মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটার মধ্যে আন্দোলনরত চিকিৎসকদের কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দিলো সুপ্রিম কোর্ট।
বিজ্ঞাপন
তবে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে, রাজ্য সরকারকে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিটি জেলায় জেলাশাসক ও পুলিশ সুপার বিষয়টি দেখবেন। আদালত নিযুক্ত কমিটি বিষয়টি নিয়ে কী সুপারিশ করবে, তার জন্য অপেক্ষা করার দরকার নেই।
তিন বিচারপতির বেঞ্চ বলেছেন, পুলিশ ও প্রশাসন যেন সব সরকারি হাসপাতালে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগাবার ব্যবস্থা করে। পুরুষ ও নারী ডাক্তারদের রেস্ট রুম ও আলাদা টয়লেটের ব্যবস্থা যেন থাকে। তারা কোনো হুমকির মুখে পড়লে পুলিশ-প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে হবে।
রাজ্য সরকারের বক্তব্য
সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে রাজ্য সরকারের আইনজীবী কপিল সিবাল বলেন, ''চিকিৎসকদের একাংশ এখনো আন্দোলন করছেন, কাজে যোগ দেননি। এর ফলে ২৩ জন মারা গেছেন। ছয় লাখ মানুষ চিকিৎসা পাননি।''
তার যুক্তি, ''গরিবদের জন্য সরকারি হাসপাতালই ভরসা। সেখানে সুপ্রিম কোর্টের অনুরোধের পরেও যদি চিকিৎসকরা কাজে যোগ না দেন, তাহলে কী হবে?''
কপিল সিবাল দাবি করেন, ''রাজ্যজুড়ে আন্দোলন হচ্ছে, কিন্তু পুলিশকে কিছু না জানিয়েই সেসব হচ্ছে।''
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ
প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে, আন্দোলন করার জন্য কোনো চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া যাবে না। কিন্তু কাজে যোগ না দিলে ব্যবস্থা না নেয়ার কথা তারা আর বলতে পারবেন না।
তারা এটাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন, চিকিৎসকদের আস্থা ফেরাতে সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হবে। জেলাশাসক ও পুলিশ সুপার পরিস্থিতি দেখবেন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন। সব চিকিৎসককে নিরাপত্তা দিতে হবে। যেসব ব্যবস্থা নিতে হবে, তার খরচ রাজ্য সরকারকে বহন করতে হবে। সুপ্রিম কোর্ট বিষয়টির উপর নজর রাখবে বলেও তারা জানিয়েছেন।
প্রশ্নের মুখে রাজ্য সরকার
এদিন সিবিআইয়ের তরফে সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, ''পুলিশের তরফ থেকে ২৭ মিনিটের ক্লিপিংস তাদের কাছে দেয়া হয়েছে। সেটাও একসঙ্গে নয়, মোট চারটি ক্লিপিংস আছে।''
আরজি কর কাণ্ডের ৩০তম দিনে শিল্পী, রিকশা চালক, সাধারণ মানুষের প্রতিবাদ
আরজি কর কাণ্ডের ৩০তম দিনে আবার পথে নামলো কলকাতা। প্রতিবাদ করলেন সাধারণ মানুষ। আবার রাত দখল হলো।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
হাতে টানা রিকশা চালকদের প্রতিবাদ
প্রথম থেকেই আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদ জানাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। রোববার সেই ধারা বজায় রেখে কলকাতার হাতে টানা রিকশ চালকেরাও প্রতিবাদ জানালেন। নিজেদের রিকশায় 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস' লেখা পোস্টার লাগিয়ে মধ্য কলকাতার রাস্তা দিয়ে হাঁটলেন। এই গরিব মানুষেরাও নিজেদের মতো করে প্রতিবাদে সামিল হলেন।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
হেদুয়া থেকে কলেজ স্ট্রিট
হেদুয়া থেকে কলেজ স্ট্রিট পর্যন্ত তারা রিকশা টেনে নিয়ে যান। তারপর কিছুক্ষণ রাস্তা অবরোধ করে প্রতিবাদ জানান। এই রিকশা চালকরা জানান, তাদের ঘরেও মা-বোন আছেন। সুবিচার না পাওয়া পর্যন্ত তারা থামবেন না।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
প্রতিবাদ ছড়াচ্ছে
আরজি কর কাণ্ডের বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদ ছড়াচ্ছে। তাতে যোগ দিচ্ছেন সর্বস্তরের মানুষ, সব পেশার মানুষ। অন্যায়ের প্রতিবাদ করছেন তারা। ব্যবস্থা বদলের দাবি করছেন। তারা ন্যায় চাইছেন।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
শিল্পীদের প্রতিবাদ
রোববার বিক্ষোভে সামিল হয়েছিলেন চিত্রকররাও। তাদের বিক্ষোভ দেখানোর অস্ত্র ছিল রং-তুলি। তারা রাস্তায় বসে এঁকে গেছেন। তাদের প্রতিবাদের ভাষা মূর্ত হয়েছে পথে। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন হাজারো মানুষ।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
বিভিন্ন জায়গায়
কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় শিল্পীরা এই প্রতিবাদের ছবি ছড়িয়ে দিয়েছেন। শ্যামবাজার, সিঁথির মোড়, যাদবপুর ৮বি বাসস্ট্যান্ড সর্বত্র।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
মৃৎশিল্পীরা প্রতিবাদে
কলকাতার কুমোরটুলির মৃৎশিল্পীরাও প্রতিবাদ জানাতে পতে নেমেছিলেন। আর একমাস পরে দুর্গাপুজো। এই সময়ে তাদের ব্যস্ততা থাকে তুঙ্গে। কিন্তু তারা সেই কাজ ফেলে রেখে প্রতিবাদ করেছেন।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
পরিবারের মানুষও
শুধু মৃৎশিল্পীরাই নন, তাদের পরিবারের মানুষও বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন সাধারণ মানুষ। তারা যত পথ হেঁটেছেন, ততই বিক্ষোভের যোগ দেয়া মানুষের সংখ্যা বেড়েছে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
প্রতিবাদের ভাষা যেখানে গান
প্রায় সব বিক্ষোভেই প্রতিবাদের ভাষা হয়ে উঠছে গান। গানের মধ্যে উঠে আসছে প্রতিবাদের স্বর। সেই গানে গলা মেলাচ্ছেন সকলে। এই গণ-প্রতিবাদে গান একটা বড় ভূমিকা পালন করছে। গান ছাড়াও পথনাটক করে, কবিতা বলে মানুষ প্রতিবাদ করছেন।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
বিশাল মানববন্ধন
সোদপুর থেকে শ্যামবাজার। প্রায় ১৫ কিলোমিটার এলাকা। সোদপুর থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত রোববার সন্ধ্যায় তৈরি হলো মানববন্ধন। হাতে হাত মিলিয়ে মানুষ আবার এতটা রাস্তা-জুড়ে প্রতিবাদ দেখালেন।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
হাতে হাত
হাতে হাত মিলিয়ে প্রতিবাদ হচ্ছে। বঙ্গসন্তানদের সঙ্গে প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন এই সর্দারজিও। সব বয়সের, সব শ্রেণির মানুষের এই সমবেত প্রতিবাদের জোরালো বার্তা ছড়িয়ে যাচ্ছে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
এতদিন ধরে
আরজি করে চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ৩০ দিন হয়ে গেলো। এতদিন ধরে সাধারণ মানুষ সমানে প্রতিবাদ দেখিয়েছেন। প্রতিবাদ ছড়িয়ে গিয়েছে কলকাতা থেকে গোটা পশ্চিমবঙ্গ, সেখান থেকে সারা ভারত, তারপর গোটা বিশ্বে। একের পর এক মানববন্ধন, একের পর এক বিক্ষোভ, একের পর এক প্রতিবাদে একটা কথাই উঠে এসেছে, আর এরকম অত্যাচার, অবিচার সহ্য করা হবে না। দোষীদের শাস্তি চাই।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
বিদেশের প্রতিবাদ
শুধু কলকাতা নয়, রোববার বিশ্বের ১৩০টিরও বেশি শহরে আরজি কর কাণ্ড নিয়ে প্রতিবাদ হয়েছেও। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি-সহ ইউরোপের নানা দেশ, দক্ষিণ আফ্রিকা, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড-সহ অনেক দেশে প্রতিবাদ হয়েছে। উপরে জার্মানির কোলন শহরে প্রতিবাদের ছবি।
ছবি: Bikram Mukherjee
12 ছবি1 | 12
তবে রাজ্য সরকারের আইনজীবী কপিল সিবাল দাবি করেছেন, ''পুরো ক্লিপিংসই দেয়া হয়েছে। কিছু টেকনিক্যাল গ্লিচের কারণে ভিডিও ভাগে ভাগে দেয়া হয়েছে।'' এক ভিডিও চার অংশে দেয়ার কোনো বিস্তারিত ব্যাখ্যা তিনি দেননি।
কিন্তু জবাবে তুষার মেহতা বলেন, ''সিবিআই ২৭ মিনিটের ক্লিপিংসই পেয়েছে।''
তখন বিচারপতিরা পুরো ক্লিপিংস সিবিআইকে দেয়ার নির্দেশ দেন।
প্রসঙ্গ :পুলিশের ‘ঘুস' প্রস্তাব
আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য উল্লেখ করেন, ''পুলিশ ধর্ষিত ও মৃত চিকিৎসকের বাবা-মা-কে টাকা দিতে চেয়েছিল। সেই বিষয়টিও দেখার দরকার আছে।''
প্রধান বিচারপতি তখন বলেন, ''পরের শুনানি হবে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর। সেদিন সিবিআই তদন্ত নিয়ে আরেকটি স্টেটাস রিপোর্ট দেবে। সেখানেই এই বিষয়টি জানাবে সিবিআই।''
পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন
আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি বলেন, ''আইনজীবী হিসাবে আমি আমার ২৭ বছরের জীবনে কখনো দেখিনি ময়না তদন্তের আগে সার্চ ও সিজার লিস্ট তৈরি করা হয়ে গেছে।''
তার অভিযোগ, মৃতদেহ যাতে দ্রুত দাহ করা হয়, তারজন্যই এই কাজ করা হয়েছে। তিনি বলেন, "ময়নাতদন্তের পুরো রিপোর্ট দয়া করে খতিয়ে দেখুন। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে উপস্থিত চিকিৎসকেরা একটি লবির।''
'বিচার পেতে আলোর পথে' কলকাতা, আবার রাতদখল
জুনিয়র ডাক্তারদের অনুরোধে রাতে ঘরের আলো বন্ধ রেখে বাইরে মোমবাতি নিয়ে প্রতিবাদ দেখালো কলকাতা।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
'বিচার পেতে আলোর পথে'
জুনিয়র ডাক্তাররা আরজি করে 'বিচার পেতে আলোর পথে'-র প্রতিবাদে অংশ নেন। সেখানে যোগ দেন সাধারণ মানুষও। যোগ দিয়েছিলেন মৃত চিকিৎসকের বাবা-মা এবং পরিবারের মানুষরাও। ফুল, মালা, প্রতীকী ছবি দিয়ে ছোট মঞ্চের চারপাশে জ্বলতে লাগলো মোমবাতি, যা আসলে প্রতিবাদের আগুন। প্রতিবাদের আলো ছড়িয়ে গেল চারদিকে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
নির্যাতিতার বাবা-মায়ের অভিযোগ
প্রশ্ন তুললেন নির্যাতিতার বাবা-মা। বললেন, ''কেন পুলিশ টাকা দিতে চেয়েছিল? হাসপাতাল কী করে বললো, মেয়ে আত্মহত্যা করেছে? মেয়ের মুখ দেখতে কেন সাড়ে তিন ঘণ্টা লাগলো? সাতটার মধ্যে করা এফআইআর নথিভুক্ত হতে কেন পৌনে বারোটা বাজলো? কেন পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর অভিযোগ দায়ের করলো?'' উত্তর চেয়েছেন তারা। জবাব চান সাধারণ মানুষও।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
কেন দাহ করতে এত চাপ?
নির্যাতিতার বাবা বলেছেন, তারা দেহ রাখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশের চাপে দাহ করতে বাধ্য হন। দাহ করার অর্থ জোর করে পুলিশ দেয়। তার মেয়ে জানলো, বাবা দাহ করার অর্থও দিতে পারলো না। তারপর ডিসি নর্থ অফিসে টাকা দিতে চান। নেননি তারা। সাদা কাগজে সই করানোর চেষ্টা করেন। কাগজ তারা ছিঁড়ে ফেলে দেন। মা বলেন, ''অপরাধীরাও আমার মতো রাতে নিদ্রাহারা হোক।''
ছবি: Satyajit Shaw/DW
প্রতিবাদের আলোয়
বুধবার কলকাতার প্রায় প্রতিটি প্রান্তে ছিল এই প্রতিবাদের আলো। মানুষ রাস্তায় নেমে মোমবাতি হাতে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। বাড়ির সামনে মোমবাতি জ্বালিয়ে রেখেছেন। আরজি করের চিকিৎসকের ধর্ষণ ও হত্যা এবং তারপরের ঘটনা তাদের এতটাই নাড়া দিয়েছে যে, সাধারণ মানুষ দিনের পর দিন রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করছেন। তাদের এই প্রতিবাদের আলো ছড়িয়ে যাচ্ছে পুরো দেশে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
হেডলাইট বন্ধ রেখে
প্রতিবাদে নিজের মতো করে অংশ নিচ্ছেন সকলেই। গাড়ি চালকেরাও হেডলাইট বন্ধ রেখে গাড়ি চালিয়েছেন। বরানগরের এই ছবি কলকাতার অনেক জায়গায় দেখা গেছে। প্রতিবাদের ফলে রাস্তায় যানজট হলেও কেউ বিরক্ত হচ্ছেন না। বরং গাড়ি থেকেই তারা বলছেন 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস'।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
আরজি করের সামনে
আরজি কর হাসপাতালের সামনে তখন শুধু মানুষের ভিড় আর মোমবাতির প্রতিবাদের আলো। জুনিয়র ডাক্তারদের ডাকে সাড়া দিয়ে তারা রাস্তায় নেমেছেন। তারা ন্যায় চান। তারা চান, অপরাধীদের আড়াল করার চেষ্টা বন্ধ হোক। ন্যায় পাক নির্যাতিতা।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
শ্যামবাজারের মোড়ে
উত্তর কলকাতার শ্যামবাজার পাঁচমাথার মোড়। সেখানে রাতে মোমবাতি রাস্তায় রেখে প্রতিবাদ হলো। সেই প্রতিবাদে সামিল হলেন সকলেই। এমনকি নিজের ছোট্ট বাচ্চাকে নিয়ে মোমবাতি জ্বালালেন এই মানুষটি।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
জ্বালাও আলো
মানুষরা বাড়ির বাইরে এসে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। রাস্তায় নেমেছেন মা-বোনেরা। তাদের মোমবাতির আলোয় অন্ধকার দূর করার আহ্বান শুনেছে পশ্চিমবঙ্গ।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
উৎসারিত আলোয় প্রতিবাদের মুঠি
দমদমের ছবি। মোমবাতির আলোর সঙ্গে প্রতিবাদী হাত। এটাই দেখিয়ে দিচ্ছে মানুষের ক্ষোভের আগুন কীভাবে জ্বলছে। অন্যায়ের প্রতিবাদে ন্যায় পেতে তারা রাস্তায় নেমেছেন।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
প্রতিবাদের ভাষা
কলকাতা-সহ পশ্চিমবঙ্গের সর্বত্র দেখা গেছে এই ছবি। আলোয় আলোয় প্রতিবাদের ছবি। পাড়ায় পাড়ায় এভাবেই প্রতিবাদ হয়েছে। ন্যায়ের দাবিতে প্রতিবাদ।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
আগুনের পরশমণি
এভাবেই বুধবার রাতে আগুনের পরশমণি জ্বলে উঠলো পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে। ন্যায়ের দাবি আরো জোরালো হলো। মানুষের প্রতিবাদ আরো তীব্র হলো।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
11 ছবি1 | 11
সিবিআইয়ের বক্তব্য
সলিসিটার জেনারেল জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারের কাছ থেকে তারা ফরেনসিক রিপোর্ট পেয়েছেন। কিন্তু সেই স্যাম্পল তারা এইমস ও হায়দরাবাদে পাঠিয়ে আবার পরীক্ষা করতে চান।
তিনি বলেন, ''আমাদের কাছে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ, নারী চিকিৎসককে অর্ধনগ্ন অবস্থায় পাওয়া যায়। তার ক্ষতস্থান ও অন্য জায়গা থেকে স্যাম্পল নেয়া হয়েছিল।''
আদালতে এটাও জানানো হয়, পাঁচ দিন ধরে যার ইচ্ছে গেছে. ঘটনাস্থলে ঢুকেছে এর ফলে সেখানকার পরিস্থিতি বদলে গেছে এবং অনেক আলামত নষ্ট হয়ে গেছে৷
এডুলজি জানিয়েছেন, সেমিনার রুমের লাগোয়া ঘরের টয়লেট ভেঙে দেয়া হয়েছে। অপরাধ করে সেখানে বেসিনে কেউ হাত ধুলে তার কোনো প্রমাণ আর পাওয়া যাবে না।
প্রধান বিচারপতির নির্দেশ, সোমবার রাতের মধ্যে রাজ্য সরকারকে এই কাজ করতে হবে।
পুজোয় ফেরা ও ‘চালাকি' বন্ধের আহ্বান
নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলন করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ''একমাস হয়ে গেছে। সিবিআই তদন্ত করছে। বিচারও সিবিআই আদালতে হবে। এবার পুজোয় ফিরুন। উৎসবে ফিরুন।''
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ''যে আন্দোলন হচ্ছে, তার পিছনে কেন্দ্রীয় সরকার ও বাম দলগুলি আছে।''
মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘পুজো করতে হবে। পুজো আসছে, অ্যাডমিনস্ট্রেশনকে দেখে নিতে হবে। পুজো কমিটিগুলোর যাতে কোনো অসুবিধা না হয়, তা নিশ্চিত করতে প্রত্যেক ডিএম, এসপি এলাকা ভিজ়িট করুন। ভিজ়িট করে দেখুন, কার কী সমস্যা রয়েছে।''
এর প্রতিক্রিয়ায় শিল্পী সমীর আইচ বলেছেন, ''মুখ্যমন্ত্রীর উপদেশ, জ্ঞান কেউ নিতে পারছে না। আপনার পরিবারের কোনো নারীর প্রতি এরকম হলে আপনি পারতেন তো উৎসবে যোগ দিতে?''
তিনি বলেছেন, ''মানুষের উপর সব ছেড়ে দিন। চালাকি বন্ধ করুন। পশ্চিমবঙ্গের মানুষ আপনাকে আর চাইছে না।''
আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের অনেকেই মনে করছেন , এর মধ্যেও মুখ্যমন্ত্রী মেলা, খেলা দিয়ে মানুষের নজর অন্যদিকে ঘোরাতে চাইছেন।
কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় এবিপি আনন্দকে বলেন, ''অপরাধীদের শাস্তির দাবিতে আন্দোলন চলছে। এই আন্দোলন স্তিমিত করলে জনরোষ আরো বাড়বে।''