ হলের প্রশাসন দায়িত্বে থাকলেও হল চালায় ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠন৷ আওয়ামী লীগ তিন তিনবার ক্ষমতায়৷ ফলে ছাত্রলীগের আধিপত্য চলছে৷ শিক্ষার্থীরা চাইলেও বন্ধ করতে পারেন না৷ আমাদের পক্ষেও কঠিন৷’’

এর জবাবে সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘‘আবাসিক সংকটের কারণে এই গণরুম ও গেস্টরুম কালচার চলছে৷ গণরুমে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে থাকেন, কোনো ছাত্র সংগঠনের সদস্য হিসেবে নয়৷ আবাসিক সমস্যার সামাধান ছাড়া এই সংকট কাটবে না৷ আমরা আশা করি মুজিববর্ষে আবাসিক সংকটের সমাধান হবে৷’’

সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ পেয়েছেন যিনি
এই এক বছরে সর্বোাচ্চ বরাদ্দ পেয়েছেন ডাকসুর ক্রীড়া সম্পাদক শাকিল আহমেদ তানভির৷ যার পরিমাণ ২০ লাখ টাকা৷ তিনি বলেন, ‘‘আমার বরাদ্দের মধ্যে আমি ছয়টি ইভেন্টসহ বেশ কিছু ক্রীড়া ইভেন্ট করেছি৷ তবে সমস্যা হলো বরাদ্দের বাইরে স্পন্সর সংগ্রহ করতে হয়৷ আর আমাদের ক্রীড়া অবকাঠামোর অনেক ত্রুটি আছে৷’’

তার মতে ডাকসু ভবিষ্যতে আরো সমন্বিতভাবে কাজ করলে কাজ আরো ভালো হবে৷

ডাকসুতে আর নয়
এদিকে নূর জানিয়েছেন, তিনি এখনো নিয়মিত ছাত্র হলেও আর ডাকসু নির্বাচন করবেন না৷ নতুন নেতৃত্বকে জায়গা করে দিতে চান৷ তবে তিনি ছাত্র রাজনীতিতে সক্রিয় থাকবেন৷ তিনি বলেন, ‘‘লেজুড়বৃত্তিমুক্ত স্বাধীন ছাত্র রাজনীতির জন্য আমি কাজ করে যাবো৷’’

ঢাবি’র গণরুম ‘দাসত্বের’ কারখানা!

02:45

This browser does not support the video element.

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ